নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শূন্য

অকল্পনীয় গতিতে কল্পনায় বিচরন

লুবান

শূণ্য

লুবান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইলিশ পোলাও

১১ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

“না হলে এইবারের মতো মাফ করে দেয়া যাক।” আগাগোড়া শক্ত করে বাঁধা মিলনের তেমন কোন অনুভূতি হচ্ছেনা শরীরে।অতিরিক্ত পিটানি খেলে শরীরে ব্যাথা অনুভূতি থাকে কিনা এই নিয়ে স্থুল গবেষনায় মগ্ন ছিলো সে।মাফ করার কথা শুনে চোখ তুলে তাকালো সে।মার খেয়ে চোখ নাক ফুলে গেছে তার।এরকম অবস্থার সাথে পরিচিত সে।দুই একজনের কথায় মাফ পাবার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই।মার খেয়ে চোখ নাক ফুলে গেছে মিলনের।আর মাফ করার কি প্রয়োজন এই চিন্তায় চোখ নামিয়ে পুরোনো চিন্তায় মগ্ন হবার চেষ্টা তার।



টঙ্গীবাজার মোড়ে মোটামোটি জটলা ছিনতাইকারী মিলনকে ঘিরে।এলাকাবাসী মোটামোটি উত্তেজিত।ফেরীওয়ালারা চা সিগারেট নিয়ে মোটামোটি রমরমা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে জটলায়।উৎসাহী জনগনের আগ্রহে পাকা দুই ঘন্টায়ও ভাটা পড়ার কোন লক্ষন দেখা যাচ্ছেনা।এরকম অবস্থার সাথেও পূর্বপরিচিত মিলন।ভ্যাড়েন্ডা ভেজে সময় কাটানো এই জাতীয় লোকের প্রিয় কাজ।এরা কেন দাঁড়িয়ে থাকার বদলে ছিনতাই করা শুরু করেনা এই ধরনের বিশেষ চিন্তা আগেও করেছে মিলন।বাঙালী জাতি বড়ই আজব জাতি।টাকা পয়সার দিকে কোন আগ্রহই নাই তাদের।



সিগারেটের গন্ধে জটলা ভারী।মুরুব্বী গোছ্রের কাউকে সিগারেটের কথা বলবে নাকি ভাবতে ভাবতেই আরেকটা লাত্থি খেলো পিঠে মিলন।

সাধারনত এই ধরনের পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর মধ্যে নেতৃস্থানীয় লোকজনের ইচ্ছায় ছাড়া পাওয়া যায়।অথবা তাদের ইচ্ছায় জেলখানায়।বিষয়টা কেন তাড়াতাড়ি হচ্ছেনা এই চিন্তায় মোটামোটি বিরক্ত সে।মনে মনে এক থেকে হাজার গোনা এই ধরনের পরিস্থিতিতে মিলনের প্রিয় কাজ।প্রায় সময়ই এক হাজারের মধ্যে কিছু একটা হয়। আজকের ঘটনাও ভালো।আটশো বিরাশি গুনতে গুনতে বাঁধন খোলা হলো তার।টঙ্গীবাজার মোড়ের মেয়র পদপ্রার্থী হান্নান মিয়ার সামনে দাঁড়া করানো হলো তাকে।হান্নান মিয়ার সামনে মোটামোটি ভদ্রভাবেই দাঁড়ালো মিলন।ভদ্র ব্যবহার করে কোনরকমে ছাড়া পেলেই বেঁচে যায় সে। হান্নান মিয়ার নিয়ম ভিন্ন।এক কাপ চা, হাকিমপুরী জর্দা দেয়া এক খিল্লি পান এবং দুইটা বেনসন সিগারেটসহ দীর্ঘ এক ঘন্টা ধরে বিশাল বক্তৃতা চলছে তার।জনগন যত বাড়ছে ভাষন দেয়ার ইচ্ছা আরো বাড়ছে তার।



রাত আটটার দিকে ছাড়া পেলো মিলন।জেলখানার হাত থেকে বাঁচা গেছে এই যাত্রা এই আনন্দে পরপর দুইটা টোকানো সিগারেট খেয়ে ফেললো সে।দশ নাম্বার বাসে উঠে বাসাবাড়ি রওয়ানা দিলো সে।মালিবাগ রেলগেট বস্তিতে বাসা তার।দুই চারটা ব্যাথার ওষুধ খেয়ে রাতে একটা ঘুম দেয়াই পরিকল্পনা তার।ব্যাপক পরিকল্পনায় ভাটা পড়লো সামনের সিটে বসা ভদ্রলোকের পকেট থেকে বের হওয়া মানিব্যাগের দিকে তাকিয়ে।মোটামোটি নিশ্চিন্তে মানিব্যাগ চুরি করে বাসাবোতে নেমে গেলো সে।হাঁটতে হাঁটতে মালিবাগ রেলগেট।মোটামোটি ভালোই টাকাপয়সা এখন মিলনের।নোটগুলো রেখে খুচরো টাকা দিয়ে পরপর দুইটা বেনসন খেয়ে ফেললো সে।



মোমবাতির আলোয় গুনগুন করতে করতে পড়াশোনা করছে মিলনের ছেলে।বাজারের অভাবে রান্না বন্ধ করে পাশের বাড়ির মর্জিনার সাথে গল্প করছিলো মিলনের বউ।মিলনের পায়ের শব্দে চমকে তাকালো সে।মনে মনে ব্যাপক আনন্দ মিলনের।আনন্দ প্রকাশ না করার জন্যে গম্ভীর মুখে বাজারের ব্যাগ রাখলো সে।



মিলনের ছেলের আজকে অনেক আনন্দের দিন।মিলনের হুমকিতে প্রবল আনন্দে ইলিশ পোলাও রাঁধতে বসেছে তার মা।পড়াশোনা বাদ দিয়ে রসগোল্লার বাটিতে নাক মুখ চুবিয়ে বসে আছে সে।হঠাৎ বাটি থেকে নাক মুখ উঠিয়ে দুই লাইন গান গেয়ে আবার রসগোল্লার বাটিতে নাক মুখ চুবালো সে।



ছেলের গলায় পরিচিত গান শুনে চমকে তাকালো মিলন।রসগোল্লার বাটিতে নাকমুখ চুবানো ছেলেকে দেখে মহানন্দে তিনটা বেনসন শেষ করে চতুর্থ সিগারেট ধরালো সে।ইলিশ পোলাও এর গন্ধে ম ম করছে ছোট্ট সংসার।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:০১

সময়ের ডানায় বলেছেন: ভালো লাগা রইল।

২| ১১ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮

মুহম্মদ ইমাম উদ্দীন বলেছেন: ভালো লাগলো।

৩| ১১ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২

সোহানী বলেছেন: এইটা কি হইলো.... অতি আগ্রহ নিয়া ঢুকলাম ইলিশ পোলাউ এবার রাইন্ধা দেখামু... বাট এইটা কি করলেন...রেসিপির পরিবর্তে. B:-) B:-) B:-) B:-) B:-) ...!!!!!!!!

৪| ১১ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: ++

৫| ১১ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

ছবি দেইখ্যাতো জিবে পানি আইসা গেছে। :)

৬| ১১ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭

মিনুল বলেছেন: ভালো লাগলো।++++

৭| ১৩ ই জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

বেসিক আলী বলেছেন: এই গল্পটাও ভালো । :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.