নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন মাহফুজ

মামুন মাহফুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপা ও ম্যাডাম! (রম্য হইলেও হইতে পারে)

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:০১

আমরা রিলেশন তৈরির ক্ষেত্রে কিছু শব্দকে পরিভাষাকে নিজেদের জন্য গ্রহণীয় করে নিয়েছি। বাবা মা ভাইয়া আপু আপা ম্যাডাম ইত্যাদি। কিন্তু কখনও কখনও ব্যক্তি এক হলেও সম্বন্ধ কিন্তু একাধিক হয়ে যায়। যেমন, আমার খালার সংগে আমার চাচার (বাবার চাচাত এবং খালাত ভাই) বিয়ে হয়েছে। এখন খালাকে খালা, নাকি চাচী ডাকবো? আর চাচাকে কী কাকা-(কাক্কু-কাগু)নাকি খালু ডাকবো? সমাধান নিয়ে ভাবতে হয়নি ছোটবেলায়, কেমনকরে যেন খালাকে খালা আর চাচাকে কাকা বলেই পাড় করে দিয়েছি বিগত সময়। আবার এমন এক আত্মীয় দম্পতি আছে যাদের একজন হয় ভাই আরেকজন আপা। এক্ষেত্রেও স্বাভাবিক নিয়মে আপা এবং ভাইয়াতেই চলছে। কিন্তু সমস্যা বেধে গেলো তাদের কন্যাকে যখন বিয়ে দেয়া হলো সহোদর ছোটভাইর সঙ্গে....সম্পর্ক তখন কোথায় যায়? মাম হলো স্বামী? আর আদরকরে যাকে মা ডেকেছি সে হবে....ভাবা যায়? যায় না তবে এসব বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি চেয়েছি আপা কী করে ম্যাডাম হয় আর ম্যাডাম কী করে বোন এবং মা হন।...এসব ডাইমেনশন নিয়ে এতো ভাবনায় পড়তাম না যদি না আমাদের রাজনৈতিক অবস্থার এমন সুরতহাল দেখতাম। যাকে সবসময় আপা আপা ডাকি হুটকরে তাকে ম্যাডাম ডাকতে হলো ক্ষমতায় আসীন হওয়ায়। তিনি তখন বস।...সম্বন্ধ নয় তার এমন কিছু পরিবর্তন ঘটলো যে আলোচনায় না উঠলেই নয়। ....বিস্তারিত ব্যখ্যায় আসি (আপা ছিল ভালোই ছিল ম্যাডাম....)

ছোটবেলায় ডিবেট করতাম। ভার্সিটি পর্যন্তও চলছিল। অভ্যেসটা ছাড়তে পারিনি। তখন থেকেই মানুষের সঙ্গে গায়েপড়ে ডিবেট জুড়তাম। দেখা গেলো স্বতসিদ্ধ একটা ব্যাপার তবু নিজের বাহাদুরি আর পাণ্ডিত্য ফলাতে তর্ক জুড়তাম; বিশেষকরে আপার সাথে। তিনি তখনও ম্যাডাম নন। এমনকি স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ক্রিকেটদল, ফুটবল, বাজার, রাজনীতি সব। আপা খেলা পছন্দ করেন না। আমি টিভি টিউন করলে তিনি ক্ষেপে যান। তিনি সারাদিন ইন্ডিয়ান চ্যানেল দেখেন। বিশেষ প্রিয় জি বাংলা। সংসারে হানাহানি বিবাদ ষড়যন্ত্রের বিবিধ চিত্র পাওয়া যায় যেসব সিরিয়ালে আপার খুব প্রিয় সেসব। একটা শেষ হলে বিজ্ঞাপন বিরতি ছাড়াই আরেকটা শুরু হয়, আমি বসে থাকি সিরিয়ালটা শেষ হলে আপা হয়ত আমাকে টিউন করতে দেবে....কিন্তু কখন শেষ হয় বুঝি না। বেশ কিছুটা সময় কেটে গেলে বলি আপা এবার টিউন করি? আপা বলে দাঁড়ানা শেষ হোক!...মানে আরেকটা শুরু হয়েছে। একদিন খেলা নিয়ে তাকে বেশ জোরদার এক লেকচার শোনালাম। সব শুনে আপা বলে খেলা নিয়ে এদেশের দর্শকদের যতো মাতামাতি (অথচ সে তুলনায় ফলাফল খুবই কম) পৃথিবীর আর কোনও দেশে এমন নেই। অবশ্য এদিক থেকে পাকিস্তানীরা বাংলদেশের মতোই অনেকটা। হুজুগে পাগল। আমিতো দাঁত কিড়িমিড়ি করি, হাজার হাজার লাখ লাখ ক্রিকেটভক্তের বিরুদ্ধে এমন উক্তি! সেদিন বেশি কিছুটা লেকচার দিয়ে আমি যখন থামলাম মনে হলো আপা কিছুটা গিলেছে কিন্তু না সে ঠাশ করে বলে দিল জান্নাত ছবিটা দেখেছিস? খেলা হচ্ছে এটাই!...আমরা যতো মাতামাতি করি দেশপ্রেম হেনতেন বলে প্লেয়ারদের কিন্তু সেসব কিছুই নেই....মনে কর ডাক্তারদের মতো আমরা একজন আহত মানুষকে নিয়ে যেভাবে পেরেশান হয়েপড়ি ডাক্তারদের কি তেমন প্রতিক্রিয়া হয়? হয় না। তার অভ্যস্ত হয়ে গেছে। খেলোয়াররা তেমনই খেলতে খেলতে আর টাকা কামাইতে কামাইতে ওরা শুধু জানে ওরা খেলোয়ার, ওরা খেললেই টাকা....আর খেলায় হারজিত আছেই।....ওদের ওপর যে কতো কোটি মানুষের স্বপ্ন আবেগ এসব ওরা ভাবে না। ওরা গার্লফ্রেন্ড এর সঙ্গে রাগারাগি হলে সে রাগ ঝাড়ে দেশের দর্শকদের প্রতি, চালায় ব্যাট! ক্যাচ! বল নিয়ে গবেষণা ওরা করে না। ভাবে করছি এইই বেশি....জীবনেতো আর কম হারলাম না! জিতলে কী হবে? মাথায় করে নাচবে? নাচবে তারপর আবার হারলে জুতার মালা গলায় দেবে, সেঞ্চুরী করলে ফুলের মালা গেল্ডেন ডার্কে জুতার মালা....আজ ফুল কাল জুতা কী লাভ? তারচে কটা ভালো ইনিংস উপহার দেবো ক্যারিয়ারের শেষদিকে, দিয়ে খেলোয়ার জীবন সাঙ্গ করবো তাতেই মানুষ মনে রাখবে... এখন শুধু টাকা কামাও....অমুক ভালো খেলে এমন কম্পিটিশনের চেয়ে অমুকের গাড়ি কয়টা, বাড়ি কয়টা গার্লফ্রেন্ড কয়টা এদিকে খেয়াল থাকে বেশি....কারণ এর স্থায়িত্বও অনেক বেশি।....তবে আপাকে তর্কের খাতিরে আমি কী বলেছি সেটা এখানে না বললেও সেই আপাকে যখন দেখি রাজনীতিতে শিরোমনি মানে ম্যাডাম হবার পর কয়েকঘণ্টা মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে, তখন আমি আমার বিজয়ে উল্লাস ভুলে আফসোস করি ইটস এ গেইম! কারণ ক্রিকেট প্রিয় জনগণকে তিনি বোঝান আমিও আপনাদের মতো খেলা প্রিয়!



আপার সঙ্গে আমার দ্বন্দ যায় না। মিষ্ট লড়াই। তার আরেকটি জিনিস প্রিয় টিভিতে তিনি রান্নাবান্নার অনুষ্ঠান দেখেন খুব উৎসাহের সাথে। কিন্তু আমি বুঝে উঠতে পারি না, রান্নার অনুষ্ঠান তিনি কেন দেখেন তাকেতো কোনদিন দেখিনি দুলাভাইকে রান্না করে খাওয়াতে! বিজ্ঞানী দুলাভাই হয়ত সেকারণেই স্বল্পায়ু হলেন, চলে গেলেন পরের হাতে রান্না খাওয়ার ভয়ে....

তবে স্পর্শকাতর স্বাধীনতা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাইরের লোকদের থেকে শোনা বাসে পথে ফুটপাতে লোকেরা বলাবলি করে সেসব শুনে তাকে আমি খোঁচা দিই....কেন বাবা সেদিন(রাতে)পাকিস্তানীদের হাতে ধরা পড়লেন? তিনি কি ধরা পড়লেন নাকি ধরা দিলেন?

যদি ধরাই পড়বেন তাহলে তার এমন আয়েশী প্রস্তুতি কীকরে নেয়া হলো? ইস্ত্রীকরা কয়েকসেট জামা কাপড়, এমনকি ধুমপানের পাইপটা পর্যন্ত? আপা তখন ম্যাডাম হয়ে যান বলেন- বল তোকে এসব কে শিখিয়েছে...বল!

কেন আপু? তার মুখ বন্ধ করতে হবে?

তখন সে আইনের ভয় দেখায় তাঁর ব্যাপারে কোনও কটাক্ষ করা দেশদ্রোহিতার সামিল? আমি আপার দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যাই....আপার চোখে দেখতে পাই আগুন! তিনি কি এখন ম্যাডাম হয়ে উঠলেন?

রান্না নিয়ে একদিন বললাম এতো রান্না শিখছ কেন দাদাদের খাওয়াবে আপা সেদিন বুকে টেনে নিলেন, বললেন তুইকি আমার মনের ভেতরটা দেথতে পাস? অথচ ম্যাডাম হবার পর একই কথা বললাম কী খাওয়ালে? কোন রেসিপি? তুমিতো ইন্ডিয়ান চ্যানেল দেখে ওদের সব রান্নাই মিখে ফেলেছ...নিশ্চই খুশি হয়েছে?

সেদিন আপার ভয়ঙ্কর চেহারা দেখে বুঝলাম আপা এখন সম্পূর্ণ ম্যাডাম, দেশ কী জাতি কী ধর্ম কী এই আমিও তার কাছে নস্যি? হায় সেলুকাস!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-১

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:১৫

বড় বিলাই বলেছেন: আমি একজনের কথা জানি যে তার ফুপাতো বোনকে বিয়ে করেছে কিন্তু শাশুড়িকে এখনও ফুপু বলেই ডাকে। :P

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১:৫৯

মামুন মাহফুজ বলেছেন: সেইতো!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.