নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ল্যুদমিলার লেখা

ভাষাহারা মম বিজন রোদনা প্রকাশের লাগি করেছে সাধনা চিরজীবনের বাণীর বেদনা মিটিল দোঁহার নয়নে...

ল্যুদমিলা

আমার চোখে তো সকলই শোভন, সকলই নবীন, সকলই বিমল, সুনীল আকাশ, শ্যামল কানন, বিশদ জোছনা, কুসুম কোমল---সকলই আমার মতো। তাই বলে আমার লেখা অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করবেন না যেন! ধন্যবাদ ।

ল্যুদমিলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোলাগা কিছু বৈষ্ণব পদ !

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:২৩

কানু বিনে গীত ছিলো না যখন , সেই পঞ্চদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত প্রায় চারশো বছর ধরে উপমহাদেশের সাহিত্যক্ষেত্রে বৈষ্ণব পদাবলীরই ছিলো একচ্ছত্র আধিপত্য।শুধু বৈষ্ণবই নয়, হিন্দু ও মুসলমান মিলিয়ে শতাধিক পদকর্তা আমাদের উপহার দিয়েছেন চমৎকার সব পদ। মূলত মৈথিলি ভাষায় রচিত পদগুলোর রূপক, উপমা, চিত্রকল্প ধরাবাঁধা হলেও সব যুগে সব পাঠকের অন্তরলোক স্পর্শ করে যায়।





মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের বৈষ্ণব কবিতার ধারায় রাধাকৃষ্ণের প্রেম , আরো নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে নিষিদ্ধ ও অসম প্রেম , বিরহ , পাওয়া না পাওয়ার বেদনাই মূল আলোচ্য বিষয়।প্রাচীণ গোপজাতির লোকগাঁথার নায়ক প্রেমিক কৃষ্ণ ও মহাভারতের নায়ক বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণ কালে লোকস্মৃতিতে অভিন্ন হয়ে ওঠেন। প্রধাণা গোপী রাধা, যিনি ছিলেন বয়সে বড় ও বিবাহিতা , সম্পর্কে তাঁর মামী , এই রাধার সঙ্গে কৃষ্ণের প্রণয়ই জীবাত্মা-পরমাত্মার প্রেমলীলার রূপক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে আর বৈষ্ণব পদকর্তাদের হাত ধরে ধর্ম-দশর্ন ও সাধনভজনের অবলম্বন হয়েছে।



গোলাম মুরশিদ 'বৈষ্ণব পদাবলী প্রবেশক' বইয়ের ভূমিকায় বলেছেন ," একদা পরমাত্মা ছিলেন একাকী। নৈসঃঙ্গ্য ঘোচাবার জন্যে তিনি জীবাত্মা সৃষ্টি করেছেন। স্রষ্টার সঙ্গে এই কারণেই সৃষ্টির সম্পর্ক আত্মিক , প্রেমের ।জীবাত্মা প্রতিনিমেষে আকুল তাই পরমাত্মাতাতে মিলিত হতে।"



বৈষ্ণবের মতে ,

' আত্মেন্দ্রীয় প্রীতি ইচ্ছা তারে বলি কাম

কৃষ্ণেন্দ্রীয প্রীতি ইচ্ছা ধরে প্রেম নাম ।'



প্রেমের ধর্ম হলো -- প্রেমিক ও প্রেমাস্পদ পরষ্পরকে কাছে পেতে ব্যাকুল হবে , একে অন্যের মধ্যে আত্মবিলোপে কৃতার্থ হবে । এ প্রেম জীবাত্মার সঙ্গে পরমাত্মার প্রেম।





সংক্ষেপে এই হলো বৈষ্ণব কবিতা বা পদের মূল বিষয়। এখানে অনুরাগ, মিলন, বিরহ, মান ও আক্ষেপ যেমন আছে , তেমন আছে অভিসার , না পাওয়ার বেদনা ও পেয়ে হারানোর শঙ্কা । শতাধিক কবির লেখা হাজারো পদের মধ্য থেকে ল্যুদমিলার ভালোলাগা কিছু পদ তুলে দেয়া হলো এখানে ।



১। কেনা বাঁশি বাএ বড়ায়ি কালিনী নই কূলে ।

কেনা বাঁশি বাএ বড়ায়ি এ গোঠ গোকুলে ।।

আকুল শরীর মো বেয়াকুল মন ।

বাঁশীর শবদে মো আউলাইলো রান্ধন।।

কেনা বাঁশি বাএ বড়ায়ি কালিনী সে না কোন জন।

দাসী হআঁ তার পাএ নিশিবো আপনা ।।

কেনা বাঁশি বাএ বড়ায়ি চিত্তের হরিষে।

তার পাএ বড়ায়ি মোঁ কৈলা কোন দোসে।।

অঝর ঝরএ মোর নয়নের পানী।

বাঁশীর শবদেঁ বড়ায়ি হারায়িলো পরাণি ।।

আকুল করিতে কিবা আমার মন ।

বাজাএ সুসর বাঁশি নন্দের নন্দন।।

পাখী নহোঁ তার ঠাঁই উড়ী-পড়ি জাঁও।

মেদিনী বিদার দেউ পসিআঁ লুকাওঁ।।

বন পোড়ে আগ বড়ায়ি ! জগজনে জানী।

আন্তর সুখাএ মোর কাহ্ন অভিলাসে ।।



--- বড়ু চন্ডীদাস







২। সই কেমনে ধরিব হিয়া।

আমার বঁধুয়া আন বাড়ি যায়

আমার আঙিনা দিয়া।।

সে বধুঁ কালিয়া না চাহে ফিরিয়া

এমতি করিল কে।

আমার অন্তর যেমন করিছে

তেমনি করুক সে।।

যাহার লাগিয়া সব তেয়াগিনু

লোকে অপযশ কয়।

সেই গুণনিধি ছাড়িয়া পিরীতি

আর যেন কার হয়।।

যুবতী হইয়া শ্যাম ভাঙাইয়া

এমত করিল কে।

আমার পরাণ যেমতি করিছে

তেমতি হুক সে।।

---চন্ডীদাস





৩। চলে নীল সাড়ি নিঙারি নিঙারি

পরান সহিতে মোর।

সেই হৈতে মোর হিয়া নহে থির

মন্মথ জ্বরে ভোর ।

---চন্ডীদাস





**প্রথমবারে এ পদগুলোই থাক । সবার ভালো লাগলে ল্যুদমিলা সামনে এই নিয়ে আরো পোস্ট দেবে।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৬

বিধুভূষণ ভট্টাচার্য বলেছেন:
' আত্মেন্দ্রীয় প্রীতি ইচ্ছা তারে বলি কাম---- গোপীনির প্রেম এমন।
কৃষ্ণেন্দ্রীয প্রীতি ইচ্ছা ধরে প্রেম নাম ।'---রাধরাণীর প্রেম এমন।


"রজনী দিবসে হব পরবশে,

স্বপনে রাখিব লেহা–

একত্র থাকিব নাহি পরশিব

ভাবিনী ভাবের দেহা।" --- বড়ু চণ্ডিদাস

দারুণ পোস্ট। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৮

ল্যুদমিলা বলেছেন: অঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅসংখ্য ধন্যবাদ ।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

সুমন্ত বলেছেন: ++++, অপেক্ষায় রইলাম

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১০

ল্যুদমিলা বলেছেন: ধন্যবাদ। সাথে থাকুন ।

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: দারুন পোস্ট দিয়েছেন ভাই। পরের পোস্ট কবে পাচ্ছি?

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১১

ল্যুদমিলা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেয়ার চেষ্টা করব ।

৫| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

নস্টালজিক বলেছেন: ২ নং -টা ভালো লাগলো!

শুভেচ্ছা, ল্যুদমিলা!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

ল্যুদমিলা বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৫

টুকরো কাগজ বলেছেন: আমার অন্তর যেমন করিছে
তেমনি করুক সে।।


আহা।সাধু সাধু।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৯

ল্যুদমিলা বলেছেন: :)

৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪

তানভীর আকন্দ বলেছেন: কেনা বাঁশি বাএ বড়ায়ি কালিনী নই কূলে । - এটা কৃষ্ণকীর্তন থেকে নেয়া বৈষ্ণব পদাবলী নয়। বৈষ্ণব পদাবলীর ব্রজবুলি ভাষা থেকেও কৃষ্ণকীর্তনের ভাষাটা আলাদা। বড়ু চন্ডীদাস বৈষ্ণব কবি ছিলেন না, নরহরি সরকার , বাসু ঘোষ, লোচন দাস,জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস, বৃন্দাবন দাশ এমনকি বিদ্যাপতিকেও অনেকে বৈষ্ণব কবি বলে দাবি করেন...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.