নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কারো উপকার করতে না পারি কারো ক্ষতি করি না।

মাহমুদ নবী

মাহমুদ নবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাঙ্গা ও গড়া

২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৫২

যে আল্লাহ এ দুনিয়াকে সৃষ্টি করে পৃথিবী পৃষ্ঠকে বিছানার মত করে তৈরি করেছেন এবং তার ওপর মানুষের বসবাস করার সুব্যবস্থা করেছেন, তিনি অন্ধের মতো আন্দায-অনুমানের ভিত্তিতে কোনো কাজ করেন না। কোনো কিছু কিছু না দেখে শুনে অন্ধকারে হাতড়িয়ে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয়ার মতো বাদশাহ তিনি নন। তাঁর নিজস্ব আইন কানুন, বলিষ্ঠ নিয়ম-নীতি, সুদৃঢ় ব্যবস্থা ও সুষ্ঠু কর্ম পদ্ধতি রয়েছে। তাদানুযায়ী তিনি সমগ্র বিশ্ব-জাহানের ওপর একচ্ছত্র কর্তৃত্ব করেছেন। পৃথিবী, চন্দ্র-সূর্য, নক্ষত্র, পানি, বাতাস, বৃক্ষ, পশু-পাখি ইত্যাদির মতো আমরা গোটা মানব জাতিও তাঁর প্রাকৃতিক আইন ও নিয়মের অধীনে সুসংবন্ধ। আমাদের জন্ম ও মৃত্যু, আমাদের শৈশব, আমাদের যৌবন ও বার্ধক্য, আমাদের শাস-প্রস্বাস আমাদের পাকেস্থলী ও রক্ত চলাচল, আমাদের সুস্থতা ও অসুস্থতা ইত্যাদির সবকিছুর ওপরই তাঁর চিরন্তন প্রাকৃতিক আইন ও নিয়মের কর্তৃত্ব একটানাভাবে রীতিমত চলছে। এছাড়া তাঁর একটা আইনও রয়েছে। সেটা তাঁর প্রাকৃতিক আইনের মতোই আমাদের ইতিহাসে ওঠা-নামা, আমাদের উত্থান-পতন, আমাদের উন্নতি-অবনতি এবং ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত তথা দেশ ও জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের ওপর কর্তৃত্ব করছে। আল্লাহর প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ী নাকের বদলে চোখের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ করা এবং পেটের বদলে হৃদয়ে খাদ্য হজম করা যদি মানুষের পক্ষে সম্ভব না হয়ে থাকে, তাহলে যে পথে চললে আল্লাহর আইন অনুযায়ী কোনো জাতির অধ:পতন হওয়া উচিত, সেই পথে তার উন্নতি হওয়া সম্ভব নয়। আগুন যেমন একজনের জন্য গরম এবং আরেকজনের জন্য ঠান্ডা নয়, তেমনি আল্লাহর আইন অনুযায়ী যে সমস্ত কাজ খারপ তা একজনকে অবনত এবং আর একজনকে উন্নত করতে পারে না। মানুষের ভাল-মন্দের জন্য আল্লাহ যে নিয়ম-নীতি নির্ধারিত করেছেন, তা কারোর চেষ্টায় পরিবর্তিত ও বাতিল হতে পারে না, তার ভেতর কারো সাথে শত্রুতা এবং কারো সাথে স্বজনপ্রীতিও নেই। আল্লাহর এ আইনের সর্বপ্রথম ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ধারা হচ্ছে এই যে; তিনি গড়া পছন্দ করেন এবং ভাঙ্গা পছন্দ করেন না। সবকিছুর মালিক হিসেবে তিনি তাঁর দুনিয়াকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে চান। একে অতিমাত্রায় সুসজ্জিত করতে চান। তাঁর যাবতীয় উপায়-উপাদান এবং শক্তি ও যোগ্যতাকে সুষ্ঠু পন্থায় ব্যবহগার করতে চান। তিনি কখনো তাঁর দুনিয়ার ধ্বংস ও অনিষ্ট সাধন করেন না। বিশৃংখলা, কুকর্ম, অত্যাচার ও অনাচার করে তাঁর দুনিয়াকে শ্রীহীন সৃষ্টিতে পরিণত করাকে তিনি কোন দিন পছন্দ করবেন বলে আশাও করা যেতে পারে না। যে সমস্ত লোক দুনিয়া পরিচালনার ক্ষমতা লাভ করতে চায় তাদের ভেতর থেকে কেবলমাত্র তারাই আল্লাহর দৃস্টিতে যোগ্যতাসম্পন্ন হয়, যারা এ দুনিয়াকে গড়ার যোগ্যতা অন্য সবার চেয়ে বেশী রাখে। এরুপ যোগ্যতাসম্পন্ন লোকদেরকেই তিনি দুনিয়া পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করে থাকেন।
অত:পর এসব ক্ষমতাসীন লোকেরা কতটুকু ভাঙ্গে এবং কতটুকু গড়ে সেদিকে তিনি তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখেন। যতোক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা ভাঙ্গার চেয়ে গড়তে থাকে বেশী এবং তাদের চেয়ে বেশী গড়ে ও কম ভাঙ্গে এমন কেউ কর্মক্ষেত্রে থাকে না, ততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ তাদের সমস্ত দোষ-ত্রুটি সত্ত্বেও দুনিয়া পরিচালনার ক্ষমতা তাদের হাতেই রাখেন। কিন্তু যখন তারা গড়ে কম এবং ভাঙ্গে বেশি, তখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করে অন্য লোকদেরকে ঐ একই শর্তে ক্ষমতা দিয়ে থাকেন। (চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.