নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
রমযান মাসে মসজিদে ইফতার করতে গিয়েছি। মাগরিবের আযানের আগে সবাই মিলিত হয়েছি একটি হল রুমে। সবার সামনে দেয়া হলো দুইটা করে খেজুর, একটি সিঙ্গারা এবং একগ্লাস পানি।
আযান শুনে প্রথমে রোজা ভাঙ্গা হবে। তারপর জামাতে নামায পড়া হবে। তারপর ইফতারের মেইন কোর্স খাওয়া হবে। সেখানে ভরপেট ইফতারের ব্যবস্থা থাকে।
আযান শুনে আমরা রোজা ভেঙ্গে ফেললাম।
পানি দিয়ে গলা ভিজিয়ে খেজুর চাবাচ্ছি, এইসময়েও দেখলাম কিছু রোযাদার ছুটতে ছুটতে আসছেন। তাঁরা দেরী করে ফেলেছেন। দ্রুত রোজা ভাঙ্গতে হবে। দেরিতে রোজা ভাঙলে সেটা মাকরুহ হয়ে যায়।
দেরী করে আসায় কেউ কেউ খেজুর এবং সিঙ্গারা পেলেন না। পানির বোতল নিয়ে চুমুক দিয়ে রোজা ভাঙ্গছেন, এবং চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে খুঁজছেন, কোথাও খেজুর বা সিঙ্গারা পাওয়া যায় কিনা।
একজন একটি ছেলের প্লেট থেকে একটি খেজুর নিতে গেলে সেই ছেলেটি প্লেট সরিয়ে নিয়ে বলে, "মাফ করবেন, এটা আমার।"
সাথে সাথেই পাশেরজন নিজের একমাত্র সিঙ্গারা এগিয়ে দিয়ে বললেন, "আপনি এটা খান ভাই।"
কথা হচ্ছে, একটি খেজুরতো তুই খেয়েছিসই। বাড়তিটা যদি আরেকজনকে দিয়ে দিতি, তাহলে তোর কিই বা এমন ক্ষতি হয়ে যেত? উল্টো একজনের পেটে কিছু একটা হলেও যেত।
এবার ভিন্ন গল্পে আসা যাক।
অ্যামেরিকান রাস্তায় কখনও "ট্রাফিক জ্যাম" হয়না। কেবলমাত্র অফিস শুরু এবং ছুটির সময়েই গাড়ি যা একটু স্লো চলে আর কি। কেবলমাত্র রাস্তায় কোন এক্সিডেন্ট হলে, অথবা কনস্ট্রাকশনের কাজ চললে গাড়ি চলাচল মোটামুটি থেমে যায়।
তাতেও খুব বেশি সময় লাগেনা। অবশ্যই তা বাংলাদেশের হিসেবে। আমাদের দেশে যেমন রাস্তাঘাটে দুই তিন ঘন্টা নষ্ট করে ফেলা কোন ব্যপারই না, এখানে রাস্তায় বিশ মিনিট নষ্ট হলেও ধরে নেয়া হয় যেন মহা সর্বনাশ ঘটে গেছে।
এরমাঝেও যদি ইমার্জেন্সি ভিহিকেলের সাইরেন শোনা যায়, রাস্তায় চলাচলকারী সব গাড়ি ইচ্ছাকৃতভাবেই থেমে যায়। ড্রাইভার চারপাশে দেখতে থাকে কোথা থেকে সাইরেনের শব্দ আসছে। যদি তার লেন দিয়ে গাড়ি আসতে দেখা যায়, তাহলে সাথে সাথেই সে পাশের লেনে চলে যায়। যদি পাশের লেনে জায়গা না থাকে, তবে রাস্তার আইল্যান্ডে উঠে যায়, রংওয়েতে উঠে যায়, ফুটপাতে উঠে যায় - তবু নিশ্চিত করে ইমার্জেন্সি ভিহিকেল, মানে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ট্রাক অথবা ক্ষেত্র বিশেষে পুলিশ যেন দ্রুত বেরিয়ে যেতে পারে। বাম্পার টু বাম্পার ট্রাফিকেও তাঁদের কোন সমস্যা হয়না।
একদিনের কথা। রাস্তায় কোনই ট্রাফিক নাই। স্পিড লিমিটের চেয়ে একটু বেশি স্পিডেই সবাই গাড়ি চালাচ্ছে।
হঠাৎ শুনি সাইরেনের শব্দ। পেছনে তাকিয়ে দেখি আমার পিছনেই একটা এম্বুলেন্স তীব্র গতিতে ছুটে আসছে।
আমি ছিলাম লেফট অনলি লেনে। সামনের সিগনালে আমার বাঁয়ে যাবার কথা। কিন্তু এম্বুলেন্সকে সাইড দিতে আমি সাথে সাথে ডানদিকের লেনে সরে গেলাম। এখন সিগন্যাল পেরিয়ে সামনে কোথাও ইউটার্ন নিয়ে আবার পথে ফিরতে হবে।
আমার সামনের গাড়ি কিন্তু সরলো না। সে সিগনাল পর্যন্ত এগিয়ে গেল।
তাকে পথ থেকে সরানোর জন্য এম্বুলেন্স বিকট হর্ণ বাজাতে লাগলো। গাড়ি তবুও সাইড দেয় না। সে সিগনালে বাঁয়ে যাবে। যেহেতু বিপরীত লেন থেকে একের পর এক গাড়ি আসছে, সে যেতে পারছে না।
এম্বুলেন্স এসে শেষ পর্যন্ত ব্রেক কষে থামতে বাধ্য হলো।
বিকট হর্ণ বাজিয়েই চলেছে, তবু গাড়ি সরছিল না। বিপরীত লেনের গাড়িগুলো থেমে গেল। ওরা বুঝেছে যে এম্বুলেন্স বাঁয়ে যাবে এবং তাকে সাইড দিতে হবে। সুযোগ পেয়ে গাড়ির চালক বাঁয়ে গেল। এম্বুলেন্স তাকে ওভারটেক করে পাশ কাটিয়ে চলে গেল।
উপরের দুইটি ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একটা মিল আছে, দুজনের চামড়াই ব্রাউন। মানে তাঁরা হয় বাংলাদেশী, না হয় ভারতীয়, নাহয় পাকিস্তানি। পৃথিবীর যাবতীয় "ব্রাউন পিপলের" উৎস হচ্ছে এই তিনটি দেশ।
এম্বুলেন্সের ঘটনা দেখে আমার বেশ কয়েকটি ঘটনা মনে পড়ে গিয়েছিল। সবকটিই দেশে ঘটা।
আমার এক পরিচিত মেয়ের ছোটবেলা থেকেই শখ ছিল বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবার। কিন্তু সে হলো ডাক্তার। কারন সে যখন স্কুলে পড়ে, তখন একদিন হঠাৎ তাঁর বাবার বুকে তীব্র ব্যথা হয়। সাথে সাথেই এম্বুলেন্স ডাকা হয়। এম্বুলেন্স আসতে এক ঘন্টা লাগে, এবং রোগী নিয়ে ক্লিনিকে যেতেও এক ঘন্টা লাগে। দুই ক্ষেত্রেই এম্বুলেন্স সাইরেন বাজাচ্ছিল। একটা গাড়িও তাকে সাইড দেয়নি।
ফলাফল, রাস্তাতেই রোগীর মৃত্যু।
মেয়েটি তখনই ইঞ্জিয়ারের বদলে ডাক্তার হবার সিদ্ধান্ত নেয়।
তার ধারনা সে যদি ডাক্তার হতো, তাহলে হয়তো এম্বুলেন্স আসতে আসতে সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারতো। এতে হয়তো তার বাবা বেঁচে যেতেন।
আরেকবার আমি নিজেদের গাড়ি করে যাচ্ছি। ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে। পেছনে একটা এম্বুলেন্সকে সাইরেন বাজাতে দেখেও আমাদের ড্রাইভার সাইড দিচ্ছিল না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, "সালাম ভাই, সাইড দিচ্ছেন না কেন?"
ড্রাইভার অবাক গলায় জানতে চাইলো, "সাইড দিমু ক্যান?"
"রোগী নিয়ে যাচ্ছে।"
ড্রাইভার আমাকে উড়িয়ে দিল, "আরে না। এইসব সাইড নেয়ার ফন্দি। দেখেন গিয়া, ভিতরে রোগী মোগী কিচ্ছু নাই। জ্যামে পড়তে চায়না বইলাই এই কাম করে।"
"একটা গাড়িকে সাইড দিলে কিই বা ক্ষতি হয়ে যাবে?"
সালাম ভাই আমার প্রশ্নের জবাব দিলেন না। এম্বুলেন্স ড্রাইভারকে ওভারটেক করেই এগিয়ে যেতে হলো।
বলা হয়ে থাকে ইতিহাস বারবার নিজের পুনরাবৃত্তি করে। একই ঘটনা বারবার আমাদের জীবনে ঘটতে থাকে।
সালাম ভাইকেও আমি আবার দেখতে পেলাম ক্যারলটন মসজিদের ইফতার মাহফিলে। একজন রোজাদারকে যিনি তার বাড়তি খেজুর দিতে নারাজ ছিলেন।
সালাম ভাইকে আমি দেখতে পেলাম ডালাসের রাস্তায়, এম্বুলেন্স হর্ণ বাজিয়ে সাইড চাওয়ার পরেও যিনি পথ ছাড়েননি।
সালাম ভাইয়ে আমাদের দেশ ভর্তি। যে কারনে বৃষ্টির বাবাকে এম্বুলেন্সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হয়, এবং তার আজীবন লালিত ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিয়ে গলায় স্টেথেস্কোপ ঝুলাতে হয়। https://www.facebook.com/groups/canvasbd/
২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:২১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক
২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৩০
আহমাদ ইবনে আরিফ বলেছেন: সকল সালাম ভাইদের সালাম দিয়ে দিয়ে হাজতে পুরে দেওয়া উচিত।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:০৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৪২
আজমান আন্দালিব বলেছেন: আহমাদ ইবনে আরিফ বলেছেন: সকল সালাম ভাইদের সালাম দিয়ে দিয়ে হাজতে পুরে দেওয়া উচিত।... হাহাহা...
৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:১৫
ইমরান আশফাক বলেছেন: এই প্রজন্মে এই স্বভাব পুরোপুরি যাবে না, আগামি প্রজন্মে অবস্হার কিছুটা উন্নতি হবে আশা করি।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: এখন থেকে ব্যবস্থা না নিলে সেটাও হবেনা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১৪
নতুন বলেছেন: এই বোধ না আসলে আমাদের জাতীর কিছুই হবে না..