নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিলোয়

আমার সম্পর্কে কিছু লিখব

বিলোয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জন্ম – মৃত্যু

২১ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯

শহীদ প্রেসিডেন্ট
জিয়াউর রহমানের ২৮ তম
মৃত্যুবার্ষিকী। বহুদলীয় গনতন্ত্রের
প্রবর্তক শহীদ জিয়া ছিলেন বাংলার
আকাশের সবচেয়ে উজ্জল নক্ষত্র।
স্বাধীনতা উত্তর দুর্ভিক্ষ পিড়িত
জনগন শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর
যখন শুধু অনিষচয়তা আর হতাশা
ছাড়া আর কিছুই চোখে দেখছিলনা ,
ঠিক তখনই জিয়া জালিয়েছিলেন
আশার আলো, বাংলাদেশের জনগন
বুকে বেধেছিল অনেক বড় স্বপ্ন।
কিন্তু দেশ বিরোধী ঘাতক চক্র
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র ” এর
সহযোগীতায় নির্মম ভাবে শহীদ করে
প্রেসিডেন্টকে। তার শাহাদাতে জাতি
কলংকিত। সেদিনই আমরা সেই
কলংক থেকে মুক্ত হতে পারব যেদিন
আমরা গড়তে পারব জিয়ার স্বপ্নের
সেই সোনার বাংলাদেশ।
তোমার মৃত্যুবার্ষিকিতে আমাদের
শুধু মহান প্রভুর কাছে দোয়া করা
ছাড়া আর কিছু করার নাই।হে মহান
নেতা আমাদের যে আজ হাত পা বাধা।
প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তা যেন
আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে
তোমার মত সিংহ সাহস দেন।
আসুন, আমরা আবার শহীদ জিয়া
সম্পর্কে কিছুটা জানি।
জন্ম ও শৈশব
জিয়াউর রহমানের জন্ম ১৯
জানুয়ারী ১৯৩৬ সালে বগুড়ার
বাগবাড়ীতে। তার বাবা মনসুর রহমান
একজন রসায়নবিদ হিসেবে
কলকাতাতে সরকারী চাকুরী করতেন।
তার শৈশবের কিছুকাল বগুড়ার গ্রামে
ও কিছুকাল কলকাতাতে কেটেছে।
দেশবিভাগের পর (১৯৪৭) তার বাবা
করাচি চলে যান। তখন জিয়া
কলকাতার হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন
এবং করাচি একাডেমী স্কুলে ভর্তি
হন। ১৯৫৩ সালে তিনি ঐ স্কুল থেকে
তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন এবং
তারপর করাচিতে ডি.জে. কলেজে
ভর্তি হন।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে জিয়া
১৯৫৩ সালে তিনি কেকুলে পাকিস্তান
মিলিটারী একাডেমীতে শিক্ষানবিস
অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৫
সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেনেন্ট
হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন। তিনি
সেখানে দুই বছর চাকুরি করেণ,
তারপর ১৯৫৭ সালে ইষ্ট বেঙ্গল
রেজিমেন্টে বদলি হয়ে আসেন। তিনি
১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা
বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালের
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তিনি
খেমকারান সেক্টরে একটি
কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন এবং
তার কোম্পানি যুদ্ধে বীরত্বের
জন্য যে সব কোম্পানি সর্বাধিক
পুরষ্কার পায়, সেগুলোর মধ্যে
অন্যতম ছিল। ১৯৬৬ সালে তিনি
পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে
একজন প্রশিক্ষক হিসেবে
দ্বায়িত্ব পান। সে বছরই তিনি
পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটা স্টাফ
কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন।
১৯৬৯ সালে তিনি জয়দেবপুরস্থ
সেকেন্ড ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের
সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে
নিয়োগ পান। উচ্চ প্রশিক্ষণের
জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানীতে যান।
১৯৭০ সালে একজন মেজর হিসেবে
তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং
চট্টগ্রামে অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল
রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড
হিসেবে নিয়োগ পান।
স্বাধীনতার ঘোষণা
২৫ মার্চের কালরাত্রিতে ১৯৭১
সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানী
হানাদার বাহিনী যখন এদেশের
নিরস্ত্র মানুষের ওপর বর্বরের
মতো ঘৃণ্য হামলা চালায় তখন এর
আকস্মিকতায় দিশেহারা হয়ে পড়ে
সবোর্স্তরের জনগণ।
১৯৭১-এর ২৬ মার্চ ঢাকায়
পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বর
আক্রমণের পর পাকিস্তান
সেনাবাহিনীর সাথে সম্পর্ক ত্যাগ
করে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামস্থ কালুরঘাট
বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার
ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। ১৭ এপ্রিল
মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে তিন
সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। তিনি
সেনা সদস্যদের সংগঠিত করে
পরবর্তীতে তিনটি সেক্টরের
সমন্বয়ে জেড ফোর্সের অধিনায়ক
হিসেবে যুদ্ধপরিচালনা করেন।
স্বাধীনতার পর প্রথমে তিনি
কুমিল্লা ব্রিগেড কমান্ডার এবং
১৯৭২ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর ডেপুটি চীফ-অফ-স্টাফ
নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালে কর্নেল,
১৯৭৩-এর মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার
এবং শেষ দিকে মেজর জেনারেল
পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী,
কুমিল্লা জেলার কিয়দংশে
মুক্তিপাগল মানুষকে মেজর জিয়া
সংগঠিত করেন এবং পরবর্তীতে
‘জেড ফোর্সের’ অধিনায়ক হিসেবে
সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে
নেতৃত্ব দেন সেই রক্তক্ষয়ী
সংগ্রামে। দীর্ঘ নয় মাস মরণপণ
লড়াই করে অজির্ত হল সবুজ
জমিনে ওপর রক্তলাল সূর্যখচিত
পতাকাসমৃদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশ-
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। লাখো
শহীদের পবিত্র রক্ত আর হাজার
হাজার মা-বোনের ইজ্জতের
বিনিময়ে অজির্ত হল এদেশের
স্বাধীনতা। গণতন্ত্র এখানে
সুপ্রতিষ্ঠিত হবে, শোষন বঞ্চনার
অবসান ঘটবে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি
অর্জিত হবে এবং আত্মনির্ভরশীল
ও মর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে
আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে
দাঁড়াব- এই ছিল সেদিনের স্বপ্ন,
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
স্বাধীনতা যুদ্ধ
স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমান
যুদ্ধের পরিক্লপনা ও তার
বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা
পালন করেন। ১৯৭১ এর জুন পর্যন্ত
১ নং সেক্টর কমান্ডার ও তারপর
জেড-ফোর্সের প্রধান হিসেবে তিনি
যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতা
যুদ্ধে বীরত্বে জন্য তাকে বীর
উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
রাষ্ট্রপতি জিয়া
১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহি
জনতা বিপ্লবের পর তিনি রাজনীতের
কেন্দ্র চলে আসেন। ১৯ শে নভেম্বর
১৯৭৬ সালে তিনি প্রধান সামরিক
প্রশাষকের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবু
সায়েমকে কৌশলে ক্ষমতা থেকে
সরিয়ে ফেলার পর ২১ এপ্রিল ১৯৭৭
সালে জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির
পদ অধীষ্ঠ হন। রাষ্ট্রপতি
থাকাকালীন জিয়া দেশে আবার
গনতান্ত্রায়নের উদ্যোগ নেন। তিনি
বহুদলীয় গনতন্র চালুর সিদ্ধান্ত
নেন। দেশের রাজনীতিতে
প্রতিযোগিতা সৃষ্টির আভাস দিয়ে
তিনি বলেন, “I will make politics
difficult for the politicians” (আমি
রাজনীতিকে রাজনীতিবিদের জন্য
কঠিন করে দেব)। ১৯৭৫ সালের ১৫
আগস্ট এক সামরিক বিদ্রোহে
রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান
নিহত হলে দেশে সামরিক শাসন জারি
করা হয়। ২৫ আগস্ট খন্দকার
মোশতাক সরকার তাঁকে
সেনাবাহিনীর চীফ অফ স্টাফ নিয়োগ
করেন। নভেম্বরে পুনরায় সেনা
বিদ্রোহ, খন্দকার মোশতাক
ক্ষমতাচ্যুত, আবূ সাদাত মোহাম্মদ
সায়েম প্রেসিডেন্ট হন। ৭ নভেম্বর
ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার বিপ্লবে
জিয়াউর রহমানকে পুনরায়
সেনাবাহিনীর চীফ-অফ-স্টাফ পদের
দায়িত্বে প্রত্যাবর্তন এবং উপ-
প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের
দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালের ৮
মার্চ মহিলা পুলিশ গঠন, ১৯৭৬-এ
কলম্বোতে জোটনিরপেক্ষ
আন্দোলন সম্মেলনে যোগদান
করেন এবং বাংলাদেশ ৭ জাতি
গ্রুপের চেয়াম্যান পদ লাভ করে।
১৯৭৬ সালেই তিনি উলশি যদুনাথপুর
থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন
উদ্বোধন করেন। ১৯৭৬-এর ২৯
নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন
প্রশাসকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন।
১৯৭৬-এ গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী
গঠন, ১৯৭৭-এর ২০ ফেব্রুয়ারি
একুশের পদক প্রবর্তন, এপ্রিলের
২১ তারিখ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট
হিসাবে শপথ গ্রহণ। মে মাসে ১৯
দফা কর্মসূচি ঘোষণা এবং আস্থা
যাচাইয়ের জন্য ৩০ মে গণভোট
অনুষ্ঠান ও হাঁ-সূচক ভোটে বিপুল
জনসমর্থন লাভ করেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
(বিএনপি)
১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর
জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দল সংক্ষেপে
বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে
বেগম খালেদা জিয়া এর সভানেত্রী।
জিয়া প্রবর্তিত উন্নয়নের
রাজনীতির কতিপয় সাফল্য:
সকল দলের অঃশগ্রহণের মাধ্যমে
রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন
অনুষ্ঠান; জাতীয় সংসদের ক্ষমতা
বৃদ্ধি; বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের
স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া; দেশে কৃষি
বিপ্লব, গণশিক্ষা বিপ্লব ও শিল্প
উৎপাদনে বিপ্লব; সেচ ব্যবস্থা
সম্প্রসারণের লেক্ষ্য স্বেচ্ছাশ্রম
ও সরকারী সহায়তায়র সমন্বয়
ঘটিয়ে ১৪০০ খাল খনন ও পুনর্খনন;
গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করে
অতি অল্প সময়ে ৪০ লক্ষ মানুষকে
অক্ষরজ্ঞান দান; গ্রামাঞ্চলে
শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা
প্রদান ও গ্রামোন্নয়ন কার্যক্রমে
অংশগ্রহণের জন্য গ্রাম
প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি) গঠন;
গ্রামাঞ্চলে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি
বন্ধ করা; হাজার হাজার মাইল
রাস্তা-ঘাট নির্মাণ; ২৭৫০০ পল্লী
চিকিৎসক নিয়োগ কের গ্রামীণ
জনগণের চিকিৎসার সুযোগ
বৃদ্ধিকরণ; নতুন নতুন শিল্প
কলকারখানা স্থাপনের ভেতর দিয়ে
অর্থনৈতিক বন্ধ্যাত দূরীকরণ;
কলকারখানায় তিন শিফট চালু করে
শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি; কৃষি উৎপাদন
বৃদ্ধি ও দেশকে খাদ্য রপ্তআনীর
পর্যায়ে উন্নীতকরণ; যুব উন্নয়ন
মন্ত্রাণালয় ও মহিলা বিষয়ক
মন্ত্রণালয় সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুব ও নারী
সমাজকে সম্পৃক্তকরণ; ধর্ম
মন্ত্রণালয় প্রতিষ্টা করে সকল
মানুষের স্ব স্ব ধর্ম পালনের
সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরণ; বিজ্ঞান
ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সৃইষ্ট করে
প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন;
তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামের জনগণকে
স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা ও
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করণ
এবং সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে দেশ
গড়ার কাজে নেতৃত্ব সৃষ্টি করার
লেক্ষ্য গ্রাম সরকার ব্যবস্থা
প্রবর্তন; জাতিসংঘের নিরাপত্তা
পরিষদে নির্বাচনের মাধ্যমে
বাংলাদেশের আসনলাভ; তিন
সদস্যবিশিষ্ট আল-কুদস কমিটিতে
বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি; দক্ষিণ
এশীয় অঞ্চলে ‘সার্ক’ প্রতিষ্ঠায়
উদ্যোগ গ্রহণ; বেসরকারিখাত ও
উদ্যোগকে উৎসাহিতকরণ;
জনশক্তি রপ্তানি, তৈরী পোশাক,
হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্পসহ সকল
অপ্রচলিত পণ্যোর রপ্তানীর দ্বার
উন্মোচন; শিল্পখাতে বেসরকারি
বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি ও
বিনিয়োগ ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
তার সময় মুসলিম বিশ্বের সাথে
বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত হয়।
ব্যপক বিস্তৃত হয় বানিজ্য
নেটওয়ার্ক।
মৃত্যু জিয়ার জানাজায় জনসমাগম
৩০ মে, ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক
ব্যর্থ সামরিক অভ্যুথানে জিয়া
নিহত হন। তাকে শেরে বাংলা নগরে
দাফন করা হয়। জেনারেল জিয়ার
জানাজা বাংলাদেশের ইতিহাসের
অন্যতম বৃহৎ জনসমাগম ঘটে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.