নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ প্রেডিকশন

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৮

অফিসের প্রচন্ড ব্যস্ততার পরেও ক্যানভাসের প্রথম বই প্রকাশের কাজ অতি ধীর গতিতে এগুলেও, চলছে। এবং আর মাত্র তিনদিন পর বিশ্বকাপ ক্রিকেট! আমার চোখে "দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ!"
ফুটবল বিশ্বকাপ যতই জমজমাট হোক না কেন, সেখানে কেউ লাল সবুজ জার্সি পড়ে খেলতে নামে না। এইখানে আমরা গ্যালারী থেকে, বাসার ড্রয়িংরুম থেকে, ক্যান্টিন থেকে, চায়ের দোকান থেকে, রাস্তার পাশের টিভি শোরুমের বাইরে থেকে গলা ছেড়ে চিৎকার করে বলতে পারি, "সাবাস বাংলাদেশ!" - এবং আশায় থাকি আমাদের ব্যাঘ্র শাবকেরা "হালুম" গর্জনে প্রতিপক্ষের উপর ঝাপিয়ে পড়বে!
আবেগকে সাইডে রেখে সাম্প্রতিক রেকর্ড ঘাটাঘাটি করলে বাঘের বাচ্চাদের নিয়ে অনেকেই আশা করার মতন কোন কারন খুঁজে পাবেন না। নিজের দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়েকে হারানোকে খুব একটা বড় সাফল্য বলা চলে না। বিশেষ করে গত বছর আমরা ইচ্ছে করেই একাধিক নিশ্চিত জেতা ম্যাচ নিজ খরচায় প্যাকেট করে প্রতিপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছি। নিজেদের দিনে আমরা বিদেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকেও হারিয়ে দেই, আবার নিজের মাটিতে আফগানিস্তানের সাথেও হেরে বসি।
কিন্তু আশার কথা হচ্ছে "বিদেশী পিচে" আমরা প্রায়ই দানব বধ করে থাকি। এই সুনাম আমাদের আছে। প্রথম বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পিচে আমরা সেই একই টুর্নামেন্টের ফাইনালিস্ট পাকিস্তানকে হারিয়েছিলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপের বিরুদ্ধ উইকেটে আমরা হারিয়েছিলাম ইন্ডিয়া এবং সাউথ আফ্রিকার মতন মহা দানবদের। এইবারও ধরে নেয়া যায় কেউ একজন আমাদের ছুরির নিচে জবাই হতে চলেছেন। কে, সেটা ভবিষ্যতেই দেখা যাবে।
প্রস্তুতি ম্যাচে যদিও পাকিস্তানের সাথে আমরা হেরেছি, কিন্তু যেভাবে দল খেলেছে, সেটা আরেকটু ইমপ্রুভ করলেই কিন্তু প্রতিপক্ষের খবর আছে!
কাজেই, আশা করাই যায়, ইন শা আল্লাহ, আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে যাচ্ছি। এবং সেটাই কিন্তু আমাদের জন্য যথেষ্ট! এর বেশি আশা করাটা আপাতত আমার মনে হয় একটু বেশি বেশিই হয়ে যাবে।
আমরা ছাড়াও আমাদের এশিয়ার আরও তিন বড় ভাই যাচ্ছেন খেলতে। ওদের মধ্যে আমার ধারনা শ্রীলংকাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে। ওদের দলটাই এশিয়ার সবচেয়ে ব্যালেন্সড দল, এবং বাকি দুই বড় ভাইয়ের চেয়ে ওদের খেলোয়াড়রাই দুনিয়ার যেকোন স্থানে দিগ্বিজয়ী সিংহের মতন লড়াই করতে পারে। আমার ধারনা শ্রীলংকা চার সেমি ফাইনালিস্টের একটি।
ইন্ডিয়ার কথা আমি আর কী বলেগা। ওদের ব্যাটসম্যানরা নিঃসন্দেহে বিশ্বের সেরা লাইন আপ। আর ওদের দেশে বোধয় কেউ হাত ঘুরাতে পারলেই "বোলার" হিসেবে জাতীয় দলে স্থান পেয়ে যায়। ওদের প্রতিটা ব্যাটসম্যানেরই একক নৈপুন্যে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আছে। আবার একই সাথে প্রতিটা বোলারেরই ক্ষমতা আছে একক নৈপুন্যে ম্যাচ হারানোর। এখন কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে সেটার উপর নির্ভর করছে তাঁদের দৌড় কতদূর হবে। কোয়ার্টার ফাইনালে যে যাচ্ছেই এইটাতো নিশ্চিত। এরপরে কতদূর যায়, সেইটা দেখার বিষয়। "বাড়িতে বাঘ, বাইরে বেড়াল" - প্রবাদটিতো আর এমনি এমনি আসেনি।
পাকিস্তানকে নিয়েও বলার কিছুই নাই। ভারতের ঠিক বিপরীতেই তাঁদের অবস্থান। ওদের বোলাররা ভাল, তো ব্যাটসম্যানরাও সেইরকমই জঘন্য পারফর্ম করে ম্যাচ হারিয়ে দিতে পারে। ওদের দেশেও বোধয় ব্যাট ধরতে পারলেই জাতীয় দলের টিকিট পাওয়া যায়।
এইবার অবশ্য তাঁদের ব্যাটিং বোলিং দুই ডিপার্টমেন্টই খারাপ। আর ফিল্ডিংতো সারা জিন্দেগীতেও ভাল ছিল না।
তবুও দলটা পাকিস্তান বলে কথা। সাঈদ আনোয়ার, ওয়াকার ইউনিস ছাড়াও তাঁরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছিল, আবার ওয়াসিম-ওয়াকার-শোয়েব-সাকলাইন-সাঈদ-ইনজামাম-ইউসুফ সবাইকে সহ প্রথম রাউন্ডও উতরাতে পারেনি।
এইবারও প্রথম রাউন্ডেই বাদ পড়ে যেতে পারে, আবার ফাইনালেও চলে যেতে পারে (যদিও এই সম্ভাবনা এইবার একেবারেই নেই)।
পাকিস্তানকে নিয়ে যখন কথা উঠলই একটা কথা না বলে পারছি না।
আমাদের দেশের একদল মানুষ কেন জানি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের একেবারে অন্ধভক্ত! এমনই অন্ধ যে তারা বাংলাদেশের সাথে খেলাতেও পাকিস্তানেরই সাপোর্ট করেন। অন্যান্য দেশের সাথে খেলায় কেউ পাকিস্তানকে সাপোর্ট করলে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যপার বলে মেনে নেয়া যেতেও পারে। কিন্তু ইন্টারনেটের এই যুগে যেখানে বায়ান্ন থেকে একাত্তুরের ইতিহাস একেবারে হাতের মুঠোয় (আমি বিএনপি-আওয়ামীলীগের দূষিত ইতিহাস বিকৃতির কথা বলছি না, অথেন্টিক ইতিহাসের কথা বলছি, যেখানে সুস্পষ্টভাবে তিরিশ লক্ষ প্রাণের কথা বলা আছে) সেখানে কী করে মানুষ এত অন্ধভাবে সমর্থন করতে পারে? এটা "খেলার সাথে রাজনীতি মেশানোর" ব্যপার না, বিবেকের ব্যপার। অবশ্য তাদের এই অন্ধ সমর্থনই ব্যাখ্যা করে পঁচিশে মার্চ কাল রাত্তিরের পরেও পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার উদ্দেশ্যে কারা কিভাবে ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠন করেছিল এবং একদল লোক কিভাবে নিজের দেশের মানুষের বিরুদ্ধেই হানাদার লেলিয়ে দিয়েছিল।
সুখের কথা, এখন যুদ্ধ হয় খেলার মাঠে। দুঃখের কথা, সেখানেও রাজাকারের দেখা মিলে।
এশিয়ার বাইরের দলের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় দল সাউথ আফ্রিকা। হাশিম, এবি, স্টেইন, ফাফ, মিলার দ্য কিলার, ফিলান্ডার....আফ্রিকান সিংহদের সব যোগ্যতাই আছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবার। প্রতিটা বিশ্বকাপেই তাঁরা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দল নিয়ে আসে, এবং প্রতিবারই পুরো পৃথিবীর মানুষকে তাজ্জব করে দিয়ে নক আউট স্টেজে বিদায় নেয়। কিন্তু আমার বিশ্বাস, একবার তাঁদের কুফা কেটে গেলে তাঁরা জিততেই থাকবে। কার্স্টেন, গিবস, ডোনাল্ড, ক্যালিসের মতন চ্যাম্পিয়নদের হাতে সোনালী ট্রফি ধরা দেয়নি। আমলা-স্টেইন-এবিরাও কী খালি হাতে অবসরে যাবে? এইবার তাঁদের জন্য শুভকামনা। সোনালী ট্রফি এইবার অন্ধকার মহাদেশেই যাক!
যদিও আমার সমর্থন সাউথ আফ্রিকার প্রতি, আমার ধারনা অস্ট্রেলিয়াই এই বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন। নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনায় চলছে বিশ্বকাপ। বিশ্বের সেরা দলও তাঁদের আছে। তাঁরা কেন সাধ করে ট্রফি অন্যের ঘরে তুলে দিবে?
আরেকটা দল যারা সমীহ আদায় করে নিবে, তাঁরা হচ্ছে নিউজিল্যান্ড। আমার স্মৃতিতে যতদূর ধারনা এইটিই তাঁদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দল। প্রায় প্রতিটা খেলোয়ারই ফর্মে আছে। নিজেদের পরিচিত কন্ডিশনে খেলা হচ্ছে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে একটা স্পট তাঁদের জন্য সবসময়েই বুকিং দেয়া থাকে। এইবার যদি তাঁরা ফাইনালে চলে যায়, অবাক হবার কিছুই নেই।
ইংল্যান্ডকে নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করতে চাইছি না। ফাইনালে যাবার রেসিপি তাঁদেরও আছে। ঠিক মতন ক্লিক করলেই হয়। না করলে কোয়ার্টার ফাইনালেই ফি আমানিল্লাহ!
রইলো বাকি ওয়েস্টইন্ডিজ। টি-টোয়েন্টির জন্য ওরা আমার খুবই প্রিয় দল। অথচ ৫০ ওভারের খেলায় তাঁরা কিছুই করতে পারেনা। কিন্তু গেইল, স্যামুয়েলস, স্যামি প্রত্যেকেরই ক্ষমতা আছে এককভাবে খেলা জিতিয়ে দেবার। বাকিটা ভবিষ্যতই বলতে পারে।
আমার যদি বাজি ধরার অনুমতি থাকতো, তাহলে নিচের বিষয়গুলোয় বাজি ধরতাম:
- চ্যাম্পিয়ন: অস্ট্রেলিয়া
- চার সেমি ফাইনালিস্ট:
১. অস্ট্রেলিয়া ২. নিউজিল্যান্ড ৩. শ্রীলংকা ও ৪. কোয়ার্টার ফাইনালে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যারা খেলবেন
- ইন্ডিয়া-পাকিস্তান খেলায় বিজয়ী দল ইন্ডিয়া
- বাংলাদেশ সুপার এইটে খেলবে ইন শা আল্লাহ!

কার কী মত? চলেন আপাতত সিরিয়াস বিষয় সাইডে রেখে আগামী একমাস ক্রিকেট নিয়েই আড্ডা দেই।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫১

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: আমার আশা বাংলাদেশ সেমিফাইনালে খেলুক :)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: খেললেতো খুবই ভাল! বলা যায় না, সাউথ আফ্রিকার সাথে কোয়ার্টার ফাইনাল খেললে সেমিফাইনাল খেলতেও পারে। :)

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪০

সুমন কর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

চ্যাম্পিয়ন: অস্ট্রেলিয়া। ;)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ৯৫% সুযোগ আছে মিলে যাবার। বাকি উপরওয়ালার হাতে।

৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:১৫

শাহরীয়ার সুজন বলেছেন: সোনালী ট্রফি এইবার অন্ধকার মহাদেশেই যাক! :D এইটা আমিও চাই।

আর টাইগারদের জন্য শুভকামনা।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.