নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে বুঝতে পারছি না আমি কে বা কি ?

মাধুকরী মৃণ্ময়

কিংকর্তব্যবিমুড়

মাধুকরী মৃণ্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিরাট ওয়াজ মাহফিলঃ দুনিয়া ও আখিরাতের অশেষ কল্যান নিহিত!

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫৪




শীত কাল ওয়াজের সিজন। পাড়ায় পাড়ায় , মহল্লায় মহল্লায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আমার এই সময় মনে পড়ে যায় ছোটবেলার কথা। ওয়াজের আগে মাইকিং করা হতো। বক্তার নামের আগে এতো বিশেষন দেয়া হতো যে আমি কখনোই আসল নাম ধরতে পারতাম না। আমার কখনো মনে হতো বক্তার নাম হজরত, আবার মনে হতো মুফতি, আবার মনে হতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। শীত কালে আরেকটা জিনিস আসতো গ্রামে। তার নাম বায়োস্কপ। বাড়িতে কখনো বায়োস্কপ দেখার অনুমতি দেয়া হতো না । কারন সেখানে জন্মনিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি বড় পর্দায় দেখানো হয়। কিন্তু ওয়াজের ব্যাপারে কোন আপত্তি নেই। এশার নামাজের পরে হ্যাজাং জ্বালিয়ে স্কুল মাঠে ওয়াজ হতো । হ্যাজাং এর শো শো শব্দ ছাপিয়ে আমি শুনতে পেতাম ইউসুফ জুলেখার প্রেম কাহিনি। কাহিনি শুনতে শুনতে হঠাৎ শুনতে পেতাম হুজুর অংক স্যারের মতো চিৎকার করে বলছে , "বলেন সুবহানাল্লাহ"। আমি হচকচিয়ে বলতাম সুবহানাল্লাহ। মাঝে মাঝে বলতো , বলেন ঠিক কিনা। সবার সাথে গলা মিলিয়ে বলতাম, ঠিক ঠিক ঠিক। সবার শেষে আসতো সেই মহেন্দ্রক্ষন । তোবারক হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরতাম। মধ্যরাতে সেই ধোয়া উঠা খিচুড়িকে আমার অমৃত মনে হতো।

মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়েছে। আমিও বড় হয়েছি। কিন্তু ওয়াজ আছে আগের জায়গায় । ঢাকা শহরে যারা গুলশান,বনানী বারীধারার মতো অভিজাত এলাকায় থাকেন তার হয়তোবা ওয়াজের কারনে কতো কল্যান নিহিত হয়ে যাচ্ছে সেটা বুঝবেন না। কিন্তু আমার মতো যারা ঢাকা শহরের গরিব এলাকায় থাকেন তারা বুঝবেন। ওয়াজ মাহফিল কোথায় হচ্ছে এটা বের করার জন্য সোয়াট টিমের দরকার পড়বে কিন্তু ওয়াজের শব্দ আপনি বাসায় বসে শুনতে পাবেন। প্রতিটা রাস্তায় বিশ মিটার দূরে দূরে দুই তিনটা করে মাইক লাগানো আছে । সেই মাইকের কাজ হচ্ছে আপনার জীবনের সমস্ত কাজকে রুদ্ধ করে ওয়াজ শুনতে বাধ্য করা। সেই ওয়াজ হয় আবার বক্তার আঞ্চলিক ভাষায়। আপনি যদি ওয়াজ শুনতেও চান। বুঝবেন অর্ধেক। ধর্মিও বিষয় অর্ধেক বোঝার মত প্যারা এই দুনিয়ায় আর নেই।
হয়তোবা আশে পাশেয় কোন বাড়িতে অতি অসুস্থ কোন রুগি আছে । সে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। তার দরকার একটু নির্জনতা, ঘুম । এই ওয়াজ তার নির্জনতা খান খান করে দিচ্ছে । সে ঘুমাতে পারছে না। হয়তোবা কোন বালকের কালকে পরীক্ষা, ওয়াজ বন্ধ হওয়ার অপেক্ষায় রাত বারোটা বেজে গেছে সাথে সাথে বারোটা বেজে গেছে তার পড়াশুনায়। সামনে বিসিএস পরিক্ষা, কিছু স্বপ্ন দেখা যুবক দিন রাত পড়াশুনা করছে । হয়তোবা তারো ধর্ম মানে। এশার নামাজটা পড়ে তাদের পড়াশুনা করাটা জরুরি। তারা করতে পারছে না। তাদের এই নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রতিটা মিনিটের হিশাব পরিক্ষার হলে গিয়ে দিতে হবে। কারোর আছে অফিস, কারোর আছে অতি প্রত্যাশিত ভায়বা। তাদের সময় নষ্ট হচ্ছে এই না বোঝা আওয়াজ শুনে। ফলস্বরুপ কালকে অফিসে লেট, ভায়বাতে ডিসকোয়ালিফাইড।

এই গরিব দেশে নানান অসংগতির মধ্যে অন্যতম অসংগতি হচ্ছে মানুষকে নানা ভাবে বিরক্ত করা । কখনো রাজনীতি দিয়ে আবার কখনো ধর্ম দিয়ে। এই আফসোস করে লাভ নেই যে, এটা যদি কোন উন্নত কোন দেশ হতো তাহলে শব্দ দুষনের জন্য এদের জেল জরিমানা হতো। কিন্তু আমরা যদি শুধু মাত্র নিজেদের কথা চিন্তা না করে অন্যদের কথাও চিন্তা করি তাহলে এটা কিছুটা হলেও কমতে পারে। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যানের টেন্ডারবাজি দয়া করে বন্ধ করেন। আসেন সবাই মিলে ভালো থাকি।
‘সব্বে সত্তা সুখীতা ভবন্তু’

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২০

শাশ্বত স্বপন বলেছেন: ধর্মকে ব্যবহার করে সকলেই অধর্ম করছে

২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২১

কালীদাস বলেছেন: যাই কন, খিচুরি বা তেহারী লাস্টে যেইটা দেয়, মালটা সেরাম থাকে :D

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৮

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: জ্বি, সেরাম. .

৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩৩

অ্যালেন সাইফুল বলেছেন: দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যানের টেন্ডারবাজি দয়া করে বন্ধ করেন। আসেন সবাই মিলে ভালো থাকি।


বেশিই ভাল লাগছে।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৬

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে ভাল লাগলো।

৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪২

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: এ রকম শব্দ দূষণের বাজে মোকাবেলা আমাকে করতে হয়েছে। পূজার ছুটিতে মা সহ নানা বাড়ি গেছি বেড়াতে। মায়ের আবার ভ্রমণ জনিত কিছু সমস্যা ছিল, যেমন মাথা ব্যাথা। নানু বাড়িতে গিয়ে মা অসুস্হ হয়ে পড়লেন। ডাক্তার এসে কিছু ঔষধ দিলেন আর বললেন রাতে ঘুম আর বিশ্রাম নিলে ঠিক হয়ে যাবে। কিসের বিশ্রাম আর কিশের কি হিন্দুদের ঢোলের বারি আর ভোজন সঙ্গীতে সাথে বিভিন্ন বাদ্য যন্ত্রের বিকট আওয়াজ আর নাচে পরিবেশটা বিষাদময় করে তুল্ল। নানু বল্ল বাদ্য যন্ত্রের আওয়াজের কারণের তোর ছোট খালার লেখা পড়ায় সমস্যা হচ্ছে।

আমি মনে মনে বল্লাম, অন্য কে কষ্ট দিয়ে এ ধরণের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা কি খুব দরকার !

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই । মানুষ কে কষ্ট দিয়ে কোন অনুষ্ঠানই করা উচিত নয়।

৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:৩৫

একজন সত্যিকার হিমু বলেছেন: আপনার দীর্ঘ ওয়াজখানা শুনিলাম ।এইবার তবারক দেন :P

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৪

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: তবারক আখিরাতে যেয়ে পাবেন । বলেন , সুবহানাল্লাহ।

৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:২০

রিফাত হোসেন বলেছেন: manushke kosto dia kichu kora uchit na. olpo shomoy korla bujhtam

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.