নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
ড. ইউনুস প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে নোবেল পেলেন। গর্বে আমাদের বুক এতই ফুলে উঠলো যে শার্টের বোতাম ছিড়িছিড়ি অবস্থা। তখনই একদল ফাতরামি করা শুরু করলো।
"সুদখোর রক্তচোষাকে নোবেল দিয়েছে।"
"যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যপারে ড.ইউনুসের ভূমিকা কী? ওতো একটা ছাগু।"
"মার্কিনদের পা চাটলে এইরকম নোবেল সবাই পায়।"
এই সমস্ত আঁতেলদের কথা শুনলে গা ঘিনঘিন করে। সবকিছুতেই এরা মাতবর, সবকিছুতে এদের মন্তব্য করতেই হবে। বানরের হাতে একে ৪৭ দেয়া আর বাঙালির হাতে ফ্রি ইন্টারনেটসহ কীবোর্ড ধরিয়ে দেয়া একই ব্যপার। হাত দিয়ে বিষ্ঠা ছাড়া কিছুই বেরোয় না। ইতিহাস সাক্ষী। কয়েকটা ঘটনা কেবল মনে করিয়ে দেই।
সাকিব আল হাসান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার হয়ে গেলেন। মাগুরার ছেলের উপর বিশ্ববাসী গর্বিত, কেবল বাঙালি বাদে। তার বউ কেন প্রবাসী, তার বউ কেন পর্দা করেনা, তার বউ কেন কসমেটিকস ব্যবসা করলো, সে কেন বউ নিয়ে হেলিকপ্টারে করে গ্রামের বাড়িতে গেল, এতিম শিশুদের সাহায্যের নাম করে সাকিব আসলে অন্য মতলব হাসিল করতে চায়.....অভিযোগের শেষ নাই।
নাসিরের বোনকে নিয়ে নোংরামির কাহিনীতো এই সেদিনের ঘটনা।
এর আগেও রবীন্দ্র নজরুলকেও হিসাবে নিন। রবীন্দ্রনাথের বৌদির সাথে প্রেম ছিল - এই কথা ছাড়া তাঁর সম্পর্কে আর কোন তথ্যই যেন বাঙালি জানে না। নজরুলেরও চরিত্রে ত্রুটি ছিল, মাল্টিপল প্রেম ছিল, কাফের ছিল, নাস্তিক ছিল, মৌলবাদী ছিল, এই ছিল, ঐ ছিল - ইত্যাদি কথা শোনার পর আপনার মনে হতে পারে কাজী নজরুল ইসলাম আসলে অত্যন্ত ফালতু কবি। হেড মাস্টারের সাথে যোগাযোগ থাকায় যে ছাত্রের কবিতা স্কুল ম্যাগাজিনে ছাপানো হয়, নজরুলের যোগ্যতা আসলে সেই কবির চেয়েও খারাপ।
সেদিন এক পার্টি থেকেই বের হয়ে চলে এসেছিলাম। সেখানে একদল রামছাগল আলোচনা করছিল বাঙালি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ হাইকমিশনার, রানীর পা চাটা চামচা আনোয়ার চৌধুরীকে পুতুল হিসেবে বসিয়ে ব্রিটিশরা আসলে বাংলাদেশকে চুষে খেয়ে ফেলেছে। তাদের স্বার্থ হাসিল হয়ে যাচ্ছে, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।
একবার মুখ ফুটে বলতে যাচ্ছিলাম "ভাই, নিজেরে এতটাও বড় মনে করবেন না, দোহাই লাগে!" পরে আর কিছু বললাম না। ছাগলের ব্যা ব্যাতে রাগ করে নিজের দেশকে ছোট করার কোন মানে হয়না। আমার মা গরিব হলেও, আমারই মা। কিছু কুপুত্রের জন্ম দিয়েছেন, এইটাই যা দোষ আর কি।
নিজের জীবনের থেকেও একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যাক।
ঢাকায় থাকতে এক টিউশনির দালালের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। সে ছাত্রদের ভাল ভাল টিউশনি যোগার করে দিত। তখনকার সময়ে সপ্তাহে চারদিন পড়িয়ে পাঁচ ছয় হাজার টাকা আয়ের মতন লোভনীয় সব অফার। আমার নিজেরই তখন টিউশন ছিল, এবং আমি আমার ছাত্রদের উপর সন্তুষ্টও ছিলাম। একদম আত্মীয়দের মতন। আমার বাড়তি কোন টিউশনির দরকার ছিল না। কিন্তু আমার বন্ধুদের দরকার ছিল। তাই আমি সেই দালালের সাথে তাদের কয়েকজনের পরিচয় করিয়ে দিলাম। কিন্তু একদল হারামি রটাতে শুরু করলো, আমি নাকি কমিশন খাই, এই কারনেই এদের সাহায্য করি। নাহলে আমার কী স্বার্থ? ক্ষোভে ফেটে যেতাম। ইচ্ছা করতো এইসব নমক হারামকে ড্রেনের পানিতে চুবিয়ে মারি। তাহলে বুঝতো যে তাদের মতন স্বার্থপর নোংরা কাঙ্গাল মেন্টালিটি আমার না। আমি যদি নিজে উঠি, তাহলে অন্যকেও উঠতে সাহায্য করি। পৃথিবীতে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা স্বার্থ ছাড়াই অপরের উপকার করতে ভালবাসে। তাদের দুই চার পয়সা "কমিশন" লাগেনা।
কিন্তু এরা এসব বুঝবে না।
সেদিন ফেসবুকে দেখলাম এক দল জাপানি ছেলেমেয়ে ঝাড়ু হাতে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করছে। দেখেই মনটা ভাল হয়ে গেল। কারন দেশটা জাপান নয়, বাংলাদেশ। আমরা নিজেরাই যেখানে নিজেদের ঘরদোর পরিষ্কার করিনা, সেখানে আমাদের নোংরা দেশটাকে পরিচ্ছন্ন করতে এরা সেই সুদূর জাপান থেকে উড়ে চলে এসেছে। এদেরকে বুকে জড়িয়ে স্বাগত জানানো উচিৎ ছিল। কিন্তু সেটা করলে কী আর আমরা বাঙালি হতাম? আমরা কী করলাম? ফেসবুকে গবেষণাধর্মী স্ট্যাটাস দিতে শুরু করলাম, জাপানিরা নিজেরা আসলে কতখানি নোংরা জাতি এই নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন। তারা নেকেড সুশি খায়, "টয়লেট রেস্টুরেন্ট" তাঁদের ওখানে বেশ জনপ্রিয় একটি কালচার। তারা মানুষের পায়্খানাকে প্রসেসড করে মাংসের সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করে। কোরিয়াতে একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় শরবত হচ্ছে মানুষের গুয়ের শরবত, ইত্যাদি। এবং তারপর উপসংহার টানা, যে জাতি নিজেরাই নোংরা, তারা আবার অন্যকে পরিষ্কার করবে? তার আগে নিজেরা পরিষ্কার হয়ে আসুক।
এবং যথারীতি এই স্ট্যাটাসে প্রচুর লাইক, শেয়ার ও কমেন্ট জমা পড়ল।
"ঠিক বলেছেন ভাই।"
"দারুন!"
"এক বস্তা লাইক!"
প্রথম কথা, জাপানিরা নোংরা নাকি ময়লা সেইটা পরের ব্যপার, আসল কথা হচ্ছে যারা উপকারীর উপকার স্বীকার না করে উল্টা অপকার করতে চায় - এইধরনের মানুষেরা মানসিক প্রতিবন্ধী। এদের ইমার্জেন্সি বেসিসে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে শক থেরাপি দেয়া উচিৎ।
যারা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষের দুর্বলতা বের করার চেষ্টা করে বিমলানন্দ লাভ করে, তাদের সবকটাকে মিসির আলীকে দিয়ে চিকিৎসা করানো উচিৎ।
আমরা লক্ষ লক্ষ সাইকোপ্যাথের সাথে বাস করছি, আমরা বুঝতেও পারছিনা আমাদের সমাজটা এখন কতখানি অসুস্থ। একটা রাস্তার কুকুরকেও যদি কেউ আদর করে বিস্কিট দেয়, সেই কুকুর খুশিতে লেজ নাড়ে। কামরাতে আসেনা। আমরা সেই কুকুরের চেয়েও খারাপ, বুঝতে পারছেন?
২| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:০৯
আজমান আন্দালিব বলেছেন: ভালো লাগা...
৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৩৯
সুমন কর বলেছেন: লেখায় যুক্তি আছে। ভালো বলেছেন।
+।
৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আমরা সেই কুকুরের চেয়েও খারাপ
আসলেই তাই!
৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:২৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার একটা লেখা।
৬| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২৬
বাংলা দাদা বলেছেন: লেখায় যুক্তি আছে। ভালো লাগলো ।
৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৭
পাজল্ড ডক বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন:
বেকার নাকি? --চাদগাজী আংকেলেরও মনে হচ্ছে সমস্যা আছে
৮| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৪
তন্ময় দেবনাথ 007 বলেছেন: ভালো লেখা
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৩৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৫৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
বেকার নাকি?