![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!
প্রতিকী ছবি
আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপি ও এনসিপির মধ্যকার একটি কাল্পনিক বৈঠকের চিত্র কি হতে পারে? আসুন আমরা কল্পনা করি। এই কল্পনায় রাজনীতির বাস্তবতা, ব্যঙ্গ আর সমসাময়িক মিডিয়ার প্রভাব একসূত্রে গাঁথা হয়েছে।
বিএনপির অন্দরমহলে একদিন যেন হঠাৎ করেই ঝড় উঠল। এক বৃষ্টিভেজা বিকেলে রাজধানীর এক অভিজাত গলিতে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির ভিতরে আয়োজন করা হলো এক গোপন বৈঠকের। বৈঠকে অংশ নিতে এসেছেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা। আরেকদিকে, বেশ জাঁকজমকভাবে এসেছেন সদ্যপ্রসূত রাজনৈতিক দল এনসিপির প্রাণপুরুষ জনাব হাসনাত আব্দুল্লাহ ও তার বিশ্বস্ত সহচর জনাব সারজিস আলম। তাদের সাথে এসেছে আরও দুইজন, যারা পরিচয় দিতেই চায় না, শুধু বলে “আমরা স্ট্রাটেজিক অ্যাডভাইজার”।
চা, বিস্কুট, খেজুর আর একদম বিশেষভাবে আমদানিকৃত বাদাম দেওয়া ঘন স্যুপ দিয়ে বৈঠক শুরু হলো। সবাই জানে, বৈঠকের এজেন্ডা ‘গোপন’, কিন্তু আসলে সবার মনেই একটাই কথা—কে কাকে কতটা ছাড় দেবে?
জনাব হাসনাত শুরুতেই বলেন, “দেখেন ভাই, আমরা তো নতুন দল। আমাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। আপনারা ১০০টা সিট আমাদের দেন, বাকিটা ইতিহাস আমরা লিখবো।”
বিএনপির এক নেতা কাশতে কাশতে জবাব দেন, “ভাই, আপনি ইতিহাস লেখার আগে আমাদের ভূগোলটা একটু বুঝেন। ১০০ সিট তো দূরের কথা, ১০টা দিয়েই আমাদের মাথাব্যথা!”
এরপর শুরু হয় রাজনৈতিক ব্যাকরণ, গণতন্ত্রের মহান তত্ত্ব, এবং ’৯০ এর আন্দোলনের গল্প। একজন তো বলেই ফেললেন, “আপনারা তো এখনো ঢাবি ক্যাম্পাসে একটা চায়ের দোকানে পোস্টার লাগান নাই, আর এখনই মন্ত্রীত্ব চান?”
এনসিপির পক্ষ থেকে এক অ্যাডভাইজার তখন গম্ভীর হয়ে বলেন, “আমাদের কাছে এমন কিছু স্ট্র্যাটেজি আছে, যা প্রয়োগ করলে এক ঘণ্টার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হতে পারি।”
এ কথায় বিএনপি নেতারা খানিকটা চমকে উঠেন, কারণ সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতা তারা জানেন। কিন্তু তারাও রাজনীতির পুরনো খেলোয়াড়। একজন একটু হেসে বললেন, “আপনারা যদি ট্রেন্ডিং-এ যেতে চান, আমরা তো দরকার হলে কোট প্যান্ট পরে বসে বলবো—এই তো আমাদের ভবিষ্যৎ মন্ত্রিসভা!”
ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে থাকে। আলোচনা জমে কিন্তু সিদ্ধান্ত জমে না। শেষপর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়—তাদের দলীয় স্বার্থের বাইরে গিয়ে ১০০ সিট ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। তবে, ভালো ব্যবহার করলে ৫/৬ টা সিট নিয়ে কথাবার্তা চলতে পারে।
বৈঠকের শেষে পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা, কিছুটা কৃত্রিম হাসিতে মোড়া। কেউ কিছু মুখে বলে না, কিন্তু সবার চোখে একটাই প্রশ্ন—কে আগে ফেসবুকে যাবে?
বৈঠক শেষ হতেই রাত দশটার সময় জনাব হাসনাত নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্ট দেন:
“আজ বিএনপির সাথে একটি ফলপ্রসূ মিটিং হয়েছে। আমরা ১০০টি আসন চেয়েছি। তারা আমাদের ‘শ্রদ্ধার সাথে’ বলেছে ৫টা দেওয়া সম্ভব! গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চলবে! আমরা আপোষ করবো না। #ট্রান্সপারেন্সি #নিউপলিটিক্স #দলবদলনয়দিকবদল”
তারপরে ৩০ মিনিটের মধ্যে জনাব সারজিস আলম লাইভে চলে আসেন। তিনি লাইভে বলেন:
“আপনারা দেখছেন, আমরা নতুন একটা ভিন্নধর্মী রাজনীতি চালু করতে চাই। আমরা অন্ধকারে আলো আনতে চাই। কিন্তু বিএনপি এখনো সেই পুরনো ‘অ্যালবাম পলিটিক্স’-এ আটকে আছে। তারা ভাবে আমরা ফেসবুকে থাকি বলে রাজনীতি বুঝি না!”
লাইভে একজন কমেন্ট করলো, “ভাই, আপনে তো মন্ত্রীত্ব চাইলেন, রাজনীতি না।”
আরেকজন লিখলো, “বিএনপি আপনাদের ৫টা আসন দিতে চেয়েছে, এইটাও অনেক! আপনারা তো ফেসবুক লাইভে আসার আগেই আলোচনার বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।”
পরদিন সকালে “দৈনিক দলীয় বিশ্বাস” নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল হেডলাইন দেয়:
“গোপন বৈঠকের খবরে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় – এনসিপির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে।”
বিকালে জনাব হাসনাত আবার এক পোস্ট দেন:
“আমরা কখনোই গোপন কিছু করিনা। রাজনীতি যদি গোপন করতে হয়, তাহলে সেটা ষড়যন্ত্র। আমরা ‘ওপেন পলিটিক্স’-এ বিশ্বাসী।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মাথা চুলকাতে থাকেন। কেউ বলেন, “এনসিপির সাথে কাজ করার আগে একবার ডাটা এনক্রিপশন শেখা দরকার!”
আরেকজন বলেন, “ওরা আসলে রাজনীতি করতে আসেনি, সোশ্যাল মিডিয়ার লাইভে পারফর্ম করতে এসেছে।”
অন্যদিকে বিএনপির নেতারা নিজেদের দলীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, এনসিপির সাথে ভবিষ্যতে আলোচনার আগে মিটিংয়ের দরজায় বড় করে লিখে দিতে হবে—“ফোন বন্ধ রাখুন, ফেসবুকে না যান, এবং মেসেঞ্জারে কাউকে কিছু লিখবেন না।”
রাজনীতি যে কতটা ট্র্যাজিকমেডি হতে পারে, সেটা এই বৈঠক দিয়ে আবার প্রমাণিত হলো।
সবশেষে এক মিম ভাইরাল হয় যেখানে দুইজন নেতা দাঁড়িয়ে আছেন, একজনের হাতে চায়ের কাপ, আরেকজনের হাতে মোবাইল, ক্যাপশন—“বৈঠক শেষ হবার আগেই পোস্ট প্রস্তুত!”
এটাই হলো আমাদের দেশের ‘নিউ পলিটিক্স’। যেখানে কথার চেয়ে ক্যাপশন বেশি ওজনদার, আর চায়ের কাপে রাজনীতি কম, কন্টেন্ট বেশি!
০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৫:৫৪
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৩৬
কামাল১৮ বলেছেন: এখন আর কেউ আসে না।কয়েক বার ডাক দিয়ে দেখেছে।
০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৫:৫৫
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: কার কথা বলছেন? এনসিপি ?
৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: এনসিপি দলটি বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর।
০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:২৭
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: এটা জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এর নতুন ভার্সন হতে চলেছে বলে আমার মনে হচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:৩৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দারুণ লিখেছেন।