নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আমার মত। আমি অনন্য। পৃথিবীতে আমার মত কেউ ছিলনা, নেই আর কেউ আসবেও না। জন্মের আগেও আমি ছিলাম না। মৃত্যুর পরেও এই নশ্বর পৃথিবীতে আমার কোন অস্তিত্ব থাকবেনা। যা থাকবে তা আমার কৃতকর্ম।
দিন চলে যাচ্ছে। কখনো এমনিতেই কেটে যায় আবার কখনোবা রক্তক্ষরণও হয়। দিন যতো যাচ্ছে বাইপোলার ডিপ্রেশন বেড়েই চলছে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসে যেতে লিপ্ত হতে হয় এক অসম যুদ্ধে। যে যুদ্ধে কখনো কখনো সর্বাধিক প্রচেষ্টা করেও হেরে যেতে হয়। তখন ঘন্টাখানেক দেরিতে অফিস যেতে হয়। প্রচন্ড ডিপ্রেশনের জন্যে এইবারও লিখিত পরীক্ষা দেওয়া স্বত্ত্বেও ভাইবা আর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা দিতে পারিনি। পরীক্ষার হল থেকে ঘুরে এসেছি। জুলাইতে পরীক্ষায় ভালোভাবে বসতে হবে। কিন্তু বাইপোলার ডিসর্ডার আমাকে যেভাবে প্যারালাইজড করে দেয়, তাতে সন্দেহ জাগে আদৌ পারবো কিনা। তাই আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি জীবনে কিছুটা ভারসাম্য আানার। এরজন্যে একটা সামগ্রিক পরিবর্তনের চিন্তা করছি। তখনই একটা এক্সপেরিমেন্টাল ট্রিটমেন্ট প্রটোকল পেলাম, যেটা ট্রিটমেন্ট রেসিসট্যান্ট ডিপ্রেশনে ৬০-৭০ ভাগ সফল বলে কিছু লিমিটেঢ স্টাডি আছে। এখানেই আমার ভ্রমণ শুরু।
কেটামিন সম্পর্কে কিছু কথা বলে নেই। এটা ১৯৭০ সালে এনেসথেটিক এজেন্ট হিসেবে ইউএসএফডিএ'র অনুমোদন পায়। তারপর ৩০-৪০ মিনিটের অপারেশনের জন্যে জেনারেল এনেসথেটিক হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। এটা খুব ভালো একটা শর্ট অ্যাক্টিং এনেসথেটিক এজেন্ট যেটা কোন ধরণের কার্ডিও- রেসপিরেটরি ডিপ্রেশন করেনা, উল্টো স্টিমুলেট করে। তাই এটা ব্যবহারে অক্সিজেন বা অন্যকোন সাপোর্ট প্রয়োজন হয়না। যুদ্ধক্ষেত্রে বা দুর্গম এলাকাতেও ঝুঁকিহীনভাবে ব্যবহার করা যায়।
কিন্তু বিপত্তি বাজে অন্যজায়গায়। মাদকসেবীরা এটা নেওয়া শুরু করে। আর এটা স্ট্রিট ড্রাগ নামে পরিচিতি লাভ করে। তারপর এটার উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। কিভাবে কেটামিন কাজ করে সেটার মেকানিজম অফ অ্যাকশন আলোচনা করছিনা। এগুলো মেডিকেল সাইন্সের ব্যপার। আমাকে যেমন সার্কিট বা কোডিং বুঝিয়ে লাভ নেই, ঠিক তেমনি উল্টোটা।
এখন মূল আলোচনায় আসি। ৯০ এর দশকে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের জন্যে সাব- এনেসথেটিক মাত্রায় কেটামিন ইনফিউশান ট্রিটমেন্ট পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়। প্রথম থেকেই ট্রিটমেন্ট রেসিসট্যান্ট ডিপ্রেশনে ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু ঝুঁকি থাকায় আর অ্যাবিডস পটেনশিয়াল থাকায় শুধুমাত্র সাইকিয়াট্রিস্ট আর রেজিস্টার্ড নার্সের তত্ত্বাবধানে দেওয়ার অনুমোদন আছে।
কেটামিনের ট্রিটমেন্ট প্রটোকল হলো তিন সপ্তাহে দুইটা করে ছয়টা ইনফিউশান। এটা লোডিং ডোজ। এরপর ২-৬ মাস পর পর একটা করে বুস্টার ডোজ। এ পর্যন্ত আমি দুই সপ্তাহে দুইটা ইনফিউশান নিয়েছি। মনে হয় কিছুটা কাজ হচ্ছে।
বলে রাখা ভালো যে আমি ধুমপানও করিনা , অন্যকিছু দূরের ব্যপার। কেটামিনের থেরাপির অভিজ্ঞতা অন্যরকম। একটা আউট অফ বডি এক্সপেরিয়েন্স আছে। কিছুটা হ্যালুসিনেশন হয়। নিজের প্রত্যাশা আর দুঃখগুলো গভীর থেকে বেরিয়ে আসে। শারীরিক অনুভূতি থাকেনা। মনে হয় সোল যেন ভাসছে।
নিজের গভীরে প্রোথিত দুঃখ, কষ্ট, কান্না আর স্বপ্নগুলো ডানা মেলে। সবকিছুকে অবজেক্টিভলি দেখা যায়। নিজের মনের বাইরে গিয়ে সব চিন্তাকে দেখা যায়। আত্মার প্রজেকশন সব জায়গায় বিচরণ করতে পারে। ৪০ মিনিট ইনফিউশনের পর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই অভিজ্ঞতা কেটে যায়। ওইদিনটা স্বাভাবিকভাবেই দূর্বল লাগ। স্মৃতি কিছুটা স্কিপ করতে থাকে। পরেরদিন থেকে বিষণ্নতা কমতে থাকে।
তবে আপনারা কখনোই এটা ট্রাই করবেননা। এর অ্যাবিডস পটেনশিয়াল অনেক বেশি। আমার সুপারভিশনের ব্যবস্থা আছে। আমি নিজেও এই থেরাপির আদ্যোপান্ত জানি। দোয়া করবেন আর সবাই ভালো থাকবেন।
০৭ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:১০
প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: ধন্যবাদ ইফতেখার ভাই।
২| ০৭ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই প্রার্থনা করি।
০৭ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:১১
প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রইলো রাজীব ভাই।
৩| ০৭ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৩
তানভীর_আহম্মেদ বলেছেন: অসহ্য যন্ত্রনাদায়ক দিনগুলির কথা মনে পরে গেল। দয়া করে হেরে যাবেন না।
দোয়া রইলো আপনার জন্য।
০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫৫
প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: দোয়া করবেন ভাই। আপনার জন্যেও দোয়া ও শুভকামনা রইলো।
৪| ০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৩:১২
কলাবাগান১ বলেছেন: গত সপ্তাহে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর স্টাডি দেখিয়েছে যে কেটামিন এর ইফেক্ট আর প্লাসিবোর ইফেক্ট একই
A single dose of intravenous ketamine compared to placebo has no short-term effect on the severity of depression symptoms in adults with major depressive disorder.
https://www.medrxiv.org/content/10.1101/2023.04.28.23289210v1.full
০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫৯
প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: একটা দুইটা স্টাডি সব এন্টিডিপ্রেশেন্টকেই প্লাসিবোর সেইম ইফেক্ট এর কথা বলছে। কিন্তু এটাতো ঠিক নয়। এন্টিডিপ্রেশেন্ট ওয়ার্কস। আমি অনেকটা ট্রিটমেন্ট রেসিস্ট্যান্ট হয়ে গেছি। আমার কেটামিন থেরাপি বেশ খানিকটা কাজে দিচ্ছে।
৫| ০৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রইলো রাজীব ভাই।
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো।
০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫৬
প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: আপনার জন্যেও অশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো রাজিব ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ডিপ্রেশন সম্পর্কে আমার ধারনা স্পষ্ট নয়। বিষণ্ণতা, অবসাদ, জীবন সম্পর্কে অনীহা, সবকিছু নেতিবাচকভাবে নেয়া, নিজেকে মূল্যহীন বা অপ্রয়োজনীয় মনে করার মতো একটা সময় (৭/৮ বছর) আমি পার করেছি সত্য তবে সেটাকে আদৌও ডিপ্রেশন বলা যাবে কি না জানিনা। তবে এটা সত্য যে আমি সহজে হার মানতে পারি না, নিজের কাছেও না। বিষয়টা আমাকে বেশ ভোগায়। আপানার লিখা পড়ে কিছু বিষয় জানা হলো।
আপনার সার্বিক সুস্থতার ও সুন্দর জীবন কামনা করছি। রাব্বুল আলামিন আমাদের সহায় হোন, এটাই প্রত্যাশা থাকছে। ধন্যবাদ।