নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘গুলখানা’ মানে ফুলের ঘর

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৭

ইসলামের ইতিহাসে ইরান একটি প্রচীন রাষ্ট, এর বিভিন্ন, বিচিত্র ইতিহাস রয়েছে, আমরা অনেকে তা জানি আবার অনেকে জানি না। তাই এবার একটি ছোট্ট একটি অঞ্চলের সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্ট করি দেখি কতটুকু এর আকর্ষন ও ঐতিয্য রয়েছে।





মাহাল্লত অঞ্চলটির আয়তন ২১০০ বর্গকিলোমিটারের মতো। এটি মারকাযি প্রদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। মাহাল্লতের উত্তরে রয়েছে কোম , অশ্‌তিয়ন এবং দেলিযন। দক্ষিণে রয়েছে খোমেইন এবং গুলপয়গন। পূর্বে রয়েছে দেলিযন এবং পশ্চিমে রয়েছে আরাক ও খোমেইন। গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম এবং শীতে বেশ ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে এখানে। এখানকার সবচেয়ে উঁচু পর্বত চূড়াটির নাম ‘হাফ্থদ গোল্লে'। চূড়াটির উচ্চতা হলো দুই হাজার সাত শ'বত্রিশ মিটার। মাহাল্লতের কেন্দ্রীয় শহরটি মাহাল্লত শহর নামেই পরিচিত। মূল শহরটির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আঠারো শ'মিটার।



যে দিকটির কারণে এখানে শহর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে , তাহলো এখানে আছে পানি আর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক ঝর্ণা। শহরের উত্তরাংশে এই সৌন্দর্য পরিলক্ষিত হবে কারণ সেখানেই এগুলোর উৎসস্থল। উৎসস্থলে পানির প্রাচুর্য এমন যে দেখতে অনেকটা ছোট্ট একটি নদীর মতো। মাহাল্লতের সর্বোচ্চ স্থান থেকে এই ঝর্ণার পানি অনবরত পড়তে থাকে ,দেখতে কেমন লাগবে একবার একটু ভেবে দেখুন।



ঝর্ণা নির্গত পানির ধারা শহরের নিচু এলাকা দিয়ে, প্রাচীন চুনার বৃক্ষগুলোর গোঁড়া ভিজিয়ে দিয়ে এবং মাহাল্লতের নিজস্ব বিশেষ স্থাপত্যের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে একটা চমৎকার আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। আবহাওয়াগত আনুকূল্যের কারণে এখানে ফুল চাষ হয় প্রচুর। বিচিত্র রং ও জাতের ফুলে এখানকার চেহারাটাই মহনীয় হয়ে ওঠে। ফুল কার না ভালো লাগে বলুন তো দেখি। আর সেসব ফুল যদি হয় সুগন্ধিপূর্ণ ,তাহলে তো আর কথাই নেই। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফুটন্ত ফুলের ঘ্রাণ যদি বাতাসের দোলায় দুলতে দুলতে সমগ্র এলাকাবাসীর নাকে গিয়ে পৌঁছায় তাহলে কেমন লাগবে বলুনতো। মৌ মৌ করবে না চারদিক !



হ্যাঁ,মাহাল্লতের অবস্থা সত্যিই তাই। এ কারণেই মাহাল্লত শহরটি ইরানের ‘গুলখানা’ নামে বিখ্যাত। গুলখানা বলতে বোঝায় গ্রিন হাউজ বা গ্লাস হাউজ। হিমাঙ্কের নীচের তাপমাত্রা বিশিষ্ট এলাকায় ফুল বা উদ্ভিদ চাষের জন্য এই আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আবার শাব্দি অর্থে গুল মানে ফুল আর খানা মানে ঘর। তার মানে যেখানে নানা রকমের ফুলের প্রাচুর্য রয়েছে সেই স্থানকে এই নামে অভিহিত করা চলে। তো গ্রিন হাউজই হোক কিংবা ফুলের প্রাচুর্যের শহরই হোক উভয় দিক থেকেই মাহাল্লত একটি ফুলের শহর এবং ফুলেল শহর।



হ্যাঁ! মাহাল্লতকে বলা হয় ইরানের ফুল লালন কেন্দ্র। ফুলের লালন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এখানে আট শ'হেক্টর এলাকা জুড়ে একটি গ্রাম তৈরি করা হয়েছে। ফুলের জন্যে ইরানের প্রথম গ্রাম এটি। এখানে ফুলের ওপর লেখাপড়া করা, গবেষণা করার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ফুল সংরক্ষণের জন্যে হিমাগার এবং ফুল রপ্তানির জন্যে প্যাকিং করার সকল সরঞ্জাম। বর্তমানে মাহাল্লতের শতকরা চল্লিশ ভাগ জনগণ ফুল উৎপাদন ও লালনকার্যে নিয়োজিত। ফুল চাষের পেশায় নিয়োজিতদের বেশিরভাগই যুবক শ্রেণীর।



প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখানকার নয় শ হেক্টর জায়গাজুড়ে কাঁচ বা প্লাস্টিক নির্মিত গ্রিনহাউজে বছরে কমপক্ষে ২০৮ রকমের ফুলের চাষ হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাসায় বা অফিস আদালতে রাখার মতো ফুল, লতাগুল্ম এবং স্টিক বা শাখাজাতীয় ফুল। এখানকার ফুলের বেশিরভাগই পারস্য উপসাগরের দক্ষিণ উপকূলীয় দেশগুলো এবং ইউরোপীয় দেশগুলোতে রপ্তানি হয়। জাপান, হল্যান্ড এবং জামানেও প্রচুর ফুল যায় এখান থেকে। ফুলের সাথে সাথে ফুলদানীও যে রপ্তানি হবে তাতো আর বলারই অপেক্ষা রাখে না।



বছরে কয়েক লাখ ফুলদানী এবং কয়েক মিলিয়ন ফুলের শাখা মাহাল্লত থেকে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। ফুল উৎপাদনের দিক থেকে মাহাল্লত ইরানের মধ্যে প্রথম স্থানের অধিকার করেছে। মাহাল্লত যে কেবল ফুলের জন্যেই বিখ্যাত তা কিন্তু নয়,বরং এখানে ফুল ছাড়াও রয়েছে ঐতিহাসিক বহু নিদর্শন। এসব নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে খুরহে'র প্রাচীন উপাসনালয়,মাহাল্লত জামে মসজিদ ,ইমামযাদা ফায্‌ল্ ও ইমামযাদা ইয়াহিয়ার মাযার, গরম পানির ঝর্ণা এবং অসংখ্য গুহা। এইসব নিদর্শন মাহাল্লতকে আলাদা একটা বিশেষত্ব দিয়েছে।



এত প্রতিকুল আবহাওয়ার মধ্যেও মানুষ তার শ্রম ও সত চিন্তা দিয়া আল্লাহুর রহমতের জন্য অপেক্ষা করেন। এবং তার সত্যিকারের উপহার আল্লাহুর কাছ থেকে পেয়ে থাকে এটাই তার একমাত্র উদাহরন মাত্র। এটা আল্লাহুর রহমত চাড়া আর কিছুই না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.