নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিবন মানেই যুদ্ধ,যুদ্ধই সর্বজনীন !!

মামুন আকন

শেখার জন্য এসেছি,,,

মামুন আকন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরবানীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসালা,যা সবার জানা দরকার ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৪

আর কিছু দিন পরেই ঈদ-উল-আযহা ।আর ঈদ-উল-আযহা মানেই তো কুরবানী ।কুরবানী জন্যই তো এই ঈদটা এতোটা আনন্দের একটা দিন ।এই দিনটা শুধু আমাদের কাছেই সেরা দিন না মহান আল্লাহ্র কাছেও প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্র নিকট দিবস সমূহের মাঝে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হোল কোরবানীর দিন, তারপর পরবর্তী তিনদিন ।
তাই আমাদের কুরবানীর পশু কিন্তেই হবে । কুরবানী পশু কেনার আগে এবং কুরবানী দেবার আগে আমাদের কুরবানী সম্পর্কে খুব ভালো ভাবে জানা উচিৎ ।তাই কুরবানী সম্পর্কে আপনাদের সামান্য ধারনা দেবার জন্য আমার আজকের এই পোষ্ট ।আশা করি এই পোষ্টি সামান্য হোলেও আপনাদের কুরবানী সম্পর্কে ধারনা দেবে ।

কোরবানী শব্দের অর্থ উৎসর্গ, ত্যাগ। ইসলামী শরীয়াতের পরিভাষায় জিলহজ্ব মাসের ১০,১১ ও ১২ তারিখে নির্দিষ্ট জন্তুকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে জবেহ করাকে কোরবানী বলে। কোরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং অন্যতম মুসলিম ঐতিহ্য। এর পিছনে রয়েছে পিতা কর্তৃক সর্বাধিক প্রিয় পুত্রের গলায় ছুরি চালানোর এক ঐতিহাসিক ঘটনা। আল্লাহর প্রতি অগাধ প্রেম ও অনুপম আনুগত্যের এক জ্বলন্ত নিদর্শন। মুসলিম জাতির পিতা হযরত নবী ইব্রাহিম (আৎ) থেকে শুরু হওয়া প্রথা আজও সকল মুসলমানের কাছে অত্যন্ত মর্যাদার।
আসুন, পবিত্র কোরবানী ও ঈদের মাসায়িল নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

কোরবানীর পরিচয়ঃ কুরবানী আরবী শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কোরবানী বলা হয় ঐ নির্দিষ্ট জন্তুকে যা একমাত্র আল্লাহপাকের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে নির্দিষ্ট সময়ে একমাত্র আল্লাহর নামে জবেহ করা হয়।

কোরবানীর তাৎপর্য ও ফজিলত: কোরবানীর তাৎপর্য ও ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদীস পাওয়া যায়। হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা কতিপয় সাহাবী প্রিয় নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল!, কোরবানী কি? প্রিয় নবী (সাঃ) বললেন, তোমাদের (জাতির) পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সুন্নত। পুনরায় প্রশ্ন করা হলো, এতে আমাদের জন্য কি আছে? রাসূলে পাক (সাঃ) বললেন, কোরবানী গরু ও বকরীর প্রতিটি পশমে নেকী রয়েছে। তখন সাহাবায়ে কেরাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে ভেড়া ও দুম্বার ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? তিনি উত্তরে বললেন, ভেড়া ও দুম্বার পশমেও ছওয়াব আছে। (আহমাদ, ইবনে মাযাহ, মিশকাত-১২৯)।
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত আছে যে, কোরবানীর পশু পুলসীরাতের উপর তোমাদের বাহন হবে। তাই তোমরা মোটা তাজা পশু কোরবানী কর।
তারগীব নামক গ্রন্থে উল্লেখ আছে একবার হযরত নবী করিম (সাঃ) স্বীয় কন্যা ফাতেমাকে (রাঃ) ডেকে বললেন “হে ফাতেমা! তুমি তোমার কোরবানীর জন্তুর নিকট যাও কেন না কোরবানীর জন্তু জবেহ করার পর রক্তের ফোঁটা মাটিতে পড়ার সাথে সাথে তোমার যাবতীয় গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।” হযরত ফাতেমা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! এটা কি শুধু আমার জন্য? প্রিয় নবী (সাঃ) জবাব দিলেন “এটা সকল মুসলমানের জন্য”।
হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবী (সাঃ) এরশাদ করেছেন, আদম সন্তান কোরবানীর দিন যেসব নেকীর কাজ করে থাকে তন্মধ্যে আল্লাহতায়ালার নিকট সবচেয়ে পছন্দীয় আমল হলো কোরবানী করা। কেয়ামতের দিন কোরবানীর পশু তার শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত হবে এবং কোরবানীর রক্ত জমিনে পড়ার পূর্বেই তা আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়। অতএব, তোমরা এ পুরস্কারে আন্তরিকভাবে খুশী হও। (তিরমিযী, ইবনে মাযাহ্, মিশকাত-পৃ-১২৮)।

কোরবানী যার উপরঃ কোরবানী করা ওয়াজিব তবে সকল মুসলমানের উপর নয়। যার কাছে মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য অথবা সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সমপরিমাণ অর্থ সম্পদ আছে, এমন সুস্থ মস্তিস্ক, প্রাপ্ত বয়স্ক এবং বাড়িতে অবস্থানকারী (মুকিম) ব্যক্তির উপর কোরবানী ওয়াজিব। যাকাতের ন্যায় কোরবানীতে সম্পদের বছরপূর্তি শর্ত নয়। বরং ফিতরার ন্যায় ঈদের দিন কারো কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলেই তার উপর কোরবানী ওয়াজিব। শরীয়ত যার উপর কোরবানী ওয়াজিব করেনি, এমন ব্যক্তি যদি জবেহ করার ইচ্ছায় পশু ক্রয় করেন তবে তার উপর কোরবানী ওয়াজিব হয়ে যায়।
কিন্তু কোরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্তে¡ও যদি কেহ কোরবনী না দেয় তবে মারাত্মক অপরাধী সাব্যস্থ হবে। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা:) বলেন, সামর্থ থাকা সত্তে¡ও যে কোরবানী করল না, সে যেন আমার ঈদগাহের কাছেও না আসে।

ঈদুল আযহার সুন্নতঃ (১) ঈদুল আযহার রাত্রিতে সওয়াবের উদ্দেশ্যে জেগে ইবাদত করা। (২) যে ব্যক্তি কোরবানী করবে তার জন্য নামাজের পূর্বে কিছু না খাওয়া এবং নামাজের পর কোরবানীর গোশত থেকে খাওয়া সুন্নত। (৩) যে ব্যক্তি কোরবানী করবে তার জন্য জিলহজ্বের চাঁদ দেখার পর থেকে কেরবানী না করা পর্যন্ত গোঁফ ও নখ না কাটা মোস্তাহাব। (৪) ঈদগাহে যেতে এক রাস্তায় যাওয়া এবং অন্য রাস্তায় আসা সুন্নত। (৫) যাওয়ার সময় তাকবীর উচ্চস্বরে বলা (৬) ঈদুল ফিত্র অপেক্ষা ঈদুল আযহার নামাজ সকালে পড়া।

কুরবানীর পশুঃ উঠ, গরু, বকরী, মহিষ, ছাগল, ভেরা, দুম্বা ছাড়া কুরবানী শুদ্ধ নয়।এ গুলোকে কোরআনের ভাষায় বলা হয় “বাহীমাতুল আনআম” ।
শরিয়তের দৃস্টিতে কুরবানীর পশুর বয়সের দিকটা খেয়াল রাখা জরুরী । উঠ পাঁচ বছরের, গরু বা মহিষ দু বছরের এবং , ছাগল, ভেরা, দুম্বা এক বছর বা তারো বেশি ।
আনাস রাদিআল্লাহু আনহুর হাদীসে রয়েছে, যা বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন। তারা বলেন :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তরতাজা ও শিং ওয়ালা দুটি মেষ নিজ হাতে যবেহ করেছেন এবং তিনি তাতে বিসমিল্লাহ ও তাকবীর বলেছেন

হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রিয় নবী (সাঃ) আমাদেরকে নির্দেশ করেছেন যে, আমরা কোরবানীর পশুর চোখ ও কান ভালভাবে পরীক্ষা করে নেই এবং এমন পশু কোরবানী না করি যার কানে ছিদ্র আছে (তিরমিযী শরীফ)।
তাই ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, গরু, মহিষ, উট এই ছয় প্রকার জন্তু দ্বারা কোরবানী দিতে হবে। প্রথম তিন প্রকার জন্তু দিয়ে কেবল একজনের পক্ষ থেকে এবং শেষের তিন প্রকার জন্তু দিয়ে ৭জনের পক্ষ থেকে কোরবানী দেয়া যায়। ছাগল পূর্ণ এক বছর হতে হবে। ভেড়া ও দুম্বা যদি এতটুকু মোটাতাজা হয় যে এক বছর বয়সী ভেড়া দুম্বার মত, তবে তা দিয়ে কোরবানী করা জায়েজ আছে। গরু ও মহিষ দুই বছর বয়সী এবং উট পাঁচ বছর বয়সী হতে হবে। এখানে প্রসঙ্গত বিক্রেতা যদি পশু পরিণত বয়সের বলে কিন্তু বাস্তবে তা পরিলক্ষিত না হয়, তবে বিক্রেতার কথার উপর নির্ভর করে এ পশু দ্বারা কোরবানী বৈধ হবে।
কোরবানীর পশু মোটা তাজা হওয়া বাঞ্চনীয়। সকল পশু সমান নয়, পশুর মধ্যে খুঁত থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু নিখুঁত পশু দ্বারা কোরবানী দেয়া উত্তম। তবে নিম্ববর্ণিত পশু দ্বারা কোরবানী দেয়া উচিৎ নয়। (১) যে পশুর কান কাটা। ইমাম আবু হানীফা (র.) এর মতে কানের অর্ধেক বা ততোধিক কাটা হলে সে পশু দ্বারা কোরবানী দেয়া উচিৎ নয়। অর্থাৎ জায়েজ নয় তবে অর্ধেকের কম হলে জায়েজ হবে। (২) খোঁড়া (৩) লেজ কাটা (৪) অত্যন্ত দুর্বল (৫) দাঁতহীন (৬) পাগল। নিখুঁত জন্তুক্রয় করার পর যদি কোরবানী প্রতিবন্ধক কোন ত্র“টি দেখা দেয়। তখন ক্রেতা যদি নেসাবের অধিকারী না হয়, তাহলে সে জন্তু দ্বারা তার জন্য কোরবানী করা জায়েজ, আর যদি কোরবানী দাতা নেসাবের অধিকারী হয় তাহলে তাকে ঐ পশুর বদলে অন্য পশু কোরবানী করতে হবে।

পশু জবেহ করার নিয়মঃ
কোরবানীর পশু নিজে জবেহ করা উত্তম। নবী (স.) কোরবানীর পশু নিজেই জবেহ করেছেন। অন্য লোক দ্বারাও জবেহ করা যায়। তবে জবেহের সময় নিজে সামনে থাকা উত্তম। জবেহ করার সময় মুখে “বিছমাল্লিাহি আল্লাহু আকবার” বলতেই হবে। জবেহ করার সময় পশুকে কেবলামুখী করে শুইয়ে দেয়া উত্তম। ১০ জিলহজ্ব সুর্যোদয়ের পর থেকে ১২ জিলহজ্ব সূর্যাস্তের আগে যখন ইচ্ছা দিনের বেলায় অথবা রাত্রিকালে কোরবানী করা যেতে পারে। কিন্তু রাত্রে জবেহ করা ভাল নয়। কেননা রাত্রে হয়তো অন্ধকারের কারনে জবেহ করতে গলার কোন শিরা বা রগ কাটতে না পারে। যার জন্য কোরবানী নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কোরবানীর গোশ্ত ও চামড়াঃ
যে পশুকে একাধিক লোক শরীক হয়ে কোরবানী দেন, তার গোশ্ত সমান ভাগে ভাগ করতে হবে। অনুমান করে বন্টন করা ঠিক নহে, যদিও শরীক সকলের অনুমতি বা সম্মতি থাকে, তদুপরি ওজন করে ভাগ করতে হবে। উত্তম হলো কোরবানী গোশ্ত তিনভাগ করা। একভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনদের জন্য, একভাগ গরীব, অসহায়, অনাথ মিসকিনদের জন্য। যারা কোরবানীর পশু কাটায় সহযোগিতা করেন, তাদের পরিশ্রমিক হিসাবে কোরবানীর গোশত দেয়া বৈধ নয়। বরং তাদের পরিশ্রম হিসাবে টাকা পয়সা বা অন্য কিছু দিতে হবে। পশুর চামড়া নিজের ব্যবহারে লাগানো যায়, যেমন জায়নামাজ, কিতাবের মলাট, দস্তারখানা, জুতা ইত্যাদি তৈরি করে নিজে ব্যবহার করা যায়। নিজে ব্যবহার না করলে গরীব মিসকিনদের চামড়া দিতে হয়। কোরবানীর চামড়া, গোশত চর্বি বা কোন অংশ পরিশ্রমের বিনিময়ে দেয়া যাবেনা। যদি কাউকে দেয়া হয়ে যায় তবে তার মূল্য গরীবদেরকে মধ্যে বন্ঠন করে দিতে হবে।
পশুর চামড়া বিক্রির মাসআলা
কোরবানীর চামড়া বিক্রি করে তার মূল্য সদকা করে দেয়া ওয়াজীব। যাকাত যাদেরকে দেয়া যায় তাদেরকে বিক্রয়লব্ধ মূল্য দিতে হবে। (যেমন ফকির, মিসকীন, যাকাত গ্রহণকারী, মনজয় করার জন্য, ঋণগ্রস্থদের ঋণ পরিশোধ করার লক্ষে, যারা ইসলামের জন্য যুদ্ধ করে, মুসাফির। যাদেরকে যাকাত দেয়া বৈধ নয় তাদেরকে কোরবানীর চামড়ার টাকাও দেয়া বৈধ নয়। যারা দ্বীন ইসলামের শিক্ষারত এবং যারা ইয়াতীম মিসকিন তাদের পড়ালেখার সামগ্রী বা পোশাক ইত্যাদির জন্য দেয়া সর্বাপেক্ষা সওয়াব। এদেরকে দান করলে এক দিকে যেমন সওয়াব পাওয়া যায়, অপরদিকে ইলমেদ্বীন চর্চার কাজেও সহযোগিতা করা হলো। নাবালেগ শিশুর পিতা যদি বিত্তবান হন তহলে তাকে কোরবানীর চামড়ার টাকা দেয়া যাবেনা। তবে যদি ধনী লোকের প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান গরীব হয়, তবে তাকে চামড়া বিক্রির টাকা দেয়া যায়। অনুরূপ ধনী ব্যক্তির পিতা ধনী না হলে তাকেও চামড়ার টাকা দেয়া যায়।
কোরবানীদাতার মা, বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানী এবং কোরবানীদাতার ছেলে-মেয়ে, নাতী-নাতনী এদের কাউকে কোরবানীর চামড়ার টাকা দেয়া শরীয়ত বৈধ করেনি। এভাবে স্বামী নিজ স্ত্রীকে এবং স্ত্রী নিজ স্বামীকে চামড়ার টাকা দিতে পারবেনা। এছাড়া যে কোন আত্মীয়কে দেয়া যাবে যদি সে যাকাত পাওয়ার উপযুক্ত হয়। আত্মীয়দের মাঝে এরূপ সদকা করায় দুটি সওয়াব পাওয়া যায়। (১) সদকার সওয়াব (২) আত্মীয়দের মাঝে সম্পর্ক ও সদ্ব্যবহারের সওয়াব, তবে জেনে রাখা একান্ত প্রয়োজন, কোন অমুসলিম ফকিরকে যেন চামড়ার টাকা দেয়া না হয়, যদি কেউ অমুসলিমকে চামড়ার টাকা দিয়ে থাকেন, তবে তা আদায় হবেনা, পুনরায় তা মুসলমান গরীব মিসকিনদের মধ্যে সদকা করতে হবে।
কারো চিন্তাধারা এমন হতে পারে যে কোরবানীর চামড়ার টাকা যে কোন সৎ কাজে ব্যয় করা যাবেনা কেন? যেমন রাস্তা, পুল বা যে কোন সেবামূলক কাজে। এরকম মনোভাব রাখা বৈধ নয়। কারন, যাকাত, ফিতরা, মান্নতের মাল, কোরবানীর চামড়ার টাকা কাফ্ফারা ইত্যাদি আদায় হওয়ার শর্ত হচ্ছে “তামলীক” অর্থাৎ নির্দিষ্টভাবে কোন গরীব মিসকীনকে সদকা করতে হয়, যাতে এ সাথে তার পূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে মালিকানা ব্যতিত কারো হাতে দান করলে সদকা আদায় হবেনা। এ কারণে সদকার টাকা মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, রাস্তা, পুল বা যে কোন সেবামূলক কাজে ব্যয় করা জায়েজ নেই। তদ্রুপ কোন লাওয়ারিশ ব্যক্তির কাফন-দাফনে ব্যয় করা বৈধ নয় কারণ এসব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে মালিক হওয়ার শর্তটি পাওয়া যায় না।
কোরবানীর পরিবর্তে সদকা করা
যদি কোরবানীর সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, আর তার উপর ওয়াজিব হওয়া সত্তে¡ও অজ্ঞতা, অলসতা, কৃপনতা বা কোন কারনে কোরবানী আদায় না করে, তবে তার মূল্য গরীব মিসকিনদের মধ্যে সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। কোরবানীর সময় ১০,১১,১২ জিলহজ্ব। এ সময়ের মধ্যে পশুর মূল্য সদকা করলে কোরবানী আদায় হবেনা। বরং পরে আদায় করতে হবে। ঐ তিন দিনের যে কোন সময় কোরবানীই দিতে হবে। কারণ কোরবানী একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। এর জন্য সময় নির্ধারীত। আর নির্ধারীত সময়ের ইবাদত অন্য ইবাদত দ্বারা আদায় করলে তা আদায় হয়না। যেমন, নামাজ না পড়তে পারলে রোযা রাখলে নামাজ আদায় হবে না বা রোযা রাখতে অক্ষম হলে নামাজ দ্বারা রোযার দায়িত্ব আদায় হয়না

তাকবীরে তাশরীকঃ
জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখ ফজর হতে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে, জামায়াত, একা, পুরুষ, মহিলা, মুকিম, মুসাফির সবার উপর একবার তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। ৯ জিলহজ্ব থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত যে কোন নামাজ কাযা হলে কাযা আদায়ের পর তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। পুরুষ লোক উচ্চস্বরে এবং মহিলাগণ নিরবে পাঠ করবেন। জামাতের সাথে নামাজ হলে যদি নামাজ শেষে ইমাম সাহেব ভুলক্রমে না পড়েন, তবে যে কেউ উচ্চস্বরে পাঠ করা আবশ্যক। কারণ সবার উপর নামাজ শেষে পড়া ওয়াজিব।
তাকবীরঃ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হাম্দ।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে যথাযথভাবে কোরবানী করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৬

মামু১৩ বলেছেন: -হুজুর(সঃ)-এর জন্মের অনেক আগেই,নবুয়ত প্রাপ্তির অনেক আগেই কোরবানীর প্রচলন হয়। অন্যভাবে বলতে গেলে, কুরবানি অনৈসলামীকদের রীতি ছিল। হুজুর(সঃ) কেন অনৈসলামীকদের রীতি মেনে চললেন, বুঝলাম না।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪

মামুন আকন বলেছেন: ভাই আপনি কি কুরবানীর সঠিক ইতিহাস জানেন ?
আর মানবজাতির জন্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে যত শরীয়ত নাযিল হয়েছে, প্রত্যেক শরীয়তের মধ্যে কুরবানী করার বিধান ছিল। প্রত্যেক উম্মতের ইবাদতের এ ছিল একটা অপরিহার্য অংশ। আল্লাহ তা’আলা বলেন; “আর আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানীর এক রীতি-পদ্ধতি নির্ধারণ করেছি, যেন তারা ঐসব পশুর উপর আল্লাহর নাম নিতে পারে। যে সব তিনি তাদেরকে দান করেছেন।” (সূরা হজ্ব: ৩৪)

হযরত ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর পুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর মধ্যে যে ঘটনার অবতারণা হয়েছে তা-ই হলো মহান স্মরণীয় ইতিহাস। কুরআন মাজীদের সূরা সাফ্ফাতের ১০০-১০৮ আয়াতে এই ইতিহাস আলোচনা করা ।


হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দান করুন। অতঃপর সে (সন্তান) যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হলো তখন ইবরাহীম (আঃ) বললেন; হে আমার বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে যবেহ করছি, এখন তোমার অভিমত কি বল? সে বললো; হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অর্ন্তভূক্ত পাবেন। যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলো এবং তিনি (ইবরাহীম) তাকে (পুত্র) কাত করে (কুরবানী করার জন্যে) শোয়ালেন তখন আমি তাকে আহ্বান করে বললাম; হে ইবরাহীম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যিই পালন করলে! এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয় এটা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে মুক্ত করলাম এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে। আমি এটা (তার আদর্শ) পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি।

আর এই বিধানটাই হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর উপর মহন আল্লাহ বহাল রেখেছেন,,তাই তিনি এটা পালন করতেন, এবং আমাদের পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন ।
আশা করি বুজতে পেরেছেন ?

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৪

নীল আকাশ বলেছেন: মামুন ভাই, ধন্যবাদ । খুব জরুরি একটা লেখা দিয়েছেন। পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম ।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২

মামুন আকন বলেছেন: আপনাকে ও ধন্যবাদ @নীল আকা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.