নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
একটা কথা মানুষ সবসময়েই বলেন, "আমি বিজ্ঞানে বিশ্বাসী, ধর্মে নই।"
অন্য ধর্মের কথা জানিনা, তবে ইসলামে বিজ্ঞানের সাথে কুরআনের কোনই শত্রুতা নেই। কুরআন নিজেই নিজেকে বিজ্ঞানময় বলে দাবি করে। মুসলিম হলে বিজ্ঞানী হওয়া যাবেনা, বিজ্ঞানকে ভালবাসা যাবেনা এমন দাবি হাস্যকর।
একজন মুসলিম বিশ্বাস করেন, ০+০*০/০-০=০ ই হবে। কখনও পূর্ণ সংখ্যা হওয়া সম্ভব না।
বিজ্ঞান এখনও এটা নিয়েই রিসার্চ করছে কিভাবে শুন্য থেকে এত কিছুর সৃষ্টি হলো। তাই সে নানান থিওরি আবিষ্কার করে।
বিগ ব্যাং থিওরি সেইরকমই একটি থিওরি। এবং তা নাজিল হয়েছে এইতো সেদিন।
কুরআন এ সম্পর্কে বলেছে সেই চৌদ্দশ বছর আগে। সুরা আম্বিয়ার তিরিশ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, "Have those who disbelieved not considered that the heavens and the earth were a joined entity, and We separated them and made from water every living thing? Then will they not believe?"
এখানে উল্লেখ্য, প্রাণের সৃষ্টি যে পানি থেকে, সেটাও কিন্তু বলা হয়ে গেছে। বিজ্ঞানের সাথে অমিলটা হলো কোথায়?
তার আগের সুরার (ত্বো-হা) তিপ্পান্ন নম্বর আয়াতটিও ইন্টারেস্টিং।
"He Who has, made for you the earth like a carpet spread out; has enabled you to go about therein by roads (and channels); and has sent down water from the sky. With it have We produced diverse pairs of plants each separate from the others."
জোড়ায় জোড়ায় বৃক্ষ সৃষ্টির কথা বলেছেন আল্লাহ। অথচ উদ্ভিদেরও যে প্রাণ আছে সেটা এই সেদিন আমাদের জগদীশ চন্দ্র বসু আবিষ্কার করে বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
এইবার আলোচনা একটু জটিল করা যাক।
ক্লাস নাইনের কেমিস্ট্রিতে পড়া জন ডালটন সাহেবের ATOM'র থিওরি কার কার মনে আছে? "Atoms cannot be created, divided into smaller particles, nor destroyed in the chemical process; a chemical reaction simply changes the way atoms are grouped together.”
এটাই ছিল বিজ্ঞানের কথা।
কিন্তু ১৮৯৭ সালে J.J. Thompson সাহেব ডালটন সাহেবের থিওরির বারোটা বাজিয়ে দিলেন। তিনি ইলেকট্রন আবিষ্কার করে বসলেন। মানে হচ্ছে, পরমাণুকেও ভাঙ্গা সম্ভব, এবং এর ক্ষুদ্রতম অংশেরও অস্তিত্ব আছে।
কিন্তু সেই চৌদ্দশ বছর আগে কুরআনে(সুরা ইউনূস, আয়াত ৬১) বলা হয়ে গেছে "…And not an atom’s weight in the earth or in the sky escapeth your Lord, nor what is less than that or greater than that, but it is (written) in a clear Book." মানে পরমাণুর চেয়েও ক্ষুদ্রতম কিছু আল্লাহর থেকে লুকানো সম্ভব নয়। এবং সবচেয়ে বড় কথা, কুরআন নিজের কথাতেই স্থির আছে, বিজ্ঞানের মতন কথা পাল্টাচ্ছে না।
আধুনিক কস্মলোজির মতে, সৃষ্টির শুরুতে ধোঁয়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না। এটাও আধুনিক আবিষ্কার।
কুরআনও কিন্তু একই কথা বলে, "অতঃপর তিনি(আল্লাহ) আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ...."(সুরা হা-মীম সেজদাহ, ১১), কিন্তু সেটাও ১৪০০ বছর আগে।
"....আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।" মক্কায় অবতীর্ণ সুরা আল হাদীদের পঁচিশ নম্বর আয়াত। এখানে "নাজিল" করেছি শব্দটি বিশেষভাবে লক্ষনীয়। তিনি বলেননি "গঠন" বা "সৃষ্টি" করেছি। এর মানে হচ্ছে লোহাকে পৃথিবীর বাইরে থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। বিগ ব্যঙ্গের সময়ে সূর্য থেকে ছিটকে আসা গ্যাসীয় গোলকটিতে লোহা ছিল না। আধুনিক বিজ্ঞানও একই কথা বলে। বিজ্ঞানের ভাষায়, "Iron of earth or any other planet of the Solar system was not formed along the rest of the elements here. This is because the temperature of the Sun is simply not enough to form even a single atom of Iron. It requires stars having temperatures of the order of hundreds of millions of Kelvin to create Iron. The sun’s surface temperature is just around 6000 degree Kelvin while the temperature at its core is less than 15 million degrees. This is exactly why Iron cannot form in the Solar system."
এই কিছুদিন আগেও বিজ্ঞান জানতো না যে চন্দ্র-সূর্য নিজেরাও নিজেদের অক্ষে ঘুর্নায়মান। কুরআন সেই ১৪০০ বছর আগে বলে দিয়েছে।
শেষ করা যাক আরেকটা থিওরি দিয়ে। মানব ভ্রুণের বিভিন্ন অবস্থান নিয়ে কুরআনে কী বলা হয়েছে সেটা দেখা যাক।
"আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে (আলাক্ব) সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়।" (সুরা আল মু’মিনূন আয়াত ১২-১৪).
ব্যাখ্যা করার আগে বোঝার সুবিধার জন্য একটা ছোট উদাহরণ দিয়ে নেই। ক্লাস টুতে পড়া শিশুও জানে পানির সৃষ্টি হয়েছে হাইড্রজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে। এখন সাধারণ তাপমাত্রায় দুইটাই গ্যাসীয় উপাদান। কিন্তু পানি তরল। এখন প্রাইমারি ফেল করা কোন এক ছাত্র যদি বুক ফুলিয়ে দাম্ভিক কন্ঠে বলে, "কোথায় অক্সিজেন, কোথায় হাইড্রজেন আমাকে দেখাও। সব ভুয়া!" তাহলে তাকে কী বলবেন?
"আল্লাহ বলেছেন মানুষ মাটিতে থেকে সৃষ্ট, কোথায় মাটি? এ যে চামড়া আর মাংস।" এই নিয়ে কত হাসাহাসিই না মানুষ করে। আরে বেকুবের মতন হাসার আগে মাটিতে কী কী উপাদান আছে সেটা দেখ। মিনারেল, লবণ এবং অন্যান্য যৌগ উপাদান। এবং মানব শরীরে কী কী আছে? আহাম্মকের মতন হাসার আগে একটু পড়াশোনা করে নেয়া উচিৎ ছিল না? তুই কী ভেবেছিলি কামারের মতন গরুর গাড়ির চাক্কা ঘুরাতে ঘুরাতে মাটির মূর্তির মতন মানুষ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে? টোকা দিলেই ভেঙ্গে যাবে? অবশ্য তোর মাথায় এরচেয়ে ভাল আর কিই বা আসতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপের শুক্রবিন্দুর ঘটনা সবাই জানে।
তৃতীয় ধাপে গিয়ে একটু ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে।
বাংলায় "জমাট রক্ত" শব্দটি ব্যবহৃত হলেও আরবি "আলাক্ব" শব্দের তিনটি অর্থ আছে। ১. জোঁকের মতন পদার্থ, ২. suspended thing এবং ৩. জমাট রক্ত।
ইন্টারনেট ঘাটলেই আপনারা দেখবেন মাতৃগর্ভে সন্তান এই তিন ধাপেই বেড়ে উঠে। মেডিকেল সাইন্সে আমার পড়াশোনা সেরকম নেই, তাই খুব ভালভাবে ব্যখ্যা করতে পারছিনা। তবে আমার নিজের সন্তানের গর্ভে আসার একদম দুইসপ্তাহ বয়স থেকেই আমরা পাখির নজরে পুরো বিষয়টা লক্ষ্য করেছি। অবাক হইনি, কারন আমি আগে থেকেই জানতাম আল্লাহ ফাউ কিছু বলেননি। অবিশ্বাসীরা একটু গবেষণা করে দেখতে পারেন, আপনারা অবাক হবেনই।
এইরকম আরও ভুরি ভুরি উদাহরণ দেয়া সম্ভব।
কথা হচ্ছে মানুষ এইসব জেনেছে এমন একজনের কাছ থেকে যিনি ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন। না তিনি এর আগে কোন বই পড়েছেন, না মক্কায় কোন লাইব্রেরি ছিল।
এক আহাম্মক ফতোয়া জারি করে দিলেন, "যেহেতু তিনি ব্যবসায়িক কাজে নানান অঞ্চলে ঘুরেছেন, সেভাবেই তিনি সব জেনে ফেলেছেন।"
প্রথম কথা, তিনি ব্যবসায়িক কাজে নানান অঞ্চলে ঘুরেছেন এমন আজগুবি থিওরি তিনি কোথায় পেলেন? তাঁর জীবনীতে একবারই চাচার সাথে ইয়েমেন অঞ্চলে যাবার কথা উল্লেখ আছে, যেখানে বুহায়রার সাথে দেখার কথা বলা হয়েছে। তবে সেই গল্পে এত বেশি ফাঁক আছে যে সেটিকে অনেক স্কলারই বাতিল বলে গন্য করেছেন। এবং তিনি যদি ব্যবসায়িক কাজে নানা অঞ্চলে যাতায়াত করতেন, তবে তিনি অবশ্যই ধনী হতেন। অথচ আমরা যারা তাঁর জীবনী পড়েছি, তাঁরা জানি, তিনি মানুষের উট চড়িয়ে টাকা উপার্জন করেছেন। হজরত খাদিজার(রাঃ) সাথে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল তাঁর বোনের উট চড়িয়েছিলেন বলেই। হজরত খাদিজারই(রাঃ) ব্যবসায়িক সামগ্রী নিয়ে তিনি প্রথম শাম অঞ্চলে যান। এবং তারপরতো বিয়েই হয়ে গেল, এবং তিনি সব সম্পদ দান করে আবারও গরিব হয়ে গেলেন। ভ্রমণে জ্ঞানার্জন হলো কিভাবে?
আরেকজন বলেছেন, "তিনি মুখে বলেছেন, অন্যে লিখে ফেলেছে।"
যেই লোক চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত একটাও কবিতার লাইন রচনা করতে পারলেন না, তিনি হঠাৎ করেই উৎকৃষ্ট ভাষায় এমন কবিতা রচনা শুরু করে দিলেন যার একটি বর্ণও মিথ্যে নয়? এত জ্ঞান, এত প্রতিভা তিনি পেলেন কোথায়? মানুষের পক্ষ্যে কুরআনের ভাষায় কেন লেখা অসম্ভব সেটা নিয়ে অন্য আরেকদিন লিখব ইন শা আল্লাহ।
আমি নবীজির (সঃ) জীবনের একটা ঘটনাকে এখানে উল্লেখ করে আজকের লেখা শেষ করবো।
প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের প্রথম দিনে তিনি যেদিন সাফার চূড়ায় উঠে তাঁর স্বজাতির কাছে জানতে চাইলেন, "যদি আমি বলি পাহাড়ের ওপারে এক বিশাল সেনাবাহিনী তোমাদের দিকে ধেয়ে আসছে, তোমরা কী বিশ্বাস করবে?"
তাঁরা সমস্বরে জবাব দিল, "অবশ্যই করবো। কারন আপনি আল-আমিন! আমরা কেউই কখনও আপনাকে মিথ্যা বলতে শুনিনি।"
"তবে শুনে রাখো, এরচেয়েও বড় শাস্তি তোমাদের দিকে ধেয়ে আসছে, যদি না তোমরা অসৎ কর্ম ছেড়ে সৎ পথে ফিরে আসো। আমি এর আগে কোন পার্থিব লালসায় যখন মিথ্যা বলিনি, এখন অপার্থিব লাভের কারনেও মিথ্যে বলবো না।"
তাঁর জীবনী পড়লেই আমরা দেখতে পাবো তাঁর জীবনে মিথ্যা বলার কোনই কারন ঘটেনি। মুসলিম বিশ্বের সম্রাট হয়েও মৃত্যুকালে তাঁর সম্পদ ছিল একটি খচ্চর, এক কৌটা বার্লি, এবং কয়েকটি ধাতব মুদ্রা। তাও তিনি বারবার নিজের স্ত্রীকে বলে গেছেন সেই সমস্ত মুদ্রা গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে। চিরটাকাল পেটের তিনভাগের একভাগের বেশি খাবার গ্রহণ করেননি। এবং ঘুমিয়েছেন খেজুর পাতার বিছানায়। এত কষ্ট, এত অত্যাচার শুধু শুধুই নিশ্চই সহ্য করেননি।
হজরত আবু বকরকে "সিদ্দিক" কেন ডাকা হতো জানেন? কারন নবীজি (সঃ) যাই বলতেন, তাই তিনি বিশ্বাস করতেন। কারন? তিনি জানতেন, এই ব্যক্তিকে দিয়ে মিথ্যা বলা সম্ভব না।
আমরা সিদ্দিক হতে পারবো না। তবু আমি বিশ্বাস করি, নবীজি(সঃ) যা বলে গেছেন, সব সত্যি। কুরআন আসলেই আল্লাহর বাণী। এবং তিনি তাঁর রাসূল, তাঁর দাস, এবং একজন মানুষ।
বিজ্ঞান এখন একে অস্বীকার করছে? কিসের ভিত্তিতে? একটা সময়ে এরিস্টটল ছিল বিজ্ঞানের শেষ কথা। তিনি বলেছিলেন, পৃথিবী ফ্ল্যাট। পরে গ্যালিলিও প্রমাণ করলেন পৃথিবী গোল। ডালটন সাহেবের ATOM'র থিওরিতো উপরেই আলোচনা করলাম।
আরে যে বিজ্ঞান এখনও সামান্য মঙ্গল গ্রহেই মানুষ পাঠাতে পারেনি, ক্যান্সারের প্রতিষেধক আবিষ্কারে এখনও অক্ষম, ইবোলা ভাইরাসের ভয়ে আতংকে নীল হয়ে যায়......সেতো এখনও হামাগুড়ি দিচ্ছে। সে কিনা ইশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখায়!
বিজ্ঞানকে এখন বলাই যায়, "বড় হও বাবা। বড় হয়ে জেনে বুঝে তারপর আস্ফালন কর।"
০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:২৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭
রাঘব বোয়াল বলেছেন: পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনার পোস্টে +।