নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন মোহাম্মদ

মামুন মোহাম্মদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাইকো-কিলার

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫০

ছোট্ট একটি বাসা। সুনসান নিরবতা- আশে পাশে আর কোন বাসা নেই। লোকজনের কোলা হল থেকে বেশ দুরেই অবস্থান করছে বাসাটি। আজ আমাবস্যা – বাইরে ঘুট ঘুটে অন্ধকার। বাসার ভিতরে কেবল দুটি প্রাণি- একটি ষোড়শী মেয়ে শুয়ে আছে খাটে আর তারই পাশে পরম মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি আমি। লিনা কে এর আগে এত সুন্দর কখনো লাগে নি। ঘুমের সময় ওর মুখটা দেখতে এত সুন্দর লাগছে যে আমি কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছি না। আচ্ছা- এত সুন্দর কেন লাগছে মেয়েটাকে? আমি তন্ময় হয়ে তাকিয়ে আছি- এইভাবে যে টিক কত টুকু সময় গেল তা টাহর করতে পারলাম না। ঘড়িতে বারোটার এলার্ম বাজতেই আমি ধর মড় করে ওঠে পড়লাম। অনেক সৌন্দর্য উপভোগ করা হয়েছে।
টেবিলে সোডিয়াম থায়োসায়ানেট এর সলুউশন টা পড়ে রয়েছে। কার্বন মনোক্সাইডের গুড়া গুলো ঢেলে দিতে হবে। ল্যাম্প টা প্রস্তুত হয়েই আছে। মিনিট দশেক পরেই আমার আকাঙ্ক্ষিত সোডিয়াম সায়ানেট টা পেয়ে যাব। আমার দরকার একটা ফারটিলাইজড ওভাম। আমার রিসার্চের মুল্যবান সম্পত্তি। আমার চাই , আরো চাই- যতক্ষন না আমি আমার ফারটিলাইজড ওভাম থেকে ভ্রুন টা পেয়ে যাচ্ছি ততক্ষন চাই। সদ্য প্রস্তুত সোডিয়াম থায়োসায়ানেট টা হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসলাম লিনার পানে। লিনা তখনও অঘোরে ঘুমুচ্ছে। আহা বেচারি – সকালেই এসেছে। হাওড় এক্সপ্রেস এ এসেছে লিনা। সাথে করে কিছুই আনে নি। আমিই আনতে বারন করে দিয়েছি। দরকার নেই তো আর কিছুর। কি করবে আর কিছু এনে? ঈষৎ হাসি ফুটে ওঠল আমার টোঠে। আমার প্রতি লিনার কি অগাধ ভালোবাসা। ভাবতেই হাসি পাচ্ছে আমার। বেচারী কতই না ভালবাসে আমাকে। কদিনের পরিচয়েই বাড়ি ঘর ফেলে ছুটে এসেছে আমার কাছে। চিরদিনের জন্য। আর কখনো ফিরে যেতে হবে না লিনাকে। আমি আবার কিছুটা হেসে নিলাম। ভাবতে ভালই লাগছে আমার। গর্ব বোধ হচ্ছে আমার। লিনার কপোলের চুল গুলো সরিয়ে মৃদু কন্ঠে ফিস ফিসিয়ে ডাকলাম – লিনা। লিনা ধড়ফড়িয়ে ওঠে বসল। আমাকে দেখেই ঝাপটে ধরল আমাকে। পাগলের মত হয়ে গেছে লিনা। দু হাতে এমন ভাবে ঝড়িয়ে ধরল যেন আমি না জানি কত বড় মুল্যবান একটা কিছু। এইভাবে না ধরলে যেন অন্য কেউ নিয়ে যাবে এমন একটা ভাব! আমি বাধা দিলাম না। কেবল মনে মনে হাসতে লাগলাম। কতক্ষন ধরে রাখল আমার মনে নেই। আমি ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করি নি। বরং আরো কাছে আসলাম। আমার তাড়া হুড়ো কিছু নেই। আমার কাছে ঢেড় সময় আছে। ধীরে সুস্থে সুস্থ মস্তিষ্কে সব করতে হবে। প্ল্যানিং মত কাজ না করলে সব বান চাল হয়ে যাবে। আমি আবারো মনে মনে বললাম- আমার চাই , চাই আমার- ফারটিলাইজড ওভাম। দিস ইজ বেডলি নেসেসারী টু মি। ইয়েস............ ঘড়িতে যখন দুইটা বাজে তখন সায়ানেট এর সলুউশন টা খাইয়ে দিয়েছি ওকে। আমার কাছে আরো অনেক সময়- অফুরন্ত সময়। মনে মনে সব যাচাই করে নিলাম আমি। সময় তখন তিনটা- বিছানায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে লিনার অবশ দেহটা। নেকরোফিলিয়া ইজ মাই ফেভোরিট হবি। আমি উচ্চ কন্ঠে হেসে ওঠলাম। আমার কন্ঠ স্বর প্রতিধ্বনিত হয়ে আমার কাছেই ভয়ংকর শুনাল। একটা পৈশাচিক আনন্দে ভরে ওঠেছে আমার মন। মনের ভিতরের পিশাচ টা ততক্ষনে আনন্দে নৃত্য জুড়ে দিয়েছে। কিছুদিন আগে সার্জারি রিলেটেড কোর্স গুলো শেষ করেছি আমি। ক্লাশ করে তেমন কিছু শিখতে পারি নি আমি। কিন্তু কোর্স শেষে পঞ্চাশ টা কুকুরের সাক্সেসফুল সার্জারি কমপ্লেট করেছি আমি। হাত আমার যথেষ্ট পাকা হয়েছে। পাকা হাতের অনেক কসরত আমি এর আগেও দেখিয়েছি। আমার যন্ত্রপাতি গুলো ততক্ষণে নিয়ে এসেছি। মধ্যরাতে কাটা কুটি করার কি যে মজা তা লিখে বুঝানো যাবে না। আমার পিশাচ মনটা তখনও নেচে চলেছে। ইয়েস – আই হেভ অলরেডি গট এ ফারটিলাইজড ওভাম দ্যাট ওয়াজ বেডলি নেসেসারী টু মি ফর মাই এক্সেপশনাল রিসার্চ ইন ফাইন্ডিং এ লিভিং জাইগোট ইন কালচারাল মিডিয়াম।
আমার হাত গুলো তখন কাজে লেগে গেছে। অপারেশনাল ব্লেড গুলো দ্রুত গতিতে এফোর ওফোর করে বেড়াচ্ছে। আমার অনেক গুলো টুকরার প্রয়োজন।
কোন একবার ভাইভা তে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল – হোয়াট ইস ডিফারেন্স বিটুউইন ফ্লেশ এন্ড মিট। আমি বলেছিলাম- দে আর সিমিলার টু ইচ আদার। টিচার আমার দিকে তাকিয়ে কৌতুকের হাসি হেসেছিলেন। ফ্লেশ ইস সামথিং মাসল হোয়িচ ইস নট ইডিবল। আমি মনে মনে হাসলাম। টিচার উদাহরন দিলেন হিউমেন ফ্লেশ।
খুব ভাল লাগছে আমার। আমার পৈশাচিক মনটা আবারও নেচে ওঠল- আজ প্রমান করার সময় এসেছে- হিউম্যান ফ্লেশ ইজ অলসো মিট। হা হা হা............ ঘরময় কেপে ওঠল। আমার মাথায় তখন চলছে তান্ডব নৃত্য। একটা তৃপ্তির হাসি। মিট এভ্রিথিং ইজ মিট। হা হা হা......... আমি প্রমান করেছি। প্রমান করেছি আমি। না এখনো প্রমান হয় নি। বাকি কাজ এখনো রয়ে গেছে। ইতোমধ্যে সকাল ছয়টা বেজে গেছে। আমাকে চলে যেতে হবে। আমার ফারটিলাইজড ওভাম! আছে- আছে। আমার সাফল্য আমাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। নতুন একটি জাইগোট হা হা হা ............
আমার সৃষ্টি! হা হা হা .............................. এখনো অনেক কাজ বাকি............ হিউম্যান মিট। মনে মনে জপতে জপতে বাইরে বেরিয়ে আসলাম। এখনো কেউ জেগে ওঠে নি। বোকা মানুষের দল। এরা জানেই না সকালের এই পৈশাচিক আনন্দ টা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মাটি করে দিয়েছে। হা হা হা...............।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১২

সুমন কর বলেছেন: শুভ ব্লগিং........ !:#P

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫২

মামুন মোহাম্মদ বলেছেন: ধন্যবাদ ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.