নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
১লা বৈশাখ প্রথম ঠিক কবে থেকে আমার উপলদ্ধিকে জাগ্রত করলো তা এই মুহূর্তে বলতে পারবো না।
তবে ছোট বেলায় মাকে দেখেছি ভোর বেলা স্নান করে আগে পায়েস রান্না করতো্। সংগে লুচিও থাকতো। আমাদের দিন শুরু হতো।
আমরা স্নান করে বসে যেতাম মালা গাঁথতে। এ মালা গাঁথা হতো সুতালি দড়ি দিয়ে। তাতে একটা করে আমের পাতা আর একটা করে ফুল দিয়ে গেঁথে প্রতি দরজায় টাঙিয়ে দেওয়া হতো। এইটা দেখলে মনে হতো আজ” ১লা বেশাখ।”
এর পর সারাদিন চলতো খাওয়া দাওয়া আর বিকাল বেলাতে মেলাতে যাওয়া। এ ছিল আমাদের মফস্বল শহরের প্রথম দিকের ১লা বৈশাখ।
পরে একটু বড় হলে স্কুলে গেলে এলো তা অন্যভাবে। সকালে ঝিনুক বিদ্যাপীঠ ষ্কুলের মাঠে প্রধান শিক্ষিকা রাশিদা হাসনু আরার নেতৃত্বে হতো নির্মল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই আম গাছের তলাতে আল্পনা এঁকে সেখানে হতো আবৃত্তি , নাচ আর চিরায়ত গান “ এসো হে বৈশাখ”।
পাশেই ছিল এসডিও/ডিসি সাহেবের সরকারী বাসভবন। ভোরে পাখীদের কলকাকলীতে ঘুম তাড়িয়ে তিনি পরিবার নিয়ে এসে যেতেন আমাদের মাঝে।
আর বিকাল হলে হতো স্কুলের মাঠ জুড়ে মুকুলদের বৈশাখী মেলা্। প্রথম হলো মজ্ঞু আর স্বপ্নার চাটনির দোকান। চাটনি আর চটপটি বিক্রি করে অনেক লাভ করেছিলাম। আরও ছিল সাগরের ঝাল মুড়ি, আরিফের বেলের সরবত, মনীষা শম্পার মনোহারির দোকান। যা করে তারা পুরোটাই লস খেয়েছিল। ২ দিন এই মেলা চলতো। এখন তো জানি সরকারীভাবেই পালিত হয়। জাঁকজমকপূর্ন র্যা লিও হয়।
এই সবই বুদ্ধি হবার পর থেকে ঘটেছ্। কিন্তু আমার চেতনায় প্রথম ১লা বৈশাখ ১৯৭২ সালের ১লা বৈশাখ।
১৯৭১ সালে মার্চ মাসে যখন যুদ্ধের সূচনা ঘটতে শুরু করলো তখন আমরা ভারতে যাই নি। বাবার বুদ্ধিতে যে, এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ স্বাধীন হয়ে যাবে আর আমরা বাড়ীতে ফিরে আসবো। তাই আমরা গেলাম খাসকড়রা ইউনিয়নের নিশ্চিন্দিপুর গ্রামে আমার পিশিমার বাড়ীতে। সেখানে প্রায় ৫/৬ মাস থাকার পরে আমরা চলে যা্ই আমাদের গ্রামের বাড়ীতে শম্ভুনগরে। সে যে কি কষ্টের জীবন তা না হয় আর এক দিন বলা যাবে। তাই ১৯৭১ বা তার আগের ১লা বৈশাখের কথা আমার স্মৃতিৃতে আসে না।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীন হলেও আমরা কিন্তু বাড়ীতে ফিরে আসি ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে। কারন বাড়ীতে তখন ঘরগুলো শুন্য হাতে দাঁড়িয়ে ছিল। তাই বাবা একা বাড়ীতে ফিরে একটু গুছিয়ে নিয়ে আমাদের নিয়ে আসেন।
এরই মধ্যে এলো ১লা বৈশাখ। তখন গ্রামের চারিদিকে কেবল অভাব আর অভাব। তারই দ্মধ্যে চলেছে চড়ক পুজা পাটবান নিয়ে সন্নাসীরা ভিক্ষা মেগে গেছে। হয়েছে শিবের গাজন। কাদামাটি খেলা।
আর প্রকান্ড এক বট গাছের নীচে আড়ং বসেছ্।বহু কষ্টে মায়ের কাছ থেকে চার আনা পয়সা নিয়ে গ্রামের প্রতিবেশীদের সাথে আড়ং এ চলেছি। পায়ে হেঁটে হেঁটে ধুলো উড়িয়ে। হয়তো খালি পায় (আমার তা মনে নেই)।
আড়ং এ ঘুরছে চড়কি, বাজছে বাঁশি, ভাজছে পাপর, হাকছে মাটির পুতুল। দূরে কিছু গজা নিয়ে বসে আছে এক দোকানী। আমি তার কাছে যেয়ে বল্লাম আমার কাছে চার আনা আছে। একটা মাটির পুতুল আর গজা হবে?
দোকানী হিসাব করে আমাকে কিনে দিল।
”মাটির পুতুল আর গজা,
আহা আড়ং এ কি যে মজা!”
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৬
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: স্মৃতিকথা ভালো লাগল।
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৭
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:১৮
শায়মা বলেছেন: অনেক অনেক ভালো লাগা আপুনি!
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৮
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: শুভেচ্ছা
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭
সুমন কর বলেছেন: বৈশাখী স্মৃতিচারণ পড়ে ভালো লাগল।
১০৭১ সালে মার্চ মাসে যখন < টাইপোটা ঠিক করে দিয়েন।
শুভ নববর্ষ। +।