নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শান্ত মামুন

মো. মামুন হোসেন (শান্ত মামুন)\nফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার\nঢাকা।

শান্ত মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে যাওয়ার পিছনে........

২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:২৫



গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলটি দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ক্রিকেট প্রদর্শন করে চলছে বর্তমান তামিম-মুশফিক, সাকিব, মাশরাফি, রিয়াদসহ একঝাঁক তরুণের দলটি। তাদের এই ভয়ডরহীন ক্রিকেট সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সাফল্যের পরই সারাবিশ্ব বাংলাদেশকে এখন অন্যচোখে দেখতে শুরু করেছে। ক্রিকেট বিশ্বের সাবেক তারকা খেলোয়াড়রাও বাংলাদেশকে নিয়ে উচ্ছ¡াস প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। তাদের চোখে আগামীর ক্রিকেট পরাশক্তি হয়ে উঠছে বাংলাদেশ।
এই যে বাংলাদেশের এত উন্নতি সেটা কিন্তু একদিনে হয়নি। বাংলাদেশের ক্রিকেট আসলে শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। ১৯৯৯ সাল থেকেই এই দলটি প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের অভাব ছিল না। কিন্তু তাদের সবচেয়ে বড় অভাব ছিল ধারাবাহিকতার। এক ম্যাচ ভালো খেললে সে ব্যাটসম্যান অথবা বোলারকে পরবর্তী ৩/৪ ম্যাচ আর খুজে পাওয়া যেত না। তাই ১৯৯৯ সাল থেকে শুরু করার পর যতটুকু উন্নতি করার কথা ছিল বাস্তবিক অর্থে আজও অতটুকু উন্নতি করতে পেরেছে বলে মনে করছি না। এর প্রথম সমস্যাই হলো সঠিক পরিকল্পনার অভাব। একটা সময় ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত পরিকল্পনা বলতে কিছুই ছিল না। সবাই আনাড়ি চিন্তাভাবনা করতো। ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে ঐতিহাসিক দুই জয়ে বাংলাদেশ যেখানে নড়েচড়ে বসবে। ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে; সেই সময় ২০০১/২০০২ সালের দিকে বাংলাদেশ দলের অখ্যাত একজন কোচ নিয়ে আসা হলো পাকিস্তানের মহসিন কামালকে। তিনি যে বোলার না ব্যাটসম্যান সেটাই কেউ বুঝলো না। তার কোচিংয়ে বাংলাদেশ যতটুকু সামনে এগিয়ে গেলো তারচেয়ে দ্বিগুন পিছনে চলে গেল। এই সময় শুধু জাতীয় দলকে নিয়েই চিন্তাভাবনা করা হতো। যুব দল, অনুর্ধ্ব-১৯, অনুর্ধ্ব-১৭, অনুর্ধ্ব-১৫ এইসব দল নিয়ে কারো মাথাব্যাথা ছিল না। সবাই চেস্টা করতো জাতীয় দল নিয়ে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই ১/২ জন কখনও কখনও ৩ জনেরও অভিষেক হতো। ঘরোয়া লিগে কোনো ব্যাটসম্যান ৫০ বা ১০০ করলেই তাকে জোর করে ডেকে এনে জাতীয় দলে ঢুকিয়ে দেওয়া হতো। আবার ২/৩ ম্যাচ জাতীয় দলে খারাপ করলেই তাকেই বাদ দিয়ে নতুন কাউকে আবার ........। এভাবেই চলতেই থাকতো। আর রাজনৈতিক প্রভাব তো ছিলই। এমন অনেক খেলোয়াড় ছিল যাদের নাম জাতীয় দলে ঢোকার আগে কেউই শুনেনি। এমনই একজন খেলোয়াড় হচ্ছেন জামাল বাবু। খুলনা লিগ খেলে সরাসরি জাতীয় দলে। আবার ২ ম্যাচ খেলে চিরতরে বাদ। এরমধ্যেই ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ। এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করে তারা। দুর্বল কেনিয়া ও কানাডার সঙ্গে পর্যন্ত হারতে হয় বাংলাদেশকে। এর মূল কারণ হচ্ছে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওই সময় চেইন অব কমান্ড বলে কিছু ছিল না। যে যার মতো চলতো।
এরপর সময়ে অনেক গেছে। ক্রিকেটবোদ্ধারাও নড়েচড়ে বসেছেন। সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হতে লাগল দেশের ক্রিকেট বোর্ড। বর্তমান ক্রিকেট বোর্ডের নাম পর্যন্ত চেঞ্জ হয়ে গেল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নতুন নামে হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। অবশ্য কিছুদিন পর আবার পুরনো নামে ফিরলো ক্রিকেট বোর্ড। এরই মধ্যে কোচ হয়ে আসলেন শ্রীলংকাকে বিশ্বকাপ জেতানো ডেভ হোয়াটমোর। এসেই জাতীয় দলের পাশাপাশি বয়সভিত্তিক দলের ওপরও গুরুত্ব দিলেন। তৃণমূল পর্যায় থেকে ক্রিকেটার উঠিয়ে আনতে বোর্ডকে বিভিন্ন পরামর্শ দিলেন। ততদিনে ক্রিকেট বোর্ডে খেলা অন্তঃপ্রাণ কর্মকর্তারা আবার ফিরে এসেছেন। ক্রিকেটও আস্তে আস্তে তার সুদিনে ফিরে আসতে শুরু করেছে। স্পন্সররাও জাতীয় দলের পাশাপাশি বয়সভিত্তিক দলকে, যুব দলকে, একাডেমি দলকে স্পন্সর করতে লাগলেন। এ সময় অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে পরিকল্পনাবিদ আনা হলো। ডেভ হোয়াটমোরের সঙ্গে বিশ্বমানের কোচিং স্টাফ যোগ করানো হলো। এর মধ্যেই ২০০৭ সালের বিশ্বকাপেই তার ফলাফল হাতেনাতে পেয়ে গেল বাংলাদেশ। শক্তিশালী ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চমকে দিল বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশের শুধুই এগিয়ে যাওয়ার পালা। ততদিনে বয়সভিত্তিক দলের খেলোয়াড়রা জাতীয় দলের খেলার যোগ্য হয়ে উঠলো। সাকিব, মুশফিক, তামিম, শফিউল, রুবেলরা বয়সভিত্তিক দল থেকে জাতীয় দলে চলে আসলো। অন্যদিকে হাবিবুল বাশার, খালেদ মাসুদ, মোহাম্মদ রফিকরা তো ছিলই। এভাবেই চলতে থাকলো বাংলাদেশের ক্রিকেট। ২০১১ বিশ্বকাপে আশরাফুল, সাকিব, মুশফিক, তামিম, শফিউল, রুবেলা হয়ে গেলেন দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। তাদের সঙ্গে জুনায়েদ, ইমরুল কায়েস মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরাও ততদিনে থিতু হয়ে গেলেন। আর বাংলাদেশও এগিয়ে যেতে লাগল। আস্তে আস্তে খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল। একই জায়গায় একাধিক ব্যাকআপ খেলোয়াড় আসতে শুরু করলো। তারই ফল পেল বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার অর্জন করে। এখন তো বাংলাদেশে ক্রিকেটের সুসময়। এক জায়গায় ৩/৪ জন খেলোয়াড় ব্যাকআপ পাওয়া যাবে। ছোট্ট একটা উদাহরণ দিলেই পরিস্কার হওয়া যাবে। তামিম ইকবাল ও এনামুল ওপেনার হিসেবে খেলছেন বেশ কিছুদিন। তাদের ব্যাকআপ হিসেবে সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, রনি তালুকদার, লিটন দাসরা রয়েছেন। এই তালিকায় থেকে বাদ হয়ে যাওয়া আর একটি নাম হচ্ছে শাহরিয়ার নাফিস ওয়ান ডাউনে মমিনুল, মাহমুদুল্লাহ প্রায় অপ্রতিদ্ব›দ্বী। তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন নাইম ইসলাম। মুশফিক রহিম, সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় দুই স্তম্ভ। এদেরকে যেখানে খেলানোই হোক তারা সেখানেই সফল। রয়েছেন সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন জিয়াউর রহমান। আব্দুর রাজ্জাক বর্তমানে দলে নেই। তার অভাব বুঝতে দিচ্ছেন না আরাফাত সানি। রয়েছেন তাইজুল ইসলাম, সোহাগ গাজী, জুবায়ের হোসেন লিখন। পেস ডিপার্টমেন্টে মাশরাফি ৮০ ভাগ ফিট হয়েও দিচ্ছেন ১১০ ভাগ। রুবেল হোসেন নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এগিয়ে যাচ্ছেন তাসকিনও। রয়েছেন শফিউল।
সবমিলিয়ে বলাই যায়, বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত আসলেই উজ্জ্বল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.