![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাজানো একটা ঘর। ঘরে ঢুকতেই হাতের বাম পাশে একটি কর্ণার।কর্ণারে অনেক সুন্দর সুন্দর শো পিছ সাজানো রয়েছে। হাতের বাম পাশে বুক সেল্ফ।খুব বেশি বই নেই,হাল্কা পাতলা বই আর কি। নাক বরাবর কয়েক কদম হাটলেই সোফা। ভাল লাগছে দেখতে। খুব পরিপাটি সাজানো গোছান ঘর। কোথাও বিন্দুমাত্র অগোছালোর লেশ মাত্র নেই। কে বলবে একটু আগেই এই ঘরে খুন হয়েছে। খুনের তো কোন আভাশ ই নেই। নেই কোন ছমছমে ভাব।পাশের রুম থেকে ভেসে আছে মৃদুস্বরে রোমান্টিক গান" খুব চেনা চেনা লাগছে তোমাকে"।
আমি মাত্রই দরজা খুলে রুমে ঢুকলাম। তাহলে প্রশ্ন আমি কিভাবে জানি খুন হইয়েছে?
একটু আগে রাহাত আমায় ফোন করেছিল। আনুমানিক ৩০ মিনট হবে।
- হ্যালো, সুমন!
- হুম বল
-দোস্ত তাড়াতাড়ি আমার ফ্ল্যাট এ আয়।
- কেন? কি হয়েছে? কারন ছাড়া তো আমায় ফোন দেয় না কেউ। তোর কারন টা তাড়াতাড়ি বলে ফেল।
-এত কথা বলার সময় নাই আমার। আসতে বলছি আয় প্লিজ।
- যাবো না। রাখলাম। বাই।
- খুন হইছে দোস্ত!
আমি ফোন টা কাটাছি তখন ই কথা টা শুনে আমি হতভম্ভ হয়ে গেলাম। কিভাবে সম্ভব! কারন রাহাত ভাল ছেলে। ও খারাপ কাজ করতে পারে না। দুই একটা যা করে সেটা ওর দৃস্টিতে খারাপ হলেও আমার অজশ্র খারাপ কাজের কাছে সেইসব নতান্তই শিশু। রাহাত আমার ডিপার্টমেন্ট এর বন্ধু।খুব ভাল বন্ধু নয়। আসলে কেউ ই ভাল বন্ধু নয় আমার। কারো বিপদ আপদ হলে আমি যাই তাই সবাই ডাকে। এই আর কি।
রাহাতের লাস্ট কথা টা শুনে সাথে সাথেই আমি ফোন দিলাম রাহাত কে। রিং হচ্ছে। রাহাত ধরলো
- কিরে আসবি না তুই!
পৃথিবীর সকল অসহায়ত্ব আর ভয় মনে হয় ওর কন্ঠে এসে পড়েছে। আমি সাথে সাথে বললাম- তুই টেনশন করিস না। আমি ১০ মিনিটের মধ্যে আসতেছি। রাহাত কান্না কান্না কন্ঠে বললো - তাড়াতাড়ি আয় দোস্ত।আমার খুব ভয় করতেছে।
কিছুই মাথায় আস্তেছে না। মাথা মনে হয় কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। আচ্ছা ও কি ফ্ল্যাট এ কোন মেয়ে নিয়ে এসেছিল? ওর ফ্ল্যাট এ তো দুই জন থাকে। নাকি ওর রুমমেট এর কোন ঘটনা। আমি যাচ্ছি আর ভাবছি। কি হতে পারে বিষয় টা। নাহ সেটা কিভাবে হবে! রাহাতের রুমমেট এর জ্বর,সে বাড়িতে গিয়েছে। কয়দিন আগেই রাহাত বললো কাকে জানি। তাহলে রাহাতের কোন শত্রু কি রাহাত কে ফাসিয়েছে! ওর মত ভাল ছেলের ও এই দুনিয়া তে শত্রু থাকতে পারে! ভাবাই যায় না। কি হতে পারে তাহলে। আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না।মাথা হ্যাং হয়ে আসতেছে। পুরো রাস্তা এসব হাবিজাবি ভেবে ভেবে এসেছি। কিন্তু রুম এ তো খুনের কোন ভাব ই নেই। আমি দরজা টা ভিতর থেকে লক করে দিলাম।
রাহাত,রাহাত! আমি সুমন।ভয়ের কিছু নেই। আমি চলে এসেছি। কই তুই। কোন সাড়া শব্দ নেই। শুধু গান এর হাল্কা আওয়াজ টুকু ছাড়া। আমি রান্না ঘর,বাথরুম,বারান্দা সব দেখলাম। কোথাও নেই। রাহাতের ফ্ল্যাট এ তিন টি রুম। দরজার ডান দিকের কর্ণার এর রুম থেকে গান এর আওয়াজ টা আসছে এখনো। আমি ধীরে ধীরে একটি রুম এ গেলাম। পুরো রুম খালি।কেউ নেই। রাহাত,রাহাত কি রে দোস্ত! এত টেনশন এর কিছু নেই। দু জনে ভেবে নেই কি করা যায় কিন্তু রাহাতের কোন সাড়া শব্দ নেই। আমি একাই কথা বলছি।
কেমন। জানি মনের মধ্যে খচখচ করতেছে।দ্বিতীয় রুম টাও দেখা হইয়ে গেল কিন্তু সেখানেও রাহাত নেই।আমার টেনশন এর মাত্রা এবার দ্বিগুন হইয়ে গেল। রাহাত ও নেই, নেই কোন লাশ ও। প্রচন্ড টেনশন হচ্ছে সুমনের। রীতিমত সে ঘামছে। টেনশন এ সুমনের হাত পা অবশ হয়ে আসছে। এত সাহসী ছেলে আজ স্তব্ধ নীরবতা দেখে ভয় পাচ্ছে। সুমন মনে মনে ভাবছে সে কি ফেঁসে গেল কোন জালে! বিনা দোষ এ দোষী হতে যাচ্ছে নাতো! সুমনের মাথায় নানা রকম আজগুবি চিন্তা আসছে। আচ্ছা কাউ কে কি ডাকবো আমি! না না,রাহাত বিশ্বাস করে বলেছে আমায় আর বিষয় টা খুন। এত তাড়াতাড়ি কাউ কে কিছু বলা যাবে না।সমস্যা হবে।
কিন্তু রাহাত কোথায়! তৃতীয় রুম টার কাছে গেল সুমন। হইতো এই রুমেই মিলবে তার উত্তর। রাহাত,রাহাত বলে দরজায় ধাক্কা দিল কয়বার কিন্তু দরজা তো ভিতর থেকেই বন্ধ। তাহলে!
চলবে
©somewhere in net ltd.