নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আসসালামু আলাইকুম!
এক আপু গতকালকের লেখা (শেখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইয়ুসুফের ভিডিও, যেখানে তিনি বলেছেন "মেয়েদের একমাত্র কাজ স্বামীর সেবা এবং বাচ্চা জন্ম দেয়া") পড়ে মন্তব্য দিয়েছেন। তাঁর জবাব হিসেবেই লিখতে লিখতে দেখলাম আরেকটা বিশাল আর্টিকেল লিখে ফেলছি। ভাবলাম, এখানেই ছেপে দেই। এতে অনেকেরই অনেক মিস কনসেপশন দূর হতে পারে।
সবার আগে ক্লিয়ার করে নেই। আপুর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ! আমরা এইরকম গঠনমূলক সমালোচনাই পছন্দ করি। গ্রুপের কোন পোস্ট পড়ে কারও মনে যদি কোন সন্দেহ আসে, তবে তিনি যেন সাথে সাথেই কমেন্টে লিখে ক্লিয়ার হয়ে নেন। এতে সবার জন্যই লাভ আছে।
এইবার আসা যাক লেখকের জবাব পর্বে।
তিনি বলেছেন আমি মুফতি ইসমাইল মেঙ্ককে "বিশ্বখ্যাত স্কলার" বলেছি - কিন্তু শেখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে "হুজুর" বলে অপমান করেছি। তিনি বলছেন, "মৌলবাদী" এবং "হুজুর" শব্দ দুটি আমাদের দেশে অপমান করতেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
আমি জানিনা এখন কী অবস্থা, কিন্তু আমি যখন ছিলাম, দেশে "হুজুর" শব্দটা কখনই অপমান করতে ব্যবহার করা হতো না। আমার মসজিদের ঈমাম সাহেবের সাথে এখনও আমার ফোনে কথা হলে আমি তাঁকে "হুজুর" বলেই সম্বোধিত করি, এবং তিনি এতে বিন্দুমাত্র অপমানিত হন না। আলিমদের সম্মান আমিও রক্ষা করি, শুধু আলিমদেরই না, সব মানুষকেই আমি সম্মান দিয়ে কথা বলি। এমনকি তসলিমা নাসরিন অথবা আসিফ মহিউদ্দিনকে সমালোচনা করেও যখন আমি কোন লেখা লিখি, সেখানেও তাঁদের আমি "লেখক/লেখিকা" হিসেবে সম্বোধিত করি। রাসূল (সঃ) বলেছেন, "কেউ যদি চরম অশালীনভাবে তর্ক করতে আসে, তবে তাঁর সাথে পরম সৌহার্দ্যের সাথে নিজেকে উপস্থাপন করো।" হাদিসটির রেফারেন্স আমি দিতে পারছি না, কিন্তু আমাকে হাদিসটি সামনাসামনি দাঁড়িয়ে শুনিয়েছেন উস্তাদ নোমান আলী খান। তিনিও বিশ্বখ্যাত স্কলার। তাঁর রেফারেন্সে বিশ্বাস করাই যায়। গতমাসেই জুম্মার নামাজে তিনি আমাদের মসজিদে এসে খুৎবায় এই হাদিসটির উল্লেখ করেন।
তেমনি আরেকটা ব্যপার লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন, আমি কখনই "ছাগু" শব্দ ব্যবহার করিনা। আমি জানি, কেউ যখন কিছু বলে, অনেক পড়াশোনা করেই বলেন। এই পড়াশোনার খাতিরেই আমি কাউকে এত সহজে অপমান করিনা। সে আস্তিক-নাস্তিক যেই হোক।
আপু বলেছেন, মাত্র ৪৯ সেকেন্ডের একটা ক্লিপ দেখে ৪৯ লাইনের কোন আর্টিক্যাল লিখে ফেলা কোন কাজের কথা না। কথা ভুল না।
তবে ভিডিওর ২৯তম সেকেন্ডে হুজুরের হাতের অ্যাকশন অনেক বড় মিস কনসেপশন ক্রিয়েট করে। হয়তো এইটা তাঁর মুদ্রাদোষ কিন্তু আমাদের দেশে, বিশেষ করে "দুষ্টু ছেলেদের আড্ডায়," এই অ্যাকশন অনেক অশ্লীল একটা অর্থ বহন করে। তিনি ভদ্রমহিলা, তিনি বুঝতে পারবেন না। কিন্তু ট্রাস্ট মি, শুধু এই অ্যাকশনের কারণেই ভিডিও ক্লিপটা এত বেশি "নেগেটিভ শেয়ার" হয়েছে। অনেকেই দাঁত কেলিয়ে মন্তব্য করেছে, "হুজুরের অ্যাকশন দ্যাখ!"
অথচ আপনি ড. ইয়াসির ক্বাদরী, নোমান আলী খান, মুফতি মেঙ্ক বা এইরকম ভূবনখ্যাত যেকোন স্কলারের লেকচার ভিডিও দেখুন, একটাও ক্লিপ পাবেন না যা বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। দেশী আলেমদের কী আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিৎ না?
তাঁর লেকচার ক্লিপ থেকে স্পষ্ট মনে হয়েছে ইসলাম মেয়েদের অপরেসড করে থাকে। অন্তত অনেকের কাছেই তাই মনে হয়েছে। মনে রাখতে হবে, বেশিরভাগ মানুষেরই ইসলাম নিয়ে এত গভীর জ্ঞান নেই। তাঁরা আশেপাশে যা দেখে, তাই থেকেই মোটামুটি জ্ঞান নিয়ে থাকেন।
নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সম্পর্কে তাঁর উক্তি কতটুকু যৌক্তিক এবং শালীন? তাহলে কী ইসলাম বলে মেয়েরা পড়ালেখা করতে পারবে না? এইকথা কিন্তু অন্যান্য স্কলাররা বলেন না। তারচেয়েও বড় কথা, একজন মহিলাকে তাঁরা এইভাবে অপমান করেন না। ৪৯ সেকেন্ডের ক্লিপেও না।
তাই দলে দলে নারী এর বিরোধিতা করেছেন। দলে দলে নারী এর রেফারেন্স টেনে ইসলামকে নিয়েও ঠাট্টা করেছেন।
কাজেই আমি আমার লেখায় সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম, ইসলামে মেয়েদের সম্মানটা আসলে কোথায়। আশা করি অনেকেরই ভুল ভেঙ্গেছে।
তিনি বলছেন, মেয়েদের সবচেয়ে বড় প্রায়োরিটি স্বামীর সেবা করা। হাদিসে কিন্তু এও আছে, "সেই স্বামীই আল্লাহর কাছে উত্তম যিনি তাঁর স্ত্রীর কাছে প্রিয়।" আল্লাহ সবকিছুতেই ব্যালেন্স রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। স্বামীকে দিনরাত কাজ করে কোটি টাকা উপার্জন করতেও আল্লাহ বলেননি। বরং বলেছেন তাঁর প্রতি স্ত্রী সন্তানদের যে দাবী আছে, সেটা আদায় করতে। প্রত্যেক মানুষকেই তাঁর উপর যার যার দাবী আছে, সেটা আদায় করতে বলা হয়েছে।
এই নিয়ে অনেক অনেক কথা বলা যাবে, সেটা পরের কোন একদিনের জন্য তোলা থাকুক।
আপু বলেছেন, হযরত খাদিজা ঘরে থেকে ব্যবসা করতেন। এখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, তিনি ঘরে থেকে ব্যবসা করতেন।
গুগল, অ্যামাজন এবং অ্যাপলের মতন মাল্টি বিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠানের শুরুও কিন্তু বাড়ির গ্যারেজ থেকেই। তিনি পয়েন্ট দেখছেন যে, নারী "ঘরে থেকে" ব্যবসা করেছেন। আমি দেখছি, নারী "ব্যবসা" করেছেন। এবং আমি আমার লেখায় এইটাও লিখেছি, "একজন নারী ব্যবসা, চাকরি করতেই পারেন, ইসলাম বাঁধা দেয় না, কিন্তু তাঁকে অবশ্যই পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। এবং তাঁর সংসারে যেন অশান্তি জন্ম না নেয়।" মানেই হচ্ছে, সংসারই তাঁর প্রথম প্রায়োরিটি। আমরা দুইজনই একই নৌকার যাত্রী। আপু ভুল বুঝতে পারেননি।
ধরা যাক এক মহিলার স্বামী প্যারালাইজড। বিছানায় পড়ে থাকেন। এই মহিলার আর কোন ভাই, বাবা, ছেলে কেউ নেই। তখন তিনি কী করবেন? কে তাঁকে খাওয়াবে? স্বামীর চিকিৎসার খরচ কে দিবে? ভিক্ষা না করে কাজ করে সৎ উপার্জন করাটাই কী তাঁর জন্য শ্রেয়তর নয়? এই ক্ষেত্রে তিনি যদি পর্দা রক্ষা করে হালাল উপার্জন করেন, তবে ইসলাম কী তাঁকে বাঁধা দিবে? আল্লাহ তাঁর উপর রাগ করবেন? কিন্তু তিনি যদি পড়ালেখা না করেন, তাহলে ভাল চাকরি পাবেন কিভাবে? আমাদের সবধরণের পরিস্থিতির জন্যই প্রস্তুত থাকা উচিৎ। ইসলামই এই শিক্ষা দেয়।
ইরানের মতন কট্টর ইসলামী দেশে নারী-নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানী পাওয়া যায়। আমাদের দেশে বেগম রোকেয়াকে কলঙ্ক বিবেচনা করা হচ্ছে। কোথাও কী খটকা লাগছে না?
এবং বসরার যুদ্ধের ব্যপারটা নিয়ে আপু বলেছেন, "যুদ্ধে উপস্থিত থাকা মানেই নেতৃত্ব দেয়া নয়।" - আমি অনেক রেফারেন্সে (শিয়া-সুন্নি উভয়পক্ষ্য) কিন্তু এইটাই পেয়েছি যুদ্ধে হযরত আয়েশার উটের পা কেঁটে দেয়া হলে উট মাটিতে বসে পড়ে, এবং সাথে সাথেই তাঁর পক্ষ্যের যোদ্ধারা হার স্বীকার করে নেন। যুদ্ধের নামটাও কিন্তু এই কারণেই "battle of camel" নামে পরিচিত হয়ে আছে।
সাধারণ যেকোন যুদ্ধের নিয়মই হচ্ছে, রাজা অথবা সেনাপতির পতন ঘটলেই কেবল সিপাহীরা অস্ত্র সমর্পণ করে দেন। 'মিমাংসাকারীর' পতনে নয়। বিখ্যাত মরোক্কান নারী স্কলার এবং লেখিকা ফাতিমা মেরনিসিও হযরত আয়েশার (রাঃ) নেতৃত্বের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বললে এই ব্যাটেল অফ ক্যামেলের রেফারেন্সই টানেন।
Then again, Allah knows the truth, এবং তিনি অবশ্যই আমাদের সঠিক পথ দেখান!
আবারও বলছি, আপনাদের মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আশা করি আমি আমার লেখাকে ডিফেন্ড করতে পেরেছি।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:২২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: মেয়েদের প্রধাণ কাজ সংসার সামলানো, পুরুষের প্রধাণ কাজ যেমন সেই সংসার চালাতে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দেয়া। কোনটাই কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ নয়। সন্তান লালন, সংসার সুষ্ঠুভাবে দেখাশোনা করা ফুলটাইম কাজের চেয়েও অনেক কঠিন কাজ। ছোট করে দেখার কোনই সুযোগ নেই।
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৪
সরদার হারুন বলেছেন: মেয়েদের সব চেয়ে বড় কাজ মানুষকে মানুষ বানানো ।
৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৫
অালমগীর ৮৫ বলেছেন: স্বামীর সেবা করার কথা শুনলেই কেন যেন কিছু কিছু মেয়েদের গা জ্বলে যায়। কেন এ মানষিকতা তা আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয় কথা টা ঠিকই বলা হয়েছে। প্রকৃতি যেখানে শারীরিকভাবে পুরুষ থেকে আলাদা করেছে সেখানে কোন যুক্তিতে তারা সম অধিকার এর কথা বলে বুঝি না। আর একটি সংসারে বাচ্চা কাচ্চাদের সময় দেওয়া, তাদের গোসল করানো, খাওয়ানো, পড়ানো, সংসারের কাজ, শশুর শাশুড়ীর দেখা শোনা করা, রান্না- বান্না করা, এতো কাজ কি শুধু মাত্র চাকর চাকরানী দিয়ে হয়? এত বড় গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য একজন বিশ্বস্ত লোকের দরকার পড়ে। আর তা হলো একজন স্ত্রী। সুতরাং সংসার চালানোর দায়িত্বটা তারেদরই নিতে হবে। তাদের যায়গা ওখানই।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:২৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ব্যালেন্স থাকা উচিৎ সবকিছুতেই। সবাই শুধু চাকরি করে টাকা উপার্জন করে গেলে সন্তানরা মানুষ হয়না - পরীক্ষিত সত্য।
৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৪
নতুন বলেছেন: দুনিয়া পাল্টাইতেছে.....
নারীদের মানুষ ভাবতে শেখা দরকার...
আমাদের দেশের এই সামাজিত পরিবত`নের মাঝে যাইতেছে....
দুনিয়া যে কতটা আগাইছে সেই সম্পকে মানুষের ধারনা নাই....
একজন নারী অবশ্যই নিজের সংসারকে সবার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়... আমার কয়েক জন কলিগ বিয়ের আগে থেকে চাকুরি করতো.... কিন্তু বাচ্চার দেখাশোনার জন্য তারা চাকুরি ছেড়ে দিয়েছে.... সেটা নারীরা নিজথেকেই করে...
কিন্তু নারীকে নিজের থেকে নিচুজাত ভাবা কখনোই ভাল কাজ না...
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৭
কলাবাগান১ বলেছেন: "মেয়েদের সবচেয়ে বড় প্রায়োরিটি স্বামীর সেবা করা।" হায়রে মানসিকতা.......
২০১৪ সালে এসে এই কথাও শুনতে হয়
মেয়েদের সবচেয়ে বড় প্রায়োরিটি পড়ালেখা করে স্বাবলম্বী (কনফিডেন্ট) হওয়া