নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্যক্তিজীবনে অহিংসায় বিশ্বাস করি। বুদ্ধের দর্শন গভীরভাবে ভাবায় আমায়। “আসক্তিই সকল দুঃখের কারণ, অধিকারবোধ থেকেই দুঃখের সৃষ্টি।” এই দুটো বাক্যের উপর অগাধ বিশ্বাস। কারো চিন্তা-চেতনাকেই ছোট করে দেখিনা। আমি বিশ্বাস করি যে মতবাদই হোক, তার গভীরে না ঢ

প্রজ্জলিত মেশকাত

আমি আমার মত। আমি অনন্য। পৃথিবীতে আমার মত কেউ ছিলনা, নেই আর কেউ আসবেও না। জন্মের আগেও আমি ছিলাম না। মৃত্যুর পরেও এই নশ্বর পৃথিবীতে আমার কোন অস্তিত্ব থাকবেনা। যা থাকবে তা আমার কৃতকর্ম।

প্রজ্জলিত মেশকাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা দিবস এবং আমার ব্যক্তিজীবনে এর প্রভাব

১০ ই মে, ২০২২ দুপুর ১২:০৫



নিজের কিছু বিচ্ছিন্ন আবেগ নিয়ে অনেকদিন পর আবার ব্লগে কিছু লিখতে বসলাম। আজকাল সবকিছু কেমন ফিকে হয়ে গেছে। খোলা আকাশের নিচে তারা দেখা হয়না আর। বাগানে ফোঁটা ফুলগুলোও আনন্দ দেয়না। পছন্দের মুভিগুলোও কল্পনালোকে নিয়ে যায়না। অনেকগুলো কাজ টো ডো লিস্টে পড়ে আছে। করতে পারছিনা। সবকিছুর পেছনেই কোন না কোন কারণ থাকে। আর আমার জীবনে যা কিছুই ঘটুক না কেন তার দায়িত্ব আমাকেই নিতে হবে। মানব মনের একটা বড় অংশই হচ্ছে অবচেতন। অবচেতনের দুইটি অংশ একটা অর্ধ অচেতন আর একটা হচ্ছে অচেতন। বাংলাগুলো একটু বিদঘুটে মনে হয়। আমাদের সচেতন মন থেকেই চিন্তা, অর্জিত দক্ষতা, মানসিক ক্ষত অবচেতনে প্রবেশ করে। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আমাদের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। যে মানসিকভাবে যতো শক্তিশালী, তার ক্ষেত্রে প্রভাব ততো কম পড়ে। আমি মানসিকভাবে খুবই দোদুল্যমান। আর তাই আমার ক্ষেত্রে প্রভাবটা বেশি পড়ে।

সমস্যাটার সূত্রপাত আজ থেকে ১১ বছর আগে। সবার আগে বলে নেই আমার কাছে মা দিবসের তাৎপর্যটা ভিন্নরকম। একদিকে একজন মা আমাকে পালন করেছেন আর একজন হচ্ছে গর্ভধারিণী।
যে মা আমাকে লালন করেছেন তার কোন সন্তান নেই আমি ছাড়া। যতদিন থেকে চেতনা এসেছে তাকেই মা হিসেবে জানতাম। লালনকারী মা হচ্ছেন আমার চাচি। আমার কোন অভিযোগ ছিলোনা।
ইন্টারমিডিয়েটে বুঝতে পারার পরও নিজের গর্ভধারিণীকে মা ডেকেছি মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর। এর আগে চাচি বলেই ডাকতাম। তারপরও এখন পর্যন্ত আমার লালনকারী মায়ের সামনে গর্ভধারিণীকে মা বলে ডাকিনি। আমি সবকিছু বন্ধুর মতো শেয়ার করতাম মায়ের সাথে। মা ছিলো আমার দিক থেকে শ্রেষ্ঠ বন্ধু; ঈশ্বরের পরই ছিলো আমার কাছে তার অবস্থান। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিষয়টা মোটেও তা ছিলোনা। আর এখান থেকেই সমস্যার সূত্রপাত।

শুরুতেই বলেছি আমার কাছে মা দিবস কাছে ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে। আমাকে লালনকারী মায়ের প্রসংগই বেশি থাকছে। তাঁর ক্ষেত্রে মা আর গর্ভধারিণীর ক্ষেত্রে গর্ভধারিণী মা বলে উল্লেখ করবো। প্রথম দিকের এক পাবলিক মেডিকেল কলেজে পড়লাম। তখন পর্যন্ত মা ভালোই ছিলো। সব রাগ- অভিমান আর দুঃখ-কষ্ট মায়ের উপরই ঝাড়তাম। কিন্তু সেটা ভূল ছিলো। আমি নির্ভরশীল পার্সোনালিটির হওয়াতে সবকিছু মায়ের উপরই নির্ভর করতাম। সবসময় আমার টান ছিলো মেধা আর যোগ্যতার প্রতি; আর ছিলো যেসব মানুষ যুদ্ধ করে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকে এবং জয়ী হয়। মা'র পছন্দ ছিলো সবদিক বিবেচনায় নিখুঁত। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ছিলো ব্যতিক্রম। এখানেই সৃষ্টি হয় স্বার্থের দ্বন্দ্ব। মা'র মনে একটাই চিন্তা ছিলো যে ভাতিজা পালন করছে আর সে অন্যরক্তের। তাই তাকে নিজের রক্তের কাউকে বিয়ে করিয়ে আনতে হবে। নানাভাবে বিভিন্নজনের মাধ্যমে আমার মধ্যে তাঁর ইচ্ছের কথিত ইতিবাচকতা উপস্থাপন করতে থাকে। আর নিজে কৌশলে আমাকে বুঝাতে থাকে। মা'র ভাগ্নি কোনদিক থেকেই আমার পছন্দের মাপকাঠির ধারে কাছেও ছিলোনা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মা'র ইচ্ছে এবং আমার জীবনে তাঁর অবদানের চিন্তা করে ঢেঁকী গিলে ফেলি এই ভেবে যে মায়ের দোয়াতে সবকিছু ভালোই যাবে। সৌন্দর্য্য, বংশমর্যাদা, মেধা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এই সবকিছুর ঊর্ধে মায়ের ইচ্ছে প্রাধান্য দিয়ে নিজেকে সমর্পণ করি।

সমস্যার শুরুটা এখানেই। ধীরে ধীরে খেয়াল করতে থাকি 'মা' আর আমার মা থাকছেনা। তিনি হয়ে যাচ্ছেন তাঁর ভাগ্নির খালা; আর আমাকে বানিয়ে দিচ্ছেন তাঁর দেবরের ছেলে। আমি অবাক হয়ে এই বিচিত্র বিবর্তন দেখতে থাকি। অথচ 'মা' এর আসনে সবসময় তিনিই ছিলেন আর এখনো আছেন; যদিও তিনি আমাকে এখন পুরোপুরি দেবরের ছেলে বানিয়ে দিয়েছেন। বয়সে বেশ কয়েক বছরের ছোট হওয়ায় 'মা'র ভাগ্নির শুধু শৈশব জানতাম। কৈশোর বা যৌবন সম্পর্কে মোটেও ধারণা ছিলোনা। লজ্জার কথা হলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে বিয়ের পর মেয়েটি অল্পতেই রেগে গিয়ে ভাংচুর করতো আর আমার 'মা'র প্ররোচনার আমার গায়ে হাত পর্যন্ত তুলতো। কোনভাবেই সময় ভালো যায়নি; এমনকি শেষ সময় পর্যন্ত। 'মা'র কাছে বিচার দিলে উল্টো আমাকেই কথা শুনতে হতো। 'মা' তাঁর ভাগ্নিকে টিকিয়ে রাখার জন্যে গোয়েবলসীয় কায়দায় বিষাক্ত অপপ্রচার চালাতো। বন্ধুর মতো শেয়ার করা বিষয়গুলোকে 'মা' বিকৃত করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কাজে লাগাতো। কথাগুলো বলে কষ্ট হচ্ছে। আপনারা হয়তো আমাকে নিচ ভাবতে পারেন। কিন্তু এটাই সত্যি।

'মা'র ভাগ্নির সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন আর স্থায়িত্ব প্রদানের জন্যে সন্তান নিলাম। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হলোনা। সন্তান নেওয়ার পর থেকে মেয়েটির আচরণ আরো খারাপ হয়ে গেলো। আমি সবসময় ভয়ে থাকতাম কখন আবার কি নিয়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে গন্ডগোল করে চারপাশের মানুষকে জানিয়ে আর আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে আমার অস্তিত্বকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। প্রায় এগারো বছরের বিয়ে আর ৬ বছর একছাদের নিচে বসবাসের মধ্যে প্রায় একবছর বাবার বাড়ি গিয়ে আলাদা থেকেছে। আমার পোস্ট কোভিড নিউমোনিয়ার কঠিনতম জটিলতার সময়ই তাকে পায়নি। ৬ বছরের মধ্যে ১ বছর বাদ দিলে ৫ বছর একছাদের নিচে বসবাস করা হয়েছে। বারবার সে আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্যে চলে গিয়েছে; কিন্তু পায়ের নিচে মাটি অর্থাৎ কোন আশ্রয়স্থল না পাওয়ায় আবার ক্ষমা চেয়ে ফেরত এসেছে। শেষবার ক্ষমা চাওয়ার আগে একটা আশ্রয়স্থল তৈরি প্রায় করে ফেলেছিলো। কিন্তু সেটা ছুটে যায়।

এতো ইজ্জত সম্মানহানি আর মানসিক নির্যাতনে আমি মনোবৈকল্যে ভূগতে শুরু করি। শুধু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ডিভোর্স দিতে পারিনি। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর সবকিছু মেনে নিয়ে চলতে থাকি। অবশেষে সে এমনকিছু করে ফেলে যে আমার পক্ষ থেকে ডিভোর্স দেওয়া ছাড়া কোন বিকল্প থাকেনা। ডিভোর্স হয়েই গেলো শেষ পর্যন্ত। আর তখনই আমার 'মা'র আসল চেহারা শতভাগ সামনে চলে এলো। তিনি আমাকে পুরোপুরি ছেড়ে দিলেন। পুরোপুরি দেবরের ছেলে বানিয়ে দিলেন। তাঁর জায়গায় করা আমার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দিলেন। একের পর এক মিথ্যাচার শুরু করলেন।

আর তখনই আমার গর্ভধারিণী আমার পাশে এসে দাঁড়ালেন স্বর্বস্ব দিয়ে। এর আগে কখনোই আমার গর্ভধারিণী 'মা' সামান্যতম অধিকারবোধ দেখাননি। আমি আমার গর্ভধারিণীর জন্যে বলতে গেলে কিছুই করিনি। যা করেছি সবই আমার পালক 'মা' এর জন্যে। এখন আমার দুচোখে শুধুই অশ্রুবন্যা। আমি নীরবে নিভৃতে ভাবি, সম্পর্ককি শুধুই রক্তের কারণে হয়!! এটাচমেন্ট- রিলেশনশীপ বলতে কি কিছু নেই!! মানুষ একটা কুকুর বা বিড়াল পাললেও তার প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। আর আমি সবকিছু করেছি 'মা' এর জন্যে। আর তিনি আমাকে এভাবে ছুঁড়ে দিতে পারলেন!!



মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০২২ দুপুর ১:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: মা দিবস হোক, আর নারী দিবস হোক। নারীকে সম্মান করতে হবে প্রতিটা দিন।

১০ ই মে, ২০২২ রাত ১০:৩৭

প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: তখন অপূর্ণ পোস্ট দিয়েছিলাম। এখন সম্পন্ন করলাম। এখন পড়ে মন্তব্য করবেন রাজীব ভাই।

২| ১০ ই মে, ২০২২ রাত ৮:২৬

ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: মায়ের পদতলে এমনিই জান্নাত নিশ্চিত স্থান পায়নি। যথেষ্ট কারণ আছে ।

১০ ই মে, ২০২২ রাত ১০:৩৯

প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: আমার জীবনে দুইজন 'মা' দুইরকমভাবে এসেছেন। অসম্পূর্ণ পোস্ট ছিলো আগেরটা। এখন সম্পন্ন করেছি। এখন পড়ে মন্তব্য করুন।

৩| ১০ ই মে, ২০২২ রাত ১০:৫০

জ্যাকেল বলেছেন: আমি প্রতিটি দিনকেই মা' দিবস হিসাবে পালনের চেস্টা করি।

৪| ১০ ই মে, ২০২২ রাত ১০:৫৬

জ্যাকেল বলেছেন: আমি একটা জিনিস ভেবে অবাক হচ্ছি- নারী মাত্রই মায়ের জাতি। তিনারা কি করে এত নিষ্টুর হোন? আশা করি আপনার এটা অবাস্তব/গল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

১১ ই মে, ২০২২ রাত ৩:৩১

প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: অবাস্তব তো নয়ই; বরং এটাই আমার জীবনের চরম বাস্তবতা যা অলিক কল্পনাকেও হার মানায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.