নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে বুঝতে পারছি না আমি কে বা কি ?

মাধুকরী মৃণ্ময়

কিংকর্তব্যবিমুড়

মাধুকরী মৃণ্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

শনিবার সন্ধ্যা (গোলাপের গল্প )

২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:০০



প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব

এটা একটি অমিথ্যা গল্প। জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে মিলে গেলে লেখক স্বয়ং দায়ী। উপযুক্ত প্রমান দিয়ে ক্ষতি পূরন আদায় করতে পারেন !

জোহরার আজ খুসি খুসি লাগছে। হাত ভর্তি লাল গোলাপ নিয়ে যখন সে বাসায় গেলো তখন রাত নয়টা । নভেম্বরের আসি আসি শীতের রাত। অসংখ্য মানুষ আর বিল্ডিং এ ঠাসাঠাসি করা আতস খান লেনে সেই শীত আসতে আরো অনেক দিন বাকি। জোহরার হাতে হঠাৎ গোলাপ দেখে তার মা বলল, গোলাপ কই পেলি। ভ্রু কিঞ্চিত কোচকানো। সে কোচকানো ভ্রু কে অগ্রাহ্য করে জোহরা বলল, আজ খুব গোলাপ কিনতে ইচ্ছা করছিল , তাই কিনে ফেললাম। তোর যতসব আজগুবি ইচ্ছা, রাত দুপুরে এক গাদা মরা মরা গোলাপ কিনে বাড়ি ফিরেছিস। তুই বড় হবি কবে! জোহরা গোলাপের দিকে তাকিয়ে বলল, গোলাপ মোটেই মরা মরা না । আজ গোলাপের মন ভালো। জোহরার মা পানি গরম করার জন্য চুলার উপর দিতে দিতে বলল, পানি গরম হলে গোসল করে নিও। চেহারা দেখার কায়দা নাই।

চেহারার কি অবস্থা তা দেখার জন্য জোহরা ড্রেসিং টেবিল এর সামনে গেলো। এইটা হলো মেয়েদের কমন বৈশিষ্ট । যদি বলা হয় , বাহ খুব সুন্দর লাগছে, তাদের মনের ভেতর আকুপাকু করা শুরু করবে নিজেকে একটু দেখার জন্য। আবার যদি বলা হয় , আজকে একটু ডাল লাগছে তাহলে সত্যি খারাপ লাগছে কিনা দেখার জন্য তারা মোটামুটি বাসের লুকিং গ্লাসও ইউজ করতে পারে । এখন অবশ্য এতো কষ্ট করা লাগে না, মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরা ওপেন করলেই হয়। এইসব কথা ভাবতে ভাবতে সে আশ্চর্য হলো। আশ্চর্য হলো এই ভেবে যে একটা ছেলে এতো বছর তাকে মনে রেখে খুজে বের করেছে, এখন নিতান্ত কৃতজ্ঞতা স্বরুপ হলেও সেই ছেলের কথা তার ভাবা উচিত কিন্তু তার কথা না ভেবে সে ভাবছে বাসের লুকিং গ্লাসের কথা !!

অর্ণবের কথা ভাবার অবসর পাই নি জোহরা অথবা ভাবতে চাই নি।অর্ণবের সাথে যখন কথা হয় তখন জোহরা চনমনে ষোল বছরের কিশোরী। আদি পুরান ঢাকার না হলেও তার দাদা এবং বাবার জন্ম আতস খান লেনে। প্রায় ক্ষ্যাত একটা ছেলের সাথে মজা করে কথা বলা বা দেখা করা যায় কিন্তু তার সাথে কোন হৃদয় ঘটিত সম্পর্কে জড়ানো যায় কিনা জোহরা সেই সময় ভাবতে পারে নাই। আর তখন তার সামনে এবং পেছনে অসংখ্য ছেলের আনাগানো। জোহরার মা পেছনে এসে বলে , সেই কখন থেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছিস! পানি গরম হয়ে গেছে , গোসল কর, দশটা বাজে, । কখন খাবি আর কখন ঘুমাবি আবার সকাল থেকে তো আবার অফিস শুরু।

জোহরা ওয়াশ রুমে ঢোকে । এই জায়গায় তার মনে হয় সবচেয়ে নিরাপদ। এখানে বিকাশ গাড়ির খারাপ কন্ডাক্টর নেই, অফিসের মিজান সাহেব নেই যে কিনা সুযোগে থেকে থেকে একদিন হাত ধরে বলেছিল , চলেন একটু ঘুরে আসি, জীবনডা তো ইনজয় করার জন্য, কি বলেন ! নেই কোন টিকে থাকার কষ্ট। জোহরা শাওয়ার ছেড়ে দেই। পানি জোহরার চুল থেকে পায়ের পাতা স্পর্শ করে। জোহরার মনে হয় এমন আরামের গোসন সে অনেকদিন করে নাই। জীবনের যত কালিমা , হতাসা , না পাওয়া , ভুল মানুষকে ভালোবাসা এই জলে ভেসে যাচ্ছে সূদুরে।

গোসলের পরে এতো জোহরাকে স্নিগ্ধ লাগে মনে হয় সবুজ পাতার উপর কিছুক্ষন আগে বৃষ্টি পড়েছে। চোখ জুড়িয়ে যায়। ভেজা চুলে চিরুনী দিতে দিতে জোহরা ভাবে এই ফেব্রুয়ারীতে আমার বয়স হবে আমার ছাব্বিশ তাহলে অর্ণবের বত্রিশ। এতো বছরেও বিয়া করে নাই ছেলেটা । বেচেরা ! খেতে আয় ! ড্রয়িং রুম থেকে গলা উচিয়ে ডাকে জোহরাকে তার মা। তার যে এলার্জির সমস্যা তা বাড়ির লোকের মনে থাকে না। আজো চিংড়ি! তোমরা কি আর কোন মাছ চোখে দেখো না, চিংড়ি নিতে নিতে জোহরা বলে। তোর আব্বার পছন্দ , আমি কি করবো ! কাচুমাচু করে জোহরার মার বলে। তোরে আরেকটা কথা বলি , এই মাসের বাড়ি ভাড়াটা বাকি পড়েছে, তুই কি কালকে টাকাটা দিতে পারবি ? জোহরা এক লোকমা ভাত মুখে নিতে নিতে থেমে যায়। সে যে চার মাস বেতন পায় না। সেটা বাড়ির মানুষ কেউ জানেনা, তাদের জানার প্রয়োজনও নেই। একটু খানি যে সেভিংস ছিল তা দিয়ে এই কয়মাস কোন রকম চলছে। জোহরা বলে, কালকে দিবো।

ঘুমাতে যাওয়ার সময় ড্রেসিং টেবিলের উপরে রাখা গোলাপের দিকে জোহরার চোখ গেলো। কি মনে করে জোহরা গোলাপ গুলো বালিশের পাশে রাখলো। ঘর অন্ধকার করে দশ বছরে শরীর আর মনে বদলে যাওয়া জোহরা শুয়ে আছে , পাশে দশটা গোলাপ। জোহরার ঘুম আসছে না তার সাথে জেগে আছে আতস খান রোডের নিয়ন আলো, রিকসার টুংটাং , গাড়ির হর্ণ , মানুষের কোলাহল। জোহরার ফোন বেজে উঠলো।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:১১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: চমৎকার গল্প। :)

শুধু, অর্ণবের কথা ভাবার অবসর পাই নি (পায়নি) জোহরা অথবা ভাবতে চাই নি (চায়নি)। এ জাতীয় ব্যাপারগুলোর দিকে একটু নজর দিলে অতি-চমৎকার হবে।

২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:১৪

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ । নজর দেয়া হবে।

২| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:১৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: জীবন নামের স্রোত যে মানুষ কে কোথায় নিয়ে দাড় করায় অনুমান করা মুশকিল; গল্প গান কবিতায় শুনেছি ১৬ বছর ৮ বছর বয়সা ভয়ংকর, বালি উমর ! এ সময় মেয়েরা যাকে মনে স্থান দেয় সে রয়ে যায় সমস্ত জীবন !!! সাথে আমার অভিজ্ঞতায় দেখছি এ সময় এবং বয়সে মেয়েরা ভয়ংকর নিষ্ঠুর ও ; হৃদয় ভাঙতে ও জুড়ি নেই এই বয়সের।
আপনার লেখা সে দিকেই এগুচ্ছে দেখছি !

চমৎকার এক সিরিজ পাচ্ছি।

২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৩০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: লেখা কোন দিকে এগোবে এখনো আমি জানিনা। তবে আপনি ঠিক বলেছেন। অধিকাংশ সময় আমরা বুঝতে পারিনা কোনটা সত্যিকারের ভালোবসা আর কোনটা নাই। তার জন্যই জীবন জটিল হয়ে যায়।

৩| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:২৫

কালো যাদুকর বলেছেন: চমৎকার। চলুক।

২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৩৬

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ। চলবে !

৪| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:২৬

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: এরপর জোহরার কি হলো?? আরেকটু জানার দরকার ছিলো লেখক,আর মনে কিছু নিবেন না,গোসল বানানটা ভুল।গোসলের পরে এতো স্নিগ্ধ লাগে (জোহরাকে) জোহরার মনে সবুজ পাতার উপর কিছুক্ষন আগে বৃষ্টি পড়েছে। জোহরাকে ভুল জোহরার হবে।

২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৩৩

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: আমি লেখার পর আর পড়ে দেখিনা। খুব খারাপ অভ্যাস। ঠিক করা হবে। ধন্যবাদ।
জোহরার কি হলো তা জানতে পরের পর্বে চোখ রাখুন। বিজ্ঞাপন আর কি !!

৫| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৩৭

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: জীবনটা বড্ড জটিল, পাহাড়ি পথের মতোই আঁকাবাঁকা.....

কিশোরী মনের প্রেম বোঝা দায়। তখন মেয়েদের মনটা অন্যরকম থাকে।

বানানের দিকে নজর দিবেন। বানান বাদে লেখা সুখপাঠ্য !

চলুক....

২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৪০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: হ ভাই নাকি বইন, আমার বানান জনিত সমস্যা আছে। নজর দেয়া হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ।

৬| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৪৩

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ভাই B-))

৭| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৫৯

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: গল্পটা ভালোই, তবে আরো বড় করা যেত।


জোহরা নামটা কেমন আন্টি আন্টি শোনাচ্ছে। জোহরার জায়গায় জেরিন হলে দারুন লাগতো..;):D

২৮ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:৪০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: গল্প বড় করা হবে পরের পর্ব গুলোতে। জোহরা , জেরিন কিংবা জেবা। তাতে কিছু আসে যায় না। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য

৮| ২৮ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:৩০

মুক্তা নীল বলেছেন:
গল্পটা ভালো হয়েছে। আমি মনে হয় মাঝখানে একটি পর্ব মিসিং করেছি। একটু পরেই পড়ে ফেলব।

২৮ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:৪১

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: পড়েন। পড়ে মন্তব্য জানাবেন। আপনার মতো শক্তিশালি লেখকের মন্তব্য আমার কাজে লাগবে।

৯| ২৮ শে মে, ২০১৯ ভোর ৪:৫৭

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনার লেখার মায়াবী একটা টান আছে। তবে পুরো গল্পটিতে কিছু কথা কেনো যানি লুকানো মনে হচ্ছে। চাপা মিষ্টি গল্পটি কি এখানেই শেষ? নাকি আরো কোন পর্ব পাঠ করার সুযোগ পাবো?

২৮ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: জীবনের সব কথা একবারে প্রকাশ করলে গুরুত্ব কমে যায়। আশা করছি আরো পাঠ করার সুযোগ পাবে। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

১০| ২৮ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৫৫

জাহিদ অনিক বলেছেন: আগের পর্বগুলো থেকে এই পর্বে সাহিত্যিক টোন বেশি।
ভালো লাগছে। দেখা যাক---

১১| ২৮ শে মে, ২০১৯ সকাল ১১:৩৪

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: অসাধারণ গল্প।

২৮ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩১

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: অসাধারণ মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.