| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নির্জন গলিটির সামনে প্রায় ঘন্টা দুয়েক ধরে ঘাপটি মেরে বসে আছে রমজান আর বাবু । রমজানের এই লাইনে বহুদিন হয়ে গেলেও তার শিষ্য বাবু ছিনতাইকারি হিসেবে নতুন, সঠিক শিকারটার জন্য কতোক্ষন অপেক্ষা করতে হয় সেটা বাবুর জানা নেই তাই সে বসে থাকতে থাকতে অস্থির হয়ে গেছে । অস্থিরতা কম করার জন্য সিগারেট টানা জরুরি কিন্তু তার ওস্তাদ রমজানের এই বিষয়ে নিষেধ আছে, রাতে অপারেশন চালানোর সময় এমন কোনো কিছু রাখা যাবে না বা করা যাবে না যার কারনে দূর থেকে তাদের উপস্থিতি কেউ টের পায়।
এবার রমজান নিজেও অস্থির হয়ে উঠেছে, সে তারাতারি কাজ সেরে ফেলতে চায়, শহরের পরিস্থিতি বিশেষ ভালো না। গতো কয়েক সপ্তাহে মাঝ রাত করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় মোট ৮ টা মার্ডার হয়েছে, প্রত্যেককে হার্ট বরাবর গুলি করে মারা হয়, পুলিশ এই খুনগুলোর জন্য রাতের বেলা টহল বাড়ায় দিয়েছে , রাস্তায় সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই থানায় ধরে নিয়ে যাচ্ছে । সবাই বলে সেই খুনির মাথায় নাকি একটু সমস্যা আছে, কারনে অকারনে মানুষ মারা তার স্বভাব । মাথায় সমস্যা থাকলে মানুষ উল্টাপাল্টা কাজ করে কিন্তু খুন করে বেড়ায় এটা রমজানের জানা ছিলো না, তার মতে এটা বড়লোক বাপের বিঘরে যাওয়া পোলাপানের ভিমরুতি... ,
এসব চিন্তা করতে করতে আরো কিছুক্ষন সময় পার হওয়ার পর গলির ভিতর একজন মাঝ বয়সি লোককে হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেখলো রমজান, সে তার শিষ্য বাবুকে গলির মুখে পাহারায় রেখে নিজে গলির ভিতরে ঢুকে পরলো ।
গলির ভিতর তারাতারি পা চালায়ে সেই লোকের পথ আগলায়ে দাড়ালো রমজান, কিন্তু মাঝ বয়সি সেই লোকের ব্যাবহারে কোনো ভয় ভিতি দেখা গেলো না, বোধায় তিনি বুঝতে পারেননি তার সামনের এই লোকটা তার কাছে কি চায় , রমজান জানে এই আধ বুড়া লোকটার জন্য সে খালি হাতে একাই যথেষ্ট কিন্তু সে যে ছিনতাইকারি সেটা বোঝানোর জন্য হলেও তার বার্মিজ চাকুটা বের করা উচিত, বার্মিজটা কক্সবাজার থেকে কেনার পর আজকেই প্রথম অপারেশনে নিয়ে আসছে, এতো সুন্দর চাকু কিন্তু এটা আজ পর্যন্ত ব্যাবহার করতে পারেনি এটা নিয়ে রমজানের মনে ব্যাপক আফসোস ছিলো কিন্তু আজ এই বুড়ার উপর এটা চালায়ে তার মনের সাধ মিটাবে ।
কোমরে গুজে রাখা জিনিসটা খুব কায়দা করে বের করলো রমজান, কিন্তু বার্মিজ চাকুটা দেখার পর লোকটার ঠোটের কোনায় একটা হাসি ফুটে উঠলো, তারপর সে ব্যাগের চেন খুলে ব্যাগের ভিতর থেকে একটি নাইন এম এম পিস্তল বের করে আনলো যার ব্যারেলে আগে থেকেই একটা সাইলেন্সার লাগানো আছে । পিস্তল দেখেই রমজানের হাত থেকে ভয়ে তার বার্মিজ চাকুটা পরে গেলো, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আস্তে করে একটা শব্দ হলো আর রমজানের বুকের বাম দিকে একটা গুলি ঢুকে পিছন দিক দিয়ে বের হয়ে গেলো ।
আধা ঘন্টা পর রমজানকে গলির ভিতরে খুজতে যায় বাবু । বাবু গলির মুখে ঢুকতেই সেই মাঝ বয়সি লোকটার মুখোমুখি হয়, লোকটা স্থির চোখে তাকায়ে থাকে বাবুর দিকে , তারপর ব্যাগ থেকে কি যেনো একটা বের করে আনে লোকটা, আবছা অন্ধকারে কিছু দেখতে পায় না বাবু, কিন্তু ঠুস করে একটা শব্দ তার কানে যায় আর সাথে সাথে সব কিছু অন্ধকার হয়ে আসতে শুরু করে......।
©somewhere in net ltd.