নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
সিংহকে সবাই এক কথায় বনের রাজা হিসেবে মেনে নেয়। তা সেই বনের রাজা তাঁর রানীদের নিয়ে একদিন শিকারে বেরুলেন। আফ্রিকার বনরাজ্যে খাদ্যের কোনই অভাব নেই। ঐতো দেখা যাচ্ছে মহিষের পাল। শ'খানেক মহিষতো হবেই। একটাকে ধরতে পারলেই হলো, লাঞ্চ ডিনার দুইটাই হয়ে যাবে।
মহারাজার হুকুমে রানীরা শিকারের উপর ঝাপিয়ে পড়লেন। আচমকা হামলায় মহিষের পাল দিশেহারা হয়ে দৌড় শুরু করলো। তাদের অভ্যাস আছে। রাজামশাইর দল প্রায়ই এইভাবে হানা দিয়ে তাদের দুই একজন সাথী ভাইদের ধরে নিয়ে যান। নাঙ্গা প্রজাদের কিছুই করার থাকে না।
আহারে! সেদিন জন্ম নেয়া একটি বাছুর রানীদের সাথে দৌড়ে পারলো না। ধরা পড়ে গেল। বেচারা সেদিন মাত্র জন্ম নিল। চোখ খুলে দুনিয়া দেখার আগেই চোখ বুজতে হবে।
কিন্তু না! একটি মহিষ ঠিকই সিংহের পালের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন। সিং দিয়ে গুতিয়ে বনের সবচেয়ে প্রভাবশালী আর হিংস্র প্রাণীর বিরুদ্ধে লড়ে যেতে লাগলেন। তাঁকে না মেরে বাছুরটিকে ছুঁতে পর্যন্ত পারবে না।
তবুও, সিংহ হচ্ছে অভিজ্ঞ শিকারী। জন্ম থেকেই শিকার করে অভ্যস্ত। এত সহজ হলেতো হতই।
একজন ঠিকই বাছুরটির ঘাড় কামড়ে ধরে টেনে নিয়ে গেল। বেচারা মহিষটি ঝাপিয়ে পড়লেন নিজের সন্তানসম বাছুরটিকে রক্ষার্থে।
এবং তখনই মহা প্রতাপশালী সিংহবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হলো। কারন এইবার মহিষের পাল একজোট হয়ে সাথী ভাইদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে।
দূর থেকে রাজা মশাই ভুরু কুঁচকে নিজের বাহিনীর পরাজয় দেখলেন। কিছু বললেন না। কিছু করলেনও না। জনতা জেগে উঠলে রাজা মহারাজারও রাজগদী কেঁপে উঠে।
ইউটিউবে ভিডিও ক্লিপটি দেখলাম। "ব্রেভ বাফেলো সেভস কাল্ফ ফ্রম প্রাইড লায়ন" দিলেই দেখতে পাবেন।
কিছুদিন আগেই আরেকটা ভিডিও দেখেছিলাম যেখানে এক চিতা বাঘ একটা বানরকে মেরে ফেলার পর সেই বানরের বাচ্চাটিকে পেলে বড় করলো।
আর আমরা সেদিন একটি মানব শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করলাম, তো গতকাল এক নারীকে বিবস্ত্র করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছি। শিশুটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল চুরির, আর এই নারী নাকি ছেলে ধরা। পরে জানা গেল আসলে মহিলাটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। এত এত মানুষ ভিড় করে তামাশাগুলো দেখলো, এত এত মানুষ ভিডিও করলো, কেউ একটি বারের মতও সেই মহিষটির মতন রুখে দাঁড়ালো না। আরও মজার ব্যপার, ঘটনাটা নাকি ঘটেছে পুলিশের উপস্থিতিতেই। দে তালি!
"উপস! স্যরি! অন্যায় হয়ে গেছে ভাই! আমরা আসলে মারতে চাই নাই। বাঁশ দিয়ে এইভাবে মারলে মরে যাবে বুঝবো কিভাবে? মাফ করে দেন। নেক্সট টাইম আর এমনটা হবেনা।"
যদি মিডিয়ার চাপে দুই একটা খুনি ধরাও পড়ে, তবে এরচেয়ে ভিন্ন আর কিইবা বলবে?
যেখানে বনের পশুরা ক্রমেই মানব হয়ে উঠছে, আমরা দেখি উল্টা পথে হাঁটা ধরেছি!
গ্রেট গোয়িং বাংলাদেশ! প্রাউড অফ ইউ! মানুষ থেকে জানোয়ারে পরিণত হওয়ার দিকে তোমরা জোর কদমে এগিয়ে চলেছ!
মেরে ফেল! দুর্বল কাউকে হাতের কাছে পেলেই পিটিয়ে মেরে ফেল। ভিডিও করতে ভুলো না যেন। ফেসবুকে আপলোড করে লাইক শেয়ার পেতে হবে না? চালিয়ে যাও! আমরাও দেখতে চাই তোমরা কত নিচে নামতে পারো।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: বাঙ্গালী পশু ছিল, আছে এবং থাকবে...সমাজের মাথায় যখন পচন ধরে তখন সবাই এর ফল ভোগ করবেই!