নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাঁধ ভাংগার আওয়াজ পাবেন অবশ্যই তবে সেটি আমার।\nআমার উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ,\nআনন্দানুভুতি আর \nঅবসাদের বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ।

কৌশিক পুনশিক

কৌশিক পুনশিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাগরিক প্রেমিকা ১

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৩

আমার নাগরিক প্রেমিকাটিকে নিয়ে আমার অশান্তির শেষ নেই।তার চোখ বড্ড খারাপ। পুরুষ নামের কোন প্রানী তার পাশ দিয়ে গেলেই ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। বাসে উঠলে খুজে খুজে জেন্ডার ডিস্ক্রিমেশনের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে সংরক্ষিত ৯টি নারী সিটকে তোয়াক্কা না করে পুরুষ নামক জীবের পাশে গিয়ে সে বসতে পছন্দ করে। পুরুষ মানে পুরুষ।তাতে সে কোন বাছবিছার করে না।হোক যে টগবগে তরুন কিংবা ঘাটের মড়া-তাতে থোড়াই তার কিছু আসে যায়। বাসে, ট্রেনে,রাস্তায়,ফুটপাথে,চায়ের দোকান, সিগারেটের মামা, টি এস সি,বকুলতলা-যেখানে যেখানে পুরুষের বড্ড বেশি বেশি আনাগোনা-সেখানেই খুজে পাওয়া যায় আমার নাগরিক প্রেমিকাকে।

আমার নাগরিক প্রেমিকার সাথে আমার দ্বিতীয়বার দেখা হয়েছিল লেগুনাতে।লেগুনা তখনো ফাকা কেবল আমি একলা যাত্রী বসে। বাজখাই গলায় হেল্পার তখন চিল্লিয়েই যাচ্ছে যাত্রীরুপ দেবতার দেখা পাবার আশায়। হটাত ই আমার হবু নাগরিক প্রেমিকার আগমন। লেগুনাতেও যে উইন্ডো সিট হয় সেটা ছেড়ে দেয়া তো একটা অলিখিত সংবিধান। তাই আমি তাকে উইন্ডো সিট ছেড়ে দিয়ে সেকেন্ড পজিশনে সরে বসলাম। কিন্তু সে আমাকে অবাক করে লেগুনার একদম সর্বশেষ সিটে গিয়ে বসলো। যদিও তখন এই উদ্ভট আচরনের কারন বুঝিনি কিন্তু পরে জেনেছিলাম যে লেগুনা বা বাস যে কোন পাব্লিক যানবাহনেই একদম পেছনের দিকে পুরুষের পুরুষালি গন্ধটা সবথেকে বেশি থাকে।তাই সে পেছনে গিয়েই বসে।মেয়েলি গন্ধের ব্যাপারে ধারনা থাকলেও এই পুরুষালি গন্ধটা কেমন হয় সেটা আজো জানতে পারিনি।

একবার কথায় কথায় আমি নাগরিক প্রেমিকাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,
"তোমার এত বেলেল্লেপনাময় পুরুষঘেষা আচরন এর কারন কি!! আমি পুরুষ হয়ে নারীর পিছনে ঘুরঘুর করতেই পারি, নারীর দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেই পারি।
সিট ফাকা থাকতেও না হয় নারী সিটেই গিয়ে বসতেই পারি কিংবা ইচ্ছা করে অচেনা কোন নারীর গা ঘেষেই দাড়াতেই পারি।সবাই দাঁড়ায়।এটা নরমাল ব্যাপার। আর নারী শরীরে হাত দিতে কিংবা নারীর সংস্পর্শে থাকতেও মাঝে মাঝে এক ধরনের পুলকতা কাজ করে। কিন্তু তুমি ত একটা নারী,তাই না?
তোমার চোখ আর চিন্তাভাবনা এত পতিতাময় কেনো?"

নাগরিক প্রেমিকা আমার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বেনসন লাইটের শেষ ধোয়াটা আমার মুখের উপর ছেড়ে দিলো।
-------------------------------------------------------------------------------------------
নাগরিক প্রেমিকাটিকে একদিন বলেছিলাম,
একদিন তোমার প্রাক্তন হবো আর
কোন মেমরি,ছবি ডিলেট না করে,
"পথ চলা" নাম দেয়া মোবাইলের গ্যালারিটা ডিলেট না করে, দেখা হলে হাই হ্যালো কিংবা কিঞ্চিত দৃষ্টিনিক্ষেপ করে আবার নজর সরিয়ে নেয়ার মত ফরমালিটি না করে বাকি সবাইকে দেখিয়ে দেবো-
এভাবেও প্রাক্তন হওয়া যায়।
হেয়ালিময় কথাগুলোকেই একদিন বাস্তবায়ন করতে হবে-প্রতিনিয়ত নিজের সাথে সংগ্রাম করে-কে জানতো!!
না দেয়া যায় বিসর্জন, না জলাঞ্জলি।
-------------------------------------------------------------------------------------------
এটা ঠিক তবের ঘটনা যখন আমার হয়ত অন্য কারো প্রেমিকাটি আমার নাগরিক প্রেমিকা হয়ে ওঠেনি।
আমি বসেছিলাম জানালার পাশের সিটে।
মেয়েটি বসেছিল ড্রাইভারের পাশের সিটটাতে।
বয়্স কত হবে?১৭ বা ২৭?
তাতে কি!চোখের কি কোন বয়স থাকে!!
মানুষের চোখেতে থাকে পিউপিল,কর্নিয়া।
তার চোখেতে ছিল বেদনা-বিষন্নতা,মায়া-মন্ত্রমুগ্ধতা।
নীল রং এর কামিজ আর বিবর্ন ঘাস রঙের ওড়না পরা মেয়েটা যখন ক্ষনে ক্ষনে হাই তুলছিল,
আমার প্রতিটা জেগে থাকার মুহুর্ত যেন আবার নতুন ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছিল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.