নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবার আসিব ফিরে...

লাবণ্য

বকবে না কিন্তু

লাবণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ রাত সারা রাত জেগে থাকবো

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:৪৩

আমি জানি সে আজ রাতটা খুব কষ্ট পাবে। সে কোনওভাবেই আমাকে ছাড়া থাকতে চায় না। আমার কাছে আসার পর থেকে সে কখনও একা থেকেছে এমন হয়নি বললেই চলে।আসার সময়.. দাঁড়ান সে ফোন দিছে একটু ধরি...



হ্যাঁ বলো,

কী করো?(ঢঙকরে বলে)

নাটক লিখি

তোমার কোনও কাজ নাই?

আছে, তাইলে নাটক লেখো ক্যান,একাজতো তুমি বাসায়ও করতে পারতে!

আরে বাবা, ডিভিক্যাম ডাউনলোড দিয়ে, এই কাজ করছি, ডাউনলোড হয়ে গেলে এডিটিং শুরু হবে।

সারারাত করবা?

দেখি?

সক্কালেই কিন্তু বাসায় আসবা,

আচ্ছা রাখি, তুমি ঘুমাও ,নামাজ পড়ছো?

আবার জিগায়।

রাখি?

এতো রাখি রাখি করো ক্যান। একটু কথা বলিই না!

আমার সময় নষ্ট কইরো না, গল্পটা তোমাকে নিয়ে্

আচ্ছা তাইলে রাখি।



এর আগে রিশানদের বাসায় একরাত ছিলাম, পুরো রাতই সে বিভিন্ন হুমকিবাচক মেসেজ দিয়ে আমাকে চিন্তিত রেখেছে। কোনও কাজই করতে পারিনি। ওর শেষ মেসেজটা ছিল এমন, আমি চলে যাচ্ছি-আমাকে তোমার যখন ভালেই লাগে না, তখন আর আমার থেকে কী লাভ? বাবামা সব ছেড়ে তোমার কাছে এসেছিলাম, সেই তুমিও বছর না ঘুরতেই আমাকে আর সহ্য করতে পারো না..বিদায়, ভালো থেকো।

ভালো থেকোটা হচ্ছে ওর মেসেজের অটোনোট, সবসময় শেষ করে একথাটা ও বলবেই।

কিন্তু ভালো আমি থাকি কী করে, ওর এই বিদায় মানেতো চিরবিদায়! এযাবৎ তিনবার আত্মহত্যার প্রচেষ্টা সে চালিয়েছে, দুইবার আমাকে পাওয়ার জন্য আর একবার আমাকে পাওয়ার পর হারাবার ভয়ে। জাস্ট একটা ফোন করেছিলাম পুরাতন এক মেয়ে বন্ধুকে, তাতেই তার ধারণা আমার প্রেম আছে মেয়েটির সাথে। আর যাই কোথায়, গৃহযুদ্ধের একপর্যায়ে সে ঘুমের ওষুধ খায়। আমিতো আমার স্বাধীনতার কথা বলে, এই বলে সেই বলে কোনওভাবেই যখন পারছিলাম না তখন হাতপা ধরে মুচলেকা দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম আর কোনওদিন কোনও মেয়ের সাথে কথা বলব না। পরে অবশ্য কিছুটা শিথীল করিয়েছি যে প্রয়োজনে করতে পারবো, তবে এমন কাউকে নয় যার সঙ্গে খুব ঘনিষ্টতা আছে। এটাকে ও বলে তুমিতুমি সম্পর্ক যাদের সঙ্গে।

আমি কিন্তু একবারও বলিনি তুমি কোনও ছেলের সাথে কথা বলতে পারবে না। আমরা পুরুসজাতি এমনিভাবে নারীজাতির কাছে পড়েপড়ে মার খাই আবার নিন্দাও শুনি।



আজকে রাতে বাইরে কাটাবো বলার পর তার মুখটা বেলুনের মতো চুপসে গেছে। সেযে কত অঘটনের কল্পনাই না করে ফেলেছে, কত যুক্তি বাইরে না থাকার ব্যপারে! সে যখন মাঝরাতে উঠে দেখবে আমি নেই পাশে সে তখন কাকে জড়িয়ে ধরবে?আমার যদি মাঝরাতে খিদেপায় আমি তখন কাকে বলবো খাবার দিতে? মাঝরাতে খাওয়ার জন্য কত আইটেমযে সে মনে মনে প্ল্যান করে রেখেছে! আমি টানার জটিলতা এড়াতে কিছুই আনিনি।

আসার সময় সে মুখে তুলে খাইয়ে দিয়েছে্ নিচপর্যন্ত এস বিদায় দিয়েছে, গলায় ভালোকরে চাদর টপচিয়ে দিয়েছে..

আমার সেবাযত্নে সে কোনও ত্রুটি করে না, বরং তার সেবার দৌরাত্মে মাঝেমাঝে আমার পালাতে ইচ্ছা করে। যদি একদিন বলেছি আমার এটা খেতে ইচ্ছে করছে, যেমন করেই হোক সে সেটা ম্যানেজ করেই ছাড়বে! একদিন বলেছি বেগুনভাজি আমার খুব প্রিয়, সে যত আইটেমই থাক তারসঙ্গে বেগুভাজি থাকবেই। বিরক্তিকর!

একবার বললাম টকদই আমার খুব ভালোলাগে, প্রায়ই সে টকদই নিয়ে আসে আশিটাকা দিয়ে্ ফ্রিজে রেখেরেখে খাওয়ায়। সে ভুলেও মুখে দেবে না। মাথার খুশকি তাড়াতে হাসান মশহুদের মতো জিহাদ ঘোষণা করেছে। মেহেদিপাতা বেটে লেবু আর টকদই মিশিয়ে আমার মাথায় দিয়ে দেয়।বাটার জন্য শিলনোড়া নেই আমাদের, ও অন্য ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে আসে।

ওর সারাক্ষণের প্রচেষ্টাই হলো আমাকে খুশি করার জন্য।

কিন্তু খুশি আমি থাকতে পারি না, কারণ ও আমার শরীরের সেবা বুঝলেও মনের সেবা একদমই বুঝতে চায় না। আমার মন কী বলে ও তা টের পায় না। আমি প্রতিদিন অফিসে আসার সময় বলে আসি একটা গল্প লিখো, অথবা কবিতা অথবা চিঠি; বিয়ের আগে খুব সুন্দর সুন্দর কবিতা গান গল্প লিখতো, এখন এত বলি লেখে না।

অনেক ধরনের সাজা দেই মাঝে মাঝে্ ওর জন্য সবচে বড় সাজা একরাত ওকে ছেড়ে বাইরে কাটানো্ এই ভয় দেখালে যাহোক কিছু লেখে। কিন্তু আজ সত্যি সত্যি আমি বাইরে রাত্রিযাপন করছি, জানি না ও কিছু লিখতে পারবে কি না।

যদি দেখি সত্যি আগের মতো কোনও কবিতা লিখে ফেলেছে, তাহলেই আমি সফল! আসলে সৃষ্টির জন্য বিরহ বা আঘাত দরকার। তাই এই দূরে এসেও ওরসঙ্গে সুন্দর করে কথা বলি না আমি।



দাঁড়ান.. আবার ফোন! ডিসগাস্টিং!



কী হলো ঘুমাওনি?

না, ঘুম আসছে না,

তাইলে বসে বসে কিছু একটা লেখো।

শোন একটা ছেলে বারবার মিসকল দিচ্ছে।

মিসকল দিচ্ছে, ছেলে বুঝলে কেমনকরে?

প্রথমে কয়েকবার মিসকল তারপর, কল দিল ছেলেমানুষের কণ্ঠ বলে আমি ফোন রেখে দিলাম।

কেন, আমার পরিচিত কেউ হতেওতো পারে?

আরে তোমার পরিচিত না, তোমার পরিচিত সবাই কেমন আমি জানি, তোমারেকোনও বন্ধু ফাউল না যে এতোরাতে আমাকে ফোন দেবে।

তাইলে ফোন বন্ধকরে ঘুমাও!

ইশ! তুমি যদি ফোন করে আমাকে না পাও!

তাইলে ওই নাম্বারটা স্ক্রিন্ড করে রাখো!

না, নাম্বারটা আমি এখনই বন্ধ করে দেবো। ভাইয়াকে ফোন দেই?

এতোরাতে?

তুমিদেও।

আমি পারবো না,

ও ছেলেটার নাম্বারটা আমাকে নিতে বলে, বলে তুমি একটু দেখোতো কে?

আমি নাম্বার নিলাম না, বললাম ফালতু সময় নষ্ট করে লাভ নাই

ঝড়ি দেও, তুমিতো ভালো ঝাড়ি দিতে পারো।

লাভ? সেও আমাকে ঝাড়ি দেবে, গালি দেবে, তুমি কী চাও তোমার জন্য আমি গালি শুনি?

তবু নাম্বারটা নেও, দেখোতো চিনতে পারো কি না?

ফ্রি মেসেজ পাইছ না? মেসেজ করে পাঠাও।.. .. ..



তো যা বলছিলাম,

দেখলেনতো কী বিরক্ত করে! কোথায় ভাবলাম একটা গল্প লিখবো , আর হলো? যত্তোসব।

আজ তাহলে আসি বাকীটা আরেকদিন।...

ও হ্যাঁ. ওর ম্যাসেজ পেয়েছি, দাড়ান নাম্বারটায় ফোন করে একটা কড়া ঝাড়ি দেই.. আছেনতো আমাদের সঙ্গে?



নাম্বারটা বাংলালিংক এর ০১৯১১১৫৪৩৩৩

হ্যালো কে ভাই?

আপনি কে?

আমি অমুক!

কাকে চাচ্ছেন?

কাউকে চাচ্ছি না, দয়াকরে আপনার নামটা বলবেন? আমিতো আমার নাম বলেছি।

আমার নাম শরীফ। আপনি কাকে চান?

কী করেন আপনি?

আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি।

বুঝলাম পড়ালেখা করেন, তো কোন সাবজেক্টে?

আইটিতে।

তো আমাকেকি আপনি চেনেন?

নাতো!

তো এই নাম্বারটা(ওর নাম্বারটা)চেনেন?

নাতো ভাই্

আপনি কি এই নাম্বারে কখনও কল বা মিসকল দিয়েছেন?

নাতো।

এই কুত্তারবাচ্চা, কল দেসনাই মিসকল দেসনাই তাইলে তোর নাম্বার আমি কই পাইলাম? শালা ইডিয়েট! মনে করেছিস তোর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিক্ষকরা যা খুশি কইরা সরকারকে চাপদিয়া পাড় পাইয়া গেছে বলে তোর যা খুশি করবি? দাড়া, দেখ কী করি?

ওকে ফোন দিলাম বললাম একটা সিম বন্ধ কইরা কোনও লাভ নাই। তারচে দেখো অরে আমি ক্যামনে সাইজ করি।

ব্লগীয় বন্ধুরা দায়িত্বটা কিন্তু আপনাদেরও।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:১১

শান্তির দেবদূত বলেছেন: কঠিন দায়িত্ব বস্‌ !! আমার এখান থেকে Overseas কল বাংলাদেশী টাকায় ১৫ টাকা মিনিট !!!

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:২৯

লাবণ্য বলেছেন: থাক ভাই অন্যের বারোটা বাজাতে গিয়ে নিজের চাকা পাংচার কইরেন না, ধন্যবাদ ইচ্ছাশক্তি জানাইবার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.