নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!
শিবলী ভাই এর সাথে আমার পরিচয় ০৩ বছর হলো। আমি তখন অন্য একটি গ্রুপে কর্মরত ছিলাম। ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দেখলাম। ফ্রি ফায়ার ফাইটিং ট্রেনিং দেওয়া হবে। আমাদের ফ্যাক্টোরীতে তখন ফায়ার সেফটির উপর ট্রেনিং দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। তাই আগ্রহী হয়ে ফোন দিলাম ট্রেনিং এর বিষয়ে। সেই সূত্রে শিবলী ভাই এর সাথে পরিচয় ঘটলো।
ওনাকে যখন প্রথম দেখি তখন খুব একটা গুরুত্ব দেইনি। ভেবেছিলাম কোনো কোম্পানীর বিজনেস ডেভলপমেন্ট এক্সিকউটিভ হবেন। কিন্তু যখন তার বিজনেস কার্ডটি বাড়িয়ে দিলেন তখন কিছুটা তজ্জব হয়ে গেলাম। কারন তিনি ছিলেন ঐ কোম্পানীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর। সময়ের সাথে সাথে ওনার সাথে হৃদ্যতা বাড়তে থাকে এবং একদিন তার কাছে তার সফলতার গল্পটা জানতে চাইলাম।
মাহামুদ রশিদ শিবলী। তিনি পেষায় একজন ব্যবসায়ি। চার ভাই বোনের মাঝে তিনি সবার ছোটো। লেখাপড়া করেছেন আহসানউল্লা ইউনিভার্সিটিতে।
ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ভিন্ন কিছু করার চিন্তা করেন। পড়ালেখা শেষ করে চাকুরী না করে নিজে কিছু করার স্বপ্ন দেখলেন। তার সাথে জোট বাধলেন তার এক কাজিন।
সময়টা তখন খুব সম্ভব ২০০০ সাল । রোজার মাসে তারা ঠিক করলেন ব্যবসা করবেন। খুব অল্প সময়ে প্রস্তুতিহীন ভাবে শুরু করলেন। যেহেতু রোজার মাস তাই তারা ভোজ্য তেলের ব্যবসা শুরু করলেন। এবং প্রথম উদ্দোগে ব্যর্থ হলেন।
প্রথম উদ্দোগে ব্যর্থ হলেও তারা হাল ছেড়ে দেননি। নতুন মনোবলে আবার শুরু করলেন। এবার কাপড়ের ব্যবসা। সিরাজগঞ্জ থেকে কাপড় কিনে ঢাকায় বিক্রি করবেন। অনেক খোজ খবর নিলেন কোথায় পাইকারী কাপড় বিক্রি হয়। ঢাকার মার্কেটে কিভাবে বিক্রি করা যাবে, ইত্যাদি।
শিবলী ভাই এবং তার কাজিন দেখলেন সিরাজগঞ্জ থেকে কাপড় কেনা সহজ হলেও ঢাকার মার্কেটে বিক্রি করাটা খুব কঠিন কাজ। তারা বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করতে লাগলেন কিন্তু আশানুরূপ ফল পেলেন না। এরকম একটা সময়ে মিরপুর এ একজন গামছা বিক্রেতার সাথে তাদের পরিচয় হয়। প্রথমে তিনি তার ব্যবসার নিয়মকানুন বলতে না চাইলেও পরে রাজি হন। ওনার কাছ থেকে বুদ্ধি পরামর্শ নিয়ে তারা শুরু করলেন গামছার ব্যবসা। এবার তারা লাভের মুখ দেখলেন।
পাইকারী বাজার থেকে গামছা কিনে ঢাকার বাজারে বিক্রি করে সব খরচের পর দেখলেন হাতে খুব বেশি টাকা থাকছে না। তখন তারা চেষ্টা করলেন কিভাবে তাতীদের কাছ থেকে সরাসরি প্রোডাক্ট কেনা যায়। এক পর্যায়ে তারা নিজেদের একটি সাপ্লাই চেইন তৈরি করে ফেললেন।
২০০২ সালের দিকে তারা ব্যবসার নতুন উদ্দোগ নিলেন। গ্রাসশপার টেক্সটাইল লিমিটেড। সিরাজগঞ্জে ০৫টি তাঁত মেশিন এবং কারিগর নিয়ে যাত্রা শুরু। এরপর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি ছোট এই কারখানাটিকে বেশ বড় একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেন।
২০১০ সালে এসে শুরু করেন ফা্য়ার সেফটি ইকুইপমেন্টের ব্যবসা। এতদিনে তিনি যথেষ্ট পরিনত এবং আর্থিক ভাবেও স্বচ্ছল হয়েছেন। ২০১২ সালে তিনি শুরু করেন ফায়ার ডিটেক্টশন এন্ড প্রোটেক্টশেন ইকুইপমেন্টের ব্যবসা।
তখন একর্ড এলায়েন্সের চাপে সব গার্মেন্টস ফ্যাক্টোরীতে ফায়ার ইস্যুতে জিরো টলারেন্স চলছে। কমপ্লায়েন্স মিট করার জন্য ফ্যক্টোরী ম্যনেজমেন্ট ফায়ার হাইড্রেন্ট, এড্রেসেবল সেন্ট্রাল স্মোক ডিটেক্টর, ফায়ার এলার্ম সিস্টেম ইন্সটল করার জন্য ব্যস্ত। এ সময়টাতে তিনি চলতি হওয়া বুঝে শুরু করলেন ফায়ার ডিটেক্টশন এন্ড প্রোটেক্টশেন ইকুইপমেন্টের ব্যবসা। এবং দেখতে দেখতে মাত্র চার বছরের মাঝে তার গ্রসশপার প্রাইভেট লিঃ কে পরিনত করলেন গ্রসশপার কর্পোরেশনে। গত মাসে তিনি সিঙ্গাপুরে অফিস নিয়েছেন। গ্রোবাল ইয়াং লিডারশীপ ক্যাম্পেইনের সাথে জড়িত আছেন এছাড়া বাংলাদেশ ফায়ার ডিটেক্টশন এন্ড প্রোটেক্টশেন ইকুইপমেন্টস মার্চেন্ট এসোসিয়েশন এর তিনি সেক্রেটারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মধ্য ত্রিশের একজন মানুষ যে সফলতা অর্জন করেছেন তা আমাদের চেনা জানা সার্কেলে রীতিমত ঈর্ষনীয়। তিনি তার অতিতকে এখনও ভুলে যাননি। সিরাজগঞ্জ থেকে বাসে করে গামছা নিয়ে ঢাকায় ফেরার সয়ম যে ছবিটা তুলেছিলেন তা এখনও মাঝে মাঝে ফেসবুকের প্রোফাই পিকচার হিসাবে ব্যবহার করেন।
আমাদের চার পাশে শিবলী ভাই এর মত এমন অসংখ্য উদাহরন ছড়িয়ে আছে। হতাস না হয়ে আমাদের তরুন সমাজকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু
উত্তরা, ঢাকা।
০৫/০৯/২০১৬
www.facebook.com/snalam.raju
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৮
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৮
মোঃ আক্তারুজ্জামান ভূঞা বলেছেন: লেগে থাকলে সফলতা আসবেই।