মানুষমাত্রই ভাবুক

৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:৩৯

আমি হাঁটছি, হাঁটছি আর ভাবছি, আমি কে? আমি কী? হাঁটতে হাঁটতে ভাবার মধ্যে অন্যরকম এক স্বাদ আছে। আমার চোখ তাকিয়ে আছে কিন্তু আমি দেখছি না। ভাবছি। ভাবার সময় তাকিয়ে থাকলেও দেখা যায় না। মাঝে-মধ্যে এমন হয় যে, হঠাৎ হোঁচট খাই বা ধাক্কা খাই। খেতে খুব ভালো লাগে কিন্তু এই খাওয়ায় পেট ভরে না। তবুও আমরা খাই। প্রতিনিয়ত খাই। বকা খাই, পিটুনি খাই, ধাক্কা খাই; খাওয়া-খাওয়া আরও কত খাওয়া আছে! আচ্ছা ভাত খাওয়াও খাওয়া বকা খাওয়াও খাওয়া; পার্থক্য কী? খাওয়া অর্থই বা কী?



চলাবস্থায় ভাবলে এই এক অশান্তি, চিন্তাগুলো হিবিজিবি হয়ে যায়। জট পাঁকে। আমি কে? এর সহজ উত্তর আমি মাহবুব। নাহ, তাতেও রয়েছে মতানৈক্য! দারুণ মতানৈক্য! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে আমায় সবাই মাহবুব বলে চিনলেও বাসার সবাই, আত্মীয়স্বজনরা মাহদি বলেই চেনে। এই "এক বাঙালি কা দু দু নাম" নিয়ে রয়েছি খুব অস্বস্তিকর অবস্থায়। আচ্ছা, একজন মানুষের কয়টা নাম হয়? একটা। কিন্তু আমার কয়েকটা। একবার এক আরবি ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? আমি বললাম, মুহম্মদ মাহবুবুর রশীদ মাহদি। তিনি বললেন, মাশাল্লা, বাপ-দাদা-পরদাদার নামসহ মুখস্ত করেছ দেখা যাচ্ছে! আমি তো জানতাম বাঙালিরা এটা পারে না। তাকে কষ্ট করে বুঝিয়েছি যে, এসবগুলো আমার ব্যক্তিগত নাম। তার চোখ কপালে ওঠেছিল।



এটা আমাদের ঐতিহ্য, আমরা কয়েক নামের মালিক হই। যাইহোক, ভাবাভাবির কাজ নির্জনে বসে করতে হয় বা বিছানায় শোয়ে। নয়তো ভাবনাগুলো ডানা মেলতে পারে না। প্রস্ফুটিত হতে পারে না। "গজিবার পূর্বেই মরিবার ঘন্টা" বেজে ওঠে। আচ্ছা, ব্রেইন কী জিনিস? সারাদিন ভাবে। একটু বিশ্রাম নেয় না। ভবনাশূন্য কোনো মাথা পৃথিবীতে নেই। হয় মরে গেছে নয়তো ঘুমিয়েছে। নাহ, ঘুমন্ত মানুষও ভাবে। স্বপ্ন দেখে। মানুষমাত্রই ভাবুক। যাদের ভাবনা অন্যের উপকারে আসে তারা হয়ে যান অনেক কিছু। পক্ষান্তরে যাদের ভাবনা নিজের কাজেও আসে না; তারাই সমাজের বোঝা। এই দেখুন, চলাবস্থায় ভাবতে ভাবতে "আমি কী" তা নিয়ে ভাবার সুযোগই পেলাম না। কাটায় কাটায় ত্রিশ মিনিট হাঁটলাম।

২ টি +১/-০