নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যভিচারের শাস্তি পাথর নিক্ষেপে মৃত্যু প্রসঙ্গে

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২০

হযরত উমার (রাঃ) তখন খলিফা, আমিরুল মু'মিনীন। তিনি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাঁকে হজরত আবুবকর (রাঃ) খলিফা নির্বাচন করে যখন অন্যান্য সাহাবীদের কাছে জানতে চান, কারও কোন আপত্তি আছে কিনা, তখন আরেকজন বিখ্যাত সাহাবী তালহা (রাঃ) বলেন, "তিনি মুসলিমদের প্রতিই ভীষণ কঠোর।"
আমরা সবাই জানি ন্যায়ের সাথে তিনি কখনও আপোষ করেননি, এবং অন্যায়কারী মুসলিম হলে তাঁর শাস্তি হতো দ্বিগুন। একে অপরাধী, তার উপর মুসলিম হয়ে অপরাধী - ডবল শাস্তি।
এবং অন্যায়কারী যদি নিজের সন্তান হতো, তাহলে শাস্তির পরিমান বহুগুন বেড়ে যেত।
"খলিফার পুত্র হয়ে তোমরা অন্যায় করার সাহস পেলে কোথায়?"
তাঁর নিজের ভাষায়, "আমি তোমাদের এমন শাস্তি দিব যে তোমরা আফসোস করে ভাবতে বাধ্য হবে যে, কেন তোমরা খলিফার সন্তান হয়ে জন্মেছিলে!"
প্রমান, আবু শাহমার মৃত্যু।
আর আমাদের দেশে এইচ.বি.এম ইকবালের মতন দুই পয়সার সন্ত্রাসী এমপির ভাতিজা মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে মানুষ মেরে বহাল তবিয়তে বিদেশে পালাবার ধান্দা খুঁজে! আর আমরা চোখ বন্ধ করে তালি বাজাই।
তা একদিন সেই হযরত উমারের (রাঃ) কাছে এক বৃদ্ধ এসে উপস্থিত। কিছুক্ষণ ইতস্তত করার পর বৃদ্ধ বললেন, "হে বিশ্বাসীদের নেতা, আমি আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছি। পাত্র মাশাল্লাহ ভাল। কিন্তু আমার মেয়ের অতীতে একটা দাগ আছে। প্রথম যৌবনে এক ছেলের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল এবং একদিন ভুলবশত....."
বৃদ্ধের কন্ঠ রোধ হয়ে গেল।
"জেনা (ব্যভিচার) করে ফেলেছে?" উমার (রাঃ) কথাটা শেষ করলেন।
বৃদ্ধ উত্তরে কেবল উপর নিচ মাথা নাড়লেন। তাঁর দুই চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝরলো।
খলিফা বিরবির করে বললেন, "লা হাওলা ওয়ালা কু ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।"
আক্ষরিক মানে হচ্ছে "আল্লাহ ব্যতীত কোন শক্তি বা ক্ষমতা নেই।"
ভাবানুবাদ করলে, "আমি স্বীকার করে নিচ্ছি আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমি কোন কাজ বা বিচার করতে অক্ষম।"
উমার (রাঃ) জানতে চাইলেন, "তোমার মেয়ে কী নিজের অপকর্মে অনুতপ্ত?"
বৃদ্ধ বললেন, "সে নিজের ভুল বুঝতে পেরে খুব কেঁদেছে।"
খলিফা বললেন, "আল্লাহ গাফুরুর রহিম, পরম ক্ষমাশীল। তিনি নিশ্চই তাঁকে ক্ষমা করবেন।"
বৃদ্ধ বললেন, "এখন আমি বুঝতে পারছি না, বিয়ের আগে কী ছেলেকে জানাবো সেই সম্পর্কের ব্যপারে? তাহলে আমার মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে যাবে।"
খলিফা সাথে সাথে গলা চড়িয়ে ধমক দিলেন, "আল্লাহ যে ব্যপারটাকে চেপে রেখেছেন, তুমি কোন সাহসে সেটাকে সবার সামনে তুলে আনার চেষ্টা করছো? যা হবার হয়েছে, অতীতকে নিয়ে এত ঘাটাঘাটি করোনা। মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি নাও।"
কথা হচ্ছে, আমাদের দেশের এবং সেই সাথে আপামর বিশ্বের মানুষের ধারনা ব্যাভিচারের ব্যাপারে ইসলাম ভয়াবহ রকমের কট্টর। সৌদি এবং ইরানসহ বিশ্বের নানান শরিয়া আইন প্রধান দেশগুলোতে ব্যভিচারের কারনে চাবুকের শাস্তি, পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড একটি নিয়মিত ঘটনা। আমাদের দেশেও গ্রামের দিকে মোল্লারা ফতোয়া জারি করে মেয়েদের শাস্তি দিয়ে থাকে, এবং সেই শাস্তির ভিডিও ইউটিউবে নিয়মিত আপলোডও হয়।
সেখানে খলিফা উমারের(রাঃ) মতন একজন লোক কিভাবে মেয়েটির ব্যপারে এত নরম থাকলেন? উমারের (রাঃ) চেয়ে ইসলাম বেশি বুঝে এমন লোকতো পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। এবং যতদুর তাঁকে চিনি, তিনি সামাজিকতা রক্ষা করতে আল্লাহর নির্দেশের বিরুদ্ধে যাবার লোক নন।
চিন্তার বিষয়, তাই না?
তাহলে আইনের একটু গভীরে যাওয়া যাক।
ইসলামি আইনে কাউকে শাস্তি দেয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে চাক্ষুষ সাক্ষী থাকতে হবে। অর্থাৎ, "অপকর্ম" করার সময়ে আপনাকে একদম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে হবে।
"আমার সামনে তারা রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে" - ধরনের সাক্ষ্যও কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয়।
ভাই বোনও পারিবারিক বিষয় নিয়ে গোপন আলোচনা করতে চাইলে রুমের দরজা বন্ধ করে দিতে পারে। "রুদ্ধদ্বার বৈঠক" নামে একটা টার্মই আছে ডিকশনারিতে। আপনি কী ওদের সেই কাজ করতে দেখেছেন? তাহলে আপনি কিভাবে নিশ্চিত হচ্ছেন?
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, সেটা কিভাবে সম্ভব? এটাই exact পয়েন্ট। এটা কোন পরিস্থিতিতে সম্ভব? যখন কেউ পাবলিক সেক্স করবে, তখন!
এবং পাবলিক ইনডিসেন্সির ব্যপারে খোদ অ্যামেরিকাতেই স্টেটভেদে কী কী আইন আছে একটু গুগল করে জেনে নিন প্লিজ। ইসলামের দিকে আঙ্গুল তুললেই হবেনা, সমাজ রক্ষায় সব দেশের সব আইনই "কট্টর।"
প্রশ্ন উঠবেই, তাহলে সৌদিতে এরকম হচ্ছে কেন? ইরানে হচ্ছে কেন? ব্লা ব্লা ব্লা।
উত্তর হচ্ছে, আইনের মিস ইউজ কী আমাদের দেশেও হচ্ছে না? বিনা দোষে ফাঁসিতে ঝুলার ঘটনাও আমাদের দেশে হয়েছে। আমার নিজের এক নানা পুলিশ অফিসার ছিলেন এবং তিনি নিজে বলেছেন কিভাবে মন্ত্রীর চাপে পরে তাঁরা বাধ্য হয়েছিলেন "ডলা" দিয়ে নির্দোষ দুইটি ছেলেকে দিয়ে একটি খুনের মামলার স্বীকারোক্তি দিতে। আসল খুনি ছিল মন্ত্রীর শ্যালক!
তাহলে কী ইংল্যান্ড প্রবাসী ছাগলটার মতন দেশের সংবিধানে আগুন ধরিয়ে দিতে হবে?
কেউ কেউ ম্যা ম্যা করে বলবে, "নবিজি (সঃ) নিজেও একজনকে শাস্তি হিসেবে পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যু দিয়েছেন।"
এবং একারণেই আগেভাবেই ছাগল বলে নিলাম। কারণ ঘটনার পুরোটা না বলে তারা শুধু শেষাংশ বলে। ফলাফল উস্কানি এবং কাটাকাটি মারামারি।
নবীজির (সঃ) ঘটনাটা হচ্ছে, এক সাহাবী এসে তাঁকে বললেন, "আমি ব্যভিচার করেছি, আমি শাস্তি চাই।"
নবীজি (সঃ) কিছু না বলে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। যেন ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন "সেটা তোমার আর আল্লাহর ব্যপার। এখন বিদায় হও।"
লোকটা অন্যপাশে এসে তাঁকে বললেন, "আমি ব্যভিচার করেছি, আমি শাস্তি চাই।"
তিনি আবারও কিছু না বলে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
লোকটা আবারও একই কাজ করলেন। নবিজিও একই কাজ করলেন।
এইভাবে লোকটা চারবার নিজের বিরুদ্ধেই সাক্ষ্য দিল।
নবীজি (সঃ) হতাশ স্বরে বললেন, "তুমি কী উন্মাদ?"
লোকটা বললেন, "না।"
"তুমি বিবাহিত?"
"জ্বী।"
তখনই কেবল তিনি লোকটিকে মৃত্যুদন্ডের শাস্তি দিলেন। কারন? লোকটাই চাইছিল না আল্লাহ তাঁকে পরকালে শাস্তি দিক।
এবং নবী হয়ে তিনি শাস্তি ডিনাই করতে পারেননা। নবীদের স্বভাবে "স্বজনপ্রীতি" ব্যপারটা ছিল না।
কেউ কেউ আবার মনে করতে পারেন, যাক ইসলাম যেহেতু পাবলিক সেক্সের শাস্তির কথা বলেছে, মানে প্রাইভেট সেক্সে (নিজের লিগাল সঙ্গী/সঙ্গিনী ছাড়া অন্যের সাথে) আপত্তি নেই।
জ্বিনা, সেটার শাস্তি আরও ভয়ানক। পৃথিবীতে পার পেয়ে গেলেও পরের জন্মে ঠিকই ধরা খেতে হবে, এবং সেই শাস্তি আরও ভয়ংকর।
এখন জেনার শাস্তি একশো ঘা বেত এইটা আমরা জানি। তবে আশি ঘা বেতের শাস্তি কোন অপরাধের জন্য জানেন? যারা ইচ্ছা করে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় অপরের নামে। এবং সেটা যে বিচারকের সামনেই হতে হবে এমন নয়।
"জানো, কালকে না অমুককে তমুকের সাথে দেখেছি ফার্মেসির সামনে - বুঝতেই পারছো কী কিনতে গিয়েছিল! হিহিহি।"
তারা ফার্মেসিতে ইয়ে কিনতে যাক বা ওরস্যালাইন কিনতে যাক, তোর বাপের কী? লাগিয়ে দিলিতো গিট্টু?
ব্যস, এখন বাঙালি সমাজে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যেতে সময় লাগবে না একটুকুও। আমি জানার আগেই সমাজ জেনে যাবে অমুক মেয়ের সাথে আমার প্রেম! কত সংসার যে ভাঙ্গে এদের কারনে!
এক প্রবাসী ছেলে হয়তো দেশে গিয়ে বিয়ে করেছে। ইমিগ্রেশনের কারনে বউকে আনতে দেরী হচ্ছে। অমনি একদল অশিক্ষিত মূর্খ্য আত্মীয়স্বজন এসে কানে কথা লাগাবে, "এতদিন হয়ে গেল বিয়ের, তোমার স্বামী তোমাকে নিচ্ছে না কেন?" তারপর ইনিয়ে বিনিয়ে বলবে, "আমার এক আত্মীয়ের সাথে এমন হয়েছিল, বিদেশে বউ রেখে দেশে আরেকটা বিয়ে করে গেছে। আশা করি তোমার স্বামী অমনটা হবে না।"
কিংবা বলবে, "বিদেশে গার্লফ্রেন্ডট্রেন্ড নেইতো? বলা যায়না, আমাদের দেশের ছেলেরা আবার ফর্সা রান দেখলে মাথা ঠিক রাখতে পারেনা।"
এমনটা ঘটছে না? দেশেইতো এমনটা ঘটে।
"ভাই, কালকে ভাবিকে দেখলাম নিউ মার্কেটে শপিং করতে। সাথে ফর্সা মতন লম্বা একটা ছেলেও ছিল, উনি কী আপনার শ্যালক? হেহেহে।"
বাস্তবে হয়তো মেয়েটির সাথে স্কুল জীবনের কোন এক বন্ধুর দেখা হয়ে গিয়েছিল। হাই হ্যালো শেষে বিদায়ও নেয়া হয়ে গেছে। বাকি মশলা এই ভদ্র(!?)লোকের।
ভুক্তভোগী যে কেউ স্বীকার করবেন, এইসমস্ত ফকির-ফকিরনীদের শাস্তি আশি ঘা বেত নয়, বরং মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিৎ ছিল। শাস্তিটা বড্ড শিথিল হয়ে গেল।
ইসলামি আইনে কেবল সেইসমস্ত শাস্তির বিধান এসেছে, যা সমাজের ক্ষতি করে। যেগুলো করে না, সেগুলো পরকালের জন্য তোলা আছে।
"সমাজের ক্ষতি" নিয়ে যখন কথা উঠলোই, তখন আরেকটা কমন ইস্যু নিয়ে ঝটপট কিছু কথা বলে ফেলা যাক।
"ইসলামে চুরি মানেই হস্ত কর্তন!"
খুবই ফালতু ধারনা।
পৃথিবীর আর অন্যান্য সব দেশের মতন ইসলামেও চুরির বিভিন্ন লেভেল আছে। অ্যামেরিকার আইনেই যেমন চুরির বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ এমন,
Theft under $50 Class C Misdemeanor 0-$500 fine
Theft $50-$500 Class B Misdemeanor 0-$2,000 fine and 0-180 days in jail
Theft $500-$1500 Class A Misdemeanor 0-$4,000 fine and 0-1 year in jail
Theft $1,500-$20,000 State Jail Felony 0-$10,000 fine and 180 days-2 years prison
Theft $20,000-$100,000 3rd Degree Felony 0-$10,000 fine and 2-10 years in prison
Theft $100,000-$200,000 2nd Degree Felony 0-$10,000 fine and 2-20 years in prison
Theft over $200,000 1st Degree Felony 0-$10,000 fine and 5-99 years/or life.
ইসলামী আইনেও ব্যপারটা তাই। কাউকে শাস্তি দেয়ার আগে অনেক কিছুই বিচারাধীন রাখতে হয়।
"কী চুরি করলো? কেন চুরি করলো? কত টাকার মাল চুরি করলো? চুরি করার সময়ে মাল কি সুরক্ষিত ছিল? নাকি মালিকের খামখেয়ালিপনা ছিল? চোর কী তালা/সিকিউরিটি ভেঙ্গে চুরি করেছিল? নাকি ফেলে রাখা জিনিস তুলে নিয়ে গেছে? চোরের কী এটাই প্রথম চুরি? নাকি সে পেশাদার চোর?"
এবং এসব তথ্যের উপরই তাঁর শাস্তি নির্ভর করে। হস্তকর্তন হচ্ছে একদম শেষ পর্যায়ের শাস্তি।
এবং এখানেও ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের জন্য চারজন চাক্ষুষ সাক্ষীর প্রয়োজন আছে। যাকে বলে beyond reasonable doubt.
গত জুলাই মাসের পনের তারিখে ক্যানভাসে রনিয়া রহিমের একটি পোস্ট (যা সে অনলাইন থেকে সংগৃহিত করেছে, মূল লেখক খেয়াঘাট) হুবহু কপি পেস্ট করে দিচ্ছি, উদাহরণ হিসেবে কাজে লাগবে।
"ইউফ্রেটিস নদীর উত্তর দিকে অবস্থিত সিরিয়ার একটি শহর রাকা।(Ar Raqqah) । সেখান থেকে খলিফা হারুন উর রশীদের দরবারে একটি চিঠি আসলো। চিঠিতে লিখা- শহরের বিচারক একমাস যাবত অসুস্থ। বিচারকাজ স্থবির হয়ে আছে। খলীফা যেন খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেন।
খলীফা ফেরত চিঠি পাঠালেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিচারক শহরে আসছে।
ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যেই রাকা শহরে নতুন বিচারক এসে কাজে যোগ দিলেন।
বিচার কাজ শুরু হয়েছে। প্রহরীরা একজন বৃদ্ধা মহিলাকে হাজির করলো। মহিলার অপরাধ-সে শহরের রেস্তোরা থেকে একঝুড়ি রুটি আর এক শিশি মধু চুরি করতে গিয়ে একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়েছে।
বুড়ি কি জানেনা , খলীফা হারুনের রশীদের রাজ্যে চুরি করা কতবড় অন্যায়। এ জন্য আইনত চোরের হাতকাটা যাবে, জরিমানা হবে, জেলদন্ড হবে।
বিচারক জিগ্গাসা করলেন-
আপনি চুরি করেছেন?
জ্বি হুজুর আমি চুরি করেছি।
আপনি কি জানেন, চুরি করা কতবড় অপরাধ? কত বড় পাপ?
জ্বি জানি। অনেক বড় অপরাধ। ক্ষমার অযোগ্য।
জানেন,এজন্য আপনার কতবড় শাস্তি হতে পারে?
জ্বি জানি। আর্থিক জরিমানা, জেলজরিমানা এমনকি আমার হাতও কাটা যেতে পারে।
তবে এসব জেনেও কেন আপনি চুরি করেছেন?
কারণ, আমি গত এক সপ্তাহ ধরে অভুক্ত। শুধু আমি অভুক্ত হলেও কথা ছিলো। সাথে আমার এতিম দু নাতিও না খেয়ে আছে। তাই চুরি করেছি। আমার আর কোনো উপায় ছিলোনা হুজুর।
বিচারক এবার পুরো দরবারঘরে চোখ বুলালেন। তারপর বললেন- কাল যেন নগর প্রধান, খাদ্যগুদাম প্রধান, শরিয়া প্রধান , পুলিশ প্রধান, সমাজ হিতৈষি সহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন। যথাসময়ে রায় দেয়া হবে।
বিচারকের নির্দেশ পেয়ে পরদিন সকালে সবাই হাজির। বিচারকও যথাসময়ে উপস্থিত হলেন। রায় ঘোষণা হলো-
চুরি করার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণীত হওয়ায় মোট ৫০টি চাবুক, ১০০ দিনার রৌপ্যমুদ্রা জরিমানা আর অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ড ধার্য্য করা হলো। তবে বৃদ্ধা মহিলা কোন চলচাতুরীর আশ্রয় না নিয়ে অকপটে সত্য কথা বলার জন্য হাত কাটা মওকুফ করা হলো।
এবার বিচারক প্রহরীকে চাবুক আনার নির্দেশ দিয়ে নিজে বিচারকের চেয়ার থেকে নীচে নেমে এসে বৃদ্ধা মহিলার পাশে দাঁড়ালেন।
প্রহরীকে বললেন- যে নগরে একজন বুভুক্ষু মহিলা না খেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণায় চুরি করতে বাধ্য হয়-সেখানে তো সবচেয়ে বড় অপরাধী সে দেশের খলীফা। আর খলীফার প্রতিনিধি হয়ে আমি বিচার করতে এসেছি।-তাঁর অধীনে আমি যেহেতু চাকরী করি। তাই ৫০ চাবুকের ২০টি আমার হাতে মারাই হোক। আর এটাই বিচারকের আদেশ। আদেশ যেন পালন করা হয়। বিচারক হিসাবে চাবুক মারতে আমার ওপর যেন বিন্দুমাত্র করুনা অথবা দয়া না দেখানো হয়।
বিচারক হাত বাড়িয়ে দিলেন।দুহাতে পরপর ২০টি চাবুক মারা হলো। চাবুকের আঘাতে হাত থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। এরপর বিচারক পকেট থেকে একটা রুমাল বের করলেন।
একজন রুমালখানা দিয়ে বিচারকের হাতে বাঁধার জন্য এগিয়ে গেলে-বিচারক নিষেধ করেলেন।
এরপর, বিচারক বললেন- যে শহরে নগর প্রধান, খাদ্যগুদাম প্রধান সহ অন্যান্য সমাজ হিতৈষীরা একজন অভাবগ্রস্থ মহিলার ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করতে পারেনা। তারাও অপরাধী। তাই বাকি ৩০ টি চাবুক সমানভাবে তাদেরকেও মারা হোক।
এরপর বিচারক, নিজ পকেট থেকে বের করা রুমালের ওপর ৫০টি রোপ্য মুদ্রা রাখলেন। তারপর উপস্থিত সবাইকে বললেন- যে সমাজ একজন বয়স্ক মহিলাকে চোর বানায়, যে ঘরে এতিম শিশু উপবাস থাকে সে সমাজের সবাই অপরাধী। তাই এখানে উপস্থিত সবাইকে -১০ দিনার রোপ্য মুদ্রা জরিমানা করা হলো। এবার মোট ৫০০ দিনার রোপ্য মুদ্রা থেকে ১০০টি রোপ্যমুদ্রা জরিমানা বাবদ রেখে বাকি ৪০০ রোপ্যমুদ্রা থেকে ২০টি চুরি যাওয়া দোকানের মালিককে দেয়া হলো। আর বাকি ৩৮০ টি বৃদ্ধা মহিলাকে দিয়ে বিচারক বললেন- এগুলো হলো আপনার ভরণপোষনের জন্য। আর আগামি মাসে আপনি বাগদাদে খলিফা হারুন উর রশীদের দরবারে আসবেন, খলীফা আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
পরের মাসে বৃদ্ধা মহিলা খলীফার দরবারে গিয়ে দেখেন- খলীফার আসনে বসা লোকটিকে যেন কেমন চেনা চেনা মনে হয়। তারপর ভয়ে ভয়ে খলীফার আসনের দিকে এগিয়ে যান। একেবারে কাছে গিয়ে বুঝতে পারেন, লোকটি আর কেউ না, এতো সেদিনের সেই বিচারক।
খলীফা চেয়ার থেকে নেমে এসে বলেন-
আপনাকে আর আপনার এতিম দু নাতিকে উপোস রাখার জন্য সেদিন বিচারক হিসাবে ক্ষমা চেয়েছিলাম, আর আজ দরবারে ডেকে এনেছি- প্রজা অধিকার সমুন্নত করতে না পারা একজন অধম খলীফাকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন বুড়ীমা।
এ মহান খলীফা মাত্র ৪৬ বছর বয়সে ৮০৯ সালে ইরানের খোরাশান প্রদেশের তোস শহরে ইন্তেকাল করেন।
ইতিহাসে যিনি "The Just " হিসাবেই পরিচিত।"
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন, সামান্য চুরির শাস্তি এত কঠিন কেন হলো? এক দুই কোটি টাকা চুরি করলেই বা কি! একজনের হাত কেটে ফেলতে হবে?
তাহলে ব্যপারটা অন্য পয়েন্ট অফ ভিউ থেকেও বলি।
ধরুন, একটা লোক ঘন্টায় আট ডলার কামিয়ে বহু কষ্টে সংসার চালান। তাঁর কাছে আটশো ডলার মানে একশো ঘন্টার কাজ। এই টাকা জমাতে তাঁর কয়েকমাস লেগে যায়। তারপরেও তিনি বহু কষ্টে সঞ্চিত এই টাকা দিয়ে একটি মোবাইল ফোন কিনলেন। আপনি করলেন কী, একদিন সেই আই ফোনটা চুরি করে ফেললেন।
আপনি কী বুঝতে পারছেন যে আপনি এই ফোন চুরির সাথে সাথে তাঁর জীবন থেকে একশোটা ঘন্টাও (চার দিনেরও বেশি সময়) চুরি করে ফেলেছেন?
এখন যদি টাকার অংকটা কোটিতে হয়, তাহলে লোকটার জীবনের কয়টা দিন আপনি চুরি করলেন? সালমান এফ রহমানের মতন চোরেরা যখন শেয়ার মার্কেট লুটের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের সারাজীবনের সঞ্চয় চুরি করে ফেলে, কিংবা কোন রাজনৈতিক প্রভাবশালী ভূমি দস্যু কোন সাধারণের চৌদ্দপুরুষের শেষ সম্বল ভিটে বাড়ি দখল করে তাঁদের রাস্তায় নামিয়ে আনে, সেগুলোকে মার্ডার না বললেও মার্ডার থেকে কমই বা বলবেন কোন যুক্তিতে? এদের শাস্তি কী স্রেফ জরিমানা হওয়া উচিৎ? "হস্ত কর্তনও"তো অনেক লঘু হয়ে যায়।
শরিয়া আইন নিয়ে এত ফালতু ফালতু কমেন্ট শুনতে হয়, কারন পৃথিবীর আর অন্যান্য সব দেশের আইনের মতন সেসব দেশেও শাসকেরা নিজেদের ইচ্ছে মতন আইনের অপব্যবহার করে থাকে। এবং সাধারন মানুষেরও এই ব্যপারে স্পষ্ট কোনই ধারনা নেই।
বটম লাইন হচ্ছে, বাঁদরের হাতে তলোয়ার এবং মুর্খ্যের হাতে বিচার ক্ষমতা তুলে দেয়া একই। নেগেটিভ ছাড়া রেজাল্ট কখনও পজিটিভ আসবে না।
ফুটনোট: কেউ কেউ দাবি তুলবেন, অ্যামেরিকায় শরিয়া আইন প্রনয়ন করা হোক।
কেন ভাই? কোথায় পেলেন যে কোন মুসলিম মাইনরিটি দেশে শরিয়া আইন প্রনয়ন করতে বলা হয়েছে? সুখে থাকতে ভুতে কিলায়? আবি সিনিয়ায় হিজরতের নির্দেশ দেয়ার পর নবীজি (সঃ) কী বলেছিলেন সেই দেশের প্রচলিত আইন পাল্টে শরিয়া আইন জারি করতে? তাহলে তুমি কেন মাতবরি ফলাতে আসো? নবীর চেয়ে ইসলাম বেশি বুঝো?

মন্তব্য ৫৯ টি রেটিং +২৬/-০

মন্তব্য (৫৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:৪৪

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: অসাধারণ লেখা,খুবই ভাল লাগল

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৬

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: বাহ অনেক সুন্দর লিখেছেন।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই!

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৫

জাহাঙ্গীর গুরু বলেছেন: যা নিজে বলতে চাই কিন্তু গুছিয়ে বলতে না পারার কারনে বলতে পারিনা, সেটা যদি কেউ বলে দেয় তাহলে খুব ভালো লাগে।
ভালো লিখছেন ভাইডি।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইডি

৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আজ সকালে প্রথম আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগলো।

নিজেকে সম্বরণ করতে বেশ কষ্ট হলোঃ

//পরের মাসে বৃদ্ধা মহিলা খলীফার দরবারে গিয়ে দেখেন- খলীফার আসনে বসা লোকটিকে যেন কেমন চেনা চেনা মনে হয়। তারপর ভয়ে ভয়ে খলীফার আসনের দিকে এগিয়ে যান। একেবারে কাছে গিয়ে বুঝতে পারেন, লোকটি আর কেউ না, এতো সেদিনের সেই বিচারক।//

আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন।

//বটম লাইন হচ্ছে, বাঁদরের হাতে তলোয়ার এবং মুর্খ্যের হাতে বিচার ক্ষমতা তুলে দেয়া একই। নেগেটিভ ছাড়া রেজাল্ট কখনও পজিটিভ আসবে না।//

এবং আল্লাহ্ আপনাকে তার দ্বীনের কথা সুন্দর ভাবে প্রচারের আরো তওফিক দান করুন।

ভাল থাকুন। সবসময়।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৯

চাঁন মিঞা সরদার বলেছেন: অসাধারন । অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আছে। পোষ্ট প্রিয়তে রাখলাম ।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৭

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১৩

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: এত চমৎকার সুলিখিত পোস্ট খুব কম পড়েছি। আল্লাহ তো বলেছেনই, পড়! তোমার প্রভুর নামে। আফসোস, আমাদের মধ্যে পড়াশোনার চর্চা একদম কমে যাচ্ছে। এই সুযোগ কাজে কিছু মানুষ অন্যদের সাথে প্রতারণা করছে।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন

৭| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪০

আবদুল্লাহ-আল-মারুফ বলেছেন: শারিয়া আইন সম্পর্কে আপনার ধারণা পরিষ্কার না, অস্পষ্ট।
হযরত উমারের (রাঃ) কাছে এক বৃদ্ধ এসে উপস্থিত। কিছুক্ষণ ইতস্তত করার পর বৃদ্ধ বললেন, "হে বিশ্বাসীদের নেতা, আমি আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছি। পাত্র মাশাল্লাহ ভাল। কিন্তু আমার মেয়ের অতীতে একটা দাগ আছে। প্রথম যৌবনে এক ছেলের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল এবং একদিন ভুলবশত....." - এটাকে আপনি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেসেন।
"আমার সামনে তারা রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে" - ধরনের সাক্ষ্যও কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয়।-এটাকেও আপনি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেসেন।
সৌদি এবং ইরানসহ বিশ্বের নানান শরিয়া আইন প্রধান দেশগুলোতে ব্যভিচারের কারনে চাবুকের শাস্তি, পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড একটি নিয়মিত ঘটনা। আমাদের দেশেও গ্রামের দিকে মোল্লারা ফতোয়া জারি করে মেয়েদের শাস্তি দিয়ে থাকে, এবং সেই শাস্তির ভিডিও ইউটিউবে নিয়মিত আপলোডও হয়। - এটা দ্বারা আপনে কি বুঝাতে চেয়েসেন? পরিষ্কার না।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সহিহ ব্যখ্যাটা আপনিই দিয়ে দিন ভাই

৮| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২২

আনোয়ার ভাই বলেছেন: আপনি মেধা খাটিয়ে যেভাবে এ লেখার মাধ্যমে সত্যিটা জানালেন তা কিন্তু অনেকে করে না। যারা নিজেদের ইসলামের বড় পন্ডিত মনে করেন তারা কতটুকু জ্ঞানী সেই প্রশ্ন থেকে যায়। আমার মনে হয় মুসলমানদের উচিত জ্ঞানের পথে হাটা।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ। ঠিক ধরেছেন

৯| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩

ইছামতির তী্রে বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা। বেশীরভাগ অংশের সাথেই একমত। তবে কিছু কিছু ব্যাপারে বক্তব্য আছে। আবদুল্লাহ-আল-মারুফ ভাই অনেকটা বলেছেন।

যাইহোক, যেনার ব্যাপারটা গোপন রাখলে বা থাকলে সেটার শাস্তি/ক্ষমা আল্লাহতায়ালার ব্যাপার। প্রিয় রাসুল (সাঃ) এর মহান সাহাবীগণ (রাঃ) ছিলেন ঈমানী শক্তিকে চরম বলীয়ান। তারা সত্যবাদী ছিলেন। ভুলবশতঃ উনারা একটা পাপ করলে এর মোচন না হওয়া অবধি ক্ষান্ত হতেন না। উল্লেখিত ঘটনার মত আরো বেশ কয়েকটি ঘটনা আছে। এখন মানুষ পাপ করলেও বলে না। সেটা বহুভাবে প্রমাণ করতে হয়। তবে যদি প্রমাণিত হয়েই যায়, তবে শাস্তি কিন্তু কঠোর।

ইসলামে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েতে 'রুদ্ধদ্বার বৈঠক' নিষিদ্ধ। সন্তান প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে গেলে তাদের সাথে ক্ষেত্র বিশেষে মা-বোনদেরকেও পরদা করার কথা বলা আছে। তাই এই ব্যাপারটা বেশ গুরুতর।

এখন সব জায়গাতেই প্রজ্ঞার অভাব প্রকট। এখানেও থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কম জানা লোক বিচার করলে ভুল হবেই। এটা যেকোন আদালতের জন্যই প্রযোজ্য।

মহান আল্লাহ আমাদের সকল ভুল-ভ্রান্ত ক্ষমা করুন। আমিন।

বাদ বাকী

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ।

১০| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৯

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: ভাল পোষ্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ

১১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

দরবেশমুসাফির বলেছেন: অসাধারন একটি পোস্ট দেওয়ায় লেখককে ধন্যবাদ।

দুঃখজনকভাবে আজ অনেক মুসলমানের কাছেই আবু বকর রাঃ , উমার রাঃ এমনকি মুহাম্মাদ সাঃ এর দৃষ্টান্তের চেয়েও তাদের বড় হুজুর, ছোট হুজুরের কথার দাম বেশি। আর এজন্যই ধর্ম ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারে।

যেদিন আলেম ওলামাদের প্রতি অন্ধ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে, যেদিন মুসলমানেরা নিজেরাই পড়াশোনা ও জ্ঞানচর্চায় আগ্রহী হবে সেদিন আর কোন মুনাফিক আলেমের বেশে ভ্যং ধরতে পারবে না।

আর সেদিনই শুরু হবে ইসলামের আরেকটি স্বর্ণযুগের।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন

১২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

হাসান নাঈম বলেছেন: বাঁদরের হাতে তলোয়ার এবং মুর্খ্যের হাতে বিচার ক্ষমতা তুলে দেয়া একই। নেগেটিভ ছাড়া রেজাল্ট কখনও পজিটিভ আসবে না। - এটাই আসল কথা। শরিয়া আইনে সমস্যা নাই সমস্যা যা আছে তা বাস্তবায়নকারীদের অযোগ্যতা আর প্রজ্ঞার অভাবে।

১৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

আবু শাকিল বলেছেন: খুব ভাল লেখা।
আপনি ন্যায়,যুক্তিসংগত কথা বলেছেন।ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোর সাথে আপনার লেখাটা দারুন।শেখা এবং জানা র জন্য অসাধারণ পোষ্ট।তবে কি ভাই আমরা শোনে মুসলিম।আমাদের মধ্যে ইসলাম চর্চা নাই।সেই অজ্ঞতায় কিছু দুষ্ট লোক ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়।জাতি যেহেতু ধর্ম ভীরু।সওয়াবের আশায় সেগুলো বিশ্বাস করে অন্যজনের মাঝেও সেই বিভ্রান্তি স্যোসাল নেটওয়ার্ক এ ছড়িয়ে দেন।তাই
আপনি ইসলামিক বিচারিক ব্যবস্থার এবং ইসলামিক ঘটনা গুলো বয়ান করেছেন।সেগুলো কোন হাদিস বা কোরআন অথবা কোন সোর্স থেকে নিলেন।
উল্লেখ্য করে দিলে কথা গুলো সকলের গ্রহনযোগ্যতা।
অন্যতায় কিছু লোক ভূল বাল যুক্তি নিয়ে হাজির হবে।
ধন্যবাদ।

১৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: গুছিয়ে লেখা সুন্দর একটি পোস্ট। কয়েকটি মন্তব্যেও চিন্তার খোরাক আছে।

১৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬

Jahirul Sarker বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আপনার পরবর্তী লেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
আর অনুসরনে রাখলাম।

১৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর সারগর্ভ একটি পোস্ট। শেয়ার দিতে চাচ্ছিলাম কিন্তু সামুতে বাটনটা কেন যেন সরিয়ে ফেলেছে।
মুসলিমদের অনৈক্য ও অজ্ঞানতার কারণেই ইসলামের নামে এত অপপ্রচার ও অপব্যবহার চলছে।লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ রইলো।

১৭| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০

আবু শাকিল বলেছেন: সোর্স উল্লেখ করে দিলে পোষ্ট সকলের কাছে গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভয় নেই, আমি নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে কিছু লিখিনা। অথেন্টিক রেফারেন্স ছাড়া আমি কোন তথ্য ব্যবহার করিনা। ইসলাম আমার মনের ব্যপার না। যা সত্যি তাই লিখতে হবে। কারো পছন্দ হলে হবে, না হলে নাই।
আর কথায় কথায় রেফারেন্স দিলে ফ্লো নষ্ট হয়ে যায়। পড়ার আগ্রহ থাকেনা, বোরিং হয়ে যায়। এইরকম রেফারেন্সে ভরা হাজার খানেক বই বাজারে আছে, কয়টা পড়েন আপনারা?
একটু কষ্ট করে গুগল করলে হাজারখানেক সোর্স পেয়ে যাবেন।
উমারের (রাঃ) ঘটনা তাঁর ডিটেইল জীবনীতে পাবেন, যেটা ইউটিউবে ওমর সিরিজেও পাবেন। এবং ওটা অথেন্টিক ঘটনা দিয়েই নির্মিত, বড় বড় ইসলামিক স্কলার দ্বারা অনুমোদিত।
নবীজির(সঃ) ঘটনাগুলো তাঁর যেকোন ডিটেইল সিরাত গ্রন্থে পাবেন।
ব্যাভিচারের যে শাস্তির ঘটনা বললাম সেটা বুখারী শরীফের অনেকগুলো হাদিসে আছে, ভলিউম ৮, বুক ৮২.
ইন্টারনেটের যুগে এইভাবে স্পুন ফেডের জন্য বসে থাকলে চলবে?
ইউটিউবে ব্যাভিচারের ঘটনাটা নিয়ে নোমান আলী খানের একটি ভিডিও পাবেন। নোমান আলী খান অন slander লিখে টাইপ করলে চলে আসার কথা।
চুরির ঘটনা নিয়ে মুফতি মেংকেরও একটি লেকচার পাবেন।
আসসালামু আলাইকুম।

১৮| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৮

নক্‌শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: যৌনদাসী ধর্ষণের নিয়ম নিয়ে ফতোয়া আইএসের!

বন্দি নারীদের ‘যৌনদাসী’ হিসেবে ব্যবহারের নিয়ম বর্ণনা করে তাদের ‘মালিকদের’ জন্য ফতোয়া জারি করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

এ সম্পর্কে জঙ্গি গাষ্ঠীটির দাবি, যৌনদাসীদের সঙ্গে তাদের মালিকদের আচরণের নিয়ম লঙ্ঘন কমাতেই তারা ফতোয়া দিয়েছে।

আইনে পরিণত হওয়া এ ফতোয়ার মাধ্যমে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নারীদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের বর্ষপুরোনো প্রথাকেই সমর্থনের চেষ্টা করেছে গোষ্ঠীটি।

গত মে মাসে সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর বিশেষ অভিযানে জব্দ হওয়া আইএস এর বহু নথিপত্রের মধ্যেই পাওয়া গেছে এ ফতোয়ার নথিপত্র। এসব নথির কিছু অংশ পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স, যা আগে কখনো প্রকাশ পায়নি।

জারি করা ফতোয়ার মধ্যে একই যৌনদাসীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাবা ও ছেলের প্রতি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং কোনো মা ও তার মেয়েকে একই ‘মালিক’ যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

একইভাবে কোনো নারী বন্দির দুইজন ‘মালিক’ থাকলে, 'যৌথ অংশীদারিত্বের অংশ' হিসেবে ওই নারীকে দুইজনই যৌনদাসী হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না বলেও ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।

১২ বছরের কন্যা শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার নারীকে অপহরণ ও ধর্ষণের জন্য আইএস এর বিরুদ্ধে বরাবরই অভিযোগ করে এসেছে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

বিশেষ করে উত্তর ইরাকের সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের নারীদেরকে ধর্ষণ করাসহ এটি তাদের অধিকার এবং তা ‘ধর্মসম্মত’ বলেও দাবি করে জঙ্গিরা। এই নারীদের অনেককেই হয় জঙ্গিদের কাছে বিক্রি করা হয়, না হয় উপহার হিসাবে দেওয়া হয়।

নারীদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা তো নয়ই বরং এ ব্যাপারে রীতিমতো গর্ব করে জঙ্গিরা। যৌনদাসত্বের ব্যবস্থাপনার জন্য ‘ওয়ার স্পয়েলস’ বা (যুদ্ধ জঞ্জাল) নামে একটি আলাদা বিভাগও খুলেছে তারা। এ বিভাগের কথা সোমবারই জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।

গত এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) আইএস এর হাত থেকে পালিয়ে বাঁচা ২০ নারীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে জানিয়েছিল, কিভাবে পুরুষ, বালক ও বৃদ্ধ নারীদের কাছ থেকে অল্পবয়সী মেয়ে ও তরুণীদের বয়সভেদে আলাদা করে নেয় জঙ্গিরা।

এরপর তাদেরকে ‘সংগঠিত ও পদ্ধতিগতভাবে’ ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। তারপর হয় তাদের বিক্রি করে দেওয়া হয়, নয়ত উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয় জঙ্গিদের হাতে, যেখানে তারা অবিরাম ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়।

চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি জারি করা এক ফতোয়ায় আইএস এর ‘গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক পরিষদ’ ৬৪ নম্বর ফতোয়ায় প্রথমবারের মতো আইএস জঙ্গি ও তাদের নারী বন্দিদের মধ্যে যৌন সংসর্গের নিয়ম বেঁধে দিয়েছে, যা ২০১৪ সালে গোষ্ঠীটির প্রকাশিত দাসীদের সঙ্গে আচরণ বিধিমালা বিষয়ক বইয়ের তুলনায় আরও বেশি বর্ণনামূলক।

১৯| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪১

টোকাই রাজা বলেছেন: সুন্দর ও শিক্ষনীয় একটা পোস্ট, প্রিয়তে নিলাম।

২০| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

হানিফঢাকা বলেছেন: প্রথমেই ধন্যবাদ দিচ্ছি সুন্দর একটি লেখার জন্য। আপনার লেখার কিছু অংশের সাথে আমি একমত, তবে বেশ কিছু অংশের সাথে আমি একমত নই। যে বিষয়ের সাথে আমি একমত নয় সেটা নিয়ে ছোট করে কিছু বলছি।

১। আপনি সাক্ষ্য দেওয়ার ব্যপারে যা বলেছেন তা মোটামুটি ঠিকই আছে। এই ক্ষেত্রে অকাট্য সাক্ষ্যী হতে হবে। এবং সাক্ষ্যী যদি তাদের কেস প্রমান করতে না পারে তবে সাক্ষ্য দাতাদের বেত্রাঘাতের নির্দেশ আছে।এবং এই সাক্ষ্য দাতাগন ভবিষ্যতের অন্য কোন সাক্ষ্যের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হবে। সংক্ষেপে এইটা এইরকম, এইখানে এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলছিনা, শুধু এতটুকু বলা যায় যে এই ব্যপারে সাক্ষ্য গ্রহণের যে ক্রাইটেরিয়া দেওয়া হয়েছে তা পুরন করা প্রায় অসম্ভব। এর পিছনে রয়েছে গভীর প্রজ্ঞা। আসা করি আপনি জানেন।

২। আপনি যে কথাটা বলেননি তা হল, ধরুন সমস্ত সাক্ষ্য দ্বারা অকাট্য ভাবে কেস প্রমানিত হল, সেই ক্ষেত্রে শাস্তি কি? এইটাই মুল বিষয়। কোরআনে স্পষ্ট করে বেত্রাঘাতের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, যা বিস্তারিত ভাবে ব্যখ্যা করা হয়েছে। ব্যভিচারের শাস্তি কোনভাবেই মৃত্যুদণ্ড নয়। সুতরাং আমাদের নবী ব্যভিচারের জন্য কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন এটা কোরআনের সম্পূর্ণ বিপরীত এবং কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

৩। এই মৃত্যুদণ্ডের বিধান এসেছে হাদিস থেকে। এর মুল উৎস হচ্ছে বাইবেল। কেউ যদি বাইবেলে ব্যভিচারের শাস্তি কি জানতে চান, তাহলে দেখবেন সেখানে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।

৪। এখন যারা হাদিস আঁকড়ে ধরে বলতে চান ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি মৃত্যুদন্ড, তাদের উদ্দ্যশ্যে বলছি, এইটা ঠিক হলে কোরআনের অথেন্টিসিটি নিয়ে প্রশ্ন আসে। কারন হাদিসে এসেছে, ব্যভিচারের শাস্তি সম্পর্কিত মৃত্যুদন্ডের আয়াত এবং দুধ চুষে বা পান করে স্ত্রীলোকের মাহরাম হওয়া সম্পর্কিত এই আয়াতগুলি ছাগলে খেয়ে ফেলেছে, এর ফলে এটা কোরআনে সন্নিবেশিত করা যায়নি। যদি এটা কেউ বিশ্বাস করে, তবে বলতে হবে কোরআন সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়নি, যেখানে কোরআনে আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ নিজেই কোরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। সুতরাং ব্যভিচারের সম্পর্কিত হাদিসে আসা মৃত্যুদণ্ডের বিধান কোরআনের সম্পূর্ণ বিপরীত এবং ঐ সব হাদিস নিঃসন্দেহে জাল যা উমর (রাঃ) এর নামে বানানো হয়েছে।


২১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৪

কল্লোল পথিক বলেছেন: অসাধারন হয়েছে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আছে, পড়ে খুব ভাল লাগলো।অনেক ধন্যবাদ।

২২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৫

লিথ্যাল ব্রাহমোস বলেছেন: হানিফঢাকার কমেন্টে ঝাঝা। আমিও তাই মনে করি।

২৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
মঞ্জুর,
আপনার লেখা পড়ছিলুম, কিন্তু হাদীস এবং তারিখ্ কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন তার সূত্র ইত্যাদির তো উল্লেখ দেখছি নে। আপনার বক্তব্য জোরাল ও সুযুক্তি আছে। কিন্তু এভাবে সূত্র ছাড়া লেখাটা অনুচিত।

শাসকেরা নিজেদের ইচ্ছে মতন আইন বানালে ও অপব্যবহার করলে এমনটিই ঘটবে স্বাভাবিক।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:২৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভয় নেই, আমি নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে কিছু লিখিনা। অথেন্টিক রেফারেন্স ছাড়া আমি কোন তথ্য ব্যবহার করিনা। ইসলাম আমার মনের ব্যপার না। যা সত্যি তাই লিখতে হবে। কারো পছন্দ হলে হবে, না হলে নাই।
আর কথায় কথায় রেফারেন্স দিলে ফ্লো নষ্ট হয়ে যায়। পড়ার আগ্রহ থাকেনা, বোরিং হয়ে যায়। এইরকম রেফারেন্সে ভরা হাজার খানেক বই বাজারে আছে, কয়টা পড়েন আপনারা?
একটু কষ্ট করে গুগল করলে হাজারখানেক সোর্স পেয়ে যাবেন।
উমারের (রাঃ) ঘটনা তাঁর ডিটেইল জীবনীতে পাবেন, যেটা ইউটিউবে ওমর সিরিজেও পাবেন। এবং ওটা অথেন্টিক ঘটনা দিয়েই নির্মিত, বড় বড় ইসলামিক স্কলার দ্বারা অনুমোদিত।
নবীজির(সঃ) ঘটনাগুলো তাঁর যেকোন ডিটেইল সিরাত গ্রন্থে পাবেন।
ব্যাভিচারের যে শাস্তির ঘটনা বললাম সেটা বুখারী শরীফের অনেকগুলো হাদিসে আছে, ভলিউম ৮, বুক ৮২.
ইন্টারনেটের যুগে এইভাবে স্পুন ফেডের জন্য বসে থাকলে চলবে?
ইউটিউবে ব্যাভিচারের ঘটনাটা নিয়ে নোমান আলী খানের একটি ভিডিও পাবেন। নোমান আলী খান অন slander লিখে টাইপ করলে চলে আসার কথা।
চুরির ঘটনা নিয়ে মুফতি মেংকেরও একটি লেকচার পাবেন।
আসসালামু আলাইকুম।

২৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



পোষ্টের মূল বক্তব্যের সাথে একমত। তবে সোর্স দিয়ে দিলে ভাল হতো খুব।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:২৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভয় নেই, আমি নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে কিছু লিখিনা। অথেন্টিক রেফারেন্স ছাড়া আমি কোন তথ্য ব্যবহার করিনা। ইসলাম আমার মনের ব্যপার না। যা সত্যি তাই লিখতে হবে। কারো পছন্দ হলে হবে, না হলে নাই।
আর কথায় কথায় রেফারেন্স দিলে ফ্লো নষ্ট হয়ে যায়। পড়ার আগ্রহ থাকেনা, বোরিং হয়ে যায়। এইরকম রেফারেন্সে ভরা হাজার খানেক বই বাজারে আছে, কয়টা পড়েন আপনারা?
একটু কষ্ট করে গুগল করলে হাজারখানেক সোর্স পেয়ে যাবেন।
উমারের (রাঃ) ঘটনা তাঁর ডিটেইল জীবনীতে পাবেন, যেটা ইউটিউবে ওমর সিরিজেও পাবেন। এবং ওটা অথেন্টিক ঘটনা দিয়েই নির্মিত, বড় বড় ইসলামিক স্কলার দ্বারা অনুমোদিত।
নবীজির(সঃ) ঘটনাগুলো তাঁর যেকোন ডিটেইল সিরাত গ্রন্থে পাবেন।
ব্যাভিচারের যে শাস্তির ঘটনা বললাম সেটা বুখারী শরীফের অনেকগুলো হাদিসে আছে, ভলিউম ৮, বুক ৮২.
ইন্টারনেটের যুগে এইভাবে স্পুন ফেডের জন্য বসে থাকলে চলবে?
ইউটিউবে ব্যাভিচারের ঘটনাটা নিয়ে নোমান আলী খানের একটি ভিডিও পাবেন। নোমান আলী খান অন slander লিখে টাইপ করলে চলে আসার কথা।
চুরির ঘটনা নিয়ে মুফতি মেংকেরও একটি লেকচার পাবেন।
আসসালামু আলাইকুম।

২৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩

তানজির খান বলেছেন: পোস্টের মূল বক্তব্য খুব ভাল লেগেছে। সমকালীন সময়ে ইসলাম নিয়ে এমন লেখা কম হয়েছে বা আমার চোখে পড়েনি। আবি সিনিয়ায় নবীজীর যে ঘটনা বর্ননা দিলেন সেইটার যদি রেফারেন্স দিতেন তবে কৃতজ্ঞ থাকতাম। আমি বেশ কিছু দিন হল এসব নিয়ে ভাবছি পড়ছি। আমার আগ্রহের প্রশমন হতো। আমার একটা প্রশ্ন ছিল যদি কোন মেয়ে রেপড হয় তবে কি সে বিচারের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করতে পারবে কিনা?

সব মিলিয়ে পোস্টটি দুর্দান্ত ছিল। ইসলামি চিন্তাবিদরাও এমন করে লিখে না। শুভ কামনা রইল ভাই।

২৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এইরকম সহজ ভাবে কথা বলার লোক খুব বেশি দরকার।

++++প্রিয়তে

২৭| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৪

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
এই রকম পোষ্ট পড়ার জন্যই আসি সামুর দরবারে।
লেখকের প্রতি সুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রহিল।

২৮| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

উদাসিন পথিক বলেছেন: অন্তর থেকে ধন্যবাদ।

২৯| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৪

আফরীন সুমু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোষ্টের জন্য। সবার মতই আমিও বলছি রেফারেন্স উল্লেখ করলে ভালো হত।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:২৭

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভয় নেই, আমি নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে কিছু লিখিনা। অথেন্টিক রেফারেন্স ছাড়া আমি কোন তথ্য ব্যবহার করিনা। ইসলাম আমার মনের ব্যপার না। যা সত্যি তাই লিখতে হবে। কারো পছন্দ হলে হবে, না হলে নাই।
আর কথায় কথায় রেফারেন্স দিলে ফ্লো নষ্ট হয়ে যায়। পড়ার আগ্রহ থাকেনা, বোরিং হয়ে যায়। এইরকম রেফারেন্সে ভরা হাজার খানেক বই বাজারে আছে, কয়টা পড়েন আপনারা?
একটু কষ্ট করে গুগল করলে হাজারখানেক সোর্স পেয়ে যাবেন।
উমারের (রাঃ) ঘটনা তাঁর ডিটেইল জীবনীতে পাবেন, যেটা ইউটিউবে ওমর সিরিজেও পাবেন। এবং ওটা অথেন্টিক ঘটনা দিয়েই নির্মিত, বড় বড় ইসলামিক স্কলার দ্বারা অনুমোদিত।
নবীজির(সঃ) ঘটনাগুলো তাঁর যেকোন ডিটেইল সিরাত গ্রন্থে পাবেন।
ব্যাভিচারের যে শাস্তির ঘটনা বললাম সেটা বুখারী শরীফের অনেকগুলো হাদিসে আছে, ভলিউম ৮, বুক ৮২.
ইন্টারনেটের যুগে এইভাবে স্পুন ফেডের জন্য বসে থাকলে চলবে?
ইউটিউবে ব্যাভিচারের ঘটনাটা নিয়ে নোমান আলী খানের একটি ভিডিও পাবেন। নোমান আলী খান অন slander লিখে টাইপ করলে চলে আসার কথা।
চুরির ঘটনা নিয়ে মুফতি মেংকেরও একটি লেকচার পাবেন।
আসসালামু আলাইকুম।

৩০| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

আফরীন সুমু বলেছেন: আবদুল্লাহ-আল-মারুফ ভাই যদি ভুল ব্যাখ্যা গুলোর সঠিকটা বলতেন ভালো হত।

৩১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫০

কালীদাস বলেছেন: পোস্ট ভাল। সমস্যা হল, শরীয়াহ আইন কি সবার জন্য সমানভাবে মানা হয় মিডলইস্টে? গতবছরই তো মনে হয় এক গে সৌদি প্রিন্স তার (হোমো পার্টনার) সার্ভেন্টকে হত্যা করল। সেটার বিচার কোথায় কিভাবে হল? আর চুরির শাস্তি হাত/পা/গলা কাটা...হা হা হা সৌদি রাজবংশ তো উধাও হয়ে যাওয়ার কথা রাস্ট্রীয় তেল বেঁচা টাকা পকেটে ভরার জন্য।

৩২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:১০

চৌধুরী ইপ্তি বলেছেন: বেস্ট পোস্ট!!

৩৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৫৩

খেয়া ঘাট বলেছেন: আপনার লিখাটি ভালো। খুবই ভালো।
তবে "গত জুলাই মাসের পনের তারিখে ক্যানভাসে রনিয়া রহিমের একটি পোস্ট হুবহু কপি পেস্ট করে দিচ্ছি, উদাহরণ হিসেবে কাজে লাগবে।" এই লিখাটি আমার । উনাকে একটু জানিয়ে দিবেন। হাজার জনে ফেসবুক থেকে কপি করে যার যার নামে ইচ্ছেমতো মেরে দিয়েছে। আমাদের অধঃপতন এখান থেকেই বুঝতে পারবেন। সততার কথা , ন্যায়ের কথা মানুষ বলবে- চুরি করা পোস্ট দিয়ে। লেখাটি যিনি চুরি করেছেন- উনাকেই বললাম ভাই।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:০১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আসলে আমারই লেখার ভুল। মেয়েটা নিজের নামে লিখে নাই, সেও লিখেছিল লেখাটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত। অমন চমৎকার পোস্টের লেখকের সাথে পরিচিত হয়ে সুখী হলাম। এডিট করে দিয়েছি।

৩৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৫৫

খেয়া ঘাট বলেছেন: অরিজিনাল লিখাটিরি লিঙ্ক- প্রায় ২৩ হাজার শেয়ার। আর কি পরিমানে যে চুরি হয়েছে- তার হিসাব নাই।

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10152774775873205&set=a.492071818204.275683.781738204&type=3

৩৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৫৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: মূল লেখাটির লিঙ্ক নীচে দিলাম-

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10152774775873205&set=a.492071818204.275683.781738204&type=3&theater

৩৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৫৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: Click This Link

৩৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: বরাবরের মত এটিও চমৎকার একটি পোস্ট!

৩৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৬

সুলতানা রহমান বলেছেন: ব্যাখ্যা খুব ভাল লাগলো। গ্রামে ভুলভাল হাদীসের অপব্যবহার বেশি দেখা যায়।
শুভকামনা।

৩৯| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২

এ আর ১৫ বলেছেন: শারিয়ার রজম (প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদণ্ড)

ব্যভিচার কি ? ব্যভিচার বা পরকীয়া হলো যার সাথে বিয়ে হয়নি তার সাথে অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক। পশ্চিমের আইনে নর-নারী রাজি থাকলে পরকীয়া অপরাধ নয়, তাই সেখানে আজকাল পরকীয়া খুব বেড়ে গেছে। এর ফলে পশ্চিমে পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হবার পথে। কোরাণে ব্যভিচারকে বর্জন করার সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে (সুরা বনি ইসরাইল ৩২, মুমতাহানা ১২, ইত্যাদি)।- ব্যভিচারিণীদের শাস্তি হিসেবে বলা আছে আজীবন ঘরে বন্দি রাখতে অথবা আলাহ অন্য কোন পথ নির্দেশ না করা পর্যন্ত − সুরা নিসা, আয়াত ১৫।- আর আছে ব্যভিচারী নারী-পুরুষকে একশ’ করে চাবুক মারতে − সুরা নূর, আয়াত ২।- অথচ শারিয়া আইনে আছে বিবাহিত বা বিবাহিতা অপরাধীর শাস্তি জনগণের সামনে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদণ্ড, যাকে রজম বলা হয়। আর যার বিয়ে হয়নি তাকে একশ’ চাবুক − (সূত্র : হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ১৭৮, বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড, ধারা ১২৯, পাকিস্তানের হুদুদ আইন ৭-১৯৭৯, অর্ডিন্যান্স ২০-১৯৮০ দ্বারা পরিবর্তিত, আইন নম্বর ৫ (২)-এর “অ” ইত্যাদি). অর্থাৎ এ-আইন কোরাণকে লঙ্ঘন করেছে।

অনেকে এ-আইনের সমর্থনে হাদিস পেশ করেন মিশকাত (২৬ অধ্যায়ের ১ম পরিচ্ছেদ) আর সহি বোখারী থেকে (হাফেজ মহাম্মদ আবদুল জলিল সম্পাদিত বাংলায় বোখারি শরীফের মোটামুটি হাদিস নম্বর ১২৩৪ থেকে ১২৪৯ পর্যন্ত, মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন খানের অনুবাদ ও মওলানা আজিজুল হক সাহেবের অনুবাদ ২৬৮ নম্বর হাদিস)। –সব হাদিসে বলা আছে, নবীজী বিবাহিত/তা-দের মৃত্যুদণ্ড, আর অবিবাহিত/তা-দের একশ’ চাবুক ও এক বছরের নির্বাসন দিয়েছিলেন।

তাহলে আমরা দেখছি, কোরাণের আয়াতের সাথে হাদিসগুলো মিলছে না। কেন এমন হচ্ছে ? তাহলে নবীজী কি সুরা নূর নাজিল হবার আগে পরকীয়ায় বিবাহিত/তা-দের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ? এ-প্রশেড়বর জবাব আছে ১২৪২ নম্বর হাদিসে, সাহাবী বলেছেন তিনি তা জানেন না। আমরা ধরে নিতে পারি যে নবীজী রজম করে থাকলে এ-সব আয়াত নাজিল হবার আগেই করেছিলেন, পরে নয়। কেননা পরে করলে তা কোরাণের বিপক্ষে যেত, সেটা সম্ভব নয়।

এবারে একটা বিখ্যাত হাদিস দেখা যাক। সহি বোখারি হাদিস ১২৩৭, ১২৩৮, ১২৩৯, এবং মিশকাত ২৬-এর ১ (“মুসলিম জুরিসপ্র“ডেন্স অ্যাণ্ড দ্য কোরাণিক ল’ অফ μμাইম্স্” থেকে) হাদিস থেকে আমরা দেখি :

মায়াজ নামের সাহাবি নবীজীকে বলল তাকে পবিত্র করতে।
নবীজী তাকে হাঁকিয়ে দিলেন এই বলে − দূর হও, অনুতাপ কর ও ক্ষমা চাও।
মায়াজ ফিরে গিয়ে আবার ফিরে এসে একই কথা বলল। নবীজী একই কথা বললেন।
তিনবার এটা ঘটার পর নবীজী জিজ্ঞেস করলেন − ব্যাপার কি। মায়াজ বলল সে
ব্যভিচার করেছে।
তারপর নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, মায়াজ কি পাগল ? নেশা করেছে ? লোকেরা বলল, না।
নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন − মায়াজ কি বিবাহিত ? লোকেরা বলল, হ্যাঁ।
তখন নবীজী তাকে পাথর মেরে হত্যা করতে নির্দেশ দিলেন।
এ-হাদিস সত্যি হলে নবীজী অন্তত তিনবার তাকে অনুতাপ-ক্ষমার দিকে ঠেলেছেন, শাস্তি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন, শেষে একান্ত বাধ্য হয়েই রজম ঘোষণা করেছেন। শারিয়ার আইনে এই সুনড়বত মেনে কোন ‘অপরাধী’-কে তিনবার ফিরিয়ে দেয়ার নিয়ম নেই। পাগলামি বা নেশার কথা জিজ্ঞেস করাও নেই। আমরা জানি মানুষ ভ্রান্তিময়, অপরাধ এক হলেও সব অপরাধী এক হয় না। একই অপরাধ কেউ করে অভাবে, কেউ করে স্বভাবে, খাসলতে। একই অপরাধ কেউ করে উত্তেজনার গরম মাথায়, কেউ করে পরিকল্পনা করে ঠাণ্ডা মাথায়। সে-জন্যই একই অপরাধের সর্বদা একই শাস্তি হতে পারে না। অথচ শারিয়ার হুদুদে ঠিক তাই’ই হয়, হঠাৎ-অপরাধ ও খাসলতের অপরাধে বিচারককে একই শাস্তি দিতে হয়, তাঁর হাত-পা বাঁধা থাকে।

লোকেরা মায়াজকে পাথর মারা শুরু করতেই ব্যথার চোটে হতভাগার মনে হল যে পবিত্র হয়ে এখনই পটল তোলার চেয়ে তওবা টওবা করে আরও কিছুদিন বেঁচে থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। লেজ তুলে সে দিল দৌড়। কিন্তু লোকেরা ওকে ধরে মেরে ফেলল। এঘটনা শুনে নবীজী কি বললেন ? কি করলেন ? মৃদুকণ্ঠে উচ্চারিত হল তাঁর লিখিত আইন ভাঙ্গা অলিখিত আইন − “লোকটাকে তোমরা যেতে দিলে না কেন ?” − মিশকাত ২৬-এর ১, সহি ইবনে মাজাহ ৪র্থ খণ্ড হাদিস ২৫৫৪ ও সহি সুনান আবু দাউদ হাদিস ৪৪০৫ ও ৪৪০৬ . এই হলেন রহমতুলিল আল্ আমিন, এই হল ভ্রান্তিময় অনুতপ্ত মানুষের প্রতি তাঁর অগাধ দরদ, অসীম ক্ষমা। তাঁ র গভীর অন্তদৃর্ িষ্ট শুধ ু শাস্তির দিকেই নয়, ক্ষমার দিকেও। স্বভাব-অপরাধীর খাসলত আর ভালো মানুষের হঠাৎ পা পিছলে যাবার মধ্যেকার বিরাট ফারাকটা জানেন বিশ্বনবী।

আবার কোরাণে ফিরে আসি। সুরা নিসা, আয়াত ১৬ : “তোমাদের মধ্য হইতে যেই দুইজন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাহাদিগকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাহাদের হইতে হাত গুটাইয়া নাও।”

কোথায় পাথর, কোথায় মৃত্যুদণ্ড ? মেরে ফেলার পর তার লাশ কি তওবা করবে নাকি, নিজেকে সংশোধন করবে নাকি ? এর চেয়েও কঠিন প্রমাণ আছে কোরাণে : সুরা নিসা, আয়াত ২৫ − দাসী-স্ত্রী পরকীয়া করলে তাকে “স্বাধীন-নারীদের অর্ধেক শাস্তি” দিতে হবে। এ-আয়াতের ব্যাখ্যায় শারিয়াপন্থীরা বলেন স্বাধীন নারী মানে স্ত্রী নয়, অন্য অবিবাহিতা নারী যাকে একশ’ চাবুক মারার বিধান আছে। কিন্তু চাবুক মারার আয়াত আছে তো সব ব্যভিচারীর বেলায়। আয়াতটা পড়ে দেখুন, স্পষ্ট বোঝা যায় দাসী নয় এমন নারীকে বিয়ে করা স্ত্রীর কথাই বলা হচ্ছে। তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলে দাসী-স্ত্রীর কি শাস্তি হবে ? মৃত্যুদণ্ডের তো অর্ধেক হয় না।

আসলে পরকীয়ার মৃত্যুদণ্ডের বিধান এসেছে ইহুদী-কেতাব ডিউটেরোনমি থেকে। “যদি কাহাকে অন্য লোকের স্ত্রীর সহিত বিছানায় দেখা যায় তবে তাহাদিগকে মরিতে হইবে … তখন তোমরা উহাদিগকে নগরের ফটকে লইয়া আসিবে এবং পাথর দ্বারা আঘাত করিবে যাহাতে তাহারা মরিয়া যায় …।”

শারিয়ার পক্ষে হজরত ওমরের নামে বিখ্যাত এক হাদিস আছে, সহি মুসলিম ২য় খণ্ডের ৬৫ পৃষ্ঠাতে (মুহিউদ্দীন খানের বাংলা-কোরাণ, পৃষ্ঠা ৯২৬) আর সহি বোখারী ১২৪৩ ও ১২৪৯ (হাফেজ আবদুল জলিল), বোখারী ৮ম খণ্ড হাদিস ৮১৭ (ডঃ মুহসিন খান, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়) এবং ইবনে হিশাম/ইশাক -৬৮৪ পৃষ্ঠায় : “আলাহতালা যাহা নাজেল করিয়াছেন তাহার মধ্যে রজমের আয়াতও রহিয়াছে … রসুলুলাহ (দঃ) রজম করিয়াছেন তাই আমরাও তাঁহার পরে রজম করিয়াছি … রজমের আয়াত পাঠ মনসুখ (বাতিল) হইয়া গিয়াছে কিন্তু হুকুম ও বিধান চালু রহিয়াছে।” কিন্তু সেই বাতিল আয়াতটা কি ? কোথায় সেটা উধাও হল ? আয়াতটা হল -“কোন বয়স্ক নর ও নারী ব্যভিচার করিলে তাহাদিগকে পাথর মারিয়া হত্যা কর” − সহি ইবনে মাজাহ্ ৪র্থ খণ্ড হাদিস নং ২৫৫৩। কিন্তু এর মধ্যে ফাঁক আছে। কারণ আইন বাতিল হলে তার শাস্তি চালু থাকতে পারে না। আয়াতটা কোথায় উধাও হল তা লেখা আছে ইমাম হাম্বলের দলিলে আর সহি ইবনে মাজাহ ৩য় খণ্ড হাদিস নং ১৯৪৪-এ। এ-এক মারাত্মক হাদিস, দেখুন − “বর্ণিত আছে যে বিবি আয়েশা (রাঃ) বলিয়াছেন, “রজমের আয়াত নাজিল হইয়াছিল। অবশ্যই ইহা একটি কাগজের উপরে লিখা হইয়াছিল যাহা আমার কুশনের নীচে রাখা ছিল। রসুল (দঃ)-এর ইন্তেকালের পর আমরা যখন তাঁহার সৎকার করিতে ব্যস্ত ছিলাম তখন একটি গৃহপালিত ছাগল ঘরে ঢুকিয়া উহা খাইয়া ফেলে।
বিশ্ব-মুসলিমের জন্য এ-এক মারাত্মক হাদিস। কারণ সুরা হিজ্র্, আয়াত ৯-এ আলাহ সুস্পষ্ট বলেছেন − “আমিই এই উপদেশগ্রন্থ নাজিল করিয়াছি এবং আমিই উহা সংরক্ষণ করিব।” আলাহ পাক-এর কালাম ছাগলে খাওয়া ছাড়াও এ হাদিস আরও এক ভয়াবহ সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তা হলো, নাজিল হওয়া আয়াত কোরাণে নেই। অন্যান্য আয়াত বাতিলের হাদিসও আছে, বুখারী ৪র্থ খণ্ড ৬৯. কিন্তু কে কবে কোথায় আলাহর কালাম বাতিল করল কেন ও কোন্ অধিকারে করল তার দলিল পাওয়া যায়নি।

এবারে কোরাণ থেকে শেষ প্রমাণ। সুরা আন-নূর, আয়াত ২৬ ও ৩ : “দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য ও দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য … ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী বা মুশরিকা নারীকেই বিবাহ করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী বা মুশরিক পুরুষই বিবাহ করে।”

অর্থাৎ ব্যভিচারী পুরুষ-নারীকে মৃত্যুদণ্ড দিলে তাদের লাশের সাথে লাশের বিয়ে দিতে হয়। সেটা সম্ভব নয়। কোরাণ একেবারে নীরব হলেও নাহয় কথা ছিল, যে কোন আইন বানাবার সুযোগ ছিল। কিন্তু কোরাণে তো ব্যভিচারীদের বিয়ের কথা বলা আছে। আরও একটা অকাট্য প্রমাণ দেখুন। সারা জীবন এত কষ্ট করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার পর মুসলমানের প্রতি স্বয়ং নবীজীর সর্বশেষ নির্দেশ কত গুরুত্বপূর্ণ ! সেই বিদায় হজ্ব-এর ভাষণে তিনি বলেছেন, “স্ত্রী অশীল কর্মে অর্থাৎ জ্বেনায় লিপ্ত হইলেই কেবল তাহাকে হালকা মারধর করা যাইবে, মারাত্মকভাবে নয়” − বিধিবদ্ধ ইসলামি আইনের ৩য় খণ্ড ৮৫২ পৃষ্ঠা। না, ব্যাভিচারিণীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেননি আলার রসুল। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর নির্দেশ উপেক্ষা করে, কোরাণের নির্দেশ উপেক্ষা করে শারিয়ায় অনেক আইনের মত এ আইনও ঢোকানো হয়েছে।

পরকীয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু শারিয়া আইনে যে মৃত্যুদণ্ড আছে তা কোরাণের খেলাফ ॥

শারিয়ার রজম (প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদণ্ড)

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনার মন্তব্য মূল লেখা থেকেও ভাল হয়েছে। চমৎকার ও তথ্যবহুল। ধন্যবাদ।

৪০| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৯

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
মঞ্জুর,
অথেন্টিক রেফারেন্স ছাড়া আপনি কোন তথ্য ব্যবহার করেন না জেনে ভরসা পেলাম। আপনাকে কথায় কথায় রেফারেন্স দিতে বলছিনে। লেখা শেষে রেফারেন্স সংক্ষিপ্ত করে হলেও রাখুন ভাইটি। এইটুকো কষ্ট যে করতে হবে, কারণ আপনিই বলছেন ‘ইসলাম আমার মনের ব্যপার না।’ আশাকরি ভেবে দেখবেন।

৪১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৮

জাদিদ বলেছেন: হয়ত অনেক ব্যস্ত আছেন, যদি সম্ভব হয় তাহলে সকলের মন্তব্যের জবাব দিন, সেটা দ্বিমত হলেও শোভনীয়।

৪২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭

আ্যন্টিভাইরাস বলেছেন: সব মিলিয়ে ভালো লাগলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.