নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
ক্লাস শেষের ঘন্টা বাজার পর টিচার যখন রুম ছেড়ে বেরিয়ে যান, তখন দেখা যায় প্রতিটা ক্লাসেই হৈ হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। সব বাচ্চারাই একে অপরের সহপাঠির সাথে গল্প জুড়ে দেয়। কেউ কেউ এই সময়েই "বুলি" করে। কোন পালোয়ান সাইজের বাচ্চা হয়তোবা রোগা পটকা শরীরের একজনের টিফিন জোর করে খেয়ে ফেলে।
টিচার আসলেই যে বিশৃঙ্খলা থেমে যায় এমন কোন গ্যারান্টি নাই। টিচারের উপর নির্ভর করে তাঁকে ছাত্রছাত্রীরা কিভাবে মেনে চলবে।
কিছু টিচার আছেন খুবই মিনমিনে গলায় আওয়াজ তোলেন, "এই তোমরা থামো!"
এতে দুষ্টু স্টুডেন্টরা আরও বেশি উৎসাহ পায়। দ্বিগুন উদ্যমে হট্টগোল পাকায়।
কিছু টিচার আছেন কিছুই বলেননা। তিনি শুরুতেই হাল ছেড়ে দেন। তিনি মেনে নেন, এদের বকলেও যা, না বকলেও তা। এদের কোনই পরিবর্তন হবেনা। এদের নিয়ন্ত্রণ করা তাঁর কর্ম নয়। তিনি একঘেয়ে স্বরে পড়াতে থাকেন।
আর কিছু টিচার আছেন যাঁরা রুমে পা দেয়া মাত্রই ক্লাসে পিনপাতনিক নিরবতা বিরাজ করে। ক্লাসের নিতান্ত বেয়ারা ছাত্রটিও শার্ট ইন করে হাত দিয়ে চুল গুছিয়ে ভদ্রবালক হয়ে যায়। কারন সে জানে, এই ক্লাসে দোষ করলে টিচারের বেত সপাং সপাং করে তার পিঠে এসে পড়বে।
মূল প্রসঙ্গে আসার আগে ছোট একটা ইতিহাস বলে নেই। অনেকের জানার প্রয়োজন আছে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অ্যামেরিকা যে পাকিস্তানের পক্ষ্যে ছিল এটা সবাই জানে। ইন্ডিয়া যে আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল, এটাও সবাই জানে।
অনেকেই অভিযোগ করেন, ইন্ডিয়া কেন ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল। তার আগে সাহায্য করলেইতো আমরা অনেক আগে স্বাধীন হয়ে যেতাম। বেঁচে যেত লক্ষ লক্ষ প্রাণ!
ইন্ডিয়া তার আগে সাহায্য করেনি কারন পাকিস্তানের পক্ষে অ্যামেরিকার পাশাপাশি ছিল চায়না। ইন্ডিয়ার উত্তরের একটা বিশাল এলাকা জুড়ে চীনা বর্ডার। যদি চীনারা সেদিক দিয়ে ঢুকে পড়ে, তাহলে তাদের আটকাবার মত যথেষ্ট শক্তি ইন্ডিয়ার ছিল না।
ইন্ডিয়াকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো রাশিয়া।
ভারত যখন তাঁর সিপাহিদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতে বাংলাদেশে ঠেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছিল, তখন চীনারাও তাদের সীমান্তে সিপাহী জড়ো করতে থাকে ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্যে। রাশিয়া সেই সময়ে চীন-রাশিয়া (তখনকার সোভিয়েৎ ইউনিয়ন, এখনকার রাশিয়ার চেয়েও অনেক অনেক বিশাল একটি দেশ) সীমান্তে তাঁদের সৈন্য দাঁড় করিয়ে দেয়। রাশিয়ানদের এর বেশি আর কিছুই করতে হয়নি। সীমান্তে এসে ঝিম মেরে দাঁড়িয়ে ছিল।
এতেই বেইজিং বার্তা পেয়ে যায়, তারা তাদের সিপাহিদের ভারত সীমান্ত থেকে সরিয়ে ফেলে।
অ্যামেরিকার বিখ্যাত সপ্তম নৌবহর (সেভেন্থ ফ্লিট) রওনা হয়ে গিয়েছিল বঙ্গোপসাগরের দিকে। তাদের জবাবে রাশিয়াও তাঁদের নৌবাহিনী পাঠিয়ে দেয় আমাদের দিকে। পেন্টাগন তাঁদের রণতরী ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান-ভারত মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া ছিল সেই "কড়া টিচার" যাঁর ভয়ে দুষ্টু ছাত্র অ্যামেরিকা এবং চায়না একদম মেনি বিড়াল হয়ে গিয়েছিল।
আমাদের স্বাধীনতার পেছনে ভারতের প্রতি যেমন কৃতজ্ঞ থাকার প্রয়োজন, ঠিক তেমনি সোভিয়েৎ ইউনিয়নের প্রতিও সমান কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ।
এখন আর রাশিয়ার সেই দিন নেই। জমিদারের পোরা বাড়ির মত বিগত দিনের শান শওকতের দিকে ফিরে ফিরে তাকিয়ে সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
তখনকার প্রতিদ্বন্দী অ্যামেরিকাই এখন পৃথিবীর হর্তাকর্তা। মাননীয় রাষ্ট্রপতি, শান্তির জন্য নোবেল পুরষ্কার(২০০৯) বিজয়ী, জনাব বারাক হোসেন ওবামা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। কেউ তাঁর বিপক্ষে কথা বললে তাকে শায়েস্তা করতে তিনি এফ-১৬ বিমান পাঠিয়ে দেন। তাঁকে এখন কোন সোভিয়েৎ ইউনিয়ন নিয়ে চিন্তা করতে হয়না।
তাঁর ভয়ে যেখানে সব 'দুষ্টু ছাত্রের' শার্ট ইন করে চুপচাপ বসে ক্লাস করার কথা, সেখানে তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বেয়ারা ছাত্র ইজরায়েলের প্রতি আশ্চর্যরকম পক্ষপাতিত্ব করেন। পেছনের ঘটনা অনেকেই জানেন, অনেকে আন্দাজ করে নেন। কেউ এগিয়ে আসেনা ফিলিস্তিনিদের সাহায্যে, কারন ইজরায়েলের পেছনে 'অ্যামেরিকার হাত' আছে।
কিন্তু সব টিচারের উপরেই একজন হেডমাস্টার থাকেন। যিনি যখন তখন তাঁর অফিসে টিচারকে ডাকিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন, "তোমার হাতে ক্ষমতা ছিল, কিন্তু তুমি ঐ ছেলেটিকে বিশৃঙ্খলা করতে দিলে কেন?"
জনাব ওবামা কি জবাবটা ঠিক করে রেখেছেন?
আমরা হচ্ছি জনগণ। স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। আমাদের হাতে কোনই ক্ষমতা নেই। তবে কোন ছাত্র বেলেল্লাপনা করলে, আমাদের ক্ষমতা আছে মৌখিক প্রতিবাদ করার। আমরা সেটাই করে যাব।
ফেসবুকে "হ্যাশট্যাগ" সেই প্রতিবাদের একটি অংশ।
ইজরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে rallyতে অংশগ্রহণ সেই প্রতিবাদের অংশ।
টাকা উঠিয়ে ফিলিস্তিনের আহতদের চিকিৎসা করানো সেই প্রতিবাদের একটি অংশ।
এমনকি হাত তুলে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ভাগ্যের মালিকের কাছে প্রার্থনা করাটাও সেই প্রতিবাদের অংশ।
হেডমাস্টার স্যার একদিন আমাদের সবাইকেই তাঁর অফিসে ডাকবেন। তখন তাঁর সামনে আমরা যেন বলতে পারি, "আমরা চুপ করে ছিলাম না। দুষ্টু ঐ ছাত্রের অপকর্মের পক্ষপাতিত্ব করিনি। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি।"
বাকি হেডস্যারের উপর। তিনিই ঠিক করবেন দুষ্টু ছাত্রকে কি স্কুলে রাখবেন। নাকি টি.সি দিয়ে বের করে দিবেন।
সবাইকে জুমাতুল বিদা মুবারাক!
২৮ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:০০
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনাকেও।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
হেডস্যার বলেছেন:
ঈদ মুবারক।