![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!
ডার্ক ফ্যান্টাসি গল্প, বরগুনার উপকূলে গড়ে ওঠা এক মানুষের বিস্মৃত হয়ে যাওয়া পরিণতির গল্প।
১. বালির ঘর
বেলাল সরদার ছোটবেলায় বাবার সঙ্গেই প্রথম সমুদ্র দেখেছিল। বাবা বলত,
“এই সমুদ্র খাইয়ে পরে, আবার কখনো সব কিছু কাড়িয়াও নেয়।”
বেলালের মেয়ে সায়রা তখন মাত্র নয় বছর বয়সী। সে প্রতিদিন জিজ্ঞেস করত — “বাবা, তুমি কবে আমার জন্য গোলাপি জামা আনবা?”
বেলাল প্রতিবারই হেসে বলত, “এইবার ইলিশ পাইলেই... আনি মা।”
তার ঘরটি ছিল কলাতলী থানার এক প্রান্তে — বালু, বাতাস, আর গাঢ় নোনাজল-ভেজা বাতাসে ভরা।
২. ঋণ, লোভ ও জলদস্যু
মৌসুম এলে সবাই দাদনের খপ্পরে পড়ে। সুদের হার ৪০%, ৫০% — মহাজন কালু মোল্লা বলে,
"ফিরে আসলে সব ঠিক। না ফিরলে তো আর টাকা লাগবে না, তাই না বেলাল?"
(একটা হালকা খুকখুকিয়ে হাসি)।
কালু মোল্লা শুধু একজন মহাজন নয়। সে আসলে উপকূলের একটি আন্ডারওয়ার্ল্ড মাফিয়ার অংশ। সমুদ্রের দস্যুদের সঙ্গে তার যোগ। সে জানে কোন ট্রলার কবে বেরোবে, কার কত মাছ ধরা পড়বে।
বেলাল জানত না এই গভীর ষড়যন্ত্র। সে শুধু সায়রার জামার কথা ভেবে জাল মেরামত করে, নিজের ছোট ট্রলারটিতে জ্বালানি ভরে — সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যায়।
৩. ডুবন্ত ভাগ্য
তৃতীয় রাতেই জলদস্যুরা আসে। মুখ ঢাকা, চোখে লাল স্কার্ফ, হাতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র।
তারা বলে —
“মাছগুলা ছাইড়া দে। মহাজনের নামে নিতে আইছি।”
বেলাল বাধা দেয় না। চুপচাপ তাকিয়ে দেখে তার স্বপ্নের প্রতিটি পালক কীভাবে গিলে নিচ্ছে লোভের জল।
তারপরই ঘূর্ণিঝড়। রেডিও নষ্ট। দিগন্তে কালো মেঘের ফণা। বন্ধু কামাল শেষবার বলেছিল —
“বাঁচলে দেখা হইবো ভাই।”
দেখা হয়নি আর। ট্রলার ডুবে যায়। বেলাল দিগ্বিদিকভ্রান্ত হয়ে ভেসে চলে এক অজানা দ্বীপের দিকে।
৪. জলের জিহ্বা
ভোরবেলা সে উঠে দাঁড়ায় এক কুয়াশাচ্ছন্ন সমুদ্রসৈকতে। ঝড়ের পর সূর্য যেন তামাটে, ক্লান্ত।
বেলাল আর্ত চিৎকার করে:
“তুই ক্যান এমন করলি? তুই কেডা? আমারে ফিরায় দে সব কিছু!”
তার আঙুল উঠে যায় আকাশের দিকে।
হঠাৎ আকাশ বিদ্যুতের ঝলকে ফেটে পড়ে, সাগর ফুঁসে উঠে।
সেই মুহূর্তে সমুদ্রের বুক ফেঁড়ে তৈরি হয় এক ‘জলের রাস্তা’।
৫. “পথ” নয়, এক শাস্তি
রাস্তাটি যেন নিজেই জেগে ওঠে।
প্রতিটি পদক্ষেপে নিচ থেকে উঠে আসে অদৃশ্য শিকড়, যেন সমুদ্র তাকে ধরে রাখছে।
জলের দুই পাশে ভেসে বেড়ায় ডুবে যাওয়া জেলেদের মুখ — কামাল, সালাম, রাজু — যারা চেয়ে আছে, কিন্তু কিছু বলছে না।
রাস্তার মাথায় দাঁড়িয়ে যেন একজন — অন্ধকারের পেছনে, যেন পুরনো ঈশ্বরের ছায়া...
বেলাল এগিয়ে চলে।
আর কেউ জানে না এরপর কী ঘটেছিল।
৬. ফিরে আসা
তবে এরপর থেকে উপকূলে ঘটে অদ্ভুত সব ঘটনা।
যখনই বড় ঝড় আসার কথা হয়, কেউ একজন জাল হাতে জলে দাঁড়িয়ে থাকে, আর সমুদ্র থেমে যায়।
কেউ দেখে এক লোক বৃষ্টির ভেতর দাঁড়িয়ে আছেন — তার দিকে তাকিয়ে ঘূর্ণিঝড় ঘুরে যায় অন্যদিকে।
মহাজন কালু মোল্লার মৃত্যুও রহস্যজনক — তার শরীর খুঁজে পাওয়া যায় জলাভূমিতে, চোখে কাঁচের মতো সাদা দৃষ্টি, মুখে ফেনা।
তার মৃত্যুর আগে সে শুধু বলেছিল:
“সে ফিরছে...”
৭. ঈশ্বরের ভুল ছায়া
কেউ তাকে এখন আর "বেলাল সরদার" নামে চেনে না।
লোকজন তাকে বলে —
“জলের ঈশ্বর। না হয় ঈশ্বরের ভুল ছায়া।”
সে কি বেঁচে আছে?
সে কি এখন দেবতা?
নাকি স্রেফ একজন মানুষের ক্ষোভ ও আর্তির দাহে জন্ম নেওয়া এক প্রেত?
এ প্রশ্নের উত্তর নেই।
শুধু বরগুনার লোকেরা জানে —
যেদিন সাগর চুপ থাকে, সেদিন সে জেগে থাকে।
০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৪
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপু, বরগুনার লোকজন যদি তেড়ে আসেও, আমি বলব — ‘শোনো, এই গল্প তোমাদের নয়, এটা সেই সমুদ্রের, যেটা আজও প্রতিটি ঝড়ে কারো না কারো কান্না গিলে ফেলে। আমি শুধু সেই কান্নার প্রতিধ্বনি লিখে দিয়েছি।’
আর যদি কেউ রাগ করে, তাহলে বুঝে নেব — গল্পটা ঠিক জায়গায় ঘা দিয়েছে!
২| ০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৭
শায়মা বলেছেন: বরগুনার মিন্নীর কথা মনে আছে?
৩| ০৯ ই মে, ২০২৫ রাত ১২:১৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভালো লাগল।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:০৩
শায়মা বলেছেন: বরগুনার লোকজন কিন্তু তেড়ে আসবে ভাইয়ু!