![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাদকাতুল ফিতর সম্পর্কে
নবীজি (সা.) বলেছেন, তোমরা এ
দিনটিতে তাদেরকে অন্যের কাছে
চাওয়া থেকে বিরত রাখো।
জাকাতের মতো এটিও দরিদ্র মানুষের
ওপর মহান আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত
আমলি সহযোগিতা।
ফিতরা কী?
ইসলামী শরিয়তের হুকুম মোতাবেক এটি
একটি ওয়াজিব আমল। ঈদুল ফিতরের দিন
সুবহে সাদিকের সময় জীবিকা
নির্বাহের অত্যাবশকীয় সামগ্রী
ছাড়া নিসাব পরিমাণ বা অন্য কোনো
পরিমাণ সম্পদের মালিকদের পক্ষ
থেকে গরিবদের জন্য নির্দিষ্ট
পরিমাণের একটি অর্থ প্রদান করার
বিশেষ আয়োজনকে সাদকাতুল ফিতর
বলা হয়। ফিতরার পরিমাণ জনপ্রতি
আধা সা অর্থাৎ এক সের চৌদ্দ ছটাক
বা পৌনে দুই সের গম বা সমপরিমাণ
গমের মূল্য ফিতরা হিসেবে প্রদান
করতে হবে।
ফিতরার পরিমাণ আসলে কত?
আমাদের দেশে প্রতি বছর ইসলামিক
ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন ইসলামিক
সেন্টার মাথাপিছু একটি পরিমাণ
ঘোষণা প্রদান করে এবং সে ঘোষণা
অনুযায়ী কোটিপতি ও মধ্যবিত্ত
নির্বিশেষে সবাই ফিতরা প্রদান
করে। আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন,
নবীজি (সা.)-এর যুগে মোট চারটি পণ্য
দ্বারা সাদকাতুল ফিতর আদায় করা
হতো, যেমন খেজুর, কিশমিশ, জব ও পনির।
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন,
আমাদের সময় ঈদের দিন এক সা খাদ্য
দ্বারা সাদকা আদায় করতাম। আর তখন
আমাদের খাদ্য ছিল জব, কিশমিশ, পনির
ও খেজুর। [সহিহ বোখারি]
রাসুল (সা.)-এর যুগে গমের ভালো ফলন
ছিল না বিধায় আলোচিত চারটি পণ্য
দ্বারাই ফিতরা আদায় করা হতো। এরপর
হজরত মুয়াবিয়ার (রা.) যুগে গমের ফলন
বেড়ে যাওয়ায় গমকে আলোচিত
চারটি পণ্যের সঙ্গে সংযোজন করা হয়।
আর তখন গমের দাম ছিল বাকি চারটি
পণ্যের তুলনায় বেশি। আর মূলত এই দাম
বেশি থাকার কারণেই হজরত মুয়াবিয়া
গমকে ফিতরার পণ্যের তালিকভুক্ত
করেছিলেন।
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ
ইবনে উমর বলেন, নবীজি (সা.) এক সা
খেজুর বা এক সা জব দিয়ে ফিতরা
আদায় করার আদেশ দিয়েছেন। পরবর্তী
সময় লোকজন (সাহাবা আজমাইনরা) দুই মুদ
গমকে (আধা সা) এগুলোর সমতুল্য মনে
করে এবং আদায় করে। [বোখারি]
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়,
গম দ্বারা আদায় করলে আধা সা বা এক
কেজি ৬২৮ গ্রাম দিলেই ফিতরা
আদায় হয়ে যাবে। আর বাকি চারটি
পণ্য অর্থাৎ খেজুর, জব, পনির ও কিশমিশ
দ্বারা আদায় করার ক্ষেত্রে জনপ্রতি
এক সা বা তিন কেজি ২৫৬ গ্রাম দিতে
হবে। দেখা যাচ্ছে যে গম ছাড়া অন্য
পণ্য দ্বারা ফিতরা আদায় করলে এক সা
পরিমাণ দিতে হচ্ছে, যা গমের ওজনের
দ্বিগুণ এবং মূল্যের দিক দিয়েও অনেক
তফাত। হাদিসে এক সা আদায় করার
কথা উল্লেখ থাকার পরও তখন এর মূল্য
অনেক বেশি হওয়ায় সাহাবারা আধা
সা পরিমাণ গম আদায়ের সিদ্ধান্ত
নিয়েছিলেন। তখন আধা সা গমের মূল্যও
অন্য চারটি পণ্যের এক সা-এর চেয়েও
বেশি ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে
আলোচিত পাঁচটি পণ্যের মধ্যে গমই
হচ্ছে সবচেয়ে কম দামি পণ্য।
আমরা ফিতরা দেই কত?
তাহলে এখন প্রশ্ন হলো, বর্তমানে গমের
পরিমাণ হিসেবে আধা সা ফিতরা
আদায় করলে হবে? হাদিসের আলোচনা
থেকে এ কথাটি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান
হয় যে সাহাবারা খেজুর, জব, পনির ও
কিশমিশ থেকে হলে এক সা পরিমাণ
এবং গম থেকে হলে আধা সা পরিমাণ
ফিতরা আদায় করতেন। কারণ তখন গমের
দাম অন্য সব পণ্যের তুলনায় বেশি ছিল।
আর বর্তমানে অন্য চারটি পণ্যের তুলনায়
গমের দাম কম। এ পর্যন্ত হাদিসের এমন
কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি যে
সাহাবারা সবাই সর্বনিম্ন দামের বস্তু
দ্বারা ফিতরা আদায় করেছেন। বরং
তাঁদের সবার আগ্রহ ছিল সর্বাধিক
দামি পণ্য দ্বারা ফিতরা আদায় করা।
তাহলে বর্তমানে সবাই সর্বনিম্ন
দামের পণ্য দ্বারা ফিতরা আদায় করছে
কেন? আমাদের সময়ের সম্পদশালী আর
মধ্যবিত্ত নির্বিশেষে আধা সা গম বা
তার সমপরিমাণ মূল্য দ্বারা সাদকাতুল
ফিতর আদায় করা সমীচীন হচ্ছে কি?
এবং এতে সাদকাতুল ফিতরের আসল হক
কি আদায় হচ্ছে?
শরিয়তের বর্ণনা ও হাদিসের
আলোচনা অনুযায়ী সমাধান হলো- যার
সামর্থ্য অনুযায়ী উলি্লখিত পাঁচটি
পণ্যের যেকোনো একটি পণ্যের
নির্দিষ্ট পরিমাণে ফিতরা আদায়
করতেন। যার সামর্থ্য আছে উন্নতমানের
খেজুর দ্বারা সে খেজুর দ্বারাই আদায়
করবে। আর যার সামর্থ্য আছে কিশমিশ
কিংবা জব দ্বারা আদায় করার সে
তা দ্বারা আদায় করবে। যার গম দ্বারা
আদায় করা ছাড়া অন্য পণ্য দ্বারা
আদায় করার সামর্থ্য নেই সে গম দ্বারা
ফিতরা আদায় করবে। বেশি সম্পদশালী
এবং কম সম্পদশালী নির্বিশেষ গম বা
সর্বনিম্ন দামের পণ্য দ্বারা সাদকাতুল
ফিতর আদায় করার বিষয়টি
বিবেকবর্জিত এবং হাদিস ও শরিয়তের
নির্দেশনার পরিপন্থী। তাই আসুন!
আমরা সবাই নিজেদের সামর্থ্য
অনুযায়ী সাদকাতুল ফিতর আদায় করি
এবং দায়সারা আদায় পদ্ধতি ত্যাগ
করি।
ফিতরার আর্থ-সামাজিক গুরুত্ব
ফিতরা আদায় করা মহান আল্লাহর
গুরুত্বপূর্ণ একটি আদেশ। বিত্তবান মুসলিম
নাগরিকের ওপর ফিতরা ওয়াজিব করে
দেওয়া হয়েছে। গরিব-অসহায় মানুষদের
হক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে এই
সাদকাতুল ফিতরাকে। পবিত্র রমজান
মাসে রোজা পালনের পুরস্কার
হিসেবে আল্লাহ মহান ঈদের আনন্দ
প্রদান করেছেন। সমাজে বসবাসকারী
ধনিক শ্রেণীর মানুষদের সঙ্গে সঙ্গে
গরিবরাও যাতে ঈদের আনন্দ উপভোগ
করতে পারে, এজন্য এই সাদকাতুল
ফিতরের আমলকে ওয়াজিব করা
হয়েছে। ফিতরার মাধ্যমে মুসলিম
সমাজে বসবাসকারী ধনীদের অর্থ
গরিবদের মধ্যে বণ্টিত হয় এবং এ দ্বারা
গরিবদের জীবন-যাপনে কিছুটা হলেও
গতি ফিরে আসে। এ জন্য ইসলামে
সাদকাতুল ফিতরের গুরুত্ব অপরিসীম। এ
ফিতরা দানের মাধ্যমে সমাজে
বসবাসকারী জনসাধারণের মধ্যে সমতা
ফিরে আসে এবং সহযোগিতার
মানসিকতার বিস্তার ঘটে। একে
অন্যের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক সাধিত
হয় এবং এই সামাজিক সম্পর্কের উন্নয়ন
হয়।
২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:২১
মামুন আকন বলেছেন: মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্
ভাই আপনার মূল্যবান কমেন্ট এর জন্য ধন্যবাদ ।
আসলে ,এখানে নবীর জামানার কথা উল্যেখ করা হয়েছে । তবে বর্তমানে সকল আলেমগন যে সিদ্ধান্ত নিবেন,তাই আমরা মেনে নিবো । তাই এ বসর ফিতরা 60 টাকা ধরা হয়েছে।
৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সমাজে বসবাসকারী ধনিক শ্রেণীর মানুষদের সঙ্গে সঙ্গে গরিবরাও যাতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে, এজন্য এই সাদকাতুল ফিতরের আমলকে ওয়াজিব করা হয়েছে। ফিতরার মাধ্যমে মুসলিম সমাজে বসবাসকারী ধনীদের অর্থ
গরিবদের মধ্যে বণ্টিত হয় এবং এ দ্বারা গরিবদের জীবন-যাপনে কিছুটা হলেও গতি ফিরে আসে।
এ জন্য ইসলামে সাদকাতুল ফিতরের গুরুত্ব অপরিসীম।
এ ফিতরা দানের মাধ্যমে সমাজে বসবাসকারী জনসাধারণের মধ্যে সমতা ফিরে আসে এবং সহযোগিতার মানসিকতার বিস্তার ঘটে। একে অন্যের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক সাধিত হয় এবং এই সামাজিক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়।
কিন্তু ইসলামেও সুবিধাবাদীতার ছাপ এই সাদকাতুল ফিতরের বিধানেও সেই মূল বিধানকে অনেকটাই আড়ালে রেখেছে...
৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪
মামুন আকন বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু
ভাই আপনার গুরুত্বপূর্ন তথ্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, ,,
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: আপনার পোস্টে উল্লেখিত কিশমিশ, পনির, খেজুর বা যবের বর্তমান বাজার মূল্য কত? আমরা আম-জনতা তো ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হিসেবকে অথেনটিক ভেবে থাকি। ফিতরা আদায় কিভাবে সঠিক হবে সে ব্যাপারে আর্থিক তারতম্য ও সঠিক মূল্যমান উল্লেখ করে দিলে পোস্ট টা অধিক কাজে আসতে পারতো।