নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্কিন ক্যানসার - জেনে নিন কিছু জরুরি বিষয়

০৬ ই মে, ২০১৬ রাত ২:৫২

কিছুদিন আগে আমার এক আঙ্কেল মারা গেলেন। মৃত্যুর আগে আগে আমি তাঁর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আন্টি দেখা করতে দেননি। আঙ্কেলের চেহারা দেখার মতন ছিল না। আন্টি পর্দা টেনে দেয়ার আগে সেকেন্ডেরও ভগ্নাংশের জন্য আমি আঙ্কেলকে শেষবারের মতন জীবিত দেখেছিলাম। শরীর ছেয়ে গেছে টিউমারে। মনে হচ্ছিল তাঁর শরীরে চামড়ার ভিতরে কেউ অসংখ্য ছোট বড় বল ঢুকিয়ে সেলাই করে দিয়েছে। বিভৎস অবস্থা। ইশ! কী যে কষ্ট হয়েছিল সেদিন!
আঙ্কেল মারা গিয়েছিলেন তার মাস খানেক পরেই।
স্কিন ক্যান্সার হয়েছিল তাঁর।
একটি জরুরী তথ্য, আঙ্কেল সিগারেট-মদ-জর্দা ইত্যাদি কিছুই খেতেন না। তারপরেও মরণব্যাধি তাঁর শরীরে বসত গড়েছিল। কেন?
তা "ক্যান্সার" শুনলেই আমাদের মাথায় প্রথমেই আসে সিগারেটই বুঝি এর একমাত্র কারন। বিজ্ঞাপনে লেখা থাকে, "সিগারেট ক্যান্সার রোগের কারন" কাজেই আমরা ধরে নেই - সিগারেট না খেলে হয়তো জীবনেও ক্যান্সার হয়না। বাস্তবতা হচ্ছে, সিগারেট কেবল একটি সহায়ক উপাদান হিসেবে কাজ করে, সিগারেট খেলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা অনেকগুন বাড়ে ঠিকই, কিন্তু ধুমপানই কর্কট রোগের একমাত্র কারন নয়। যেমন এক্ষেত্রে স্কিন ক্যান্সারের জন্য সবচেয়ে বড় শত্রু বেনসন এন্ড হেজেস বা আকিজ বিড়ি নয়, বরং সূর্যের আলো।
জ্বী, আমাদের অতি প্রিয় সুয্যি মামা! যিনি দিনের বেলা আমাদের আলো দিয়ে ইলেকট্রিসিটির বিল বাঁচান, যিনি আমাদের বাড়ির ছাদে বা উঠানে বিনা পয়সায় ভেজা কাপড় চোপর-আচার-মরিচ ইত্যাদি শুকিয়ে দেন, সেই তিনিই আবার মেজাজ খারাপ করলে শকুনি মামা হয়ে আমাদের ত্বকে মরণ ব্যাধি ঢুকিয়ে দেন। ভিটামিন ডির লোভে যারা গায়ে রোদ মাখেন - বিশেষ করে সকাল দশটা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত বাইরে চলাফেরা করেন, তাঁরা দয়া করে, আল্লাহর ওয়াস্তে এখন থেকে একটু সাবধান থাকবেন। কারন এইসময়েই মামার মুড থাকে খিটখিটে, তেজ থাকে বেশি, এবং যাকেই সামনে পান তার দিকেই থুথুর মতন রোদ ছুড়ে মারেন। সেখানে উপস্থিত আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি "এ" এবং "বি"ই সর্বনাশটা ঘটায়। এই সময়টাতে আপনি যদি লেকের পারে গাছের ছায়ায় বসে গার্লফ্রেন্ডের সাথে বাদাম খেতে খেতে পানিতে পাথর ছুরেন, তখনও সাবধান থাকবেন। কারন এই অতি ক্ষতিকারক রশ্মি পানিতে রিফ্লেক্ট হয়ে আপনার গায়ে এসে পড়তে পারে।
কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের মতন জায়গায় মামার এই তেজ থেকে বাঁচবেন কিভাবে?
উত্তরটা সহজ। বাইরে থাকলে যতটুকু পারেন, ছায়ায় থাকার চেষ্টা করবেন।
মাথায় ক্যাপ পরবেন। শরীর যতটুকু সম্ভব কাপড়ে ঢেকে রাখবেন। এবং পারলে ছাতা ব্যবহার করবেন। কোন অবস্থাতেই দশ মিনিটের বেশি রোদে হাঁটাহাঁটি করবেন না। যদি করেন, তাহলে অবশ্যই মুক্ত হস্তে শরীরে সান স্ক্রিন লোশন (SPF ৩০ বা এর বেশি) ঘষাঘষি করবেন। মনে রাখবেন, একবার সানস্ক্রিন লোশন গায়ে মাখলে দুই ঘন্টা পর তার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তা যে কোম্পানি আপনাকে যতই ভুগিচুগি বুঝাক না কেন। কাজেই প্রতি দুই ঘটনা পরপর নতুন করে লোশন মাখুন। এবং এর মাঝে যদি ঘেমে যান, অথবা গোসল করেন, তাহলে আরও ঘন ঘন মাখুন।
কথা হচ্ছে, বাংলাদেশী অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সানস্ক্রিনের দাম অনেক বেশি। যাদের সামর্থ্য আছে, তাঁরাতো মাখবেনই। যাদের নেই, তাঁরা কী করবেন? ছাতা ব্যবহার করুন। ছাতাকে শুধু বৃষ্টির সাথে লড়াইয়ের জন্যই তুলে রাখবেন না, রোদের বিরুদ্ধেও একে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করুন।
এখন মহা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
কিভাবে বুঝবেন স্কিন ক্যান্সার হয়েছে?
ভাল করে নিজের শরীর পরীক্ষা করুন। শরীরের প্রতিটা তিল, প্রতিটা ফোড়া সনাক্ত করুন। সুবিধার জন্য একটি কাগজে নিজের শরীরের ছবি একে (ভয় নেই, আপনাকে পিকাসো বা ভ্যানগগ হতে হবেনা, ওটা যে আপনার শরীর, সেটা মোটামুটি বুঝা গেলেই চলবে) কোথায় কোন তিল/ফোড়া আছে সেটা লিখে রাখুন।
শরীরের যে অংশ আপনি দেখতে পারেন না, সেটা দেখতে আয়নার সাহায্য নিন। পরিবারের ঘনিষ্ট ভাই/বোন/মা/বাবা/ জীবন সঙ্গী/সঙ্গিনীর সাহায্য নিন। ওদেরও সাহায্য করুন।
এক সপ্তাহ পরপর সেইসব তিল/ফোড়া রি-চেক করুন।
দেখুন কোন পরিবর্তন ঘটছে কিনা। যদি দেখেন আকৃতিতে বাড়ছে, চুলকাচ্ছে অথবা রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তাহলে ইমিডিয়েট বেসিসে ভাল কোন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। যদি আমার আশংকা সত্যি হয়, তাহলে যত তাড়াতাড়ি পারেন ওটাকে শরীর থেকে কেটে ফেলে দিন। ক্যান্সারের ক্ষেত্রে যত দেরী করবেন, শেকড় ততই গভীরে গেঁথে যাবে। স্কিন ক্যান্সার সেই সব হাতে গোনা ক্যান্সারগুলোর একটি, যা আপনি সহজেই নিজের চোখে একদম প্রাথমিক পর্যায়েই দেখতে পারবেন, এবং সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলে প্রতি একশর মধ্যে ৯৮ জনেরই সুস্থ্য হবার সুযোগ থাকে!
আশা করি আপনি সেই অতি দুর্ভাগা দুইজনের একজন হবেন না।
এখন সবচেয়ে মজার তথ্যটা দেই।
স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কাদের বেশি থাকে জানেন? যাদের ত্বক উজ্জ্বল থেকে ফর্সা, যাদের চুল বাদামী থেকে সোনালী। যাদের চোখের রং কটা থেকে নীল। জ্বী, ড্রপ ডেড গর্জিয়াস, যেসব সুন্দরী ব্লন্ড দেখলে আমাদের চক্ষু এবং মস্তক চক্কর দিয়ে উঠে - তাদের ত্বকের কোয়ালিটি আমাদের, মানে যাদের ত্বকের বরণ শ্যামলা থেকে ময়লা, চোখের এবং চুলের রং কুচকুচে কালো - তাদের ত্বকের কোয়ালিটি থেকে অনেক অনেক নিম্নমানের।
কাজেই আগামীতে কোন ছাগল যদি আপনাকে আপনার ময়লা গায়ের রংয়ের জন্য তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার চেষ্টাও করে, তাহলে সাফ মুখের উপর জানিয়ে দিবেন, "সামান্য রোদের সাথেই ফাইট করার ক্ষমতা যে ত্বকের নেই, সেই ফালতু চামড়া তুই মাগনা দিলেও আমি নিমু না। গেলি?"

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০১৬ ভোর ৫:৩৪

গোধুলী রঙ বলেছেন: চমতকার আপনার উপস্থাপনার স্টাইল বন্ধুর মতন।
সৌদি স্টাইলে সারা শরীর ঢাকা কাপড় পরতে পারলে মন্দ হতো না। তবে গ্রামে যারা মাঠে ক্ষেতে কাজ করে তারা শতভাগ ডার্ক শ্যমলা থেকে কালো, এটাই বোধহয় তাদের বর্ম।

০৬ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৩০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

২| ০৬ ই মে, ২০১৬ সকাল ৮:০৭

আরাফআহনাফ বলেছেন: জনসচেতনতামূলক লেখা।
ভালো লাগলো, অনেক কিছু জানলাম।
পোষ্টটি স্টিকি করা হোক।

০৬ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৩০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৩| ০৬ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:১৪

কানিজ রিনা বলেছেন: খুব মায়া হচ্ছে যারা ক্ষেত খামারে কাজ
করে। তবে আমার জানামতে ছোটকাল
থেকে অনেক রোদে পড়া ক্ষেত মজুর
দেখেছি। এতটা বয়ষে এসেও এমন রোগ
কারো দেখিনাই। তথাপি আপনার সচেতনতায়
ধন্যবাদ।

০৬ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:২৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ওদের গায়ের চামরাই ওদের এই রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।

৪| ০৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৫৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: পোস্ট বরাবরের মতই অসাধারণ।

বিরাট কাজের লিস্ট হাতে ধরায়ে দিছেন, মানা কঠিন।

//কাজেই আগামীতে কোন ছাগল যদি আপনাকে আপনার ময়লা গায়ের রংয়ের জন্য তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার চেষ্টাও করে, তাহলে সাফ মুখের উপর জানিয়ে দিবেন, "সামান্য রোদের সাথেই ফাইট করার ক্ষমতা যে ত্বকের নেই, সেই ফালতু চামড়া তুই মাগনা দিলেও আমি নিমু না। গেলি?"// -- এমন একটা সার্টিফিকেট পাওয়ার পর তো সেইটা গলায় ঝুলায় রাখতে ইচ্ছা করছে।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১২ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৫২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হাহা। ভাল বলেছেন। :)

৫| ০৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:৫৪

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

গুরুত্বপূর্ন একটা লেখা।

ধন্যবাদ সতর্ক করার জন্য।'

"সামান্য রোদের সাথেই ফাইট করার ক্ষমতা যে ত্বকের নেই, সেই ফালতু চামড়া তুই মাগনা দিলেও আমি নিমু না। গেলি?" :P

১২ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৫২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ!

৬| ০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৮:৩৪

চিত্রনাট্য বলেছেন: =p~ =p~ =p~ তুই গেলি?

৭| ০৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১২:৫৬

তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: রোগীর বর্ননা শুনেই গা শিউরে ঊঠেছে, আল্লাহ মাফ করুক। :(
আর রোদের কথা আর বইলেন না ভাই। গত কয়দিন যে প্রখর রোদ গেল সেই সময় ই আমার প্রতিদিন ভর দুপুরে পরীক্ষা নয়তো ক্লাস থেকেছে। ২টার সময় ক্লাস থেকে বের হয়ে মনে হত চামড়ায় কেউ ছেঁকা দিচ্ছে। মরে গেলে তো গেলাম বাট যত দিন বাচি যদ্ধ এভয়েড করার উপায় নাই যে :( তার উপর গরিব মানুষ বাসেই আসা যাওয়া করতে হইছে।

আর গায়ের রংয়ের কথা বলে আরো ভয় পাওয়ায় দিলেন :P

১২ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৫৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ছাতা ব্যবহার করুন। কাজে দিবে।

৮| ০৮ ই মে, ২০১৬ ভোর ৪:৫৪

কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: চমৎকার তথ্যপূর্ণ পোষ্ট।

১২ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৫৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.