নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনলাইন নিউজ

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৭

পৃথিবীতে কেবল দুই রকমের মানুষ আছে - লিডার্স অ্যান্ড ফলোয়ার্স। আমরা বাংলাদেশীরা বেশিরভাগই দ্বিতীয় ক্যাটাগরির। কেউ একজন নতুন কিছু করবে, আমরা আমাদের চোখ বন্ধ করে 'ব্রেইন' নামের শারীরিক যন্ত্রটি উত্তপ্ত করে ফেলি শুধুমাত্র এই চিন্তাই করতে করতে যে কিভাবে সেটাকে আরও নিখুঁতভাবে নকল করা যায়!

একটা সময়ে কেউ একজন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি চালু করেছিল, এখন দেশের অলিতে গলিতে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি। কারও কারও কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকতে পারে, কিন্তু এই ঘটনা সত্যি যে কিছু কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিল্ডিংয়ে একই ছাদের নিচে ক্লাসরুমের পাশাপাশি রয়েছে সুপার মার্কেট, রেস্টুরেন্ট, গার্মেন্টস এবং আবাসিক হোটেল!

কেউ একজন আরেকটু ভিন্নতা আনতে দিলেন প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ। আর যায় কোথা? এখন দেশ ভরে যাচ্ছে ডাক্তার তৈরীর কারখানায়! টানিয়া টুনিয়া এইচএসসি পাশ করা যবকও গ্রীষ্মের দিনে সাদা এপ্রন পড়িয়া বেশ অহংকারী চেহারায় শহরময় ঘুরিয়া বেড়ায়। ইহা এইসমস্ত প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজকূলেরই অবদান!

আর একবারতো রসমালাই কিনতে কুমিল্লায় গিয়ে আমার একেবারে আক্কেলগুরুম অবস্থা হয়েছিল। একসারিতে প্রায় পঞ্চাশটারও বেশি মিষ্টির দোকান! সবগুলোর নামই "মাতৃভান্ডার!" এবং সবচেয়ে মজার ব্যপার হলো, এগুলো একটাও 'আসল'টার শাখা প্রশাখা কিছুই না। অরিজিন্যাল মাতৃভান্ডার কুমিল্লা ডাউনটাউনে অবস্থিত। তাদের কোনই শাখা নেই!

এখন নতুন ট্রেন্ড চালু হয়েছে "অনলাইন নিউজ পেপার।" যে যেখানে পারছে, অনলাইন নিউজ পেপার খুলে বসছে। এই ধরনের পত্রিকা চালানো খুবই সোজা! ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করো, এর ওর নিউজ নিজের ভাষায় লিখো, ব্যস....পত্রিকা দাঁড়িয়ে যাবে!

আরেকজনের নিউজ নিজের ভাষায় ছেপে দেয়া পর্যন্ত আমার কোন আপত্তি নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা সত্যি। সমস্যা হয় যখন দেখি নিউজপেপার চালানোর জন্য তারা উদ্ভট সংবাদ পরিবেশন শুরু করেন। তখন তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন জাগে মনে। এমনিতেই খবরের অভাব নেই বাংলাদেশে, এর মাঝে বানিয়ে খবর বলার দরকারটা কী? নাকি এইসব অনলাইন সাংবাদিকদের মাঝে মাঝেই সাহিত্যিক হতেও ইচ্ছে করে? মস্তিষ্ক প্রসূত গদ্যাদি খবর হিসেবে চালিয়ে দেয়া?

একটা সংবাদ পড়লাম, সারমর্ম অনেকটা এরকম, একজন লোক মারা যাওয়ার চল্লিশদিন পর তার কবর থেকে লাশ উঠিয়ে তার পোশাক পাল্টে নতুন পোশাক পরিয়ে আবার কবর দিয়েছে তার স্বজনেরা। মৃত ব্যক্তিটি নাকি মৃত্যুর পর বারবার পরিবারের স্বজনদের স্বপ্নে এসে দেখা দিতেন এবং বলতেন যে তার কাপড় পুরনো হয়ে যাওয়ায় তিনি কষ্টে আছেন। তারা যেন তার পোশাক পাল্টে দেয়। ভূত এফএমে যাওয়ার মত ঘটনা।

যেই দেশে মানুষ স্বপ্নে দাউদ খাউজ পাছড়া একজিমা সহ ক্যানসারেরও ওষুধ পেয়ে যায়, সেই দেশের মানুষের কাছে এ ধরনের স্বপ্ন দেখা মোটেও অসম্ভব কিছু না। তারা দেখলেও দেখতেও পারেন।

খটকা লাগলো যখন পড়লাম মৃতের বড় ছেলের নাম মোঃ বাবুল হোসেন। কথা হচ্ছে, মোঃ বাবুল হোসেনের পিতার কবর কফিনে কেন হবে? মুসলমানদের কবরে যাওয়ার ইউনিফর্ম একটাই, দুই টুকরা সাদা কাফন। বাড়তি কোন পোশাকের বালাই নেই। তাহলে কী মৃত ব্যক্তি খ্রিষ্টান ছিলেন? হতেও পারে, অনলাইন সাংবাদিক তার পাঠকদের বুদ্ধি খাটাবার জন্য ব্যপারটি ছেড়ে দিয়েছেন।

প্রসঙ্গক্রমে আরেকটা ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে। একই দিনেই খবরটা পড়লাম। এইবারেরটাও ইন্টারেস্টিং।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের এক তরুণ লেকচারার, যিনি বহু কষ্টে পড়ালেখা করে বড় হয়েছেন, তিনি মায়ের নামে একটি বিজ্ঞান স্কুল উদ্বোধন করেছেন। তিনি নিজে যেহেতু কষ্টে পড়ালেখা করেছেন, তাই তিনি চাননা পড়ালেখা করতে কাউকে কষ্ট করতে হোক।

খুবই সুন্দরভাবে তাঁর স্ট্রাগলের দিনগুলোর বর্ণনা করা হয়েছে। লেখক লিখেছেন কিভাবে প্রথম বর্ষ পরীক্ষার ঠিক দুইদিন আগে তাঁর পিতা মারা গেলেন। পিতার চিতায় আগুন দিয়ে তাঁকে কিভাবে আবার ঢাকা ফিরে এসে পরীক্ষায় বসতে হলো এবং সেই পরীক্ষায় তিনি পুরো বিভাগে কিভাবে প্রথম হয়েছিলেন। খটকা লাগলো, মহসীন খানের পিতার মৃত দেহ চিতায় পুড়াতে হবে কেন? বিশেষ করে যার নাম শ্রীবাস খান? খান এমন একটি পদবী যা কেবল মুসলমানদেরই হয়ে থাকে, এবং এটি বংশানুক্রমেই পেতে হয়। কেউ হিন্দু থেকে মুসলমান হলেও ইচ্ছে করলেই নামের শেষে "খান" উপাধি যোগ করতে পারেননা।

অনলাইন লেখকদের নিজেদের লেখালেখির উপর একটু যত্নবান হওয়া উচিৎ। গল্পে ফাঁক রাখা চলে, কিন্তু খাদ রাখলে চলবে কিভাবে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.