নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
খালার সংগে আমার পরিচয় ১৫ বছরের।আমার মিষ্টি সোনার বয়স আর খালার সঙগে জানা শোনা।শুধু জানা শোনা বললে ভুল হবে চোখে দেখা। সব বাসার কাজ হয়ে গেলে খালা এসে একবার আমাকে দেখে যায়। সকাল বিকাল যখন সময় পায় আমাকে চা তৈরী করে খাইয়ে যায়। বয়সের জন্য বছর ৩/৪ খালা আর কোন বাসা বাড়ীতে কাজ করে না।সেই ৭১ এ যু্দ্ধের পর পর নদী ভংগনের স্বীকার হয়ে জামালপুর হতে অজানার উদ্দেশ্যে ঢাকায় এসে এই ভাষানটেক বস্তিতে একটা ঘরে ঠাঁই করে নেই। তারপর এই ঘরে ৩ মেয়ের জন্ম এবং বিয়ে। খালা সেই থেকে বাসা বাড়ীতে কাজ করেই জীবন কাটিয়ে দিল।বিশ্বস্ততা আর সততাই তার জুরী মিলবে না। এই জন্যেই এই বয়সেও সকলে চাই তার উপস্থিতি। বংগবন্ধু, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা , হাসিনা সবার সম্পর্কে তার স্পষ্ট ধারনা।সে বোঝে ভোট, ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি। বিউটি আপা আর মর্জিনা ভাই এর ওকালতি, ঐতিহাসিক তারেক এর ফন্দি ফিকির। লেখাপড়া না জানা একজন সমাজ, রাজনীতি সচেতন, ধর্মপ্রাণ জৈষ্ঠ্য নাগরিক। আমার বাসায় কাজ করতে করতে আজান দিলেই সে এসে আমার কাছে বলে-”খালাগো নামাজটা পড়ে আসি”
ঠিক নামাজ শেষ করেই খালা এসে হাজির।
আমার দুই মেয়ে যখন ছোট ছিল তখন তার সেবা দানের কথা আমি কোনদিন ভুলতে পারবো না। সব বাসা থেকে কাজ সেরে এসে ভাত রান্না করে আমার দুই মেয়েকে খাইয়েছে।ওদের ফেলে রেখে সারাদিন অফিসে পার করেছি। আমার বাসায় কাজের লোক থাকলেও খালা এসে ওদের ওষধ দিয়েছে, খেয়েছে কিনা খোঁজ নিয়েছে।
সেই খালা এখন পা ভেংগে বিছানায়। অপারেশন হয়েছে। ক্র্যাচ নিয়ে একটু করে হাঁটে। খালার অবদান কোনদিন শোধ করবার মতো নয়। তাই বিবেকের তাড়নায় খালার ৩ নাতনীকে একটু পড়াটা দেখিয়ে দিই। স্কুলের দেওয়া কাজ গুলো করতে সাহায্য করি। এর বেশী কিছু করতে পারি না।লিজা, শান্তা, শারমিন। লিজা , শান্তা দুই বোন্ খালার ছোট মেয়ে শামসুন্নাহারের মেয়ে। আর শারমিন মেজো মেয়ে খোদেজার মেয়ে। লিজা আর শারমিন আমার কাছে ৬ষ্ঠ শ্রেণী হতে পড়ছে। শান্তা ৫ম শ্রেণী থেকে। লিজা আর শারমিন জিপিএ ৩.৬৭ পেয়ে এবারে জেএসসি এবং শান্তা জিপিএ ৩.৫৮ পেয়ে পিএসসি পাশ করেছে। ওরা খুব খুশী। ওদের মায়েরা এসে আমার আর আমার দুই মেয়ের জন্য আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে প্রার্থনা করেছে। ওরা দেখেছে আমার মহানুভবতা । আমি জানি , আমি খালার অবদানের কথা স্মরণ করেই এই পথটাকে বেছে নিয়েছি। পা ভাংগার আগের দিনও আমি বলেছি,
”খালা এই রকম কাজ করতে করতে যেন তোমার মরন হয়। তুমি যেন বিছানায় পড়ে থেকো না”। আমার প্রার্থনা কাজে আসেনি। পরের দিনই পা ভেংগে আজ বিছানায় কেঁদে কেঁদে দিন পার করছে। আপনারা একটু আমার ময়না খালার জন্য দোয়া করবেন। সে যেন সুস্থ হয়ে এসে আবার জন্য চা নিয়ে বলে’ ”খালা আপনার জন্য চিনি ছাড়া চা”।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৭
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ আলিফ
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:২৩
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: সুস্থ হয়ে উঠুক ময়না খালা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৮
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
খালার জন্য শুভকামনা!