নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমি যখন টিস্যু পেপারে সর্দির কারনে শব্দ করে নাক ঝারি, তখন দেখি আমার ছেলেটা মুগ্ধ নয়নে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তার বাবার নাক ঝারার প্রতিভায় সে বিমোহিত।
আমি যখন তার কান্না থামানোর জন্য হেরে গলায় গান গাই, আমার ছেলে কান্না বন্ধ করে মুগ্ধ হয়ে তার বাবার গান শোনে।
এমনকি, আমি যখন শুধুশুধু জিভ করে ভ্যাংচি কাটি, তাতেও তার আনন্দ ধরে রাখতে পারে না।
সারমর্ম, ছেলে মেয়েদের কাছে ছোটবেলা থেকেই বাবা মাই সুপার হিরো। যাই করে, তাই অনুকরনীয়।
কাজেই, আমি যদি আমার বৌয়ের গায়ে হাত তুলি, আমার ছেলেও তাঁর বৌয়ের গায়ে হাত তুলবে।
আমি যদি আমার কাজের ছেলেটাকে অযথা গালাগালি করি, আমার ছেলেও তাঁর নিচের পদের লোকদের সাথে একই কাজ করবে।
আমি যদি ঘুষ খাই, মানুষ ঠকাই - আমার ছেলের সৎ হবার কোনই সম্ভাবনা নেই।
এবং আমি যদি নারী জাতি দেখলে জিভ সামলাতে না পারি, তাহলে আমার ছেলেও একজন লম্পটই হবে। কোন ব্যতিক্রম নেই।
এখন, ধরা যাক আমি একজন নারী এবং আমার ছেলে না হয়ে মেয়ে হয়েছে।
আমার মেয়ে যদি দেখে শ্বশুরবাড়িতে আমি কুটনামি করে বেড়াচ্ছি, দেবরের সাথে আমার স্বামীর ঝগড়া লাগিয়ে দিচ্ছি, শ্বশুরবাড়ির সাথে সব সম্পর্ক নষ্ট করে শুধুই নিজের বাপের বাড়ির সাথে সম্পর্ক রেখেছি - আমার মেয়েও তাই শিখবে।
আবার, শ্বশুরবাড়িতে সব "অন্যায়" মাথা পেতে মেনে নিচ্ছি, বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করছি না - আমার মেয়েও ভবিষ্যতে একজন দাসীই হবে।
কাজেই, যে সমস্ত মা বোনেরা, গাউছিয়া-নিউমার্কেট-বইমেলা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক পহেলা বৈশাখের ভিড়ে একদল জানোয়ারের হাতে ছোটবড় যেভাবেই হোক শারীরিক-মানসিকভাবে লাঞ্চিত হয়ে মুখ বুজে সহ্য করে আসছেন, তাঁরা কিন্তু বুঝতেও পারছেন না যে আপনার মেয়ের ভবিষ্যতটাও আপনি একই সাথে গলা টিপে হত্যা করছেন। আপনার মেয়ে আপনাকেই রোল মডেল মানছে - আপনার রিয়েকশনই সে শিখছে। আজকে আপনি থাবড়ায়ে দুয়েকটা জানোয়ারের দাঁত ভেঙ্গে দিন - আল্লাহর কসম, আপনার মেয়ে ভবিষ্যতে দুয়েকটাকে পরপারে পাঠাবে। সুস্থ সমাজ গঠনে এর দরকার আছে।
দুইটা ঘটনা বলি। রিলেটেড।
গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় একদিন আমার পরিচিতা এক কলেজ পড়ুয়া সুন্দরী ললনা হঠাৎ করেই অগ্নিমূর্তি ধারন করে এক ছেলের কলার চেপে ধরে চড়াতে শুরু করলো।
ছেলেটা সাঙ্গপাঙ্গসহ ছিল। দলবদ্ধ হয়ে বড় গলায় বলল, "কী করছি আমি? এইভাবে মারেন ক্যান?"
তার সাগরেদরাও একই সাথে তেড়ে এলো, "আসলেইতো। কী করছে? হুদাই হাত তুললেন ক্যান?"
যথারীতি আশেপাশে ভিড় জমে গেল। এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় গলাবাজি করা বীর বাঙ্গালির একজনকেও দেখা গেল না ফকিরনিগুলিকে মোকাবেলা করতে। সবাই মজা দেখায় ব্যস্ত।
বখাটেগুলি ভেবেছিল হয়তো বা মেয়েটা কোণঠাসা হয়ে যাবে। হাজার হোক বাঙ্গালি মেয়ে মুখ ফুটে কিছু বলবে না।
কিন্তু মেয়েটা আগের চেয়েও ঝাঝালো গলায় জবাব দিল, "তুই আমার বুকে হাত দিয়েছিস শুয়োরের বাচ্চা!"
বলেই কেউ কিছু বুঝে উঠার আগে জানোয়ারটাকে দ্বিগুন বেগে পেটাতে লাগলো। মেয়েটার মাও এইবার মারধরে যুক্ত হলেন। আফসোস, পাবলিক যদি একটু সঙ্গ দিত, তাহলে বদমায়েশগুলিকে মাথা কামিয়ে ন্যাংটা করে গায়ে চুনকালি মেখে মার্কেট এলাকায় চক্কর দেয়ানো যেত। সেটাই হতো তাদের শাস্তি। এবং এইরকম প্রতিদিন দুয়েকটাকে ধরে ধরে করলে, এইসব বন্ধ হতে বাধ্য।
আফসোস! কেউ এগিয়ে আসেনি।
তবে সুখের কথা, দিন ধীরে ধীরে হলেও বদলাচ্ছে।
এখন একটা মেয়ে মারধর শুরু করলে দুয়েকটা হলেও ছেলে এগিয়ে আসে সাহায্য করতে। আর না আসলেও ক্ষতি নেই, মেয়েরা সবাই একত্র হয়ে যদি এইসমস্ত কুলাঙ্গারদের শরীরের উপর দিয়ে স্রেফ হেটেও যায়, তাহলেও কর্ম সাবার হয়ে যাওয়ার কথা। কেবল সাহস করে একটাবদ্ধ হতে হবে। পারবেন না?
এখন একটা অ্যামেরিকান উদাহরণ। এবং বহুবারের মতই এখানেও নাইন ওয়ান ওয়ানকেই টেনে আনছি।
নাইন ওয়ান ওয়ান অপারেটর একদিন একটা ফোন কল পেলেন, এক মহিলা চাপা স্বরে বলছেন, "যদি আমি ও আমার মেয়ে ঘরে একা থাকি, এবং কেউ আমার বাড়িতে ব্রেক ইন (অনুপ্রবেশ) করার চেষ্টা করে, এবং আমি যদি গুলি করে ওকে হত্যা করি - তাহলে কী আমার কোন ক্রাইম হবে?"
এইধরনের কল সাধারনত অপারেটররা পান না।
ভদ্রমহিলা হকচকিত হয়ে বলেন, "ম্যাম, ঘটনা একটু ভেঙ্গে বলতে পারবেন?"
মহিলা ফোনে বললেন, "দুইটা ছেলে কয়েকদিন ধরেই আমাকে ফলো করছে। আজকে আমাকে রাতে ঘরে একা পেয়ে আমার বাড়ির পেছনের জানালা ভেঙ্গে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। আমি জানিনা তাদের উদ্দেশ্য কী। খুব সম্ভব আমাকে রেপ করতে চায়।"
অপারেটর বললেন, "গুলি চালিয়ে দিন। কোন সমস্যা নাই। আমি পুলিশ পাঠাচ্ছি।"
পুলিশ গিয়ে দেখে একটা স্টকার মরে পরে আছে, আরেকটা পালিয়ে গেছে। দুই দিনের মধ্যেই সেটাকেও হাজতে পুরতে সক্ষম হয়। স্বীকারোক্তি দেয় যে তাদের উদ্দেশ্য ছিল মহিলাকে রেপ, বাঁধা দিলে মার্ডার।
এই মহিলার মেয়ে গর্বিত স্বরে বলতে পারবে - আমার মা জীবনে একটা কাজের কাজ করেছে।
এই মহিলার মেয়ের সাথেও ভবিষ্যতে কেউ ফাজলামি করার চেষ্টা করলে সে উপযুক্ত জবাব দিবে।
এখন একটা বদমায়েশকে আপনি কোন উপায়ে শায়েস্তা করবেন সেটা আপনার ব্যপার। হাতের সেফটিপিন দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত থেকে শুরু করে চোখে মরিচের গুড়া ডলে দিতে পারেন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে মরিচের গুড়া নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পরার আহ্বান করা হয়েছিল - আর আপনি সামান্য কয়েকটা জানোয়ারকে মারতে পারবেন না? তাহলে আপনি কিসের বাঙালি?
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:২৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩৯
সুমন কর বলেছেন: প্রতিবাদ করতে হবে ! শুরুটা চাই.....
ভালো লিখেছেন। সহমত।
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:২৯
পথে-ঘাটে বলেছেন: বাংলাদেশ পুলিশের সাহায্যের আশা করা বৃথা। একটাই পথ খোলা। সেটা হল গরম প্রতিবাদ। এছাড়া আর কোন গত্যন্তর নেই।
৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:০৮
lunatic হৃদয় বলেছেন: সহমত
৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:১৯
শুভ্র বিকেল বলেছেন: অনেক সুন্দর কথা বলেছেন। ধন্যবাদ। শুভনববর্ষ।
৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভাল বলেছেন। +++ সাথে লাইক অবশ্যই।
৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভাল বলেছেন। +++ সাথে লাইক অবশ্যই।
৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৬:৫৯
সাগর মাঝি বলেছেন: লেখকের সাথে সহমত প্রকাশ করলাম।
প্রতিবাদ চাই প্রতিবাদ।
৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৫০
চিত্রনাট্য বলেছেন: আপনার লেখাটা খুব ভাল লেগেছে , তাই এ অসময়ে লগ ইন ৷ আমি একটা মফস্বলে থাকি , এই কাজে প্রধান যে সব সমস্যা এসব জায়গায় হতে পারে
ওই মেয়ে একটা খারাপ মেয়ে হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাবে , উঠতে বসতে সে সর্বত্র কথা শুনে যাবে ৷ বিবাহিত হলে তো কথাই নেই , তার স্বামী তাকে বলবে 'নষ্ট চরিত্রের মানুষ ' ৷ এই দিক থেকে সব স্বামীরা চায় অসূর্যস্পর্শা নারী ৷
প্রচার হতে হতে এইরকম হবে ভিড়ের মধ্যে ওই মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে , আরো যে কত কিছু হতে পারে ৷
তবে আমি মনে প্রাণে এটা সমর্থন করি, এরকম করতেই হবে ৷ এছাড়া আর উপায় নেই , যে দেশে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই , সেনাবাহিনীর ঘরে নারী নির্যাতন হয় সেখানে নিজেরা লড়াই করে যতটুকু ভাল থাকা যায় ৷
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:২৫
তানভীরএফওয়ান বলেছেন: এই মহিলার মেয়ের সাথেও ভবিষ্যতে কেউ ফাজলামি করার চেষ্টা করলে সে উপযুক্ত জবাব দিবে।
Right