নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবসম্পদ ও কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনা আমার পেশা হলেও, লেখালিখির মাধ্যমে নিজের ভাবনাগুলো ভাগ করে নিতে আমি সবসময় আগ্রহী।

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু

আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্নজ ও একটি মোটরবাইকের গল্প

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

কবে ঠিক মনে নেই তবে খুব সম্প্রতি কাগজের প্রথম পাতায় একটি খবর বেরিয়েছিল। মোটরবাইকের জন্য পুত্র তার বাবাকে হত্যা করেছে। ব্যস্ততার কারনে সংবাদের পুরোটা পড়া হয়নি। তবে মনে গেথে গেছে।

ইদানিং আমরা নিজেদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। যখন তখন সামান্য কারনে নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি। ফলশ্রুতিতে সৃষ্টি হচ্ছে না রকমের অনাকাঙ্খিত ঘটনা।

খবরের কাগজের ঐ সংবাদটা পড়ে অনেকদিন আগে হাড়িয়ে যাওয়া একজন মানুষের কথা মনে পড়ে গেল।

১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৯০। সদ্য যৌবনে পা রাখা একজন তরুন। আবেগের বশে এমন একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো যার কারনে তার নিজের জীবন এবং পরিবারের স্বপ্ন দুটোই চিরতরে শেষ হয়ে গেল।

আমার মায়েরা ছিলেন চার ভাই বোন। প্রথমে বড় ভাই এরপর দুই বোন এবং সবশেষে ছোট ভাই। সবার ছোট হওয়ার কারনে বাবা মা এবং ভাই বোনের কাছে ছোট মামা অত্যাধিক প্রশ্রয় পেতো।

নানা কর্মসূত্রে রাজশাহী থাকার কারনে ছোট মামা এবং নানীকে ওখানে নিয়েছিলেন। মামাকে রাজশাহী সরকারী কলেজে এইচ.এস.সি ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি করে দেন। পরিবারের বাকি সদস্যরা তখন খুলনাতে থাকতো। মামা যথারীতি রাজশাহীতে তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে লাগলেন। মামা খুব মিশুক স্বভাবের ছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি করতে পারতেন।

আমরা তখন খুলনাতে থাকতাম। ক্লাস থ্রীতে পড়ি। হটাৎ একদিন সকালে বড়মামা আমাদের বাসায় এসে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন আর বলতে লাগলেন এলিট আর নেই। আত্নহত্যা করেছে। আমি বা আমরা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না মামা কি বলছেন। কেন ছোটমামা আত্নহত্যা করতে যাবে ?

পরে জানতে পারলাম তার এক বন্ধুর মোটরবাইক ছিল। মামারও মোটরবাইক কেনার শখ হয়েছিল। নানার কাছে বায়না ধরেছিল। নানা বিভিন্ন কথা বলে বিষয়টা কাটাতে চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অত্যধিক জেদি হওয়ার কারনে নানার কোনো কথাই সে বুঝতে চায়নি। আবেগের বশে নিজের জীবনটা শেষ করে ফেললো।

আজ ২৬ বছর হয়েগেল। মামা মারা গেছেন। নানী মারা গেছেন তাও আজ ১০ বছর। নানার অনেক বয়েস হয়েছে। যে কোনো সময় আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিতে পারেন। এই মানুষটা মারা যাওয়ার সাথে সাথে ছোটোমামার কথা সবাই চিরতরে ভুলে যাবে। যদি ছোটমামা বিয়ে করতো তাহলে তার সংসার হতো। বৌ বাচ্চারা থাকতো। তাকে মনে রাখার মতো কিছু মানুষ অবশিষ্ট থাকতো। এতবছর পর ভুলেই গেছিলাম যে আমার একটা মামা ছিল যে মারা গেছে।

১৮ থেকে ২২ বছরের এই সময়টা খুব সেনসেটিভ। মানুষের আবেগ খুব চরম পর্যায়ে থাকে। সে সামান্য কারনে যেকোনো অনাকাঙ্খিত পদক্ষেপ নিতে পারে। এই বয়সি ছেলে মেয়েদের বিষয়ে আমাদের আরো সতর্ক হওয়া দরকার।



শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু
উত্তরা, ঢাকা।
২৫/০৯/২০১৬

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



সুচিন্তিত

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২৯

জনৈক অচম ভুত বলেছেন: অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি সন্তানকেও আবেগ কন্ট্রোল করতে শিখতে হবে।

৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪২

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
১৮-২২ বছর বয়সটা খুবই সেন্সিটিভ। সবার মাঝেই একটা জেদ কাজ করে। বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন, এই জেদটা খুব বেশি রকম বেড়ে না যায়। বরং এই জেদটা যেন তাকে পরিপূর্ণ মানুষে পরিণত করার হাতিয়ার হতে পারে - সেই দিকে খেয়াল রাখা উচিৎ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.