নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদ্ভুত ছেলেটি

মেহেদী আনোয়ার

জানিনা

মেহেদী আনোয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবরার হত্যাকান্ড

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫০

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে থাকাকালীন আবরার ফাহাদ ও বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের আসামীদের সাথে দেখা হয়েছিলো। কথাও হয়েছে অনেক। নানান কথা জিজ্ঞেস করছি, কখনো তর্ক করেছি আবার কখনো তিরস্কারও করেছি।
আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের ২৫ জন আসামীর ৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২০ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলো আদালত। যাবজ্জীবন ৫ জন জেলখানার বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলো। ফুয়াদ ও মোয়াজ লাইব্রেরিতে, আকাশ ফার্মেসীতে, অমিত সাহা মেডিকেলে এবং মুন্না অফিশিয়াল কোনো একটা দায়িত্বে। আর বাকী ২০ জন কন্ডেম সেলে। ৫ জনের সাথে প্রায় প্রতিদিনই দেখা হতো। কথা হতো। বাকিরা সপ্তাহে একদিন বুধবারে কন্ডেম সেলের মেডিকেল ফাইলের দিন বের হতো আড়াই ঘন্টার জন্য। তখন আমি অনিককে দেখেছি। যেদিন প্রথম দেখেছি আমি ভয় পেয়েছিলাম। প্রচন্ড লেভেলের খুনী চেহারা। অনিকই ফাহাদকে সবচেয়ে বেশি মেরেছে। মদ খেয়ে স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে।
আমি লাইব্রেরিতে প্রতিদিন যাওয়ার সুবাধে ফুয়াদের সাথে বেশি কথা হতো। ফুয়াদ আবার কে কে বই নিচ্ছে এগুলো লেখালেখি করতো। ফুয়াদকে একদিন জিজ্ঞেস করলাম, একজন কে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেললেন? জাস্ট শিবির বলে? তারপর ফুয়াদ যা জবাব দিলো আমি অবাক! বলল, এ আবার নতুন কি? শিবিরকে সবাই পিটায়। আগে ছাত্রদলের সময়ও শিবিরকে হলে থাকতে দেওয়া হয়নি এখনো না। ও (আবরার ফাহাদ) একটু বেশি মার খেয়েছে মরে গেছে। আর অনিকের ভাষ্যমতে, "পিটাইছি মরে গেছে। কি হইছে?" আমি ফুয়াদকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের কাছে শিবির পেটানো জায়েজ বুঝলাম কিন্তু আবরার ফাহাদকে কেন পিটাইলেন, উনিতো শিবির করতো না? ফুয়াদ বলল, শিবির করতো না মানে? ওর ফোনে সবকিছুর প্রমান পাওয়া গেছে।
মানে তাদের কনফিডেন্স ছিলো তারা মুক্তি পেয়ে যাবে। এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে। সবাই পার পেয়ে গেছে। তাদের ভাগ্য খারাপ। মানুষজনের ক্যাওয়াজ এটাতে একটু বেশি হওয়াতে তাদের জেলখাটা লাগতেছে। একদিন অমিত সাহকে কটাক্ষ করে জিজ্ঞেস করলাম, "ভাই, পড়লেন বুয়েটে এখন কাজ করছেন মেডিকেলে। কেমন লাগে?" অমিত হাসে।
বিশ্বজিৎ হত্যার অন্যতম আসামী শাওনকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই, কেন সেদিন এই কাজ করলেন? বলল, আমাদের জন্য সাতখুন মাফ ছিলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছিলো, যা মন চায় কর বাকিটা আমি দেখব!
এদের মধ্যে সবচেয়ে নিরীহ মনে হয়েছে আকাশকে। ছোটখাটো। শুনেছি ফেঁসে গেছে।
যেদিন গ্রেফতার হই কোতোয়ালি থানার ওসি আমাদের সবাইকে বলে, আবরার ফাহাদ ছিলো একটা জঙ্গী তোরাও তাই। তোরা হুরের লোভে জঙ্গী কাজ করস।
আমার মনে হয়েছে, এরা সবাই জম্বি। মানুষের চরিত্র এমন হতে পারে? হাসিনা ১৭ বছরে এমন শতশত রক্ত পিপাসুর জন্ম দিয়েছে। এদের ভেতরে অনুশোচনা নেই, অনুতাপ নেই। এদের মানুষ বলা যায় না

মেহেদি হাসান
সাধারণ সম্পাদক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.