নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রবাস থেকে লিখছি. .....

রফিকুজজামান লিটন

আমি একজন প্রকৌশলী।একটা মোবাইল কোম্পানিতে কামলা দিই ।নিজের সুখ দুঃখ শেয়ার করতে চাই সবার সাথে। স্বপ্ন দেখি একটা সুন্দর বাংলাদেশের।

রফিকুজজামান লিটন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনে প্রথম পাত্রী দেখা আর বাস্তবতা ( ভাইয়াদের কাজে লাগতে পারে, আপুরা দূরে থাকুন)

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪৩

বন্ধু বলল তার ওখানে ঘুরার মতো অনেক জায়গা আছে। আমি যেন একবার হলেও বেড়াতে যাই। ভাবির(বন্ধুর স্ত্রী) উৎসাহ দেখি আরেকটু বেশি।বললেন আসেন আপনার সাথে দেখাও হবে আর এইখানে একটা পাহাড় আছে দেখে যেতে পারবেন। ও আর একটা মেয়ে আছে দেখতে পারেন। প্রবাসে একা একা বোরিং লাইফ লিড করছি। কেউ ঘুরতে জাওয়ার কথা বললে না করতে পারিনা। নিজের গাড়ি না থাকায়(ডাইভিং পরীক্ষায় ফেল করতেছি)ঘুরে খুব একটা মজা পাচ্ছিনা।



তিন ঘণ্টা জার্নি শেষে বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছানোর পর এক ভদ্রলোক(পাত্রীর বাবা) এবং ভাবি পুরাতন একটি মারসিডিস গাড়ি করে নিতে এসেছেন। ভাবি অনেক বেশি পর্দানশীল তার চোখ ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না কিন্তু তার কথা এবং বলার ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে তিনি অমায়িক ভদ্র একজন মানুষ। আমার মনের মধ্যে যে ভয়, জড়তা এবং লজ্জা ছিল মুহুতেই উরে গেল।



পাত্রীর বাসায় তার ছোট বোন(ক্লাস এইটে ছাত্রী) এবং ছোট দুই ভাই (ক্লাস ফোর ফাইভ হবে)এর সাথে বসে গল্প করছি। তার ছোট বোন খুব সুন্দর করে মাথা হেলিয়ে দুলিয়ে হাত মুখ নেরে গল্প করছে। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে গল্প শুনছি। মাঝে মাঝে ইংরেজিতে কথা বলছে। প্রথমে কিছুটা খারাপ লাগলেও পরে মনে হল ওর জন্ম বেড়ে ওঠা এখানে পড়ছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে।ও যে বাংলা বলতে পারছে এতেই আমি অনেক খুশি।ছোট দুই ভাই চুপচাপ এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে আমাকে নিখুঁত ভাবে দেখছে। [ছোটরা ছোট হলেও তাদের সিক্সথ সেন্স যে অনেক বেশি সেটা বুঝেছিলাম আমার কেজি টু পড়ুয়া ভাগ্নির কাছ থেকে। আমি যখন ওকে নিয়ে বেড়াতে যেতাম তখন ও কোন মেয়ে কে দেখেই বলত কাকে মামী বানান যাবে আর কাকে বানান যাবে না। এতো ছোট মানুষের বুদ্ধি দেখে সত্যিই আচার্য হয়ে যেতাম। যাক সে মজার গল্প আরেকদিন লিখব।]



ছোট বোন গল্পের মাঝে আমাকে একটা ভয়ঙ্কর তথ্য দিল যে সে বাঙালি হিসাবে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে। এতো ছোট মানুষের কি ভহঙ্কর কথা। আমি কারন জানতে চাইলে বলল এক বাংলাদেশী দাওয়াত দিয়ে এক পাঠানকে বাড়ি ডেকে নিয়ে খুন করছে এবং তার লাশ কয়েক টুকরা করে বিভিন্ন যায়গায় ফেলে রাখছে। আমি তাকে থামিয়ে দিয়ে বীভৎস ঘটনার কারন কি জানতে চাই। আমি দেশে এমন ঘটনা অনেক শুনেছি। আমি যখন এই ধরনের খবর পেপারে হেডিং দেখতাম ওই পেজে ভুলেও যেতামনা।টিভিতে হলে সাথে সাথে চ্যানেল চেঞ্জ করতাম। পাঠান বাঙ্গালির কাছে কিছু টাকা পেতো এইজন্য তাকে খুন করেছে। এক বাংলাদেশী আরেক বাংলাদেশিকে খুন করছে। এক জোড়া স্যান্ডেলের জন্য নিজেদের মধ্যে মারামারি করে তিন বাংলাদেশী খুন।এদেশে জেলখানায় ৭০% ই বাংলাদেশী।এধরনের অনেক গল্প বলল। আফসোস... কবে বাঙালি মানুষ হবে ??



খাবারের পর্ব শেষ করার পর পাত্রী এবং তার বড় বোন কথা বলতে আসছে।বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছি। পাত্রীর কথায় তার বয়স ১৭ তার আম্মার কথায় তার বয়স ১৮। আমার কাছে ১৩-১৪ বছরের বালিকা। সে এ লাভেল পরিক্ষা দিয়েছে। আমার নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি আগে কোন কিছু না জেনে কেন এসেছি? নিজেই নিজেকে ভৎসনা করছি। জীবনের প্রথম এই পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা মাথায় বের হওয়ার উপায় খুজছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল হবে মনে মনে ঠিক করছি। আচ্ছা একজন বাবা কেন এতো ছোট মেয়েকে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন, আমার মাথায় আসছে না।আমার মনে হচ্ছে সে তার পাচ সন্তানের শিক্ষার খরচ(এখানে শিক্ষা খরচ খুবই ব্যায়বহুল) দিতে বরই ক্লান্ত। কোন মতে মেয়েকে বিদায় দিতে পারলেই বেচে যান।[একবার আমার বাবা আমার ছোটবোনের বিয়ের কথা বলছিলেন, আমি এতো খ্রিপ্ত হয়েছিলাম যে বাবা আর কোনদিন এই কথাই মুখে আনেনি। আমার ছোট বোন এখন একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে]



পাত্রীর বড় বোন এ লেভেলে রেকর্ড পরিমান মার্ক পাওয়ায় গর্ভমেনট থেকে গোল্ড মেডেল পেয়েছে। এখন সে UAE গর্ভমেনট থেকে ইস্কলারশিপ নিয়ে বিখ্যাত একটি বিশবিদালয়ে BBA তে পড়াশুনা করছেন। যেমন মেধাবি তেমন সুন্দরি। আমার কাছে সুন্দরী দুই ধরনের ১। দেখতে সুন্দর খুবই সুন্দর মুখের দিকে তাকালে কড়া কড়া ভাব। ২। এ ধরনের সুন্দরীরা মায়াবি হয়, মুখের দিকে তাকালে নিজের অজান্তেই মায়া জন্মে যায়। ইনি দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে পরেন। আমার ধারনা ছিল সুন্দরী মেয়েরা বেকুব টাইপের হয় সে ভুল এখানে এসে ভেঙ্গে গেল। তার কথা বলা , পোশাক পরিধান, ভদ্রতা এক কথায় অতুলনীয়। শুনেছি UK প্রবাসি একজনের সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। পড়াশুনা শেষ করে বিয়ে করবেন।



[বাঙালিরা অথিতিপরায়ন আর প্রবাসে এটা অনেক বেশি মনে হয়। সবাই মনে হয় সবার কতো আপন। আমি অনেক বাঙালি পরিবারে গেছি কি যে আনান্দ হয় বলে বুঝান যাবে না। বিশেষ করে বাচ্চাদের আনান্দ দেখার মতো।] বিদায় বেলা সবাই গেট পর্যন্ত এসেছে । সবার চোখে এক ধরনের মায়াবি চেহারা। থাক মায়া বাড়িয়ে আর লাভ নাই, আমিতো তাদের কেও নই। বিদায়বেলা আমি পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে আছি। যতদূর চোখ যায় পাহাড় উচু থেকে উচুতর হচ্ছে।



জীবন চলুক জীবনের মতো

পিছন ফিরে তাকানোর সময় কই !!

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০০

সাইদুল অপু বলেছেন: ভাল

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১১

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১৬

হাসান রেজভী বলেছেন: হুম ....

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:২৫

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: .... :)

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:২৯

দি সুফি বলেছেন: এ লেভেল পড়ুয়া হলে বয়স ১৬ থেকে ১৮ এর ভিতর হওয়ার কথা! আপনার কাছে ১৩-১৪ মনে হল কেন? ১৭-১৮ কিন্তু মেয়েদের বিয়ের জন্য কম বয়স নয়।

আর ভাই, বিদেশে বাংলাদেশীদের কর্মকান্ড দেখে আসলেই বেশ লজ্জা লাগে। সারা বিশ্বের কাছেই তারা নিজের দেশকে ছোট করে ফেলছে। :(

লেখাটা ভালো লেগেছে। আর দোয়া করি খুব শীঘ্রই বিয়ে-সাদী করে সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাবেন :)

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩৮

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: সুফি ভাই, বয়স ১৭-১৮ হবে কিন্তু তার মুখাকৃতি এবং মানসিক অবস্থা দেখে মনে হইছে ১৩-১৪ বছরের বালিকা।

লেখাটা ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা সবসময়!!

৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩০

খেয়া ঘাট বলেছেন: জীবন চলুক জীবনের মতো
পিছন ফিরে তাকানোর সময় কই !

পিছনের স্মৃতি না থাকলে সামনে চলবেন কীসের আশায়।

লিখাটি ভালো লেগেছে।
++++++++

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪২

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: সামনে চলব ভবিষ্যতের আশায় :P :P :P
লেখাটি ভাল লাগার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

৫| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪৪

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: সুন্দর কিছু অনুভূতির পরিচয় পেলাম আপনার লেখাটিতে। বিদায় বেলায় সবাই আপনাকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছে। এই আন্তরিকতা মুগ্ধ করার মতো।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫৩

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: খুবই ভাল লাগছে যে, আমি কিছু অনুভূতি শেয়ার করতে পেরেছি।

আমরা বাঙালিরা(বিশেষ করে মা বোনেরা) আথিথিয়তার বিষয়ে খুবই আন্তরিক।

৬| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

রাসেল রাসেল রাসেল বলেছেন: ভাইয়া, বিয়েটা করেই ফেলুন এবার... :D

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৯

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: কাকে কবে কোথায় ?? :P :P

৭| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৭

মেহেরুন বলেছেন: হুম!! আপনার পাত্রী দেখার অভিজ্ঞতা তো খারাপ না। বেশ ভালো করে গুছিয়ে লিখেছেন। ভালো লাগলো। এর পরে আপনার বিবাহের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ভুলবেন না :) :)

আপাতত আমার বিয়ের অভিজ্ঞতা পড়ে দেখতে পারেন সময় পেলে

এলোমেলো- ১১ (আসেন গল্প করি...)

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩১

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। আপনি তো খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখতে পারেন।

৮| ০১ লা মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১০

ভাইটামিন বদি বলেছেন: বিবাহ কি হৈছে জনাব??? হৈলে সুখে থাকেন.......আর না হৈয়া থাকলে দাওয়াতের অপেক্ষায় রইলাম কিন্তুক!!!!

০১ লা মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১৮

রফিকুজজামান লিটন বলেছেন: না জনাব ..... তিত্থের কাকের ন্যায় চাইয়া আছি। কে কবে এসে হাত ধরে বলবে চল না গো :P :P

আপাতত পপকন নিয়ে গ্যালারিতে বসেন :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.