নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফরমালিন ও নেতাদের চামচামি

২৬ শে জুন, ২০১৪ রাত ৩:৩১

"আমার এক বন্ধু একদিন বাজারে গিয়ে একটা রুই মাছ কিনলো। বিশাল সাইজের রুই! কানকোটাও টকটকে লাল! আমার বন্ধু আবার মাছের খুবই ভক্ত। এত তাজা এবং বড় মাছ দেখে বেচারা আর লোভ সামলাতে পারলোনা। কিনে ফেলল। দাম একটু বেশি নিল, কিন্তু তাতে সে কিছু মনে করলো না।

মাছওয়ালা বলেছিল মাছটা কেঁটে কুটে দিবে কিনা।

সে আর মাছ কাটালো না। সে তার বউকে মাছটা দেখাতে চায়। এত বড় মাছ দেখাতেও আনন্দ।

বাসায় ফিরতে ফিরতে দেশের বাড়ি থেকে ফোন এলো যে তার বাবা ভীষণ অসুস্থ হয়ে গেছেন। সে যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়িতে ফিরে আসে।

বন্ধু বুঝতে পারলো খবর ভাল না। কারন সাধারণত কোন নিকটাত্মীয়ের "ভীষণ অসুস্থতার" খবর মানে হচ্ছে মৃত্যু সংবাদ। আপনজনদের টেলিফোনে সরাসরি মৃত্যু সংবাদ না দেয়াটা হচ্ছে বাঙ্গালি সংস্কৃতি।

বন্ধু ফ্ল্যাটে আসার আগেই তার বউকে ফোন করে বলল ব্যাগ গুছিয়ে প্রস্তুত থাকতে। তারা এখনই বেরিয়ে যাবে।

বাসে করে দেশের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবার পরে বন্ধুপত্নীর খেয়াল হলো বিশাল সাইজের রুইটা ফ্রীজে ঢোকানো হয়নি। বাইরেই রেখে চলে এসেছে।

বন্ধু বেচারা তখন পিতৃশোকে বিহ্বল, মাছ নিয়ে তাকে তেমন চিন্তিত মনে হলো না।

বাবার জানাজা, কবর, মিলাদ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সেরে ঢাকায় ফিরে আসতে তাদের দশ দিন লেগে গেল। বন্ধু বেচারা তখন সদ্য বাবাকে হারানোর যন্ত্রণায় ভাঙ্গা বুক সারাতে ব্যস্ত। মাছের কথা তারা ভুলেই গিয়েছিল।

ফ্ল্যাটের দরজা খুলে রান্না ঘরে এসে তারা দুজনই অবাক! মাছটা ঠিক তেমনই রয়ে গেছে। একদম অবিকৃত, টাটকা!

যেখানে মাছ মরার চার ঘন্টা পর থেকেই পঁচতে শুরু করে, সেখানে দশদিন পেরিয়ে যাবার পরেও কিছুই হলোনা, ব্যপারটা অবিশ্বাস্য!

ঘটনা বুঝতে বন্ধুর কোনই সমস্যা হলো না। মাছে ফরমালিন দেয়া হয়েছিল।

শখের মাছটিকে না খেতে পেরে এভাবে ফেলে দিতে তার বুকে আবারও নতুন করে ফাঁটল ধরলো।"

গল্পটি বলছিলেন আমাদের শ্রদ্ধ্যেয় শিক্ষক দেওয়ান নিয়ামুল করিম। "অর্গানাইজেশনাল বিহেভিওর" ক্লাসে লেকচারের ফাঁকে তিনি গল্পটি শুনিয়েছিলেন। সময়কাল দুই হাজার ছয়। ঠিক আট বছর আগের ঘটনা। খাবারে ফরমালিন মেশানো তারও আগে থেকে হয়ে আসছে। বাংলাদেশের ফল, মাছ, মাংস সবকিছুতেই বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে যুগের পর যুগ ধরে মানুষকে খাইয়ে এসেছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজ। সেই দেশের ফ্রুট জ্যুসে মেশানো হতো ইটের গুড়া, কনডেন্সড মিল্ক তৈরী হয় সাবানের উপাদান দিয়ে। টমেটো সসে মেশানো হত বিষাক্ত রং!

গণ মাধ্যমে এত সচেতনতার পরেও কোন সরকারকেই সেভাবে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

ভাম্যমান আদালত মাঝে মাঝে হানা দিয়েছেন কোথাও কোথাও, কিন্তু যেখানে কেমোথেরাপির প্রয়োজন, সেখানে এন্টিবায়োটিকে কাজ হয়?

সব পরিস্থিতিতেই মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত বাঙ্গালি এই ভয়াবহ পরিস্থিতেও নিজেকে মানিয়ে নিল। কেউ কেউ রসিকতাও করলো, "ফরমালিন খেয়ে খেয়ে একটা লাভ হয়েছে, মরে গেলে আমাদের লাশ কবরে পচবে না। ইজিপশিয়ান মমি হয়ে বছরের পর বছর টিকে থাকতে পারবো। হাহাহা।"

নিরুপায় মানুষের কাষ্ঠ হাসি।

আহারে!

সেদিন পেপারে একটা দারুন সংবাদ দেখলাম। এখন থেকে নাকি খাদ্যে ফরমালিন পাওয়া গেলে সেই ব্যবসায়ীর বিপক্ষে "attempt to murder" চার্জে অভিযুক্ত করা হবে, এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আলহামদুলিল্লাহ! যাক! যুগের পর যুগ পরে হলেও কোন এক সরকারের টনকতো নড়লো!

এর ফল স্বরূপ সেদিন দেখলাম রাজধানীর সব ফলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য তাঁদের দোকান বন্ধ ঘোষণা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ভ্রাম্যমাণ আদালত অহেতুক ফরমালিন মেশানোর অভিযোগে তাঁদের হয়রানী করে। যারা তাঁদের ফল ডিস্ট্রিবিউট করেন, সেই হীমাগার মালিকদের নাকি কেউ কিছু বলেনা। তাঁদের অভিযোগ, খাদ্যে ফরমালিন সেই হীমাগার মালিকেরাই মেশান।

এখন হীমাগার মালিকদের ধরা শুরু হলে আরও উপরের লেভেলের কারো নাম বেরোবে। তারপর আরও উপরের। এভাবে একটা সময়ে হয়তো বা সত্যি সত্যিই আমাদের দেশ ফরমালিন মুক্ত খাদ্য খেতে পারবে!

সরকারকে অভিনন্দন।

রাজনীতি নিয়ে যখন কথা তুলেছিই, তখন দুয়েকটা গল্পও শেয়ার করা যাক!

আজকের খবরে পড়লাম, সাংসদ মমতাজ নাকি বঙ্গবন্ধু এবং প্রধাণমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সংসদে চমৎকার গান গেয়েছেন। প্যারোডি গানের কথা ছিল, ‘হায়রে বাঙালি, ওরে বাঙালি, তোরা বুঝবি রে একদিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তোদের মাঝে থাকবে না যেদিন। শেখ হাসিনার জন্য আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, তা না হলে ওসব কথা বলাই যেত না।...’

গানটি শুনে নাকি প্রধাণমন্ত্রী হেসে দিয়েছেন।

জাতীয় সংসদ এখন একটি পারিবারিক আড্ডার স্থান হয়ে গিয়েছে। সেখানে সবাই নিজেদের লোক। কিছুদিন আগে একজন আমাদের প্রধাণমন্ত্রীকে "অলী আল্লাহ" বানিয়ে দিয়েছিলেন। এখন শিল্পী মানুষ গান গেয়েও শোনাচ্ছেন। কোনই সমস্যা নাই।

এদিকে আরেকজন, যিনি কিনা বিরোধী দলের সাংসদ (বিরোধী দল মানে এখন কিন্তু জাতীয় পার্টি, বিএনপি আগামী পাঁচ বছরের জন্য সংসদের বাইরে) তিনি প্রস্তাব করেছেন পদ্মা সেতুর নাম বঙ্গবন্ধুর স্ত্রীর নামে রাখতে।

আমি নিশ্চিত, প্রস্তাবনাটি বিপুল ভোটে পাশও হবে।

একটি সেতুর নাম বঙ্গবন্ধু হোক, জিয়াউর রহমান হোক, কিংবা কুতুবউদ্দিন জায়গীরদার হোক, কিছুই যায় আসেনা। সেতু হওয়াটাই জরুরী।

বহুদিন ধরে ঝুলে থাকা পদ্মা সেতু কবে নির্মাণ শেষ হবে কেউ বলতে পারেনা। শেষে দেখা যাবে নামকরণ জটিলতার কারণে সেটা আরও কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে! আমার কথা হচ্ছে, আপাতত তেল মারামারি পাশে থাকুক, সেতু নির্মাণ শেষ হোক। তারপরে যার যা খুশি একটা নাম দিয়ে দিক। সাধারণ মানুষের কাছে সেটা পদ্মা সেতুই থেকে যাবে।

আমাদের নেতাদের থাইল্যান্ড পাঠিয়ে দেয়া উচিৎ। তৈল মর্দন তাঁরা ভালই পারেন। এখন মাসাজের টেকনিকটাও যদি শিখে আসতে পারেন, তাহলে আর কষ্ট করে কাউকে এত পয়সা খরচ করে ব্যাংক যেতে হতো না। একেকজন ঘরে বসেই একেকটি "মাসাজ শিল্প প্রতিষ্ঠান" খুলে বসতে পারতেন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০১৪ ভোর ৪:৪৭

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: আমাদের নেতাদের থাইল্যান্ড পাঠিয়ে দেয়া উচিৎ। তৈল মর্দন তাঁরা ভালই পারেন। এখন মাসাজের টেকনিকটাও যদি শিখে আসতে পারেন, তাহলে আর কষ্ট করে কাউকে এত পয়সা খরচ করে ব্যাংক যেতে হতো না। একেকজন ঘরে বসেই একেকটি "মাসাজ শিল্প প্রতিষ্ঠান" খুলে বসতে পারতেন।

জব্বর দিলেন। টোটালি বলতে গেলে সাবলিল সুন্দর উপস্থাপনা।

২৭ শে জুন, ২০১৪ রাত ৮:৫৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: থ্যাংকস!

২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০১

মোঃ জামিল উদ্দিন বলেছেন: হুম্মম্মম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.