নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক জন "মা"

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫

কমলাপুর রেল ষ্টেশন, সবাই ব্যস্ত, ঈদের পূর্বমুহুর্তে ব্যস্ততার কোন কোমতি নাই বলেই চলে। ট্রেন আসতেছে আবার ট্রেন ছাড়তাছে। যাত্রিদের সামানাপত্র উঠা নামা করতে কুলিরা ব্যস্ত, কোথাও এতোটুকু ঠাই মিলছে না, দুইটা মাঝ বয়সের লোক একটা মুখ বান্ধা পাটর বস্তা নিয়া আসলো এবং তা রেখে তরিগড়ি করে চলে গেলো, হয়তো তাদরে অন্য সব সামানাপত্র আনার জন্য।



অপেক্ষা করছি, রমজানের ভীড় এড়াতে এবং যথা সময়ে ইফতার করার জন্য কমলাপুর থেকে ট্রেনে বিমান বন্দর ষ্টেশন হয়ে বাসায় ফিরবো। কমলাপুর থেকে যদি বাসে আসার চেষ্টা করি তবে নিশ্চিৎ ইফতার তো যথা সময়ে করা যাবেই না। জ্যামে কতক্ষণ আটকে থাকতে হবে তা বলা মুসকিল। ইতিমধ্যে একটি ট্রেন ছেড়ে গিয়াছে কিন্তু তাতে যাত্রী হতে পারলে হয়তো ভাল হতো, পারলাম না কারণ দৌড়ে এসেও তাতে যাত্রী হওয়া সম্ভব হলো না। কারণ বয়স হয়েছে। তার উপর রোজাদার। অপেক্ষা ছাড়া কোন উপায় নাই।



বসার জন্য একটু জায়গা খুজেও পেলাম না। দাড়িয়েই থাকতে হলো, কিছুক্ষন পর দেখতে পেলাম অনেক মানুষের ভীড়, একজন চিৎকার করে বলতে শুনলাম, 'আগে হাসপাতালে নিয়া চলো, পরে দেখা যাবে'। অনেক কষ্টে ভীড় ঢেলে সামনে আগাতে যা দেখলাম "যেই বস্তাটা দুটো লোকে রেখে গিয়াছে, তাতে একটা জীবিত মানুষ সে নড়াচড়া করতেছে, এবং সে একজন বৃদ্ধা মহিলা কংকালসাড় দৃষ্টি ফেরাতে যা দেখলাম তাতে বিশ্ব বিবেক তো দুরে থাক, ভাবতে আমার শরীরের প্রতেকটা পশম কাটা দিয়ে উঠলো, একজন বৃদ্ধাকে পাটের বস্তার মধ্যে থেকে বেড় করে আনলো, সেই বৃদ্ধা মৃতু প্রায়। তাকে নিয়া হাসপাতালে যাওয়ার জন্য সবাই বেকুল, এর মধ্যে একজন লোক সেই বেশী উৎসুক তিনি একদম কেদে ফেললেন। তিনিই এম্বুলেন্স আনালেন, তার ব্যবসার প্রয়োজনীয় কাজ বাদ রেখে বৃদ্ধা মহিলাকে নিয়া হাসপাতালে গেলেন।



পরের দিন হাসপাতালে খরব নিয়া জানাগেল বৃদ্ধা মহিলা বেচে আছেন। সেই ব্যবসায়িক লোকটা তার সেবাযত্নের ব্যবস্থা করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসা করে জানা গেল, তার ছেলেরা তাকে বস্তায় ভরে এখানে রেখে গেছেন। হায়রে হতভাগা সন্তান, .............



আল্লাহুর হাবিব (সঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি তার মা-বাবাকে জীবদশায় পেয়েও তাহাদের খেদমত করে বেহেস্ত নসীব করতে পারেন নাই, তাহার উপর আল্লাহুর লানত"



হায়রে সন্তান, যে মা সন্তানকে দশমাস দশদিন গর্ভে ধারন করে, লালন-পালন করে এত বড় করলো সেই সন্তানরা তাকে লালন -পালন না করে পাটের বস্তায় ভরে রেল ষ্টেশনে রেখে গেলো। তাদের নসিব কতই না খারাপ।



এই বৃদ্ধা মহিলা হয়তো বা বেশী দিন বাচবে না। তার চাহিদাই বা কি? একমুঠো ভাত এর একটু সেবা। তার সন্তারা কি এইটু দিতে পারতো না।



বেশ কয়েক দিন সেবা ও চিকিৎসার পর বৃদ্ধা মহিলা একটু সুস্থ্য হয়ে উঠেছে মাত্র। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, "আপুনী সুস্থ্য হয়ে কোথায় যাবেন" তিনি উত্তর করলেন, তাহার ছেলেদের কাছে যাবেন। হায় রে মাতৃত্ব, সন্তানরা তাকে ভাল না বাসলেও মা তার সন্তানদেরকে যে প্রাণের চাইতেও বেশী ভালবাসেন এটাই তার প্রমান। যে সন্তানরা তাকে পাটের বস্তায় ভরে রেল ষ্টেশনে রেখে গেলো, সে কিনা সুস্থ্য হয়ে তাদের কাছেই যাবে। তার সন্তানদের জন্য তার মন কাদেঁ। কতদিন হলো সে তার সন্তাদেরকে দেখে নাই, কি কঠিন মাতৃত্ব । মা কথাটা কতবড় কঠিন, তা অনুভব করতে বুকের মাঝে একটু একটু ব্যাথ্যা অনুভব হলো।



আমিও একজন সন্তান, আমার মা এখনো বেচে আছে, আমারও সন্তান আছে। এ কেমন পৃথিবী, এ কেমন মনবতা, এ কেমন মানুষত্ব । ভাবতে পারছিনা ......................................... ।



একমাত্র ইসলামই পারে এই সমস্যার সমাধান দিতে। মানুষ যখন পরিপূর্ন ইসলামে প্রবেশ করবে, তখন সে কোন ক্রমেই পারবেন না এমনি আচরন করতে। তাই আজও সময় আছে আমাদের দেশের মানুুষ গুলোকে ইসলামের ছায়া তলে ডাকার জন্য।



আজ আমার কাছে মনে হয়, আমরা নামে মাত্র মুসলমান, আমরা পবিত্র কোরআন ও হাদিসের পরিপূর্ন অনুসারী হতে পারিনি। তাই আসুন, আমার ভাইয়েরা এথনো সময় আছে, মা-বাবার কাছে ক্ষমা চাই এবং তাদের সেবা করার চেষ্টা করি, হয়তো আল্লাহু আমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। আমরা আমাদের মা-বাবার হক আদায় করি, কোন মা-বাবাকে যেন বৃদ্ধা আশ্রমে না যেতে হয়। আপনী নিশ্চই বৃদ্ধা আশ্রমে যেতে চান না ? তবে কি করে আপনার মা-বাবাকে বৃদ্ধা আশ্রমে পাঠাতে চান।



আপুনী নিশ্চিৎ থাকতে পারেন, আপুনী যদি আপনার মা-বাবাকে বৃদ্ধা আশ্রমে না পাঠান তবে আপনাকেও বৃদ্ধা আশ্রমে যেতে হবে না। আমি আপনাকে এতটুকু ভরসা দিতে পারি। "আল্লাহু চান না কোন কওমকে ধংস করে দিতে যদি না তাহারা নিজেদের ধংস নিজেরা ডেকে না আনে।" আজ ও আমাদের হাতে সময় আছে আসুন, আমরা সর্বময় সেই সমাজ গড়ে তুলি যেখানে মা-বাবার সম্মান আছে, সেবা আছে, আছে ভালবাসার এক অপূর্ব মিলন মেলা, মায়ের ভালবাসায় পরিপূর্ন এক বেহেস্ত।



আমাদের সবার যেন, মা-বাবার খেদমত নসিব হয়। আমরা যেন মা-বাবার খেদমত করে যেন বেহেস্ত নসিব হয়।

আমিন।..............................................................................

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.