নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
দার্জিলিং পশ্চিমবঙ্গের সর্ব উত্তরের একটি জেলা শহর।এটি জেলা হেড কোয়াটার । এটি একটি প্রাচীন শহর। মূলত বৃটিশ আমলে এর বিকাশ ঘটে। এখানে বৃটিশ কায়দার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে।যা সমগ্র ভারতের জনগনকে আকর্ষন করে। স্কুলের সময়ে দেখা যায় পাহাড়ের ঢাল বেয়ে পিঁপড়ের সারির মতো ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে।তা ছাড়া স্বাস্থ্যকর স্থান হিসাবেও এর খ্যাতি আছে। আগেকার বাংলা সিনেমা গুলোতে এর প্রয়োগ দেখা যায়। চলুন এবারে ঘুরে আসি পাহাড়ের রানী দার্জিলিং হতে।
প্রথমেই এন্ট্রি এবং এক্সিট বর্ডার চ্যাংড়াবান্ধা দেখিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে নিন ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস থেকে।
ট্রাভেল ট্যাক্স ঢাকার সোনালী বাংকের হেড অফিসে দিতে পারেন আবার বর্ডারেও দিতে পারেন। সেক্ষেত্র পার পাসপোর্টে ১০/২০ টাকা বেশী দিতে হবে।
ঢাকা পুরাতন গাবতলী থেকে শুভ বসুন্ধরা, মানিক এন্টার প্রাইজ, এস আর পরিবহন, রোজিনা পরিবহন, শাহ আলী পরিবহন, হানিফ পরিবহন সহ আরো বাস যায় বর্ডার পর্যন্ত।ভাড়া পড়বে ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে।
এ ছাড়া কল্যাণপুর হতে শ্যামলী বি আর টিসি এসি বাস ছেড়ে যায় বর্ডার পর্যন্ত। আবার বর্ডারের ওপার হতে ওদের গাড়ী নিয়ে যায় শিলিগুড়ী সেন্ট্রাল প্লাজা পর্যন্ত। ভাড়া পড়বে ১৫০০ টাকা। সব গাড়িই রাত ৯টার মধ্যে ঢাকা ছেড়ে যায়।
রাত ১টার দিকে বাস গুলো সিরাজ গজ্ঞে বিভিন্ন ভালো হোটেলে যাত্রা বিরতী দেয়। ২০মিনিট থেকে ৩০ মিনিট সময় পাবেন। বাড়তি আকর্ষণ যমুনা ব্রীজের (বঙ্গ বন্ধু সেতু) রাতের সৌন্দর্য।তিস্তা নদীর উপর নতুনব্রীজ।(আবশ্য এই সময়টাতে সকলে থাকে গভীর ঘুমে মগ্ন।)
ভোর বেলা বাংলাদেশের শেষ প্রান্ত বুড়িমারী বর্ডারে এসে পৌঁছাবনে। বুড়িমাড়ী হলো লালমনির হাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাদেশের শেষ প্রান্ত্।
বাস থেকে নেমে প্রত্যেক পরিবহনের অস্থায়ী বিশ্রামাগার আছে। সেখানে ফ্রেশ হবেন। স্থানীয় বুড়ীর হোটেলে সকালের নাশতা সেরে নেবেন। সম্ভাব্য ফেরার তারিখ দিয়ে ফিরতী টিকেট বুকিংটাও সেরে ফেলবেন।
সকাল ৯টায় সীমান্তের কার্যক্রম শুরু হয়। তাই এর কিছু আগে ভ্যানে করে চলে যাবেন বাংলাদেশ কাষ্টমসে। পর্ব শেষ হলে জিরো পয়েন্ট দিয়ে হেটে ভারতীয় সীমান্তে(চ্যাংড়াবান্ধা) প্রবেশ করবেন। ইমিগ্রেশন কাস্টমস সেরে মুদ্রা বিনিময় করে রওরা হবেন।শ্যামলীতে গেলে ওদের গাড়ী থাকবে। উঠে বসবেন। আর অন্য পরিবহনে গেলে শেয়ারে অথবা রিজার্ভ করে মারুতী নিয়ে যাবেন। আনুমানিক বাংলাদেম সময় বেলা ১২টা বাজবে। রওনা হবার সময় ঘড়ির সময় আধ ঘন্টা পিছিয়ে নেবেন।এই অংশের নাম চ্যাংড়া বান্ধা। এটি হলো কুচবিহারের অন্তর্গত।
এবার কুচবিহার, জলপাইগুড়ি পার হয়ে শিলিগুড়ী(দার্জিলিং এর একটি মহকুমা ) এসে পৌঁছবেন। শেয়ার গাড়ী বা রিজার্ভ গাড়ীতে এলে হোটেল রাজ দরবারের কাছে নামবেন। ওখানে ঝুপরি হোটেলে ভাত খেয়ে নিতে পারেন। ভাড়া জীপ অথবা রিজার্ভ গাড়ীতে রওনা হবেন দার্জিলিং। প্রথম বার গেলে রিজার্ভ গাড়ীতে যাওয়া ভালো।
আর যারা শ্যামলীতে যাবেন তাদের গন্তব্য শেষ হবে সেন্ট্রাল প্লাজাতে। নেমে ফেরার টিকিট বুকিংটা দিয়ে দিবেন।রাস্তার উণ্টা দিকের ঢাকা হোটেল থেকে দুপুরের খাবার সেরে নেবন।পরে রিজার্ভ গাড়ীতে যাত্রা করবেন।সংগী হিসেবে ছোট পরিবার ২টি হলে ভালো হয় অথবা ৪ জন সিঙগেল বন্ধু।
মিনিট পাঁচেকের মধ্যে শিলিগুড়ী শহর থেকে তেনজিং নোরগে স্ট্যা চু দাঁড়িয়ে দার্জিলিং মোড়ে আপনাকে দার্জিলিং এর পথ নির্দেশ করবে।। শুকনা অতিক্রম করতেই কখন আস্তে আস্তে জীপ পাহাড়ে উঠতে থাকবে ঠিক পাবেন না। হঠাত তাকিয়ে দেখবেন নীচে অনেক নীচে মাটি আর আপনি এক পাহাড় থেকে আর এক পাহাড়ে ছুটে চলেছেন।
যেতে যেতে দেখবেন পথের বাঁক কেমন ভয় লাগবে। ঝরনা আর মেঘের ভেলা। মাঝে মাঝে জীপের মদ্যে মেঘ ঢুকে আপনাকে ভিজিয়ে দিয়ে যাবে।
পথে যেতে যেতে কোন এক সময় দেখবেন ভারতের হেরিটেজ রেলওয়ে টয় ট্রেন আসছে অথবা যাচ্ছে। আরাধনা ছবিতে শর্মিলা ঠাকুর আর রাজেশ খান্না যে ভাবে জীপ আর টয় ট্রেন অতিক্রম করেছিল ঠিক সেভাবে আপনাকে অভিবাদন জানিয়ে ট্রেন ছুটে চলেছে।রাস্তার ধারে নিরাপত্তা রেলিং এ বসে হনুমান আর বানর আপনাকে স্বাগত জানাবে।
পাহাড়েড় আঁকা বাঁকা পথ বেয়ে জীপ উপরে উঠার মনোরম দৃশ্যে মন হারিয়ে যায়। এরই মাঝে মাঝে উকি দেয় কাঞ্চনঝঙ্ঘার চূড়া।আর দুচো্খ ভরে দেখা যাবে বিস্তীর্ন চা বাগান। কখনও মেয়েরা দল বেঁধে তুলছে দুটি পাতা একটি কুড়ি। আর রাত হয়ে গেলে দেখবেনর পাহাড়ের গায়ে অসংখ্য প্রদীপ জ্বলছে।(শহরের বিস্তার)
এরই মাঝে দার্জিলিং পৌঁছে যাবেন।ড্রাইভারকে বলবেন সবচেয়ে উঁচুতে হোটেলে নিয়ে যেতে।
যদি হোটেলে খাবার ব্যাবম্থা না থাকে তাড়াতাড়ি রাতের খাবারটা বাইরে থেকে খেয়ে আসবেন। হোটেলে ব্যাবস্থা থাকলেও প্রথমেই অর্ডার দিয়ে দেবেন। সন্ধ্যার পরে খাবার পাওয়া যায় না। হোটেলে ভুলেও মাছ খাবনে না। সবচেয়ে ভালো ডিম খাওয়া।
ফ্রেশ হয়ে সন্ধ্যার চা খেতে খেতে দেখবেন মেঘে চারিদিক ঢেকে গেল। শুধু মাত্র হোটেলটা জেগে আছ্ । নাশতায় মোমো খেতে ভুলবেন না্। একে একে শীতের পোষাকগুলো বের করে ফেলবেন।সাথে টয়লেট পেপার রাখবেন কারন দার্জিলিং এ জলের অভাব। মনে রাখেবেন অক্টোবর হতে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ট্যুরিষ্ট সীজন। এই সময় হোটেল ভাড়া খাবার সব কিছুর দাম বেশী। পাহাড়ে বর্ষা আসে তাড়াতাড়ি। আর এই সময়ে পাহাড়ে প্রায় ধ্বস নেমে চলাচলের বিঘ্ন ঘটায়।তবে সব সীজজনে পাহাড়ের ভিন্ন রূপ আছে।
হোটেল কর্তৃপক্ষকে বলে রাখবেন আপনারা টাইগার হিল দেখবেন। ভোর ৩টায় ড্রাইভার এসে ডেকে নিয়ে যাবে। কপাল ভালো হলে সুর্যোদয় দেখবেন।ঈশ্বরের এক অপরূপ সৃষ্টি। তাকে কৃতজ্ঞতা জানাবেন।
এর পর যতদূর সম্ভব চিড়িয়াখানা, রক গার্ডেন, বাতাসিয়া লুপ, হিমালয়ান মাউন্টেন ইনস্টিটিউট, আরও কিছু দেখবেন। ঐ দিন হয়তো সব সম্ভব হবে না। পরের দিনও দেখবেন। বিকালে শপিং করবেন। শীতের পোষাক অনেক সস্তা। আর পাবেন অরিজিনাল নেপালের স্টোন। ডিসেম্বরের ২৪-২৬ তারিখের দিকে গেলে স্নো ফলও দেখতে পারেন।
ফেরার দিন অপসন ২ টা। একটা ওখান থেকে সুন্দরী মিরিখ দেখতে চলে যেতে পারেন। তবে ড্রাইভারকে আগেই বলে দেবেন নেপালের পশুপতি চেকপোস্টে নিয়ে যেতে।ফেরার পথে রোহিনী সোহিনী হয়ে শিলিগুড়ী ফিরে হোটেল এয়ার ভিউ তে থাকুন।( এ ছাড়াও অনেক হোটেল আছে)
২য় অপসন সরাসরি শিলিগযড়ী চলে আসতে পারেন। পথে মাখাই বাড়ী চা বাগান থেকে চা কিনে নিয়ে আসুন। শিরিগুড়ী তেকেও মিরিখ যেতে পারেন।
পরদিন সকালে বিধান মার্কেটে একবার ঢু মেরে আসুন। আর একবার এসে কালিংমপম, সেভক, কালিঝরা দুধিয়া ঘোরা যাবে।
বেলা ১টার মধ্যে চ্যাংড়াবান্ধার দিকে রওনা হবেন। কারণ ফেরার বাস গুলো বুড়িমাড়ী থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।
তাছাড়া বর্ডারের আনুষ্ঠানিকতা তো আছেই।ফেরার পথে বগুড়ার দই নিয়ে ফিরে আসুন। ভোর বেলাতে চোখ মেলে দেখুন আপনি ঢাকাতে।
২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪
উচ্ছল বলেছেন: ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ঘুরে আসি দার্জিলিং
আসলে ঘুরতেতো মন চায়রে ভাই কিন্তু পকেটে টাকা
আর অত সময় কোথায় ।
৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯
গোধুলী রঙ বলেছেন: সুন্দর ভ্রমন বৃত্তান্ত, একা ঘুরে আসার ইচ্ছে আছে আগামী বছর, সব কিছু চিনে টিনে বউকে নিয়া যাবো
৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪০
পুলক ঢালী বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন । সবচেয়ে আকর্ষনীয় হলো টাইগারহিলে সূর্যোদয় দেখা । ব্যপারটা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে । কখনো সূর্য মেঘে ঢাকা থাকে কখনো কাঞ্চনজঙ্গ্ঘা মেঘের আড়ালে থাকে । দুদিকের আকাশ পরিষ্কার থাকলে যে দৃশ্যের অবতারনা হয় সেটাকে স্বর্গীয় বলা যায় । দেখা যায় পায়ের নীচের দিক থেকে সূর্যের হালকা রশ্মী বিপরীত দিকের কাঞ্চনজঙ্গ্ঘার শিখররের সাদা বরফকে রক্তিম হীরকের রূপ দিয়েছে, দৃশ্যটি ক্ষনস্থায়ী কারন সূর্য উঠে গেলে রক্তিম ভাবটুকু সাদা হতে থাকে ।
৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। দর্শনীয় জায়গাগুলোর আরো ছবি দিলে ভাল হত।
৬| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩০
কল্লোল পথিক বলেছেন: চমৎকার বর্নণা
৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৩
আমি মিন্টু বলেছেন: ভালো লাগল । পড়ে মনে হল গুরে আসতে হবে ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০০
ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ঘুরে আসি দার্জিলিং
আসলে ঘুরতেতো মন চায়রে ভাই কিন্তু পকেটে টাকা
আর অত সময় কোথায় ।