নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্যের দালাল!

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:৩৪

"তুই কী প্রথম আলোর দালাল?"

"আমি কেন তার দালাল হতে যাব? প্রথম আলোতে আমি চাকরি করিনা। প্রথম আলোর গ্রাহকও আমি নই।"

"তাহলে তুই মানতে চাচ্ছিস না কেন যে সংখ্যালঘুদের আক্রমনের পেছনে প্রথম আলোর উষ্কানি আছে!"

"থাকতে পারে, তবে তুই যে যুক্তি দিচ্ছিস, শুধু সেটাই মানতে পারছিনা।"

"ওরা ফটোশপ করেছে, ছবি দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায়! কেন গ্রহনযোগ্য যুক্তি মনে হচ্ছে না?"

"তুই যে ছবি দেখাচ্ছিস, সেটা অনলাইন সংস্করণের ছবি। যেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমন চালানো হয়েছে, সেটা অজ পারাগা। হার্ড কপি ফেলে অনলাইন নিউজ পেপার ওখানে পড়তে যাবে কে? আর তাছাড়া অন্য ব্যপারও আছে।"

"কী ব্যপার?"

"সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ বাংলাদেশে কিন্তু মোটেও নতুন কোন ব্যপার নয়। প্রতি নির্বাচন শেষেই এটা হয়ে থাকে। এবারও তাই হয়েছে। সরকারের উচিৎ ছিল সেসব জায়গায় পুলিশ, আর্মি দিয়ে আগে থেকেই প্রটেকশন দেয়া। শুধু প্রথম আলোর উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমার মনে হয়না।"

"প্রথম আলো ঐ জামাত শিবিরের দালাল! ওদের আক্রমন করেছে জামাত শিবিরেরাই!"

"এটাও গ্রহনযোগ্য অভিযোগ না।"

"ফাজিলের মত কথা বলিস না! হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হবে, আর তাতে জামাত শিবিরের হাত থাকবে না, এটা তুই বিশ্বাস করিস?"

"তোকে কয়েকটা ঘটনা মনে করিয়ে দেই, তোর গণ জাগরণ মঞ্চের কথা মনে আছে? আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসীর দাবিতে যখন...."

"মনে থাকবে না কেন? গণজাগরণ মঞ্চকে ভুলে গেলে আমি নিজের বাঙ্গালী সত্বাকেই ভুলে যাব!"

"ঠিক কথা। সেই সময়ে নারায়ন গঞ্জে 'ত্বকী' নামের এক অসাধারন মেধাবী ছাত্রের খুন হবার কথা মনে আছে?"

"থাকবে না কেন? তার বাবা ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের যোদ্ধা!"

"ঠিক কথা! তখন কিন্তু প্রথমেই সবাই অভিযোগ করেছিল জামাত শিবিরের ওপর। পরে দেখা গেল, এই হত্যার পেছনে আসল দায়ী ছিল শামীম ওসমানের পরিবার!"

"তাহলে?"

"এরপর বরিশালে কিছু হিন্দু বাড়িঘরে আক্রমন হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। সবাই আঙ্গুল তুলল জামাত শিবিরের ওপর, পরে রিপোর্ট আসলো কাজটা স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের নেতৃত্বে হয়েছে।"

"তুই কী বলতে চাস?"

"আমি আরেকটা উদাহরণ টানবো। এইবার অভয়নগরে হামলা হবার এক ঘন্টারও আগে ভুক্তভোগীরা ঘটনা আঁচ করতে পেরে স্থানীয় থানা এবং আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের জানিয়েছিল। একটা ঘন্টা যথেষ্ট সময় পুলিশ, প্রয়োজনে সেনাবাহিনী এনে ওদের প্রটেকশন দেবার জন্য। কেউ এগিয়ে আসেনি। মনে কী প্রশ্ন জগতে পারেনা কেন?"

"তুইই উত্তর দে।"

"আমি কোন উত্তর দেব না। কারণ আমি জানিনা সত্যি কী। এবং সত্যি না জেনে আন্দাজের উপর ভিত্তি করে লাফালাফি শুরু করে কারও হাসির পাত্র হবার আমার কোন ইচ্ছা নেই। তবে আমার কিছু হাইপোথিসিস আছে। তুই শুনতে রাজি থাকলে বলতে পারি।"

"এত কিছু যখন বলছিস, তাহলে বলেই ফেল।"

"প্রথম অভিযোগ বিএনপি এবং জামাত শিবিরের দিকে। বাংলাদেশে জন্ম নেয়া একটা কোলের শিশুও বলে দিতে পারে হিন্দুরা কোন মার্কায় ভোট দেয়। বিএনপি বারবার নিষেধ করার পরেও অনেক স্থানে কিছু মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছে, তাই তাদের ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে হিন্দুদের বাড়িঘর পুড়িয়ে।"

"আমিওতো সেটাই বলছি! ঐ দাড়িওলা শয়তানদের দাড়ি টান দিয়ে ছিড়ে ফেলা উচিৎ!"

"হ্যা। এবং নিজেদের দিক থেকে অভিযোগ সরিয়ে দিতে তারাই প্রথম আলোর ঘারে চাপিয়ে দিয়েছে দায়। প্রথম আলো আওয়ামীলীগের পত্রিকা না হলেও, বিএনপি জামায়াতও তাদের দেখতে পারে না। মনে আছে, ক্যানভাসে এক 'হেফাজতে ইসলাম' সমর্থনকারী সরাসরিই বলেছিল প্রথম আলো এক নাস্তিক পত্রিকা? তারা মোল্লাদের পেছনে লাগে, কার্টুন আঁকে ইত্যাদি ইত্যাদি?"

"হয়েছে। আমি আমার বন্ধু লিস্টে কোন ছাগুকে রাখিনা।"

"ইংরেজিতে একটা কথা আছে, 'কিপ ইউর ফ্রেন্ডস ক্লোজ, বাট এনিমিজ ক্লোজার!' বন্ধুর চেয়েও শত্রুকে নিজের কাছাকাছি রাখো। তাহলে তার মনোভাব তুমি আগেভাগে জানতে পারবে। আমরা বেকুবরা প্রথমেই তাদেরকে দূরে ঠেলে দেই। কাজেই তাদের পরিকল্পনা আগেভাগে কিছুতেই টের পাইনা।"

"হয়েছে। জ্ঞান ফলাতে হবে না। তোর দ্বিতীয় হাইপোথিসিস কী?"

"দ্বিতীয় হাইপোথিসিসেও আছে বিএনপি জামাত। তবে সরকার সেটা হতে দিয়েছে। বিএনপি জামাত দেশে যত সহিংসতা করবে, মানুষ ততই তাদের ঘৃণা করবে। এতে সরকারের লাভ হবে। সরকার তখন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে পারবে 'ওরা খারাপ!' ছোট প্রদীপের আলো তখনই উজ্জ্বল দেখায় যখন চারপাশটা ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকে।"

"আর তৃতীয় হাইপোথিসিস?"

"ঘটনা ঘটানো হয়েছে সরকারী নির্দেশে।"

"আজগুবি একটা কথা বলে ফেললেই হলো?"

"যুক্তি দিচ্ছি, দ্যাখ গ্রহনযোগ্য মনে হয় কিনা।"

"কী যুক্তি দিবি তুই? বলবি সব আসলে সাজানো? এ যে খালেদা জিয়ার মত কথা হয়ে গেল।"

"খালেদা জিয়ার একটা যুক্তি অবশ্যই টানবো। তিনি বলেছেন, "বিএনপির নেতা কর্মী কোন কথা বলার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তাদের ধরে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়, অথচ সংখ্যালঘুর উপর আক্রমনের কোন তদন্ত শেষ হয়না, রহস্য কী?" আমার যুক্তি হচ্ছে, একটা বিতর্কিত, একতরফা, অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে সরকার নানানভাবে কোণঠাসা অবস্থায় আছে। টেলিভিশনে লাইভ দেখানো হয়েছে ভোট চুরির ঘটনা, জাল ভোটের ঘটনা। অথচ সরকার বলছে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তারপরেও মানুষ ইস্যু তুলছে। সরকারকে প্রশ্ন করছে। সরকার এই ইস্যুকেই মোড় ঘোরাবার জন্য আরেকটা বড় ইস্যু ক্রিয়েট করতে চেয়েছে। সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেবার চেয়ে সহজ কাজ আর কী হতে পারে? সবাই তখন আঙ্গুল তুলবে বিরোধী দলের উপর। সরকার তখন আক্রান্তদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে সবার কাছে আবার জনপ্রিয় হয়ে যাবে। দাবা খেলায় বিপক্ষ দলের মন্ত্রী খাবার জন্য মাঝে মাঝে কিছু সৈন্য বলি দিতে হয়। রাজনীতি অনেক নোংরা খেলা বন্ধু! রাজনৈতিক ভাষায় কোন হত্যাকান্ডকে 'হত্যা' না বলে বলা হয় 'বিসর্জন।'"

"তুই লেখালেখি করতে গিয়ে নিজের মাথাই খেয়েছিস! কী সব কথা বলছিস?"

"আমার কোন যুক্তি তোর কাছে খোড়া মনে হয়েছে?"

"না।"

"তাহলে এই অন্ধের মত না থেকে চোখ খোল। সরকারের কাছে জোড়ালো দাবী জানা স্বচ্ছ ও দ্রুত তদন্তের। তারপরে দায়ীদের বিরুদ্ধে এতই কঠোর ব্যবস্থা নিতে, যাতে সংখ্যালঘু অত্যাচারের ঘটনা এটাই শেষ হয়ে থাকে! সত্য বেরিয়ে আসুক। মিথ্যে নিয়ে সবাই মাতামাতি শুরু করে দিলে সত্য সহজে বেরিয়ে আসতে পারেনা।"

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৪১

কলাবাগান১ বলেছেন: ইনিয়ে-বিনিয়ে চেষ্টা করলেন জামাতি-রাজাকার-শিবিরদের কে বাচাতে....
এটাই রাজাকারদের নিতী- নিজের দোষ ঢাকতে, ঘটনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দাও.... বাসে আগুন দেওয়ারত শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করার পরও বলতে থাকে যে সরকার বাসে আগুন দিচ্ছে..... গতকাল সাভার থেকে বাসে আগুন দেওয়ার গ্রুপ কে গ্রেফতার করা হল, জেনে দেখুন কারা প্রতি পেট্রোল বোমার জন্য ৪০০ টাকা করে দেয়।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: জামাত শিবিরকে বাঁচাবার চেষ্টা করা হয়েছে বলেতো মনে হচ্ছে না ব্রাদার! সব রাজনৈতিক দলকেই সন্দেহের তালিকায় আনা হয়েছে। কেউই পাপমুক্ত নয়। সবারই শাস্তি প্রাপ্য!
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ আপনার মত এইভাবে 'দলান্ধ' বলেই কেউ না কেউ ঠিকই পার পেয়ে যাচ্ছে।

২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৪৩

কলাবাগান১ বলেছেন: ত্বকী হত্যাকান্ড কি সরকার ধামা চাপা দিয়েছে???

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ওসমান পরিবারের কারও বিচার হয়েছে বলেও আমি এখনও শুনিনি।

৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৫০

রানা০৯ বলেছেন: আমার পরিচিত একটা জায়গায় এমন হলো যে - একটি হিন্দু পরিবার দেশ ছেড়ে যাবার সময় নাম মাত্র মূল্যে তাদের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে দিল এবং ক্রেতা যথারীতি ক্ষমতাবান ।
এখানে এমন কোনো বেপার নেই তো ????একই সাথে রথ দেখা কলা বেচা !!!!!

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হতে পারে। রাজনীতি এতই জটিল খেলা যে একে বোঝা এত সহজ নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.