নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবসম্পদ ও কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনা আমার পেশা হলেও, লেখালিখির মাধ্যমে নিজের ভাবনাগুলো ভাগ করে নিতে আমি সবসময় আগ্রহী।

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু

আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনৈতিক পরিবর্তনের ছায়ায় রড-সিমেন্ট শিল্প: সংকট, সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৬:৪৩

বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই গভীর। একটি বদলালে অন্যটি স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবিত হয়। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন খাতে অস্থিরতা বিরাজ করছে, যার সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছে নির্মাণ শিল্প ও রড-সিমেন্ট ব্যবসা। একদিকে সরকারি প্রকল্পের স্থবিরতা, অন্যদিকে ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এ শিল্পের ব্যবসায়ীরা কঠিন সংকটে পড়েছেন।

আমাদের দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন অনেকাংশে সরকারি প্রকল্পের উপর নির্ভরশীল। বছরের পর বছর ধরে চলা বড় বড় মেগা প্রকল্প শুধু শহরের দৃশ্যপট বদলায়নি, বরং একটি বিশাল শিল্পের ওপর নির্ভরশীল লাখো মানুষের জীবনযাত্রাকে সচল রেখেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এই গতি থমকে গেছে। নতুন সরকার গঠনের অনিশ্চয়তা, পুরনো প্রকল্পগুলোর বন্ধ হয়ে যাওয়া, এবং বিনিয়োগের প্রতি মানুষের অনীহা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

রাজধানীর বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায়, রড ও সিমেন্টের বাজারে গভীর মন্দাভাব চলছে। রডের দাম প্রতি টনে ৬-৭ হাজার টাকা কমেছে, সিমেন্টের দামও কমছে ধাপে ধাপে। অথচ, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি এবং আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় কাঁচামালের দাম কমেনি। ফলে উৎপাদন খরচ বেশি, কিন্তু চাহিদা কম থাকায় বিক্রিও হচ্ছে কম দামে। এ যেন এক দুষ্টচক্র, যেখানে কেউ লাভবান হচ্ছে না।

অবকাঠামো নির্মাণ কেবল ইট-পাথরের গাঁথুনি নয়, এটি একটি দেশের উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি। বড় বড় প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুধু রড-সিমেন্ট শিল্প নয়, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছোট-বড় বহু ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঠিকাদাররা বিল পাচ্ছেন না, নির্মাণ শ্রমিকেরা কাজ হারাচ্ছেন, এমনকি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়ছেন। এই চিত্র দীর্ঘস্থায়ী হলে অর্থনীতিতে আরও বড় ধাক্কা আসতে পারে।

তবে এই সংকটের মধ্যেও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। রড-সিমেন্টের দাম কমায় ব্যক্তি পর্যায়ে নির্মাণ কাজে আগ্রহ বাড়তে পারে। সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ি নির্মাণের সুযোগ পেতে পারে, যা হয়তো ধীরে ধীরে বাজারকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এটি কি যথেষ্ট? ব্যক্তিগত উদ্যোগ কি একটি শিল্পকে সচল রাখতে পারে, যেখানে ৬৫ শতাংশের বেশি বিক্রি নির্ভর করে সরকারি প্রকল্পের উপর?

বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা আশাবাদী যে, সরকার দ্রুত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা কমলে এবং নতুন প্রকল্প অনুমোদন হলে এই খাত আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তবে, কেবল সরকারি প্রকল্পের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ ও নতুন ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। রড-সিমেন্ট শিল্পের সংকট কেবল একটি খাতের সমস্যা নয়, এটি পুরো অর্থনীতির চালচিত্রের একটি প্রতিফলন। ভবিষ্যতের উন্নতির জন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:১৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: অবস্থা বিশেষ ভালো নয়।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫১

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত এই অবস্থা চলতে থাকবে বলে মনে হচ্ছে।

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: বর্তমানে অর্থনীতি কিছুটা মন্থর হয়ে পড়েছে।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:১৯

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আস্থার সংকট না কাটা পর্যন্ত এটা চলতে থাকবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.