নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবসম্পদ ও কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনা আমার পেশা হলেও, লেখালিখির মাধ্যমে নিজের ভাবনাগুলো ভাগ করে নিতে আমি সবসময় আগ্রহী।

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু

আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রাম্প-মোদি বৈঠক ও বাংলাদেশের ভূরাজনীতি: আঞ্চলিক শক্তির পুনরুত্থানের সম্ভাবনা?

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:০৩

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ট্রাম্প-মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বৈঠকের পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচনায় উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গেলে আমাদের ট্রাম্প প্রশাসনের আগের পররাষ্ট্রনীতির দিকে ফিরে তাকাতে হবে।

ট্রাম্পের আঞ্চলিক শক্তিনির্ভর পররাষ্ট্রনীতি

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের প্রশাসন দক্ষিণ এশিয়ায় "আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য" নীতিতে বিশ্বাসী ছিল। এই নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে এই অঞ্চলের প্রধান শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং বিভিন্ন কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভারতের ওপর নির্ভর করে। এর পেছনে যুক্তি ছিলো চীনকে প্রতিহত করা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ বজায় রাখা।

ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় ভারতের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করেছিল এবং বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের মতো দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতকেই প্রধান অংশীদার হিসেবে দেখেছিল। এর ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কিছুটা পরোক্ষ ছিল।

নতুন প্রশাসনের সম্ভাব্য নীতি

ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক অবস্থান কেমন হবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মাঝে নানা মত রয়েছে।

১. ভারতকেন্দ্রিক নীতি বজায় রাখা: ট্রাম্প যদি আগের নীতিতে অটল থাকেন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আবারও দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে প্রধান ভূরাজনৈতিক অংশীদার বানাবে। এতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা আরও শক্তিশালী হতে পারে। ২. চীন প্রতিহত করার কৌশল: ট্রাম্প প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য চীনকে প্রতিহত করা। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে আরও বেশি সমর্থন দিতে পারে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের রাজনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব বাড়াবে।
৩. বাংলাদেশের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ: যদি যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে ভারতকেই প্রধান শক্তি হিসেবে দেখে, তবে বাংলাদেশের নিজস্ব কূটনৈতিক অবস্থান দুর্বল হতে পারে। এতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ

যদি ট্রাম্প প্রশাসন আবারও আঞ্চলিক শক্তিনির্ভর পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করে, তাহলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলো দেখা যেতে পারে:

রাজনৈতিক ও কৌশলগত সংলাপ বৃদ্ধি: যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেলে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চাইবে। তবে এটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক হবে, তা নির্ভর করবে ভারত-বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।

বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সহযোগিতা: যুক্তরাষ্ট্র চাইবে ভারত ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করুক, বিশেষ করে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। এতে বাংলাদেশের ওপর ভারতের নির্ভরতা বাড়তে পারে, যা স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশের স্বাধীন কূটনীতি ঝুঁকির মুখে: যদি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের ওপর অধিক নির্ভরশীল হয়, তবে বাংলাদেশ তার স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতিতে বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ভূমিকা

যুক্তরাষ্ট্র যদি দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের হাতকে শক্তিশালী করে, তবে বাংলাদেশের জন্য এটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। তবে কিছু সুযোগও তৈরি হতে পারে:

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সরাসরি সম্পর্কের উন্নয়ন: বাংলাদেশ যদি দক্ষ কূটনৈতিক নীতি গ্রহণ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক জোরদার করা সম্ভব। এতে ভারতের উপর নির্ভরশীলতা কিছুটা কমানো যাবে।

চীনের সাথে ভারসাম্য রক্ষা: বাংলাদেশকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার কৌশলগত সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে, যাতে কোনো একটি পক্ষের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে।

অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহণ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন যদি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়, তবে বাংলাদেশ এতে লাভবান হতে পারে।

ট্রাম্প-মোদি বৈঠকের পর বাংলাদেশের ভূরাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। যদি ট্রাম্প প্রশাসন আগের নীতিতে ফিরে যায়, তবে ভারত আবারও দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অংশীদার হয়ে উঠবে। এতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও গভীর হতে পারে, তবে বাংলাদেশকে কূটনৈতিকভাবে আরও সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য সর্বোত্তম নীতি হবে ভারসাম্য রক্ষা করা—যাতে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং চীনের মধ্যে অবস্থানগত সুবিধা নিয়ে কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করা যায়।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৭:০৪

কামাল১৮ বলেছেন: এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি বিশ্বে চতুর্থ।বাংলাদেশে গনতান্ত্রীক সরকার ক্ষমতার আসলে সম্পর্ক আগের মতো হতে পারে।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৫০

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ! এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তির ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে এর প্রভাব স্পষ্ট। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি বরাবরই ভারসাম্য রক্ষার কৌশলের ওপর নির্ভরশীল। গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকলে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা সবসময় পরিবর্তনশীল। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কেমন হবে, তা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক কৌশল এবং বৈশ্বিক শক্তিগুলোর নীতির ওপর।

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:২২

রাজীব নুর বলেছেন: অপেক্ষা করুন আর দেখতে থাকুন।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৫১

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: নিশ্চয়ই! ভূরাজনীতি সবসময় পরিবর্তনশীল, এবং ভবিষ্যতে কী ঘটে তা সময়ই বলে দেবে। আমরা সবাই পরিস্থিতির বিকাশ পর্যবেক্ষণ করছি এবং বিশ্লেষণ করছি। আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.