নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে বুঝতে পারছি না আমি কে বা কি ?

মাধুকরী মৃণ্ময়

কিংকর্তব্যবিমুড়

মাধুকরী মৃণ্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

শনিবার সন্ধ্যা ( আমাকে একটি কথা দাও )

২৬ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২২


প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব

এটা একটি অমিথ্যা গল্প। জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে মিলে গেলে লেখক স্বয়ং দায়ী। উপযুক্ত প্রমান দিয়ে ক্ষতি পূরন আদায় করতে পারেন !

তুমি থাপ্পর খাবা আমার কাছে। জোহরা অর্ণবকে কপট রাগের স্বরে বললো। জোহরা রবি বার দুপুরের দিকে ফোন করেছিলো অর্ণবকে। অর্ণব কিছু বলার আগেই সে বললো , কি হয়েছে তোমার। এতো ম্যাসেজ দিছো কেনো !! অর্ণব কিছুক্ষন কথা বলতে পারলো না। তারপর বললো, তোমার কি হয়েছিলো, তিন দিন ধরে ফোন বন্ধ । আমি তো ভেবেছিলাম , তুমি আবার হারিয়ে গেছো। তোমাকে ছাড়া সময় কাটছিলো না , তাই স্লিপিং পিল খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। আমি কিডন্যাপ হয়েছিলাম । এমনভাবে জোহরা এই কথাটা বললো মনে হলো কিডন্যাপ হওয়া খুব সাধারন ঘটনা। তোমারে আমার থাপরায়তে ইচ্ছে করছে। তুমি কেনো স্লিপিং পিল খেয়েছিলে ! অর্ণব বলো , এই ধরো, খুশিতে, ঠ্যালায় , ঘোরতে। ধুর সবসময় ফাজলামি ভালো লাগে না। তাইলে কি ভালো লাগে ! কিডন্যাপ হতে ? কার এতবড় দুঃসাহস !
মামুন আমাকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো। জোহরা চাপা স্বরে বললো। তুমি কি এখন মামুনের বাসায়। অর্ণব প্রশ্ন করলো । না , গতকাল রাতে বাসায় ফিরছি । ট্রিপল নাইনে ফোন দেয়ার পর মামুন আমার ফোন নিয়ে নেই । তারপর পুলিশ আসে।
আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই। অর্ণব হন্যে হয়ে বললো। বিকালে বনানীতে আসো। জোহরা বললো।

একটা ভেলভ্যাট কালারের সালোয়ার কামিজ পড়ে জোহরা বসে আছে। পেছন থেকে অর্ণব খেয়াল করলো। সামনে যেয়ে বললো, তুমি যে জ্যামিতিক হারে সুন্দর হচ্ছো এর রহস্য কি। জোহরা হেসে বললো, এই যে তিন দিন ধরে একটা ঘরে বন্দি ছিলাম , বসে বসে রুপচর্চা করেছি। কি হয়েছিলো বলো তো। অর্নব আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো । জোহরা সংক্ষেপে সব বললো। তুমি কি মামুনের কাছে আবার ফিরে যাবা ! অর্ণব খানিকটা সন্দেহ নিয়ে প্রশ্ন করলো জোহরাকে। শোনো অর্ণব, আমি মরে যাবো কিন্তু পৃথীবিতে দুইটা মানুষের কাছে আর ফিরে যাবো না। এক হচ্ছে নির্ঝর আরেকজন মামুন। এই দুইটা মানুষকে আমি ঘৃনা করি। মাফ করে দাও , আরাম পাবা। অর্ণব বললো।
মাফ করতে পারিনা অর্ণব। এই দুইজন মানুষ আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। আজ এই চাকরীটা যদি না থাকতো তাহলে আমার কি যে হতো ভাবতে পারি না। দ্বীর্ঘস্বাশ ছাড়লো জোহরা।

অর্ণব কথা খুজে পাচ্ছে না। মাঝে মাঝে কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর জোহরার দিকে তাকাচ্ছে। দুই জন মানুষ মুখোমুখি বসে আছে কেউ কথা বলছে না। চোখে চোখ পড়ে গেলে জোহরা মিষ্টি করে হাসছে। সেই হাসি ! অর্ণব মনে মনে লিস্ট করা শুরু করছে, এই হাসি দেখার জন্য সে কি কি করতে পারে। বনানীর ওভার ব্রীজ থেকে লাফ দিতে পারে, না এই টা কম হয়ে গেলো, এফ আর টাওয়ার থেকে লাফ দিতে পারে। পেছনে সুনামির ঢেঊ থাকলেও শুধুমাত্র এই হাসির দিকে তাকিয়ে ডুবে মরতে পারে। অথবা নচিকেতার গানের মতো বলতে পারে, তুমি সুন্দর , তুমি সুন্দর , কি দারুন তোমার হাসি। এই হাসির জন্য সহস্রবার আমি নিতে পারি ফাসি।

কথা বলো না কেনো। জোহরা ক্যাপিচিনোতে চুমুক দিতে দিতে বললো। অর্ণব লিটেরেলি আজ কোন কথা বলতে পারছে না। অথচ আসার আগে কত কথা বলবে বলে ভেবেছিলো। ভেবেছিলো বলবে, তোমাকে ছাড়া আমার নিজের কোন অস্তিত্ব আর নাই। আমি তোমার মধ্যে বিলীন হয়ে গেছি। একটা মুহুর্ত তোমার ভাবনা আমার মাথা থেকে যায় না। আমি অফিসে সব মেইলে তোমার নাম টাইপ করে ফেলি। ডিয়ার জোয়ানার জায়গাই লিখি ডিয়ার জোহরা। অফিসে সবার আমার সাথে হাসাহাসি করে। রাস্তার মোড়ে গোলাপ দেখলে আমার তোমার কথা মনে হয়। বেসিক্যালি লাল রঙ দেখলেই তোমার কথা মনে হয়। আমি তুমিময় হয়ে গেছি জোহরা।
অর্ণব সেসব কিছুই বলতে পারলো না। শুধু মাত্র বললো, তুমি একটা কথা দাও আমাকে । কখনো হারিয়ে যাবা না।আমি সারাক্ষন ভয়ে থাকি যে এই বুঝি তুমি আবার হারিয়ে গেলে। এই ভয়ের জন্য আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। আমার কোন কাজে মন বসে না।
জোহরা অর্ণবের চোখের দিকে একবার তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিলো। অর্ণব বুঝতে পারলো না সেই চোখে কি জল ছল ছল !?
তারপর চোখ নিচু করে লাল নেইলপালিশ নখ দিয়ে উঠাতে উঠাতে বললো, আমি আর হারাবো না।

অর্ণব জোহরাকে আজীমপুর পৌছিয়ে দিতে যাচ্ছে । যদিও এইবার জোহরা বলেছিলো , থাক , লাগবে না। কিন্তু অর্ণব কথা শোনা বান্দা না। জোহরাকে না জানিয়ে উবার ডেকে ফেলেছে। গাড়ির ভেতরে কাকতালীয় ভাবে বাজছে, "আজ যানে কি জীদ না করো"।
অর্ণব সংকোচে বললো , তোমার হাতটা ধরতে দিবা ? জোহরা বললো, আমি স্টিল মানুষ আছি, ভুত হয়ে যায়নি। হাত ধরে কিছুই প্রমান করতে হবে না।
প্লিজ ! অর্ণবের কন্ঠে মিনতি। জোহরা হাত বাড়িয়ে দিলো।অর্ণব জোহারার হাতের উপর হাত রাখলো। জোহরা বিস্মিত হয়ে বললো, তোমার হাত কাপছে !!

আমাকে একটি কথা দাও যা আকাশের মতো
সহজ মহৎ বিশাল,
গভীর; – সমস্ত ক্লান্ত হতাহত গৃহবলিভুকদের রক্তে
মলিন ইতিহাসের অন্তর ধুয়ে চেনা হাতের মতন,
আমি যাকে আবহমান কাল ভালোবেসে এসেছি সেই নারীর।

জীবনানন্দ দাশ

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩০

মুক্তা নীল বলেছেন:
ভালোই হয়েছে । পুরোটাইতো রোমান্টিক ধাঁচের এবারের পর্ব।

২৬ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৮

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: হুম । আর কতো ঝড় ঝাপ্টা চলবে জীবনে। রোমান্টিসিজমের দরকার আছে।

২| ২৬ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:০২

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা। সহজ সরল।

২৬ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:১৬

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.