নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তুফান মেইল

বসন্তে মাতাল আমি এক অপূর্ণতা ...

মাহতাব সমুদ্র

আমি কে...আসলেই নিজেকে খুঁজতে গিয়ে নিজেই হারিয়ে যাই। আমি আসলে কে আমি জানিনা ফেসবুকে- facebook.com/mahatab.hossain2

মাহতাব সমুদ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

'ফুটবলের যাদুকর সামাদ' আজও অবেহেলিত, প্রজন্ম চেনে না

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩



সামাদ নামটা শুনলেই চোখের সামনে ফুটবলের কিছু শৈল্পিক দৃশ্য ভেসে উঠে। ফুটবলে শিল্প শব্দটার পরিচিতি যেন সামাদের হাত ধরেই। তিনি উপমহাদেশের ফুটবল ইতিহাসের কিংবদন্তি। পরিচিতি তার ফুটবলার যাদুকর সামাদ হিসেবে। জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের ভুরী গ্রামে। এই গ্রামেই ১৮৯৫ সালের ৬ ডিসেম্বর এক নিভৃত পরিবারে তাঁর জন্ম। ‘যাদুকর সামাদ’ নামেও পরিচিত হলেও তাঁর পুরো নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। সামাদ স্বাধীন বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে জন্ম না নিয়েও ১৯৪৭-এর দেশ-বিভাগের পর এই ভূ-খন্ডকেই নিজের দেশ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন । ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে যখন ‘পাকিস্তান’ ও ‘ভারত’ নামক দু’টি দেশ জন্ম নিল, তখন জাদুকর সামাদ চলে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম বৃহত রেলওয়ে শহর পার্বতীপুরে। এরপর পুরো জীবনটাই কাটিয়েছেন এখানেই।



যাদুকর সামাদ ১৯১২ সালে কলিকাতা মেইন টাউন ক্লাবে এবং ১৯৩৩ সালে মোহামেডান এ যোগদান করেন। সে সময় মোহামেডান পর পর পাঁচবার আইএফএ শীল্ড ও লীগ জয় করে। উনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলীর প্রদর্শন করে ফুটবল জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন।



১৯১৫ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল থেকে মাত্র ২৩ বছর ছিল সামাদের খেলোয়াড়ী জীবন। তিনি ছিলেন একজন রেল কর্মচারী। সে সময় ইবিআর নামে যে রেলওয়ে ফুটবল টিম ছিল সামাদ তাতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। সামাদের ২৩ বছর খেলোয়াড়ী জীবনে এমন সব বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে যা তার নামের সামনে যাদুকর শব্দটি বসাতে বাধ্য করেছে। যাদুকর সামাদের কালজয়ী ফুটবল প্রতিভা ও নেতৃত্বগুণ তৎকালীন সর্বভারতীয় ফুটবল দলকে গ্রেট বৃটেনের মতো বিশ্বসেরা ফুটবল দলের বিরুদ্ধে অবিস্মরনীয় জয় এনে দিয়েছিল,



১৯৩৩ সালে সামাদের নেতৃত্বে সর্বভারতীয় দল গ্রেট বৃটেনকে ৪-১ গোলে এবং শক্তিশালী ইউরোপিয় টিমকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছিল। ভারতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে জীবনের শেষ খেলা খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের সার্ভিসেস একাদশের

সামাদের অসাধারণ ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখে ইংল্যান্ডের তৎকালীন সেরা লেফট্ আউট কম্পটন চমকে উঠেছিলেন, ‘‘ধারণা ছিল না এমন খেলোয়াড় এদেশে দেখতে পাবো!’’ -

ইংল্যান্ডের কৃতি ফুটবলার এলেক হোসি একবার বলেছিলেন: 'বিশ্বমানের যেকোনো ফুটবল দলে খেলবার যোগ্যতা সামাদের রয়েছে।' এই মন্তব্য থেকেই সামাদের অবস্থান সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। একবার আফ্রিকায় এক সফরের সময় ষড়যন্ত্র করে তাকে অধিনায়ক না-করায়, সামাদ অভিমানে দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। সামাদবিহীন সর্বভারতীয় দলটি সেবার তেমন কোনো সাফল্যই দেখাতে পারেনি। ১৯৩৬ সালে তিনি খেলার সময় মাঠে গুরুতর আহত হবার পর তিনি আর তেমন করে খেলতে পারেননি কোনোদিনই। তাঁর আহত হবার ঘটনা তীব্রভাবে নাড়া দিয়েছিল তৎকালীন অবিভক্ত উপমহাদেশের ফুটবল-জগতকে।



খেলার মাঠে প্রতিনিয়ত অবিশ্বাস্য ঘটনার জন্ম দিতেন সামাদ। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছিল একবার ইন্দোনেশিয়ায়। সর্বভারতীয় ফুটবল দল গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার জাভায়। খেলা চলাকালে ইন্দোনেশিয়ার বেশ ক’জন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে তীব্র শট করলেন সামাদ। বল গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো মাঠে। বিস্মিত হলেন তিনি। গোল হলো না কেন? কিছুক্ষণ পর আবারো সামাদের তীব্র শটের বল ইন্দোনেশিয়ার গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো। এবার সামাদ রেফারিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন, 'গোলপোস্টের উচ্চতা কম আছে। তা না-হলে, আমার দুটো শটেই গোল হতো' ফিতে দিয়ে মেপে দেখা গেল সত্যিই গোলপোস্টের উচ্চতা স্ট্যান্ডার্ড মাপের চেয়ে চার ইঞ্চি কম রয়েছে! আরেকবার মাঠের মধ্যস্থল থেকে বল নিয়ে সব খেলোয়াড়কে বোকা বানিয়ে বল ড্রিবলিং করে নিক্ষেপ করলেন গোলে, বল গোলে প্রবেশ না করে গোলপোস্টের কয়েক ইঞ্চি উপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে রেফারি বাঁশি বাজিয়ে বলকে আউট ঘোষণা করলে সাথে সাথে সামাদ তা গোল হয়েছে বলে চ্যালেঞ্জ করে বসলেন। 'আমার শটে নিশ্চিত গোল হয়েছে'। সামাদের শটের মেজারমেন্ট কোনোদিন ভুল হয়নি। গোলপোস্ট উচ্চতায় ছোট। মেপে দেখা গেল সত্যিই তাই। ফুটবল নিয়ে সেই কিশোর বয়স থেকে অনুশীলন করতে করতে সামাদ পরিণত হয়েছিলেন ফুটবলের এক মহান শিল্পীতে। একবার খেলার আগ মুহূর্তে মাঠের চারদিকে পায়চারী করে এসে সামাদ ক্রীড়া কমিটির কাছে অভিযোগ করলেন এ মাঠ আন্তর্জাতিক মাপ হিসেবে ছোট বিধায় এ মাঠে আমাদের টিম খেলতে পারে না। পরে মাঠ মাপার পর তার অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়। তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের এমন বহু ঘটনা আজো দেশ-বিদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অগণিত সামাদ ভক্তের মুখে মুখে আজও ঘুরে বেড়ায়।



'বিংশ শতাব্দীর তিরিশের দশকের কথা, একদিন বিকেলে কলকাতার ইডেন গার্ডেন-এর বিপরীত দিকের ফুটপাত ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন প্রায় ছয় ফুট লম্বা একজন লোক। হঠাৎ তাঁর পাশে গাড়ি থামিয়ে নেমে এলেন স্বয়ং তৎকালীন বাংলার গভর্ণর এবং তাঁর কন্যা। গভর্ণর সোজা এগিয়ে গিয়ে আঁকড়ে ধরলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় গভর্ণরের সঙ্গী-সাথীদের সবাই হতভম্ভ। লম্বা লোকটির হাত ধরে কুশল বিনিময় করলেন । তারপর, নিজ কন্যাকে ডেকে বললেন, 'এসো, ফুটবলের জাদুকরের সঙ্গে পরিচিত হও (Meet the wizard of football)।' কথিত আছে, ফুটবল জাদুকর সামাদের সোনার মূর্তি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে।



দারিদ্রের কষাঘাতে বিনাচিকিৎসায় ১৯৬৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারী এই ফুটবলের যাদুকর মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে একবার তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি তো নিঃশেষ হয়ে গেছি। আমার প্রাপ্য মর্যাদা আমি পেলাম না। আমি ধুঁকে ধুঁকে মরে যাব সেটাই ভালো। কারো করুণা এবং অনুগ্রহের প্রত্যাশী আমি নই।' যাদুকর সামাদের মৃত্যু আমাদের অপরাধি করে দেয়।



পার্বতীপুর শহরের ইসলামপুর কবরস্থানে সমাহিত করার দীর্ঘ ২৫ বছর অবহেলিত ও অরক্ষিত থাকার পর ১৯৮৯ সালে ৫২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ। তাঁর স্মরণে একটি স্মারক ডাক টিকেট প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার । পার্বতীপুরে রেলওয়ে নির্মিত "সামাদ মিলনায়তন" নামে একটি মিলনায়তন আছে।



আজ উপমহাদেশের ফুটবল ইতিহাসের কিংবদন্তি যাদুকর সামাদের ৫০ তম মৃত্যুবার্ষিকী



সামাদকে বর্তমান প্রজন্ম চেনেনা, চিনবেই বা কি করে সামাদকে চেনার জন্য যে উদ্যোগ দরকার তা বাফুফেরই নেওয়া উচিত। সেই সাথে পাঠ্যপুস্তকে যাদুকর সামাদের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। আজ ২ ফেব্রুয়ারি ফুটবলের কিংবদন্তি যাদুকর সামাদের ৫০ তম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরন করছি উপমহাদেশের ফুটবল কিংবদন্তিকে।



কালের কণ্ঠ

ফুটবলের যাদুকর সামাদ' আজও অবেহেলিত, প্রজন্ম চেনে না

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২১

জিহাদ ৭০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ লেখার জন্য।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৪

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৯

ঢাকাবাসী বলেছেন: প্রতিভা এদেশে সবসময়ই অবহেলিত।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৮

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: প্রতিভা এদেশে সবসময়ই অবহেলিত

৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৩৪

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: উনার নামে একটা স্মারক ডাকটিকেট ছিল আমার কাছে ছোটবেলায়। হয়ত বাসায় খুঁজলে এখনও পাওয়া যাবে অ্যালবামটা। তখনই প্রথম উনার সম্পর্কে জানতে পারি। আজ খুব গুছিয়ে অনেক তথ্য দিলেন। ধন্যবাদ জানাই।

আর উপমহাদেশের এই মহান ক্রীড়া যাদুকরের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২৯

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: প্রতিভা এদেশে সবসময়ই অবহেলিত।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: প্রতিভা এদেশে সবসময়ই অবহেলিত। দুঃখজনক

৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৫

পানকৌড়ি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ও কালেরকন্ঠকে । অনেক কিছু জানলাম ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৪১

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১৬

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: আমিও জানতাম এ মহৎ লোকটির কথা।
সুন্দর করে গুছিয়ে তার কথা আমাদের জানিয়ে দেয়ার জন্য আপনার প্রতি সুভেচ্ছা রইল।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫০

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৪:২৯

দার্শনিক ফিনিক্স বলেছেন: এমন অসাধারণ প্রতিভাদের আমরা কাজে লাগাতে পারলামনা,আফসোস :-/
তবে বৃটিশ মিউজিয়ামে সোনার মূর্তির ব্যাপারটি খুব সম্ভবত ভুল

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: বৃটিশ মিউজিয়ামে সোনার মূর্তির ব্যাপারটি খুব সম্ভবত ভুল। হতে পারে্‌ কথিত আছে।

৮| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৫৩

খেয়া ঘাট বলেছেন: উনার সম্পর্কেও আগে পড়েছিলাম।
"সেই সাথে পাঠ্যপুস্তকে যাদুকর সামাদের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। আজ ২ ফেব্রুয়ারি ফুটবলের কিংবদন্তি যাদুকর সামাদের ৫০ তম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরন করছি উপমহাদেশের ফুটবল কিংবদন্তিকে"
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ।

৯| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০০

ওবায়েদুল আকবর বলেছেন: ১৯৩৩ সালে তার বয়স ছিল তাহলে ৪৮ বছর আর তার ক্যারিয়ার যদি ১৯১৫ সালে শুরু হয় তাহলে সেসময় তার বয়স ৩০ বছর!!! অকল্পনীয় ব্যাপার এই যে ৪৮ বছরে কেউ ফুটবল খেলে এটা এখন কাউকে বিশ্বাসই করানো যাবেনা আর ৩০ বছরে অনেক পেশাদার ফুটবলারের কেরিয়ারই শেষ হয়ে যায়।

যাদুকর সামাদ আসলেই জিনিয়াস।

১০| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫৩

নবীউল করিম বলেছেন: হটাৎ জাদুকর সামাদের বিষয়ে লেখা পড়ে ভালো লাগলো

ভালো লাগলো তাঁর কারন, আমি ছোট বেলায় কিছু সময় পারবরতিপুরে কাটিয়েছিলাম। আমার আব্বা সেখানে ব্যবসা করতো, আমার দুই চাচা সহ। এখনো এক চাচা এবং তাঁর পড়িবার ওখানেই আছে। আমাদের পড়িবারটা প্রভাবশালী ছিল, সেই সাথে ফুটবল পাগল! আমার এক দাদাও(আব্বার মামা) নাম করা ফুটবলার ছিল, যিনি কোলকাতা মহমেডানে খেলতেন ৭০ বছর আগে এবং চাকরীর সুবাদে খেলতেন ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে টিমে। আমার সবচেয়ে ছোট চাচাও কোলকাতা মহমেডানে এবং ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে টিমে খেলতেন।

এই কথাগুলো এই জন্য বল্লাম যে, আমাদের বাসায় প্রায় প্রতিদিনই ফুটবলার সামাদ কে নিয়ে আলোচনা হত। উনাকে দেখার সুযোগ আমার হয় নাই, কিন্তু আমার পুরো পড়িবার এবং আর ক’একটা বাঙ্গালী পড়িবার উনার জীবনের সাথে, বিশেষ করে শেষ জীবনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ছিল।

উনার অনেক বিস্ময়কর ঘটনা জেনেছি আব্বার কাছে সেই ছোট বেলাতেই। তখন থেকেই উনার প্রতি ভক্তি, স্রদ্ধা মনের ভীতরে প্রবল ভাবে গেঁথে গেছে।

এতো বছর পরও উনার কথা আমাদের পড়িবারের কেউই ভুলতে পারে না কারন, শেষ জীবনে উনার আর্থিক কষ্টের কারণে উনার অনেক ব্যাবহিত জিনিস পত্র আমার আব্বা উনার কাছ থেকে বেশী পয়সা দিয়ে কিনে নিয়েছিলেন শুধু মাত্র উনাকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্য! উনি কারও কাছ থেকে টাকা পয়সা সাহায্য নিতে একদমই পছন্দ করতেন না।

তাই আজও যখন বাসায় উনার ব্যাবহিত জিনিস( যেমন,রুপার কারু কাজ করা পান দানী) যখন কারণে- কারনে চোখের সামনে চলে আসে, তখন আব্বা এক লাফে ৫০ বছর পিছনে ফিরে যায়, আবেগে আপ্লুত হয়! দুঃখ পায়! গর্বিতও হয়........ সেই সাথে আমরাও.........

১১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪৫

টুম্পা মনি বলেছেন: আমি ওনাকে আসলেই চিনতান না। :!> আপনার মাধ্যমে চিনলুম।

১২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৫১

তূর্য হাসান বলেছেন: ছোট বেলায় ফুটবল খেলার সুবাদে জাদুকর সামাদের গল্প শুনে শুনে অনুপ্রাণিত হতাম।
ছোটবেলায় শোনা একটি গল্প। জাদুকর সামাদের মাঝে মাঝে নাকি খেলায় মনোযোগ থাকতো না। দর্শকদের কাছ থেকে বাদাম নিয়ে চিবুতো। এদিকে খেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে গোল হচ্ছে না। তখন বাইরে থেকে কেউ একজন চিৎকার করে বলতো সামাদ হচ্ছেটা কি? আর পাঁচ মিনিট আছে খেলা শেষ হতে। সামাদের কানে এই কথা যাওয়া মাত্র আড়মোড়া ভেঙ্গে সতীর্থের কাছে বল পাস চাইত। আর বিস্ময়করভাবে গোল করে আসতো।
আরও অনেক গল্প শুনে শুনে বড় হয়েছে। শ্রদ্ধা জানাই এই ফুটবল জাদুকরকে।

১৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:০০

হাসান মাহবুব বলেছেন: তার সম্পর্কে অনেক মিথ শুনেছি। বিস্তারিত জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ লেখাটির জন্যে।

১৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১২

দি সুফি বলেছেন: সামাদ সম্পর্কে ছোটবেলায় পড়েছিলাম। আজকালকার ফুটবলভক্তরা সামাদের নাম শুনেছে কিনা সন্দেহ। আমরা আসলেই গুণী লোকের কদর করতে জানি না।

১৫| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৫২

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: ডাকটিকেট সংগ্রহ করতে গিয়ে তাকে প্রথম দেখি । তারপর তার সম্পর্কে অনেক মিথ শুনেছি । তার সবগুলোই আপনার লেখায় পেলাম । আরেকটা শুনেছিলাম, একবার কে যেনও তার খেলা দেখতে মাঠে এসেছিলেন, সম্ভবত রানি ইংল্যান্ডের , কিন্তু সামাদ তেমন ভালো খেলছিলেন না । রানি বিরক্ত হয়ে বলেন, কোথায় তোমাদের সামাদ?? সে তো কিছুই খেলতে পারে না । সেটা শুনে সামাদ রানিকে যেয়ে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কয়টা গোল দেখতে চান?? রানি বলেন, ৩ টা । এরপর সামাদ ঠিক তিনটাই গোল করেন ।

যাই হোক, আপনার পোষ্ট বরাবরের মতোই চমৎকার । শুধু আফসোস লাগলো, কবে যে এই দেশে গুণী লোকের কদর হবে !

১৬| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন: পেলে ও ম্যারাডোনার চেয়েও প্রতিভাবান ফুটবল ছিলেন সামাদ। আমাদের র্দূভাগ্য ঐ সময় হতে ফুটবলকে যত্ন নেই নাই।

সে যাই হৌক এই পোষ্টের জন্য মাহতাব ভাইকে ধন্যবাদ।

১৭| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: জাদুকর সামাদ জাদুর মতই অদৃশ্য হয়ে থাকলেন। তিনি ইউরূপ আমেরিকার হলে বিশ্বনন্দিত তারকা হতেন ।আর তাকে এখন এদেশের মানুষই ঠিকমত চিনে না। প্যাথেটিক। পেলে মেরাডোনা নিয়ে আমরা মাতামাতি করি। তাদের শেষ্ঠত্ব নিয়ে লড়াই করি। অথচ আমাদের ওএকজন ছিল। মহা প্রতিভাধর ফুটবলার। যে একাই ১১ জন খেলোয়ারকে কাটিয়ে গোল দিতে পারতেন। যিনি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে গোল দিয়ে দিতেন। সেই জাদুকর সামাদকে আবার স্বরণ করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ মাহতাব্ ভাই। !:#P


আপনাকে বই মেলায় খুঁজেছি। পাইনি । :(

১৮| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২৩

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: অনেক আগেই পড়েছিলাম!


মন খারাপ করে দেওয়া একটা লেখা!

১৯| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অসাধারণ একজন প্রতিভা।

প্রিয়তে নিলাম পোস্ট।

০৩ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৫

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ

২০| ০১ লা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৩৪

এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.