নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
স্কুলের বাংলা প্রথম পত্রে আমাদের পাঠ্য ছিল, "চাঁদে অভিযান।"
মানুষের চন্দ্র বিজয়ের অতি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। নীল আর্মস্ট্রং তখন আমাদের কাছে হিরো! কেবল প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদের মাটিতে নিজের কদম মোবারক ফেলার জন্যই নয়, একবন্ধু বলেছিল, তিনি নাকি মুসলমান হয়ে গিয়েছিলেন।
আরেবাহ! অ্যামেরিকার মত একদেশে থেকে এক খৃষ্টান মুসলমান হয়ে গেল! দারুন তো!
"হ্যা! চাঁদে গিয়ে তার মাঝ বরাবর আর্মস্ট্রং একটি ফাঁটল দেখতে পান। যেন চাঁদকে দুইভাগ করে ফেলা হয়েছে। তারপর তিনি আযানও শুনতে পান। অ্যামেরিকান বলে তখন বুঝতে পারেননি ওটা আযান ছিল। পরে একবার কোন এক আরবদেশে (খুব সম্ভব ইজিপ্টের কথা বলেছিল) গিয়ে তিনি আযান শোনেন। এবং তারপর গবেষণা করে দেখেন যে আমাদের নবীজির ইশারায় একবার চাঁদ দুইভাগ হয়েছিল। ব্যাস, তারপরই তিনি কলিমা পড়ে ফেলেন।"
পরে কেউ কেউ বলেছিলেন আর্মস্ট্রং সাহেব নাকি হজ্জও করেছিলেন।
এরপর শুনলাম মাইকেল জ্যাকসন মুসলিম হয়ে গেছেন। তাঁর নাম এখন থেকে 'মিকাইল।' (খৃস্টানরা যে ফেরেস্তাকে 'মাইকেল' বলে, আমরা তাঁকেই মিকাইল বলি) ইউটুবে মাইকেল জ্যাকসনের ইসলামী সংগীতও বেরিয়ে গেল।
মাইক টাইসনও নাকি মুসলিম হয়ে গেছেন। তাঁর হজ্জের ছবিও আমি ফেসবুকে দেখে ফেললাম। আমি চিন্তা করতাম, তাঁর মুখের ট্যাটুর কি হবে? ইসলামে যে ট্যাটু হারাম! যে শরীরে ট্যাটু থাকবে, সেই শরীর বেহেস্তে স্থান পাবেনা। হাদিস কোরআনের কথা।
ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার রিকার্ডো কাকাও নাকি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তাঁর স্ত্রী এখন থেকে হিজাব ও নেকাব পরে ঘুরেন। ছবিতে এক বোরখা পরিহিতা নারীর পাশে কাকার ছবি আপলোড হয়ে গেল।
মেসুত অজিল নাকি এই রমযান মাসে রোজা রেখে সবক'টা ফুটবল ম্যাচ খেলেছেন।
উপরের ঘটনাগুলো কতটুকু সত্যি, শুধুমাত্র আল্লাহই জানবেন। সত্যি হলে আলহামদুলিল্লাহ। আর মিথ্যা হলে আমার কিছু যায় আসেনা। কিন্তু যে জিনিষটা আমাকে সবচেয়ে বেশি খোঁচা দেয়, তা হচ্ছে একটি লাইন। "লাইক ও শেয়ার দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দিন।"
যদি সত্যি হয়, তবে অবশ্যই সেটি সবাইকে জানানো উচিৎ। কিন্তু যদি মিথ্যা হয়? তখন?
আজকের এই "ভেজালের" যুগে যে কোন কিছু লাইক, শেয়ার করার আগে ইন্টারনেটে একটু ভাল করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিলে ভাল হয়না?
আপনি হয়তো ভাল মনে করে কোন কিছু শেয়ার করলেন। কিন্তু সেটার ভিৎ যদি মিথ্যা হয়ে থাকে, তবে সেটা যত মহৎ উদ্দেশ্যেই প্রচার করা হয়ে থাকুক না কেন, তা মানুষের ক্ষতি করবেই।
বিধর্মী কেউ একজন হয়তো নীল আর্মস্ট্রংয়ের ঘটনা পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেল। তারপর সে যদি পড়াশোনা করে জানতে পারে ঘটনা ভূয়া, তখন সে শুধু আপনাকেই গালি দিবেনা, বরং গোটা মুসলিম জাতিকেই গালি দিয়ে বলবে, "শালারা, ভূয়া প্রোপাগান্ডা চালিয়ে নিজেদের দলে লোক ডাকে!"
তারপর সেই লোকটা যে ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, সেটার দায় স্রেফ আপনার উপরই থাকবে।
ইসলামে হিরোর অভাব নেই যে আপনাকে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা হিরোর প্রচার করতে হবে।
নবীজি বলেছেন, "কেউ যখন একটি সংবাদ শুনলো এবং তার সত্য মিথ্যা যাচাই না করেই তা প্রচার করে বেড়ালো, তাহলে সে নিজেও মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হলো।"
আরেকটা ব্যপার যেটা লক্ষ্য করি সেটা হচ্ছে, প্রায়ই দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশে মানুষের নামাজ পড়ার দৃশ্য আপলোড করা হয়।
কেউ নৌকার উপর উঠে নামাজ পড়ছেন, কেউ রাস্তায় হট্টগোলের মাঝে নামাজ পড়ছেন, কেউ আরও প্রতিকূল পরিবেশে নামাজ পড়ছেন। খুবই ভাল। ইসলামে বিধান আছে, "যদি তোমার উটের মুখ কাবার বিপরীতেও থাকে, তবুও তুমি পারলে উটের পিঠেই নামাজ আদায় কর, তবু নামাজ ছেড়ো না।"
একদিন একটা ছবিতে দেখলাম একজন বৃদ্ধ একটি তীব্র খরস্রোতা পাহাড়ি নদীর মাঝখানে দ্বীপের মত গজিয়ে ওঠা একটি পাথরের উপর নামাজ পড়ছেন। তাই দেখে বাংলার একজন বিখ্যাত সেলিব্রেটি উক্তি করলেন, "চাচা মিয়া নামাজ পড়তে নদীর দুই পার ফালায়া কষ্ট কইরা ঐ পাথরে গেলেন ক্যারে?"
যেহেতু সেলিব্রেটি মানুষ, সেহেতু লাইক, শেয়ার এবং কমেন্টে এই নিয়ে হাসাহাসির অভাব হলনা।
জনাব সেলিব্রেটি কথাটি মিথ্যা বলেননি। আসলেই হয়তো ছবিটা নকল। কেউ একজন ফটোশপ করে লাগিয়ে দিয়েছেন। যেমনটা আমরা পেয়েছি একটি জায়ান্ট কঙ্কালের খুলির পাশে একজন মানুষের মাটি খোরার ছবি, নিচে লেখা - "কোরআন শরীফে বর্ণিত আদ জাতির নিদর্শন! কয়টা লাইক ও শেয়ার হবে?"
কথা হচ্ছে ভাইসাহেব কোরআন শরীফে আদ জাতির বর্ণনা পড়েছেন। তাদের পরিণতির কথা পড়েননি? যেখানে আল্লাহ বলেছেন যে তিনি তাদের এমনভাবে নিশ্চিহ্ন করেছেন যে তাদের কোন অস্তিত্বই কেউ খুঁজে পাবে না। - সেই বর্ণনার ভ্যালু কোথায় থাকলো তাহলে?
রমজান মাস চলছে। মানুষ এখন নিজের ঈমান রিচার্জে ব্যস্ত। এখনই এইসব পোস্টে পোস্টে ফেসবুক পেজ ভরে উঠছে। শুধু ছবিই নয়, কোরআনের ভুয়া আয়াতও প্রচার হচ্ছে। শুধু খেয়াল রাখবেন, মিথ্যা কিছু শেয়ার করে নিজে বিরাট ভুল করে বসবেন না। নাহলে ঈমান রিচার্জ হবার জায়গায় "শর্টসার্কিট" হয়ে যাবে।
১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:২৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২০
িরয়াজ উিদ্দন বলেছেন: আসলেই... এদের কেওই কিন্তু অথন্টিক লিংক দেয় না...
৩| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৫৯
রাজিব বলেছেন: আপনার পোষ্টের মূল ভাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করার কোন অবকাশ নেই। শুধু দুএকটা পয়েন্ট যোগ করতে চাই।
১। "মাইক টাইসনও নাকি মুসলিম হয়ে গেছেন" হ্যা মাইক টাইসন সত্যিই মুসলমান হন। তবে ধর্ষণের দায়ে শাস্তিস্বরূপ জেলে গিয়ে তারপর একসময় মুসলিম হন। তার মত একজন কুখ্যাত লোক মুসলিম হলে ইসলামের মহিমা কি করে বাড়ল জানি না। আর তার ব্যক্তিগত জীবনে চলাফেরা ইসলাম কেন কোন ধর্মেরই সঙ্গে খুব একটা খাপ খায় না।
http://en.wikipedia.org/wiki/Mike_Tyson
২। "মেসুত অজিল নাকি এই রমযান মাসে রোজা রেখে সবক'টা ফুটবল ম্যাচ খেলেছেন।"
না এটি ঠিক নয় সম্ভবত।
সুত্রঃ Muslim footballers including Mesut Ozil, Xherdan Shaqiri, Granit Xhaka and Valon Behrami will not observe Ramadan due to their participation in the 2014 World Cup.
Click This Link
Click This Link
Arsenal's Mesut Ozil opts against fasting for Ramadan as Germany prepare for 'hard labour' against Algeria
১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৪| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:০৩
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: লিখেছেন বেশ। যুক্তি আছে। সত্য প্রচার ভাল কাজ হলে মিথ্যা প্রচার খারাপ হবেনা কেন ?
১৮ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৩২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:১৯
দাদার নাতী বলেছেন: সহমত আপনার সাথে।