নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন

লক্ষণ ভান্ডারী

কবিতা

লক্ষণ ভান্ডারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী (ধর্মীয় কবিতা) পৌরাণিক তথ্য সহ

১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:১৫

শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ( পৌরাণিক তথ্য)
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী




ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হলেন বিষ্ণুর অবতার। তার পবিত্র জন্মতিথিকে বলা হয় জন্মাষ্টমী।জন্মাষ্টমীতে ঘরে ঘরে ভক্তরা উপবাস থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা ও পূজা, গীতাযজ্ঞ, জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রা, কৃষ্ণপূজা, পদাবলি কীর্তন করে থাকেন।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রাচীন ধর্মীয় উৎসব। দিবসটিকে কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তীসহ নামেও অভিহিত করা হয়।
পৃথিবী থেকে দুরাচারী দুষ্টদের দমন আর সজ্জনদের রক্ষার জন্যই এ মহাবতার স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। ধর্মগ্রন্থ গীতাও সেই সাক্ষ্য দেয়,………..

‘যদা যদাহি ধর্মস্য গ্লানি ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানম ধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম।
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশয় চ দুষ্কৃতাম।
ধর্ম সংস্থাপনার্থায় সম্ভাবামি যুগে যুগে।
(জ্ঞানযোগ ৭/৮)

হিন্দু সনাতন বিভিন্ন শাস্ত্রে তার মহিমার কোনো অন্ত নেই, নাম ও উপাধির,…… যেমন বেদে বলা হয়েছে ঋষিকৃষ্ণ ও দেবতাকৃষ্ণ। মহাভারতে রাজর্ষিকৃষ্ণ, শাসক ও প্রজাপালক কৃষ্ণ, অত্যাচারী দমনে যোদ্ধাকৃষ্ণ। ইতিহাসে যাদবকৃষ্ণ ও দর্শনশাস্ত্রে সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ কৃষ্ণ। শ্রীমদ্ভগবদ গীতায় অবতারকৃষ্ণ, দার্শনিক কৃষ্ণ, পুরুষোত্তম কৃষ্ণ ও ঈশ্বরায়িত কৃষ্ণ।

দ্বাপর যুগের শেষদিকে মথুরা নগরীতে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব। তার জন্ম অত্যাচারী রাজা কংসের কারাগারে, যিনি কিনা তারই মামা। মগধ অধিপতি জরাসন্ধ ১৮ বার মথুরা আক্রমণ করে ব্যর্থ হন। তখন মথুরার রাজা উগ্রসেনের ছেলে কংসকে হাত করতে দুই মেয়েকে তার সঙ্গে বিয়ে দেন। কংস নিজেও ছিল অত্যাচারী। তার ছিল সিংহাসনের লোভ। জরাসন্ধের সঙ্গে মিলে হয়ে উঠেন আরও দুর্বিনীত। কিন্তু বংশের অন্যান্য যাদবরা চিরশত্রু জরাসন্ধের সঙ্গে আত্মীয়তাকে ধিক্কার জানায়। একসময় কংস উগ্রসেনকে বন্দি করে সিংহাসন দখল করে। তখন আত্মীয়- স্বজন ও বিশেষ করে যাদববংশ বিদ্রোহী হয়ে উঠে। তাদের শান্ত করতে যাদববংশের শুর সেনের ছেলে বসুদেবের সঙ্গে বোন দেবকীর বিয়ে দেন।

বিয়ের পর দেবকী ও বসুদেব রথে করে যাওয়ার সময় কংস দৈববানী শুনতে পান- এদের অষ্টম সন্তানই হবে তার মৃত্যুর কারণ। কংস দেবকীকে হত্যা করতে চাইলে বসুদেব আশ্বস্ত করেন, দেবকীর সন্তান জন্ম নিলে কংসের হাতে তুলে দিবেন। কংস তাদের দুইজনকে কারাগারে বন্দি করেন। এর দশমাস দশদিন পর দেবকী এক পুত্রসন্তান জন্ম দেন। সঙ্গে সঙ্গে কংসের হাতে সন্তানকে তুলে দেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বসুদেব। এভাবে একে একে খুন হয় তাদের ছয় সন্তান। অন্যদিকে, গোকুলে বাস করতেন বসুদেবের প্রথম স্ত্রী রোহিনী। রোহিনীকে দেবকীর সপ্তমগর্ভ দান করা হয়। জন্ম নেয় ছেলে বলরাম। আর দেবকী আবার সন্তানসম্ভবা হলে কারাগারে বসানো হয় কঠোর নিরাপত্তা।

চারদিকে আলোয় উদ্ভাসিত করে অষ্টমী তিথিতে জন্মগ্রহণ করেন পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ। জন্মের সময় শিশুটি চার হাতে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম ধারণ করেছিল। এ ছাড়া দেহে শোভা পাচ্ছিল মনিরত্নের অলংকার। বসুদেব ভক্তিতে করজোড়ে প্রণাম ও বন্দনা শুরু করেন। বন্দনা ও দেবকীর প্রার্থনা শেষে শ্রীকৃষ্ণ একজন সাধারণ শিশুর রূপ ধারণ করেন। এ সময় দৈবভাবে কারারক্ষীরা ঘুমিয়ে পড়ে। তখন বসুদেব শ্রীকৃষ্ণকে গোকুলে যশোদা ও নন্দের কাছে রেখে আসেন। এদের কাছে কৃষ্ণ বড় হন। বসুদেব কারাগারে যশোদা ও নন্দের সদ্যজাত মেয়েকে নিয়ে আসেন। কংস খবর পেল দেবকীর অষ্টম সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কারাগারে চলে এসে দেবকীর কোল থেকে মেয়েটিকে ছিনিয়ে নিয়ে একই ভাবে পাথরের উপরে আঁছাড় মারতেই মেয়েটি শূন্যে উঠে যেয়েই যোগমায়া মূর্তি ধারণ করে। মহাশূন্যে মিলিয়ে যাওয়ার পূর্বে কংসকে বলে গেলো, “তোমাকে বধিবে যে গোকূলে বেড়েছে সে”।

অর্থাৎ, কৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছে। এর পর পুতনা নামক এক ভয়ানক মায়াবী রাক্ষসী গোকূলে কংস দ্বারা প্রেরিত হয়েছিল , দুষ্ট প্রকৃতির ভোজবংশীয় রাজা কংস পুতনাকে প্রেরণ করেছিলেন শিশু কৃষ্ণকে হত্যা করার জন্য। এরপর কৃষ্ণের খোঁজ চলতে থাকে , কংস…… শ্রীকৃষ্ণের সন্ধান না পেলেও হাল ছাড়ে না,…. কংস তখন ছয়মাস পর্যন্ত বয়সের সব শিশুকে হত্যা করার জন্য পুতনা রাক্ষসীকে পাঠায়। [পুতনা রাক্ষসী স্তনে বিষ মাখিয়ে বিষমাখা স্তন্য পান করানোর ছলে শিশুদের হত্যা করে] কিন্তু শ্রীকৃষ্ণকে পুতনা রাক্ষসী মারতে পারে না, বরং স্তন্যপানকালে ঘাতক পুতনাই মারা যায়। কিন্তু কংস নানাভাবে ব্যর্থ হন। শ্রীকৃষ্ণ গোকূলে বড় হতে থাকেন। মুক্তির আশায় নিপীড়িত মানুষ তার অনুসারী হয়ে উঠে।

অবশেষে কংস মথুরায় মল্লক্রীড়ার আয়োজন করে আমন্ত্রণ জানান শ্রীকৃষ্ণ ও বলরামকে। সেখানে কৃষ্ণকে পিষে মারার জন্য পাগলা হাতি রাখা হয়। এছাড়া থাকে চানুর ও মুষ্টির নামে দুই খ্যাতিমান মল্লবীর। কিন্তু অন্তর্যামীরূপে শ্রীকৃষ্ণ কংসের সব চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়ে মুষ্ঠির আঘাতে হাতি, মুষ্টির ও চানুকে হত্যা করে। কংস সেনাদের অস্ত্র ধারণ করতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তখন কংস নিজেই অস্ত্রধারণ করে।

কিন্তু কৃষ্ণের লৌহমুষ্ঠির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এভাবে মথুরাবাসীকে অত্যাচারী রাজার হাত থেকে রক্ষা করেন।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে এদিনে শুধু উপাবাসেও সাতজন্মের পাপ নষ্ট হয়। তাই এ দিনে উপবাসসহ শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করা হয়। ভগবান শ্রী কৃষ্ণের অষ্টশত নাম পাঠ করা হয়।

শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী (ধর্মীয় কবিতা)
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী



কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী তিথি পবিত্র দিবসে,
মহিলা, কুমারী, বালা থাকে উপবাসে।
যুবতীরা সকলেই উপবাস করে,
মনোমত লভে পতি শ্রীকৃষ্ণের বরে।

জন্মিল যখন কৃষ্ণ কংস কারাগারে,
বসুদেব রাখি এলো যমুনার পারে।
শ্রাবণে বাদলধারা ঝর ঝর ঝরে,
কড় কড় ডাকে মেঘ অম্বরে অম্বরে।

বিজুলি ঝলসি উঠে ঘন কৃষ্ণ মেঘে,
কৃষ্ণ লয়ে বসুদেব ধায় দ্রুতবেগে।
বসুদেব নামি পড়ে যমুনার জলে,
শৃগালে দেখায় পথ অগ্রে অগ্রে চলে।

মুষল ধারায় বৃষ্টি অবিরাম ঝরে,
বাসুকি ধরিল ফনা মস্তক উপরে।
যমুনার পারে আছে নন্দের ভবন,
নন্দের ভবনে কৃষ্ণ বাড়ে অনুক্ষণ।

শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা শুন দিয়া মন,
জন্মাষ্টমী কাব্য লিখে শ্রীমান লক্ষ্মণ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আর আমারে মারিসনে মা
বলি মা তোর চরণ ধরে
ননী চুরি আর করবো না।।

ননীর জন্যে আজ আমারে
মারলি মাগো বেঁধে ধরে।
দয়া নাই মা তোর অন্তরে
স্বল্পেতে গেলো জানা।।

পরে মারে পরের ছেলে
কেঁদে যেয়ে মাকে বলে।
সেই মা জননী নিঠুর হলে
কে বোঝে শিশুর বেদনা।।

১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪৩

লক্ষণ ভান্ডারী বলেছেন: মুগ্ধ হলাম স্যার! কেমন আছেন?
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
জয়গুরু!

২| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: কিচ্ছু বুঝতে পারলাম না। মাথা ঘুরাচ্ছে।

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আচ্ছা হরে কৃষ্ণ হরে রাম যে বলে এইটার ভাবটা একটু বিশ্লেষণ করতেন ।

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৩৬

অন্তরা রহমান বলেছেন: খুব বেশি সংক্ষেপে লিখেছেন, যারা হিন্দু মিথ নিয়ে জানে না তারা ঠিকঠাক বুঝতে পারবে কিনা সন্দেহ। সুন্দর পোস্ট।

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৪৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ইয়াশমাতি মাইয়া সে বোলে নান্দলালা
রাঁধা কিউ গোরি ম্যায় কিউ কালা

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৭

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: @নেওয়াজ আলিঃ "হারে কৃষ্ণ হারে রাম" মূলত একটি মন্ত্র তবে এটার বিভিন্ন মানে আছে যা বক্তব্যের প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে। "হারে" শব্দটি মূলত সংস্কৃত "হারা" থেকে এসেছে যার মানে হলো অর্ন্তনিহীত শক্তি। "কৃষ্ণ" শব্দটির আসল অর্থ হলো কালো তবুও "হারে কৃষ্ণ" বলতে মূলত শ্রীকৃষ্ণের অর্ন্তনিহীত শক্তিকে বোঝায়। তবে স্বাভাবিকবাবে "হারে কৃষ্ণ" বলতে একটি গোষ্ঠীর নামও বোঝায় যারা সনাতন ধর্মের অনুসারী হলেও মূলত শ্রীকৃষ্ণকেই প্রধান ভগবান মনে করেন। রাম এবং কৃষ্ণ দুজনই ভগবান বিষ্ণুর যথাক্রমে সপ্তম এবং অষ্টম অবতার।

মনে রাখা জরুরী যে, সনাতন ধর্মের ত্রিদেব (তিনজন ভগবান) ধারনায় বিষ্ণু, শিভ এবং ব্রহ্মা হলো মূল ভগবান। এই ধারনায় বিষ্ণুকে যারা প্রধান ভগবান মনে করেন তাদেরকে বৈষ্ণব, শিভকে যারা প্রধান ভগবান মনে করেন তারা শিভাইটস বা শৈবিসম/শিভইসম ধারনার অনুসারী। বলা হয়ে থাকে ভগবান শিভ, ভগবান ব্রহ্মার পুজো নিষিদ্ধ করেছিলেন যদিও কোথাও কোথাও তার অনুসারী খুঁজে পাওয়া যায় তবে তা সংখ্যার খুব কম। অন্যদিকে অনেকে শক্তিইসম অনুসরণ করেন বা দেবী পুজো করেন তাদের ধারনা অনুযায়ী শক্তি বা দেবীই মূলত সকল ক্ষমতার উৎস। এর মাঝেও বিভিন্ন গোত্র আছে। সমরতা প্রথায় অবশ্য পাঁচজন ভগবানকে মূল হিসেবে ধরা হয়ে থাকে, এদের মধ্যে বিষ্ণু, শিভ, গণেশ, সূর্যদেবতা ও দেবী অর্ন্তগত। পুরো ব্যাপার বোঝার জন্য বেশ সময় ব্যয় করে পড়াশোনা করার প্রয়োজন আছে।

বিঃদ্রঃ আমার বক্তব্যে বা জানায় ভুল থাকতে পারে, সেরকম কিছু মনে হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ থাকলো। ধন্যবাদ।

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি অন্য ব্লগারদের লেখা পড়েন বলে মনে হয় না।

৮| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:
কৃষ্ণ তুমি কৃষ্ণ বটে
পেয়েছে যে ধন্য ত্রিঘাটে,
বাংলায় তুমি অবতার-
আরবীতে নবী মানে তার

যুগে যুগে কালে কালে
ত্রাতা রুপে গেছো আসবে বলে
কৃষ্ণত্ব খোঁজেনা কেউ এ কালে
আপনা মাঝে কৃষ্ণ বিরাজে সাধু বলে!

জন্মাষ্টমির শুভক্ষনে
স্মরি শ্রদ্ধায় ভক্তি মনে

৯| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সব ধর্মগুলো মূলতঃ কিচ্ছা কাহিনী,আর বিশ্বাস

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.