নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে আল্লাহ! সঠিক বিচারের মালিক, সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমাশীল।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান

আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযোদ্ধা মানিক বিশ্বাস (২য় পর্ব)

২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৫৪

দিন তারিখ আমার সঠিক ভাবে মনে না থাকলেও ঘটনা গুলো মোটামুটি মনে করতে পারতেছি। কারন অধিকাংশ ঘটনা আমাকে যেমন কষ্ট দিয়াছে আবার পাশাপাশি তেমনি আনন্দও দিয়াছে। যেহেতু আমি ছিলাম কিশোর মুক্তিযোদ্ধা আমার ভাইরা আমার জীবন বাচাবার জন্য তাদের সাথে নিয়াছিল। আমি জীবনের একান্ত বাস্তবতার সাথে পরিচিত হলাম, যা এত তারাতারি হয়তো প্রয়োজন ছিল না।



এক একটি দিন অতিবাহিত হয এবং আমার জীবনের এক একটি অভিজ্ঞতার সাথে পরিচিত হই। খাবার প্রথমে তিন বেলাই রুটি দিতে আরম্ভ হলো। কিন্তু রুটির সাথে এতটা মানান সই করতে পারলাম না। ভাত খাবার জন্য মনটা প্রায়ই আকুতি বিকুতি করতে আরম্ভ করলো। হঠাৎ একদিন ভাত এসে গেল। ভালই লাগলো এবং সেই রাতে আমার প্রচুর ঘুম হয়েছিল সেটা হলফ করে বলতে পারি।



সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধৌত করলাম, ডাক আসলো ট্রেনিং এ যেতে হবে, আমরা তৈরি হলাম এবং এক পর্যায়ে ট্রাকে উঠলাম, ট্রাক যাইতে আরম্ভ করলো। পাহাড়ের ঢালে অনেক দুরে এসে এক জায়গায় থেমে গেলো, আমাদের সবাইকে নামিয়ে দিল, আমার মনে হলো আমরা মেঘের দেশে এসে পৌছে গেছি। মাঝে মাঝে মেঘ আমাদেরকে ঢেকে ফেলে এবং আমরা আবার সব কিছু পরিস্কার দেখতে পাই, আপাদা মস্তক কাপড়ে মোড়ানো সবাই, আমার কাছে তখন মনে হয়েছিল, এটা কোন ট্রেনিং নয়, এরা আমাদেরকে মেড়ে ফেলার কোন চক্রান্ত করিতেছে। সে দিনের কথা আমি কোন দিনই হয়তো ভুলতে পারবো না। শ্বাস গ্রহন করার সময় মনেয় হয় এটাই মনে হয় শেষ এর পর হয়তো আর শ্বাস গ্রহন করা সম্ভব হবে না। ঐ দিন আমরা কেহই সূর্য়ের মুখ দেখতে পাইনি। মাঝে মাঝে পাহাড় দেখা গেলেও আবার মাঝে মাঝে মেঘের আড়ালে হাড়িয়ে যেতাম । আমাদেরকে রেখে ট্রাক গলো কোথায় যেন হাড়িয়ে গেল আর গেখা গেল না। অনেক সময় পরে দেখ মেললো, ট্রাক গুলো আমাদের জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে আসলো ওরা আমাদেরকে হিন্দি ও বাংলা মিলিয়ে খথা বলছিল। গেরিলা কি, তাদের কাজ কি? কি ভাবে শত্রুকে ঘিরে ফেলতে হবে এবং কি ভাবে তাদেকে বোকা বানাতে হবে।



মানিক ভাই প্রায়ই আমাদের মাঝে আনন্দের খোরাক হয়ে যেতো, কাজ দিয়া, আবার কথা দিযা, কোন না কোন ভাবেই আমাদের মাঝে আনন্দে বন্যা বয়ে দিত। আমাদের মা-বাবা, ভাই বোন, বা আত্মিয়া-স্বজনের কথা মনে করার মতো সময়ই দিত না। আবার মাঝে মাঝে এমন ঝাঝালো বক্তৃতি দিত কখন মনে হতো এখনই রাইফেল দিয়া শত্রুর বুকটা ঝাজরা করে আসি। সে এক জ্বালা ময়ি বক্তৃতা, কিছু ছাত্র নেতা আমাদের সাথে ছিল। শত্রুর জন্য ফাদ তেরি করা, এ্যামবুস, মনে হলো এটা এক ধরনের মরন খেলা, এতে যে মানুষ মারা যেতে পারে বিশ্বাস করার কোন জো আমার কাছে নেই। সবই সাভাবিক হিসাব, আমাদেরকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হলো, আমরা একপক্ষ শত্রু ও একপক্ষ মিত্র সাজলাম, তারপর খেলা আসম্ভ হলো ড্যামো যুদ্ধ, আমাদের একজন পাহাড়ের ঢাল থেকে পড়ে গেল, আমরা তাকে খুজে পেয়ে ছিলাম কিন্তু তার সাথে আর আমাদের দেখা হয় নাই তিনি বেচে আছেন কি মরে গেছেন। আমরা তা জানতেও পারি নাই।



আমার বড় ভাই ছিল, অত্যান্ত বিচক্ষন ব্যক্তি বটে। তিনি সবসময় মধ্য পন্থা অবলম্বন কারী। হঠাৎ কোন সিদ্ধান্ত নিতে তিনি মোটেই রাজি নয়। মানিক বিশ্বাস প্রায়ই তার সাথে কথা বলতেন, আমি একটা ব্যাপা প্রায়ই খেয়াল করতাম, যখনই মানিক বিশ্বাস আমার বড় ভাইকে জিজ্ঞাসা করতো তিনি সোজা উত্তর দিত "না"। আবার মাঝে মধ্যে বলতো "ভেবে দেখি" আবার বলতো "চিন্তা করি"। আপনাদেরকে পরে যানাবো, একটি লোক তার বাড়ী ময়মনসিংহ তিনি প্রায়ই কাঁদতো, আমার মেজ ভাই তাকে দমক দিত আর বলতো, "আচ্ছা মজিদ ভাই এই যে, আপনী সারা রাত কাঁদলেন তাতে আপনার লাভ টা হলো কি?" "আপনী কি আপনার আপন-জনদেরকে ফিরে পাবেন? কান্না-কাটি ছাড়েন তো ভাই"। আমরা এখন যোদ্ধা মৃতু্ আমাদের প্রতিদিনের সাথি, কখন তোথা থেকে একটি গুলি এসে বুকটাকে এফোর ওফোর করে চলে যাবে, বুঝার কোন সময় হয়তো পাওয়া যাবে না।







চলবে ..........................................................

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০১

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লাগছে, চালিয়ে যান।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ, লেখাটি পড়ার জন্য। আমি চেষ্টা করতেছি এই লেখাটি পরিপূর্ন ভাবে আপনাদের নিকট উপস্থাপন করার জন্য। এইটি আমার জীবনের এক বিস্ময় কাহিনী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.