![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এক জন্ স্বাধীন চেতা মানুষ, ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলাম, কর্ম জীবনে একজন সরকারী কর্মচারী (অব:), বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছি।
জীবন অভিজ্ঞতা আমাদেরকে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথাযথ ও বুদ্ধিবৃত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে কিংবা সঠিক আচরণ করতে সহযোগিতা করে। জীবনে কী করে সন্তুষ্ট থাকা যায় বা কী করে সুখ অনুভব করা যায় সেই শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা কুরআন আমাদেরকে দিয়েছে। নিজস্ব সামর্থের মধ্যে থেকেই মানসিক টেনশান, হতাশা, নৈরাশ্য থেকে মুক্ত থেকে কী করে আদর্শ জীবনযাপন করা যায় সে সব নিয়েই আজ কিছু কথা বলার চেষ্টা করবো।
বিশ্বব্যাপী টেকেনোলজি বা প্রযুক্তির উন্নতি ও অগ্রগতির ফলে মানব জীবনের সব কিছুই আজ হয়ে পড়েছে শিল্প নির্ভর, বস্তুগত এবং যান্ত্রিক। এই যন্ত্র সভ্যতার কারণে মূল যে সমস্যাটি দেখা দিয়েছে তা হলো মানুষ তার মৌলিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে পড়তেছে। জীবন যাপনের আদর্শ যে পদ্ধতির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মানুষকে সে ব্যাপারে তারা উদাসীন হয়ে পড়ছে। মানুষের সুখ শান্তি স্বস্তি প্রশান্তি যেখানে রয়েছে সেখান থেকে মানুষের দৃষ্টি চলে গেছে ভিন্ন দিকে। বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে মানুষ যত প্রযুক্তির অধিকারী হয়েছে সেইসব থাকার পরও মানুষ ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, একাকি হয়ে পড়েছে। মানুষের নিজের ভেতরে, তার নিজস্ব অস্তিত্বে যেসব গুপ্তধন রয়েছে সেগুলোকে খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় চেষ্টা প্রচেষ্টার অবসরটুকুও যেন তার নেই।
মনোবিজ্ঞানীরা এবং বিশেষজ্ঞরা বিগত বছরগুলোতে মানুষের সামর্থগুলো নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন। গবেষণা চালিয়ে তারা মূল্যবান সব তথ্য আবিষ্কার করেছেন। তারা দেখেছেন মানুষের নিজের ভেতর যেসব উপাদান ও শক্তি-সামর্থ্য রয়েছে সেসব মানুষের জীবনযাপনের উন্নয়নসহ বাহ্যিক কল্যাণ তো সাধন করতেই পারে এমনকি মানুষের মন ও মস্তিষ্কের সকল জটিলতা দূর করে প্রশান্তিও এনে দিতে পারে। শুধু তাই নয় আত্ম-উন্নয়নের ক্ষেত্রে, আত্মবিকাশের ক্ষেত্রে এবং নিজের সৌভাগ্য অর্জনের পথ সুগম করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু কীভাবে? বিজ্ঞানীদের সেইসব গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তির বিশ্লেষণযোগ্য একটি বিষয় হলো মানুষের জীবনযাপন পদ্ধতি ও কৌশল।
জীবনযাপন পদ্ধতি আমাদের সাহায্য করে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ, যৌক্তিক ও যথাযথ আচরণ করতে। সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই সুখশান্তির সোনার হরিণ লাভ করে নিরবচ্ছিন্ন প্রশান্ত জীবন উপভোগ করতে পারি। এরকম অবস্থায় অন্যদের সঙ্গেও গঠনমূলক ও উত্তম সম্পর্ক স্থাপন করার মধ্য দিয়ে কোনোরকম সহিংসতার আশ্রয় না নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত সকল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে পারি। এভাবে আমরা জীবনে সাফল্য লাভের মধ্য দিয়ে সুখি সমৃদ্ধ জীবনের অনুভূতি লাভ করার সুখ পেতে পারি।
তবে একটি বিষয় নতুন করে আবিষ্কৃত হয়েছে যে ধর্ম জীবন যাপনের পদ্ধতিগুলোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে বহু শতাব্দি আগে থেকেই ভেবেছে এবং সমাধান দিযে রেখেছে। জীবনে সাফল্য লাভ ও সন্তুষ্টির ব্যাপারে পবিত্র কুরআন চমৎকার জীবনযাপন পদ্ধতির দিকনির্দেশনা দিয়েছে। কুরআনের শিক্ষার মধ্যেই আমরা সেগুলো দেখতে পাবো। কুরআন এমনকি মানুষের নৈতিকতা, মন-মানসকিতার ভিত্তিতে যথাযথ আচরণ পদ্ধতি বাতলে দিয়েছে। সেই আচরণ পদ্ধতির মধ্যেই রেখে দিয়েছে সমস্যার সমাধান। কুরআনের শিক্ষাগুলো ধর্ম, নৈতিকতা ও বৃদ্ধিবৃত্তিক জীবনের সুষ্ঠু পরিকল্পনা দিয়ে দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মানুষের জীবনযাপন পদ্ধতির দশটি দিকের কথা উল্লেখ করেছে। আমরা সেগুলোকে কুরআনের দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবো।
জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক দিক হলো আত্মসচেতনতা। আত্মসচেতনতা মানে হলো নিজেকে চেনা,নিজের সম্পর্কে জানা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মনোবিজ্ঞানীরা সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক আচরণগত স্খলন সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, বেশিরভাগ অবক্ষয় ও স্খলনের উৎস বা কারণ হলো নিজের সম্পর্কে না জানা। সাফল্যের উপায়গুলো যা নিজের ভেতরেই রয়েছে সেগুলো উপলব্ধি করতে না পারা। এরকম অসচেতন মানুষেরা নিজের ব্যাপারে দোদুল্যমান থাকে। সে কোনোভাবেই নিজের উপর আস্থা রাখতে পারে না। সে শক্তি, সমাজ, পরিবেশের তরঙ্গে নিজেও একটি উপাদান হয়ে যায়। কীসে কল্যাণ আর কীসে ধ্বংস সেটা নির্ধারণ করার শক্তি সে হারিয়ে ফেলে।
অন্যভাবে বলা যায় যে মানুষ নিজেকে চেনে না, সে একজন নাবালকের মতো। বাইরের শক্তিগুলো তাকে সহজেই একবার এইদিকে আবার ওইদিকে টেনে নিয়ে যায়। সুতরাং আত্ম-অসচেতন মানুষ অস্থিরতায় ভোগে। এ কারণেই নিজেকে চিনতে পারলে মানুষের মন-মানসিকতা ও দৈহিক সুস্থতার ওপর তার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে। সুতরাং নিজেকে চেনাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মনোদৈহিক প্রশান্তি ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দৃঢ়মনোবল থাকার নেপথ্য উপায় উপকরণ হলো নিজেকে চেনা। যার সম্পর্কে সক্রেটিস বলেছিলেন নো দাইসেলফ, সঙস্কৃতে বলা হয়েছে আত্মানাম বিদ্দি। আর ইসলাম বলেছে ‘মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু”। ভাষা যা-ই হোক, অর্থ হলো নিজেকে জানো।
আজকের এই আলোচনা থেকে আমরা জানলাম নিজেকে জানাটা কতটা জরুরী্। আসুন আমরা নিজের মাঝে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাই, শান্তির পথে এগিয়ে আসি।
আমিন।
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৫
মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, ভাই,
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭
শহিদুল ইসলাম মৃধা বলেছেন: ভাল লিখেছেন, ধন্যবাদ।